১০ নভেম্বর ২০২০

গৌরশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়


দরজা খুলে বাইরে দেখোনা 


মুখ নিচু করে বসে আছো যেন কতদিনের দুঃখ তোমাকে 

                            অনেক কষ্ট দিয়েছে 

আজ কতদিন পরে দেখতে এসেছি  

তোমার ঝলমলে মুখ অবকাশের ঘুম চোখ আর আকাঙ্খা 

বাইরের কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি 

                        ডোরবেল বাজিয়ে আছি অপেক্ষায় 

তবু কেউ তো দরজা খুলল না 


এখন বিকেল গড়িয়ে শীতের অন্ধকার 

বিকেল পাঁচটা 

আমি যেন দেখতে পেলাম 

অবিকল এক ছায়া  কত চেনা

হেঁটে দূরে চলে যাচ্ছে 

অন্য এক অন্ধকারের দিকে 

 যেখানে নির্জনতায় একা একা অনেকেই চলে যায় 


বহুদিন পর কবিতার মতো  সেই সব স্বপ্ন নিয়ে 

দু'চার কথা বলার জন্যই এসেছিলাম 

জানতে এসেছিলাম 

হঠাৎ হঠাৎ এখনো কি আগের মতো 

দরজা খুলে বাইরে দেখনা

সুস্মেলী দত্ত



দূষণ পর্ব              

    

সে কোন দেশে তেপান্তরে ছিল যে তার বাস 

ফুলের দোলা  সরস ঠোঁটে ডাইনে বামে কাশ 

মাঝের গলি  সরলরেখা বিন্দু মেশে ঘামে 

রূপকথা সে রূপকথা সে শহর গাঁয়ে জানে 

বলছি আমি নিজের কথা তোমারও সই সখি 

আপনমনে উদাস স্মৃতি একলা ঘরে বকি 

ছিল যা সব নষ্ট হলো পৃথিবী সর্পিল

 কুজন থুড়ি বাতাস ভারী শকুন ওড়ে চিল 

শূন্য গোলা নিঃস্ব মরু উধাও কালো মেঘ 

সাঁই সপাটে ঘূর্ণি ঝোড়ো দুস্টু গতিবেগ 

কেন এমন হচ্ছে নাকি ধ্বংস কলিযুগ 

কল্কি বুঝি ঐ এলো যে ধুকপুকিয়ে বুক 

ঘর ভেঙেছে কুল ছাপানো মানুষ মরা নদী 

সংক্রমণে বন্যা খরা শান্তি সুখে যতি 

গলছে হিম ফুটছে জল কাঁপছে ভূমি থরো 

সবুজ নেই সবুজ নেই আবর্জনা জড়ো 

বাঁচাও মাগো রক্ষে করো বিপথগামী আমি 

দূষণ জ্বরে আজ বুঝেছি প্রানটি ছিল দামি

ভবেশ বসু



সভ্যতার সেই বাউল অস্ত্র 


বৈষ্ণব পদাবলীতেই হয়েছে এক ভয়ংকর হত্যা,সেই প্রথম বোধহয় ইতিহাসে অপরাধ

তারপর ধারালো লোহা আবিষ্কার হয়,বোমা গুলি ও আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত সকলে

বৃক্ত থেকেই পৃথিবী ঘুরছে,কম্পাসের কাঁটা এই স্থানে রেখে যাবতীয় দাগ---অংক বিজ্ঞান সাহিত্য রাজনীতি

মর্গের মৃতদেহের মতো এটি কার লাশ,খুঁজতে খুঁজতে জ‍্যৈষ্ঠের দুপুরে বর্ষায় শীত বসন্তে অনেকবার প্রকৃতি হয়েছি

যতদিন উত্তাপের প্রয়োজন হবে,ততদিন আমিও নতুন মাংসে নতুন অক্ষরে পুরুষ নারী। 


অবিশ্বাস গর্ভে ধারণ করেছিল পিতাই,তখন মাতাই সন্তান লালন করতো অমল অন্ধকার থেকে

ক্রমে ক্রমে জন্মের অন্তর্ভেদী আর্তনাদ শুনে মাতা শুকতারার ভোরে পিতার থেকে গর্ভ কেড়ে নেয়

