ক্ষণিক অব্যাহতি ।
আজ মহাপঞ্চমী "যদি হই চোরকাঁটা ওই শাড়ির ভাঁজে। দুষ্টু যে হয় এমন কাজ তো তারই সাজে'। পুজোর প্যান্ডেলে গান বাজছে । শিখা সার্টিনের নীল পর্দাটা ধরে দাঁড়িয়ে গান শুনছে আর উপর থেকে লোকজন দেখছে। মনটা দিব্যেন্দুর থেকে সরিয়ে নিয়েছে বটে ।কিন্তু স্মৃতি পিছু ছাড়ে না ।বারবার মনে করিয়ে দেয় নানা কথা ,মনকে আলোড়িত করে । দিন যায় ।মনের মাঝে কখনো মেঘ হয় ,মেঘ থেকে বৃষ্টি ।আবার কখনো রোদ উঠে স্বচ্ছ আকাশ দেখা দেয়। এই পোড়া মহানগরের শিখার থাকতে ভালো লাগছে না।আজকে সব স্মৃতি আরো বেশি করে ভাবাচ্ছে। পঞ্চমী থেকে যে ঠাকুর দেখা শুরু হতো তার মধ্যে দুজনের কত আড্ডা আর বাইকে চেপে শহর থেকে দূরে বেরিয়ে যাওয়া ,তার মধ্যে আলাদা রোমান্টিক মাদকতা ছিল ।একবার যেতে যেতে একটা জায়গায় খুব সুন্দর প্রকৃতির নিবিড় পরিবেশ। সেখানে বসেছিল সবুজ গালিচায় ।শিখা পড়েছিল সবুজ লিলেন বাটিক শাড়ি, হ্যান্ড মেড জুয়েলারি। কি অসাধারণ নাকি লাগছিল ।তাই সবুজ গালিচায় বসে বারবার দিব্যেন্দু ওই গানটি গেয়েছিল। শিখা গানের শেষে বোলেছিলো শাড়ির ভাঁজে চোর কাঁটা হয়ে থাকতে হবে না ।মনের মধ্যে গভীর নিরন্তর ভালোবাসায় যেন সে সবসময় থাকে ।এটুকুই যথেষ্ট। দিব্যেন্দু বলেছিল তা আর বলতে।
সেই সব প্রতিশ্রুতি আর মিথ্যে আশ্বাস বেশি কষ্ট দিচ্ছে। শিখা যত ভুলে যেতে চাইছে , বিভিন্ন সময়ে কাটানো মুহূর্তগুলো দোলা দিয়ে যাচ্ছে বারবার। ভুলবে কি করে?মনে তো করতে চাইছে না,তবুও পিছু ছাড়ছে না।পাগল পাগল লাগছে। হঠাৎ ধ্যান ভাঙ্গে শিখা শিখা ডাকার আওয়াজে। শিখা সাড়া দিল 'কি বৌদিভাই?"। সিড়ির কাছে গিয়ে উঁকি দিল।
বৌদি বললো 'তোর গলার আওয়াজ এরকম শোনাচ্ছে কেনো?'
শিখা বলল কই?
বৌদি বললো 'তুই আমার কাছে লুকাবি? আবার ঠিক ছাইপাস ভাবছিস তো?'
শিখা চুপ করে থাকে।
বৌদি বলে 'তুই রেডি হয়ে নে। বেরোবো তো?'
শিখা বলল 'হ্যাঁ বৌদিভাই ,রেডি হয়ে নিচ্ছি।'
বৌদি বলল 'তার আগে এসে খেয়ে নে।'
ওদিক থেকে বৃষ্টি বলল ' তুমি শুধু পিমণিকে বলো। আমাকে তো কিছু বলছো না?'
বৌদি বলল 'পিমনি আমার কাছে এবং এ বাড়িতে আগে এসেছে ।তুমি ছোট ।তুমি পরে এসেছো।ঠিক আছে ।নো হিংসা পিমণির সঙ্গে।'
বৃষ্টি তো কাঁদো কাঁদো হয়ে চলে গেল খাবার টেবিলে। আর মুখ হাঁড়ি করে বসে আছে।
শিখা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলো ।এসে বলল 'আমাদের ছোট্ট বেবিটা রাগ করেছেনা ,বৌদি ভাই?'
