২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

শ্যামল রায়




ভালোবাসার উঠোন চেয়েছি


এমন একটা ভালোবাসার উঠোন চেয়েছি

দাঁড়িয়ে বলতে পারি ,,তুমি কি করছো?

আমি জোর গলায় বলতে পারব

তুমি কেমন আছো ?আমার জন্য।

আমি ভালবাসার একটা উঠোন চেয়েছি

যেখানে শিউলি ফুল ছড়িয়ে থাকবে

দেখতে পাবো কখনো রোদ্দুর

বৃষ্টি ভেজা

শুধুই তোমাকে শুধু তোমাকে।

আকাশটা আরো নীল দেখতে চেয়েছি

ব্যস্ততার মাঝে তোমার ঢেউ চেয়েছি

আমি নদীর বা সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়াই

অপেক্ষা করি-----

তোমার চোখ দেখতে ।।

একটু উষ্ণতার জন্য

একটু বাতাসের জন্য

শ্বাস নিতে

একটা উঠোন চেয়েছি

শুধুই ভালোবাসার উঠোনে

শিউলি ফুলগুলো ছড়িয়ে পড়ুক।।




প্রথম তোমাকে ছোঁয়া


 

আমি প্রথম তোমাকে ছুঁয়েছিলাম যেদিন

শব্দ ছিল। ছিল পলাশ বকুল জুঁই 

নতুন রঙে রঞ্জিত হয়েছিলে

ইচ্ছে ছিল ডিঙ্গি নৌকোয় চেপে

বেড়াবে ঘুরে ঘুরে।

আমি সঁপে দিয়েছিলাম

জীবনের সবটুকু

ঘন কালো অন্ধকার মুছে দিয়ে

আলো বিন্দু খুজে নিয়েছিলাম

ছিল স্বপ্নে ঘেরা সিঁড়ি

সত্যের জয় গান।

আমি যতটুকু ছুঁয়েছিলাম তোমাকে

নির্ভেজাল ভালোবাসাটুকু দিয়ে

খুজে নিয়েছিলাম আত্মতৃপ্তি দুজন

দিন যেয়ে মাস ,বছরের পর বছর

তবুও মনে হয় স্বপ্ন হাঁটতে শেখেনি আজও

বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপের মধ্যে

স্বপ্নের ভালোবাসা

স্বপ্নের মেঘগুলো

ঘুরপাক খায়

 পাল্টে যায় কখনো কখনো।

অথচ ইচ্ছের যাতায়াত

এক একটা ভালবাসার ঠিকানা জানতাম

আজ যেন বকুল গাছের নিচেয়

প্রশ্ন একাধিক? সম্পর্কের বুনন এর কাছে

সযত্নে আদর কাঠফাটা রোদ্দুরের এর মতো

রাত  যতটা গভীর হয়

এসব ভাবনারা সেতু গড়ে

আমিও কখনো কখনো

জীবন বোধ খুঁজে নিতে

সচেষ্ট হই। কবিতার ঠোঁটে।

আমারও চুম্বন এঁকে দিতে

তুলি রংএ মন খারাপে ঢেউ হয়।

এখন বেশ বুঝতে পারি

প্রথম চুম্বনের পর

প্রথম ছুঁয়ে দেখার পর

কাটাকুটি খেলা

বড্ড সুখ ও কষ্টে

আমাকে লন্ডভন্ড করে আজ ও।




এ কেমন তোমার মন


এ কেমন তোমার মন

ভুলে ভুলে থাকো সর্বক্ষণ

এ কেমন তোমার মন

পড়েনা মনে একটু খানি

কতইনা স্মৃতিকথা।

প্রথম চুম্বনের কথা

কাছাকাছি আসা

আল ভেঙে সবুজ ছায়া খুঁজে নেওয়া

সবটাই কি বৃথা!

এ কেমন তোমার মন?