সেই থেকে গর্ভ-সন্তানে বিশ্বাস শব্দটি মগজে স্থাপন শুরু

তবু আদিম মস্তিষ্ক শিশির সুখ রোদ ও বৃষ্টির ভেতর অবধি

মাতা সৃষ্টি রক্ষা করতে পারলেও ক্রুশ-কাঞ্চন মধ্যে এখনো সুখ-নিঃশ্বাস পৃথক করতে পারেনি।


সেই মথুরা নগরী,প্রত্যাখ্যাত রাধা গলে গলে নদী থেকে নদী,যুগ থেকে যুগে আমাদের ঘর বৈঠকখানায় হাজির

কৃষ্ণ সে সময় যে অস্ত্র রাধার বুক লক্ষ্য করে ছুঁড়েছে,এত শতাব্দী পরেও শবের সংখ্যা বেড়ে সাতশো কোটি 

কিন্তু প্রেম নামে সভ্যতার সেই বাউল-অস্ত্র,যমুনার বুক হতে আজ অবধি উদ্ধার সম্ভব হয়নি।

ডোনা মাঝি



ছুঁয়ে দেখা


ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখলাম তোমায়

বলতে চাইলাম অনেক কিছুই

হলো না কিন্তু কিছুই বলা ।

গলার মাঝে আটকে নিলাম

তোমার নানান রঙের পাগলামো

বুকের ভেতর যত্ন করে রেখে দিলাম

তোমার বুকের সুপ্ত ফুল

চোখের তারায় লুকিয়ে নিলাম

দুষ্টু হাসির কথপোকথন 

কানের মধ্যে ভরে নিলাম

তোলপাড় করা গলার সুর

তোমার সব কিছুকেই 

মনের সাথে জুড়ে নিলাম ।

ঠোঁটের মাঝে বেঁধে নিলাম

আমার একটা বন্দী মন

কান্না ধোয়া হৃৎস্পন্দন

খাঁচার ভিতর ভাঙলো তাই 

বলতে চাইলাম অনেক কিছুই

হলো না সত্যিই কিছু বলা

ছুঁয়ে ছুঁয়ে তাই দেখেই গেলাম

সত্যিই, হলো না কিছু‌ই বলা ।।

দুর্গাদাস মিদ্যা



নিদাঘের দিনে


বিনম্র রজনীর মত খোলা ছাদ হয়ে থাকো তুমি বিষণ্ণতার খেলাঘরে খেলা খেলা পাতি সাজাও আপন মনে। বেহুলার মতো হয়তো দুঃখ দুঃখ তোমার নেই তবুও মাঝ রাতে কান্না শুনি আকাশে। এযাবৎ যেসব কথা বলেছিলে তুমি  তার কাছে এসব যেন ম্লান মনে হয়। 

আসন্ন প্রসবা রমণীর মতো ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলাফেরা মতো ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলাফেরা রমণীর মতো ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলাফেরা মতো ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলাফেরা ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে চলাফেরা সে কি তোমাকে মানায়! 

তার চেয়ে চলো বনবীথিকায়

 হয়তোবা দুদন্ড শান্তি পাওয়া যেতে পারে এই নিদাঘের দিনে।

শুভমিতা বিশ্বাস




নীল উঠোনের অপেক্ষা


যদি পারো সূর্য ডুবে যাওয়ার পর এসো,

আমি এক কলসি সন্ধ্যা নিয়ে বসে থাকব 

নীল উঠোনে,

 শুরু হবে প্রতীক্ষা-

দীর্ঘ প্রতীক্ষা..


জানি,দূরের সাগরের বুকে গাঁথা সব ঢেউ, পারাপারে আসেনা- 

তবুও,কিছু ভাঙা ঝিনুক দাঁড়িয়ে থাকে এক হাঁটু লোনা জলে,


 উষ্ণতার কানায় কানায় যখন জোয়ারের জল, উপচে পড়ে

তখনই ভাঁটার মহাটান 

ফিরে যায়,

ফিরে যায় যারা পারে এসেছিল।

যারা সিঁড়ি ভেঙেছিল হৃদয়ের লোভে 

তাঁরা এখন পঙ্গু

তাঁরাও প্রতীক্ষায় আর 

আমিও....