বৌদি বলল 'তুই ওকে বেশি আস্কারা দিস না তো ?এই বয়সে এত জেদ কেন থাকবে? বড্ড জেদ হয়েছে।'
সত্যি বৌদি শিখাকে প্রচন্ড ভালোবাসে ।কখনো মায়ের কষ্ট অনুভব করতেই দেয় নি ।কিন্তু তা হলেও আজকের দিব্যেন্দু সঙ্গে সঙ্গে ,মায়ের কথাও মনে পড়ছে । মা পুজোর সময়গুলোতে যখন সে ছোট ছিল চুল বেঁধে দিতো ।নতুন জামা এনে খুব সুন্দর করে সাজিয়ে দিত ।মায়ের হাতের স্পর্শ ,মায়ের গন্ধ ।ছোটবেলায় যে গন্ধটা পেয়েছিল ।আজ তা অনেকটাই মন থেকে অস্পষ্ট হয়ে গেছে ।অস্পষ্ট হয়েছে বৌদি ভাইয়ের জন্যই বোধহয়। কখনো বুঝতেই দেয় নি মায়ের সেই ভালোবাসার অভাব ।বৌদি সবসময় শিখার মনের যা কষ্ট ,ভালোলাগা-মন্দলাগা মায়ের মত করে ভাগ করে নিয়েছে ।তাই বৌদি ভাইয়ের কোন কষ্ট শিখাও দেখতে পারবে না। তবুও পুজো আসলে মায়ের গন্ধটা মা দুগ্গা মনে করিয়ে দেয়।
বৌদি রান্না ঘর থেকে বলল 'তুই কি করছিস ?বৃষ্টিকে খাইয়ে দিচ্ছিস?ও এখন বড় হচ্ছে আস্তে আস্তে নিজে খাবার খেতে শিখুক ।'
বৃষ্টি কথাটা শুনে মুখ সরিয়ে নিয়ে নিজের হাতে খেতে শুরু করল।
শিখা তখন বৌদি ভাইয়ের দিকে ইশারায় কিছু নিষেধ করল ।আবার শিখা বৃষ্টিকে কাছে টেনে খাইয়ে দিতে শুরু করলো আর বলল 'আমাদের বৃষ্টিরানিকে কি সুন্দর লাগছে ,জামাটা পড়ে ।নিজের হাতে খেতে গেলে জামায় পড়বে ।তখন জামাটা নষ্ট হয়ে যাবে ।তাহলে কি হবে?তখন পিমণির নতুন ড্রেসটা বেশি ভালো মনে হবে।বৃষ্টিরটা পচা হয়ে যাবে।'
বৃষ্টি এবার হাঁ করলো ।
শিখা নিজে হাতে খাবার খাইয়ে দিয়ে, ওকে হাতটা ধুয়ে আসতে বলল।'
বৌদি রান্নাঘর থেকে বলল 'বৃষ্টি যাও নিজের ঘরে গিয়ে পিমণির খেতে খেতে একটু হোমওয়ার্ক করে নাও।'
বৃষ্টি বলল 'আজকেও হোমওয়ার্ক?'
বৌদিভাইয়ের তাকানোতে আর সাহস করতে পারল না।
বৃষ্টি শুধু বললো ' ok মা।'
শিখা বলল 'বৌদিভাই তুমি খাবে না? তুমি ও এসো ।আজকে একসঙ্গে খাব ।তুমি না খেলে কিন্তু আমি খাচ্ছি না।'
বৌদি বলল 'এ আবার কি কথা শিখা ?আমার এখনো কাজ করতে অনেক দেরি আছে। তুই খেয়ে নে।'
শিখা রান্নাঘরের কাছে গিয়ে আবদারের সুরে বলল ' না বৌদিভাই ,চলো চলো একসঙ্গে খাবো।'
বৌদি বলল 'তুই তো মাঝে মাঝে বৃষ্টির থেকেও বাচ্চা হয়ে যাস।হাতদিয়ে চুলগুলোকে নিয়ে একটু আদর করে দিলো।
আর হেসে বলল এই দুটো বাচ্চাকে সামলাতে আমাকে যে কি হিমশিম খেতে হয়, তা কি বলবো ?'