ছুটির বিনোদনে

কতইনা খুনসুটি

তোমার সম্মতি ছিল সর্বদা

আজ মনে হয় তোমার কি দশ হাত,

ভুলে যাচ্ছো ক্ষণে ক্ষণে

হৃদয় থেকে ঢেলে দেওয়া স্মৃতি কথা

কপূর হয়ে যাচ্ছে কেন?

অথচ তোমাকে ঘিরে আমার

স্বপ্ন দেখা ,তাপ নিয়ে বেঁচে থাকা

অথচ তুমি ভুলে থাকো কেন?

স্বাদবদল এ এসেছে কি কেউ?

তাই ভুলে থাকছো

আমাকে মরুভূমিতে শুয়ে রেখে?

এ কেমন তোমার মন,

হৃদয় নিংড়ে ভালোবাসা দাও

যতদিন বাঁচবো স্মৃতিতে তোমাকে রেখে।

শিপ্রা দেবনাথ ( টুলটুল)




নিস্তেজ


   

উঠোনের শিউলি গাছটায় রুক্ষতা ভর করেছে

গুমসুম ঘরে জীবনের বর্ণপরিচয় আগুনে ঝলসায়,

প্রিয় কুলিক নদী সেও কোমলতা হারিয়ে

ঘন কমলা রং ধারণ করেছে,

দুচোখে বন্যা নিয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে।

উইপোকায় কাটা জীবনগুলো কেমন 

ঘ্যান ঘ্যান প্যান প্যান করে চলছে,

ভাত ফোটার গন্ধও ওদের মনকে আর নাড়া দিয়ে যায় না,

সূর্যের বুক ওমহীন নিস্তেজ

আবেশী নরম ঠোঁট জোড়া এখন খরখরে,

তাতে বসন্তের আবেদন নেই।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান




স্বপ্নকথা


কি কথা বল‌বো বল‌বো ক‌রে আর তা হ‌লো না বলা,

হঠাৎ ক‌রেই কেন যেন এ‌লো‌মে‌লো হ‌য়ে গে‌লো তা।

সকা‌লের আ‌লো‌তে মনটা‌ অ‌নেক স্বপ্ন দে‌খে‌ছি‌লো,

দুপু‌রের রো‌দের তে‌জে ম্রিয়মান হ‌য়ে স্বপ্ন হারা‌লো।

বি‌কেলে ‌ঐ স্বপ্ন‌টি ম‌নের কোনায় জড় হ‌লো সহসা,

জা‌নিনা রা‌তের অাঁধা‌রে ‌সেই স্বপ্ন‌টি পালা‌বে কোথা!

নি‌শ্চিৎ ত‌বে স্বপ্ন জা‌গে স্বপ্ন ভা‌ঙ্গে স্বপ্ন ফি‌রে আ‌সে,

এটাও জা‌নি স্বপ্ন এক‌দিন বাস্ত‌বে রুপ নে‌বেই নে‌বে।

সুরজিৎ ব্যানার্জী




হেমলক 



'ভালোবাসা' শরীরের  তাঁবেদারি শোক

বুকে তার "প্রেমিক-এর কর্মী নিয়োগ"

