রাত নয়টা,বাজে তৃষ্ণার রিংটোনটা বাজতেই অন করে বললো- বাসায় ফিরেছো?
- কখন,তুমি?
- আমি মার সাথে কথা বলে মাত্র ঢুকলাম রুমে।
-আমার গল্পের শেষ টুকু,আজ,বলবো
-না বললে হয়না।
-না সব জানাতে চাই তাতে,আমি,শান্তি ও স্বস্হি পাবো।
-বেশ বলো।
আমি একদিন না পেরে নীরার মাকে মেয়ের শরীর
খারাপের কথা বলে বাসায় আনালাম তখন উনাকে আমি বলি নীরা এমন করে কেন?
যখন শুনলাম নীরার বাবা সাগর কে সরে যেতে বলছে ওর জীবন থেকে সে নীরা না সরে গেলে নিজ ইচ্ছায় সে যাবেনা কিছুতেই
তখন নীরার বাবা ড্রাইভার আর দারেয়ান দিয়ে লাঠি
দিয়ে মারতে মারতে অজ্ঞান করে গাড়িতে করে কোথায় ফেলে আসে নীরা পারেনি আটকাতে
পরদিন প্রত্রিকায় খবর বের হয় সাগর কে কারা পিটিয়ে হত্যা,করে রাস্তার গারভেেজের সামনে ফেলে
যায় নীরা,এখর সহ্য করতে পারেনি, মানসিক ভারসাম্য হারায় তারপর থেকে ওকে ওর বাবা মেয়ে,বলে দিলে জেল খাটবে নিজে র স্বার্থের জন্য
ঘুমেরঔষধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে রাখতো যাতে নীরা মুখ না খোলে, নীরার মার ও কিছুই করার ছিলোনা ওর বাবা ছিলেো টাকার গরিমায় পিচাশ বাড়ির সবাই ভয় পেতো আত্মীয় স্বজন বন্ধুেদর বলতো বেশি পড়তে পড়তে মেন্টাল রোগী হয়ে গিয়েছে।
বছর খানিক পর নীরা কিছুটা স্বাভাবিক হলো তখন
আমার সাথে বিয়ে হয় আমার এক মামা ছিলো নীরার
বাবার বন্ধু উনি ও এতোকিছু জানতোনা তার ভিতর নারীকে যখম ঘুম পারিয়ে রাখতো তখন একবার ওর
হার্ট এ্যাটাক হয় তারপর থেকে চিকিৎসার উপরই আছে, ওর মা এসে প্রতিমাসে নিয়ে যেতো ডাক্তারের
কাছে।
নীরা কে আমার সাথে বিয়ে দেয় মিথ্যা বলে সাগর মরেনি বেচেঁ আছে সাগরের সাথেই বিয়ে দিবে
জানো বিয়ের রাতেই ওর অস্বাভাবিক আচরণ দেখে
আমাকে সাগর বলে জড়িয়ে ধরে বলে তুমি বেঁচে আছো। আমি বলেছিলাম আমি অপু সাগর নই ও বিশ্বাস করেনি। এমন প্রায়ই করতো নীরা
আমার মনটা খারাপ হয়েছিলো তারপর প্রায়ই ঘুমের
মধ্যে কাদঁতো আর সাগর সাগর বলে চেঁচাতোপ আমাকে জড়িয়ে ধরে,আমিও ঘুমের ঘোরে ওকে
প্রায়ই কাছে টেনে নিতাম।
বিয়ের এক বছর পর ও যখন প্রেগন্যান্ট হলো ডেলিভারির সময় জানলাম ওর হার্টে প্রবলেম আছে। অনেক চেষ্টা করেছে ডাক্তার বাচাঁতেপারেনি। হয়তো আমি আগে জানলে কেনদিনও ওরে পাশে ঘুমাতামনা ওর্ প্রেগনেন্ট ও হতোনা।
বুঝতে ও পারিনি ওর মা এতো কথা বলেছিলো হার্টের
কথাটা আমার কাছে ছাপিয়ে গিয়ে নিজে এসে প্রতি
মাসে চেকআাপে নিয়ে যেতো। ওকে আমি ভালোবাসিনি এসব শুনে ওতো আমাকে চায়না বাধ্য হয়ে আসতো, আমার খুব মায়া হতো তাই যতটুকু
পারি স্নেহ মমতা দিতে চেষ্টা করতাম বাবার কাছ থেকে মেয়েটা পায়নি কিছুই, বাবার বাড়ি যেতে
বললে ভয়,পেতো তাই অসহায় মনে হতো নীরাকে
মাঝে মাঝে মনে হয় হয়তে প্রেগনেন্ট না হলে ও হয়তো আরও কিছুদিন বাচঁতে পারতো।
তৃষ্ণা -তুমি যা করেছো মানবতা বোধ থেকে অনেক
করেছো ভাগ্যকে মেনে নিয়ে, ও এভাবেই চলে যাবে
বিধাতার লেখা ছিলো। দোয়া করি ওপারে যেনো ওর
সৈকতের সাথে মিলন হয়।
তোমার জন্যও আল্লাহ নিশ্চয় ভালো কিছু রেখেছেন
তোমার একটা চার বছরের সন্তান দান করেছেন
এটা কি পুরস্কার নয়।
অপু-তাই হবে আর পাচঁ বছর পর কেনইবা তোমার
সাথে আবার দেখা হলো, যাকে আমার হৃদয়ে রেখেছি
গোপনে স্বর্গীয় অনিভূতিতে, খুঁজিনি কল করিনি
ভেবেছি তুমি হয়তো ভুলে গিয়েছো তাই,বা অন্য কারো ঘরে,আমার জন্য তো বসে থাকবেনা
কি আশ্চর্য তুমি আমাকে ভুলোনি সরেগিয়েও এটা
আমার জন্য বিশাল পাওনা।
তৃষ্ণা-পৃথিবীর ঘরে ঘরে কত গল্প থাকে গোপনে নিভৃতে কেউ জানেনা। কত রকমের যন্ত্রণা দুঃখ কষ্ট
কত কি থাকে। কত নারী হারিয়ে যায় পিতা,ভাই,স্বামী সন্তানের কারণে।আবার কত পুরুষ ও আছে মানবতার কাছে নিজেকে সঁপে দেয়। এমন যদি সবাই হতো তাহলে কি হতো অপু, কেন সবাই একই মনের
মানুষ হতে পারেনা কিসের সন্মান, কিসের এতো
অহংকার।
অপু- জানিনা আমি নিজেও কিসের এতো বড়াই
দুইদিনের পৃথিবীতে।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much