এর মধ্যেই দাদা ঢুকে গেল। বললো ' কি ব্যাপার বড় মেয়েকে এত কিসের আদর করছ তুমি? আমাদের বৃষ্টিরানী দেখলে কি বলবে ,বলো তো? এবার বুঝেছি বৃষ্টি কেন এত অভিযোগ করে তোমার নামে।'
বৌদি বলল .'দেখো 'এইদিকে তুমি একদম নজর দেবে না ,আর বৃষ্টিকে তুমিই আস্কারা দিচ্ছ?'
শিখা মনে মনে হাসে আর ভাবছে ।কেউ যখন বৃষ্টির হয়ে কথা বলবে ,বৌদি তখন তাকেই বলবে বৃষ্টিকে আস্কারা দিচ্ছে।'
বৌদি বলল ' কি ব্যাপারে শিখা, তুই এত হাসছিস কেন ?আমি কি কিছু ভুল বলেছি বল?'
দাদা বলল 'না ,না ,না ।তুমি কি কখনো ভুল বলতে পারো বা ভুল করতে পারো?
বৌদি বলল 'কি ব্যাপার তুমি আমাকে ক্রিটিসাইজ করলে।'
দাদা তখন হেসে বলল 'বাবা ,আমি তোমাকে ক্রিটিসাইজ করবো ?তাহলে রক্ষে আছে?'
এইবার দাদা বৌদির খুনসুটি শুরু হলো।
শিখা বলল 'দাদাভাই ,বৌদি এখন খাবে?'
দাদা বলল 'তোর বৌদি একাই খাবে ?আমাকে একবারও বলবি না খেতে,?'
শিখা বলল 'সেকি দাদা ।তুমি এখনো খাও নি। সরি।'
দাদা হেসে বলে 'না রে ,তোর বৌদি কি কখনো আমাকে না খাইয়ে ছেড়েছে বল ?তবে কি তোদের দেখে একটু মনে হল একসঙ্গে বসে খাই।'
শিখা বলল 'আমরা তিনজন একসঙ্গে বসে খাব।'
বৃষ্টি ওপর থেকে সব দেখছিল ।দেখে বললো 'তাহলে আমি কি বাদ ?একসঙ্গে মানেটা কি?'
বৌদি বললো 'ওমা তুই এই তো খেলি ?খেতে পারবি তুই আর?'
শিখা বললো ' হ্যাঁ ,তাই তো আমরা তো বৃষ্টিরানীকে বাদ দিয়ে দিয়েছি ।একসঙ্গে তো হলো না ।আয় সোনা, খাবি আয়।'
বৌদি বলল 'শিখা বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে। আমরা কিন্তু বেরোবো ?রাস্তায় দেখবি ও কিন্তু ভীষণ বমি করে।'
শিখা বলল 'ঠিক আছে ।করুক ।বমি আমি পরিষ্কার করে নেব ।'
বৌদি বলল 'তখন দুজনেই শুরু করবি এক সঙ্গে বমি।কে কাকে সামলাবে?'
দাদা হো হো করে হেসে উঠলো।
বৌদি শিখাকে একটু মন ভালোর জন্য কত রকমই না চেষ্টা করে ।শিখা বোঝে । অথচ যে ব্যপারগুলোতে
কখনো বৌদির দুঃখ কষ্ট হয় । সেগুলো কখনো বৌদি বলে না ।বৌদির মুখে সর্বদা হাসি লেগেই রয়েছে। সত্যি কথা শিখার বৌদির মত এই পৃথিবীতে কারোর বৌদি হবে না।
বৌদি বলল 'কিরে ,এখন আবার কি ভাবছিস?'