মুগ্ধ গোপন ছিল তাতে আমি দায়ী

ফালতু মেসেজে  বাঁচি শর্তানুযায়ী 


জানতাম সেও খুব ঠোঁটকাটা, জেদী

তবু আশা পুষে রাখা স্বপ্ন কয়েদী

তার কাছে প্রেম মানে দৃশ্য প্রবাহ

স্মৃতি জুড়ে অপলক যাখুশি যাহোক


অথচ গুজব ছিল  চোখের পিপাসা

কেউ তো এবং  বলে  যন্ত্রণা ঠাসা

তার চোখে নিশানাতে মিইয়েছে ঠক

বিশ্বাস মুখে রাখি ঠোঁটে হেমলক


হ্যাংলা আয়নাগুলো সায় দিতে থাকে

মনের আকুতি মেনে ভালোবাসি তাকে

সে কোনো দুঃখ পেলে আমি নিজে দোষী 

কেঁদে কেঁদে হয়ে উঠি মনের বয়সী


গোঙাতে গোঙাতে ফের তাকেই তো ডাকি

কিছু আসে অবয়ব কিছুটা পোশাকি

তার সে চুমুক ছিল রক্তেতে মিশে

আমার তো যথারীতি ফিরে যাওয়া নিষেধ


পুনরায় বেঁচে ওঠা ভালোবাসা বিষে ।

রেবা রেবা




যায় একাকিবেলা বয়ে যায় রে



আয় মনের পথ দরে আয় রে

যায় একাকি বেলা বয়ে যায় রে,

যানিনা কোন সে দূরে থাকে

এমন করে বলে যায় বারে বারে।


ভালো লাগেনা  কোন কিছুই

ঘুমের চোখে কিযে এলোমেলো

স্বপ্নে দেখিছি যারে পাব কি তারে?


একটি জীবন আমার একটি স্বপ্ন

একটি চাওয়া সে শুধুই 

তারি ভালোবাসা পাওয়া।


স্বপ্ন দেখি সাধনা করি

অপেক্ষার প্রহর গুনি উদ্দেশ্য 

সুধুই তাহারে আপন করে পাওয়া।


আমার ভালোবাসা দেহ মন

তাহারি জন্য করে দিতাম বিসর্জন। 

তাহার চোখে জমা বিষাদ টুকু

এক নিমেষেই মুছে দিতাম

কষ্ট গুলো আর পারতোনা 

তাহারে অকারণে কষ্ট দিতে।


আয় মনের পথ ধরে আয়রে

যায় একাকিবেলা বয়ে যায় রে।

তরুণকুমার পাল




 চন্দ্রিমা প্রেম



মনে লাগামছাড়া ভালোবাসার গতি-

মেলেছে অনন্ত অম্বরে রঙিন পাখনা,

ধুকপুক ধুকপুক দ্রুততম হৎস্পন্দন-

আজ আর সে কোথাও বাঁধা পড়ে না-

মানেনা কারো কোন অনুশাসনের বন্ধন-

হয়তোবা সুখের সন্ধানে কোন ঠিকানায় ?

এ মন খুঁজে পায়-খুশির খুশবু সোহাগি রেণু -

সারা অঙ্গে প্রাণ ভরে-মেখে নিতে চায়,

হিয়ার আবেশে গীত সুরের গুঞ্জরণ,

তারই মাঝে উঁকি মারে চুপিচুপি মান অভিমানে মাখানো খুনসুটি

ও রূপে বিভোর তবুও আঁখি দুটি, 

উতলা- দুরন্ত, ভরা যৌবনের ঢেউয়ে 

নিমজ্জমান, এক মোহনিয়া চন্দ্রিমা প্রেমে।

ভালোবাসার বাকি কথা,সযত্নে আছে রাখা 

স্বপ্নময় অন্তরের মোড়া নীল খামে।

ড,সৈয়দ আজিজ।




মানুষ



সেদিন রমনা পার্কে এক অপরাহ্নে 

ঘুরছিলাম উদ্দেশ্যেবিহীন,আনমনে 

সবুজের ছায়াঘের মায়াঘেরা পথে 

হঠাৎ পড়ল চোখে কোথা হতে 

এক লীলাসঙ্গিনী কিংশুক বৃক্ষতলে 

যৌবন রসের বহ্নিশিখায় লীলাচ্ছলে 

বসে খাচ্ছিল গান বেসুরে দোলে দোলে,

এক শীর্ণ শুভ্র সদ্যযাত শিশু কোলে 

অনুসন্ধানী চোখে ভীড়লাম কাছে সন্তর্পণে

কী জানি কী ভাবে,যদি দেখে পরিচিত জনে?