শিবপ্রসাদ দে

স্মৃতির স্মরণী বেয়ে


আমার নিঃশব্দ বালুচরে

তোমার নিঃসঙ্গ পদচারনা, 

প্রবল তপ্ত হৃদয়ে, 

যেন হাড়হিম করা শীতল বাতাস। 

আমার ঝলসে যাওয়া হৃদয়, 

আজ আমি অর্বাচীন ও অপাঙক্তেয়।

মধুমিতা রায়

তোমার হৃদয় খুঁড়ে


ভেবেছি,  একদিন

তোমার হৃদয়ের কপাটিকা খুলে

অলিন্দে উঁকি মেরে দেখবো

তুমি আগের মত স্বপ্ন দেখ কিনা!


আগের মতো ভালবাসলেই

গাইতে পারো কিনা সেসব গান..


এখনও সেই সরল চোখ

কথা দিতে পারে কিনা

গভীরতার।


জেদী ঘোড়ার মত এখনও

তর্ক করো কিনা

এখনও অস্থির হও কিনা তেমনটি


এখনও কি মনখারাপ চেপে রাখ?

কষ্ট পেলে কঠিন হতে হতে 

গলে তরল হও, নরম হও অজান্তেই?


ভেবেছি, একদিন তোমার হৃদয় খুঁড়ে

দেখবো।

সাইফুল আলিম



ব্যঙ চিত্রের প্রতিবাদ 


এই মাসেতে আসলো ভবে( ১২ ই রবিউল আউল) 

আমার প্রানের নবী

দু-জাহানের সব মাখলুকাত

জানলো তাহা সবেই।


দেখ,পাখি নাচে পশু নাচে 

নাচে ফেরেশতা কুল

প্রিয় নবীর আগমনে 

মৃত গাছে ফুল ।


মৃত্তিকা কয় শুনরে মানব 

আজকে ঈদের দিন

কি দিয়ে যে সুধ করিবো

তারেই দেওয়া ঋণ ।


মনের হরসে উঠলো হেসে 

নবীর প্রেমে রবি

রহমতের ঐ আলোর জোতি

ছরায় বিশ্ব নবী।


সেজদায় পরে কান্দে রাসুল 

উম্মতের ই লাগি

আজ দেখা যায় নবীর প্রেমে 

উঠলো মুমিন জাগি। 


প্রিয় নবীর কদর বুঝলো

সকল ধর্মের লোক

ফ্রান্সের ঐ হারামজাদার

কাদলো না তার বুক।


রাসুলকে নিয়ে লোক সমাজে 

করলো এ কোন কাজ 

ব্যঙ চিত্রের সঠিক জবাব

বুঝিয়ে দেবো আজ।


অমানুষের সঠিক বিচার

বিশ্ব বাসির দরবারে

তা না হলে সব মুসলমান

করতে বিচার ধর্ তারে।


আর কতকাল ওরে দানব

নিবি পাপের অংশ

বলছি আমি হলফ করে

হয়ে যাবি ধ্বংস। 


রাসুলের অপমান ও মুসলমান

সইবে কেমন করে

দাত ভাঙা তার জবাব দিতে

আনতে হবে ধরে।

জারা সোমা


ঝুট_হ্যায়


কারা যেন বলে ভালোবাসায় নাকি 

 পূর্ণ হয় বৃত্ত!


আসলে সব ঝুট হ্যায়


এত কলঙ্কের সুরমা চোখে 

কোথায় মেলাই চোখ! 

কার সঙ্গে ?


যে রিংটোন বেজে উঠত প্রণয় ভাসাতে

সেখানে বিগত বছর থেকেই খরা 

অথচ চোখ ভরা টলটলে জল বাড়তে থাকে

সুনামি আসবে!

ভুমিকম্প! কবে?


নীল আলোর নিচে কালসর্প অভিমান 

জন্মান্তর ডাকে আয় 

মৃত্যু এগিয়ে  আসে কাছে 

কোথায় যাব!

 আসবে!  কে?


আমার সোহাগ মেশে পথের ধুলোয়

বাম হাতের লোহা বাঁধানো আরও চেপে বসে

আয়নায় দেখি বিদ্রূপ 

রহস্যময় হেসে খুঁচিয়ে দেয় ঘা


কাঠিন্য- মুখোশের আড়াল থেকে

 চিৎকার করতে ইচ্ছে করে

সাধারণ যাপন-সুখের চেয়ে 

বৈভব -প্রতিপত্তি-মাহাত্ব্য


আসলে সব ঝুট হ্যায়।।