শিখা বলল 'ভাবছি বৌদিভাই, তোমাকে ছেড়ে কি করে দূরে গিয়ে বি এড করব বলো? আমার ভাললাগা, মন্দ লাগা ,কার সঙ্গে শেয়ার করবো বলো।'
বৌদি বলল ফোন আছে তো ?ফোনে বলবি কিন্তু ওটা তো তোর কেরিয়ারের ব্যাপার বল?'
শিখা মাথা নিচু করে রইল।
দাদা বলল 'প্রতি সানডেতে এখানে চলে আসবি ।দরকার হলে আমরা দুজনে মিলে মাঝে একবার গিয়ে তোকে প্রতি সপ্তাহে দেখে আসব ।ঠিক আছে।
শিখার মুখে হাসি ফুটে উঠল।যেমন মেঘলা আকাশে হঠাৎ করে সূর্যের দীপ্তি পড়লে ধরাবাসি আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে ।ঠিক সেইরকম।।
এজন্যই শিখাকে এবার শহর থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে ।যাতে শিখা ভালো থাকে ।পুরনো স্মৃতিগুলো শহরের সাথে জড়িয়ে আছে ।তার থেকে দূরে গ্রামেতে যাচ্ছে ।এবার শিখা যাচ্ছে বৌদির বাবার বাড়িতে ।দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর শিখার বৌদি বাবার বাড়ি যাচ্ছে ।কৃষ্ণনগর থেকে যেতে হয় ঠিক বাংলাদেশ বর্ডার এর কাছে গেদেতে।
বৌদি শিখার কাছে গিয়ে মুখটা বুকের কাছে নিয়ে বলল 'শিখা তুই কোন চিন্তা করিস না ।সব সময় হাসি খুশিতে থাকবি। ঠিক আছে ।কারণ তোকে খুশি দেখলেই আমরা খুশি ।মা যেন কখনো ভাবেন না যে তার মেয়েটা অবহেলা ,অবজ্ঞায় আছে ।তার প্রতি কোনো যত্ন নেয়া হয় না। '
শিখা বলে 'বৌদিভাই তোমরা কখনো আমাকে অবহেলা ,অবজ্ঞা করতেই পারো না। আমি তো সবাইকে বলি আমার বৌদিভাই ,দাদাভাইয়ের মত এই পৃথিবীতে কারোর দাদাভাই ,বৌদিভাই হবে না ।সব সময় তোমরা এভাবে থেকো বৌদি ভাই।'
এবার দাদা তাড়ি দিয়ে বলল 'জানি ননদ-ভাবীর অনেক কথা জমে আছে ।রাস্তায় যেতে যেতে গাড়িতে শেয়ার করিস ।এবার তো যেতে দেরি হয়ে যাবে?'
শিখা বলল 'বৌদিভাই, আমি তোমার হাতে হাতে কাজ করে দিই ।'
শিখার বৌদি বলল 'একদম না ।শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কত কাজ করতে হবে ।এখন তোমাকে কিছু করতে হবে না ।নিজের সংসারে গিয়ে তখন করো।
তোরা ছেলে মানুষ ।তোরা একটু ভালো করে রেডি হ আমার তো এক্ষুনি হয়ে যাবে।'
শিখার বৌদি সব সময় ভাবে শিখার বৌদির যেন কত বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু বৌদিভাইয়ের তো সেরকম কোনো বয়সই হয় নি ?কোথায় একটু সেজেগুজে থাকবে তা নয়।'
শিখা বলেই ফেলল 'হ্যাঁ ,আমার বৌদিভাই তো পঞ্চাশ পেরিয়ে গেছে,।'
বৌদি রান্নাঘর থেকে বলে 'আর বাকি কি আছে রে ?আর কি জীবনের তো সবই সব শেষ হয়ে গেল। এখন তোদের মধ্যে দিয়েই সব আনন্দ উল্লাসগুলো দেখবো। মেলা বকিস না। এবার যা উপরে গিয়ে রেডি হয়ে নে ।উপরের দিকে তাকিয়ে বৌদি বলে 'দেখ ,একজনকে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে আছে ।(বৃষ্টির দিকে ইঙ্গিত করে। )সকলে একসঙ্গে হেসে উঠলো।
যথাসময়ে সকলে রেডি হয়ে গাড়িতে করে রওনা দিলো কৃষ্ণনগরের পথে ।রাস্তায় যেতে যেতে কত প্যান্ডেল ।আর বৃষ্টি যা দেখে তাই ওর ভালো লাগে। বায়না করে ' চলো না ,ওই পান্ডেলটা দেখে আসি।' 'বৌদি বলল 'প্যাডেল দেখলে হবে ?মামার বাড়ি পৌঁছাবি কখন?'