পসারিনী শিশুকে চামচে দুগ্ধ করাচ্ছিল পান

পরম তৃপ্তিতে,যতনে আগ্রহে সঁপে প্রান 

মনে ভাবি জারজ শিশু তবুও তো জন্মদাত্রী মাতা

তাই বুঝি দারিদ্র্য  পরিচর্যায় নেই কোনো কার্পণ্যতা 

প্রশ্ন করি অবহেলা ভরে, নিয়ে অভিঘ্য ভাব 

চামচে কেন? তোমার বুকের দুধের কি অভাব?

 শুধালো সে এ শিশু আমার নয় বটে 

বান্ধবীর, এর জন্মলগ্নেই মাতৃমৃত্যু ঘটে 

এখন ফেলি কোথা?তুলেছি আপনার কোলে 

মাতৃ হীন শিশুসন্তান তাই বেঁধেছি যে অঞ্চলে 

জিজ্ঞাসি মায়া ভরে,অসুবিধা হবে না তাতে?

শুধালো সে কে নেবে দায়িত্ব এই অনাথে?

দেশ,সমাজ,সরকার, আপনি না কোনো দলে?

তাই অনাথেরে নিয়াছি নিজ কোলে, তরুতলে 

 আপনাদের মতো আমাদের নেই সামাজিক সন্মান

আমরা, অচ্ছুত, অমানুষ, সাহেব এবার আপনি যান।

মোহাঃ হাসানুজ্জামান




দহন বেলা


আমার স্বপ্নটা অনাকাঙ্খিত

যেন চোরাবালির জালে আবদ্ধ,

তবুও শিহরিত নয় আমার হৃদয়

জানি সব স্বপ্নয় বড় মায়াময়।


মনের মাঝে বৃস্টিস্নাত সুশীল গগন

নিদ্রাবিহীন নিশীথে যদি হয় তার আগমন,

অবসাদ গ্রস্থ আমি আছি প্রতীক্ষায়

আঁধারে ডুবেছি সদা মন নিয়ে ঠাঁই।


আমার আনুভূতিতে উষ্ণ আয়োজন

তাত্বিক প্রেমে যেন ভাতৃত্বের উদয়ন,

আকাঙ্খা করে যেন আত্মচিৎকার

নিঃস্ব স্বপ্ন আমার করে হা হা কার।


হৃদয়ের গহীনের আকাঙ্খা হবে কি ধুলিস্মাৎ ?

নাকি হবো আমি সগৌরবে অগ্রসর,

প্রতীক্ষায় স্বপ্নের মালা বুনছি আজো

আকাঙ্খিত সব আশা কি থাকবে অধরাই ?


পরিবর্তিত হবে কি আমার ভগ্ন হৃদয়

পারব কি আমি এ সংগ্রাম করতে জয় ?

আছে মনে যদিও দৃঢ় বিশ্বাস

হবে নিশ্চিত নতুন সূর্য উদয়।


স্বপন কুমার ধর




হাঁটা


সময়ের মত নিয়ম মেনে,

সেকেন্ড, মিনিট, ঘন্টা ধরে,

জীবনকে নিয়ে পারিনি এগোতে,

চলেই চলেছি নিজের গতিতে।


পথে জল,মাটি,কাদা,

এসবের মধ্যেই তো হাঁটা।

হয়তো বা ঠিক,কিংবা বেঠিক,

জীবনটাই যে সাদামাটা।


পূর্ণিমার জ্যোৎস্না রাতে,

হেঁটে হয়েছি আত্মহারা।

অমাবস্যার ঘন নিশিতে,

কেবলই যে পথহারা।


ধরার মৃদুমন্দ বাতাস,

ছড়িয়ে দিয়ে নিজের সুবাস,

এগিয়ে যেতে সাহায্য করে,

সুদূর পথ হাঁটার তরে।


জন্মলগ্ন থেকে সবাই আমরা,

কেবলই হেঁটে চলেছি,

জীবনের সীমানা পেরোলেই জানব,

হাঁটা শেষ করেছি।