তার মধ্যে কয়েকবার বমি হয়ে গেছে। তবুও দু চোখে কৌতুহল।সারাবিশ্বটাকে যেন দেখতে চায়। সবুজ চোখে অনেক প্রশ্ন ,অনেক জিজ্ঞাসা? উত্তর খুঁজে পেতে চায়। '
এরমধ্যে শিখাও বমি করতে শুরু করল।
বৌদি বলল 'একটু চোখে মুখে জল দিয়ে নে। মেয়েটা বেশিদূর গাড়িতে ট্রাবল করলেই এরকম হয়।'
ড্রাইভারকে বললো 'গাড়িটা থামাও তো। জল নিয়ে শিখাকে চোখে মুখে দিল। ফ্রেশ লাগছে একটু?'
শিখা বলল 'হ্যাঁ বৌদি।'
বৃষ্টি তখন হেসে বলল 'তোমার ড্রেসটা কি হলো?'
শিখা বলল 'কী হয়েছে আমার ড্রেস ?'
বৃষ্টি বলল 'তাকিয়ে দেখো।সালোয়ারে একটু লেগে গেছে তাই?'
বৌদি বলে 'কিছু হবে না ।একটু জল দিয়ে দিচ্ছি দাঁড়া।'
শিখা অবাক হয়ে যায়, বৌদির কিছুতেই যেন কোন ঘৃণা নেই ,রাগ নেই ।এখনো কিভাবে আগলে আগলে নিয়ে যাচ্ছে ।নিজের শরীরটা ভাল কি মন্দ সেই হিসেবে একবারও করে না।'
শিখার দুচোখ দিয়ে জল পড়তে থাকে।
বৌদি ব্যাঘ্র ভাবে বলে 'কি হলো বল শিখা তোর চোখে জল কেন? আবার?'
শিখা বলে 'আর বোলো না বৌদি ভাই, এটা হচ্ছে তোমার জন্য ।তোমাকে হারানোর ভয় সব সময় মনে কাজ করে গো?'
বৌদি বলে 'বালাই ষাট আমি হারাবো কেন?
কেন তোর দাদাভাই কি নতুন করে আবার নতুন বৌদি আনবে নাকি?'
শিখা বললো 'বৌদিভাই ,ভালো হবে না কিন্তু ।দাদা ভাই সেই চেষ্টা করুক না ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবো না।'
দাদা হাসতে হাসতে বললো 'এই জন্যই তো তোর বৌদি ছাড়া ,অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাতেই পারি না।'
সবাই মিলে হো করে হেসে উঠলো।
বৌদি বলল 'শিখা তুই আমার কাঁধে মাথা রাখ জানলার দিকে বসে ।'
এরইমধ্যে গাড়িতে গান বাজছে ' আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুবতারা...।'
হাজারো প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে শিখার মনে ।কিন্তু একটা মনের মধ্যে আনন্দ রয়েছে ।বড় হয়ে শিখা এ প্রথম দাদার শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছে ।সেখানকার পরিবেশ সমস্ত কিছুর গল্প বৌদির কাছে শুনেছে। আজ নিজের চোখে দেখবে ।ভাবতেই মনটা কিরকম পুলকিত হচ্ছে । গ্রামীণ পরিবেশ ,গ্রামের ঠাকুর কি রকম হবে ?মনের ভেতরে একটা আলাদা রকম রোমাঞ্চ হচ্ছে ।এই ভাবনা নিয়েই আপাতত সে দিব্যেন্দুর ভাবনা থেকে অব্যাহতি পেল।
ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন"২৬ক্রমশ