২৭ নভেম্বর ২০২০

পরাণ মাঝি



বাকি 


আজ আবার নতুন করে বর্ণমালা শেখালে 

সত্যি তো ডিগবাজি খায় লি - কার


বোঝা গুলো নেমে গেল ফাঁকা মাঠের দিকে


সঞ্চয় বড় সম্পদ 

আর তাকে রক্ষা করা আরো বিপদ 


আরো আরো অনেক পথ বাকি

আরো অনেক অনেক হাঁটা বাকি 


ভাবনা গুলো খুঁটে খায় জীবনের পাখি 

পথ তো তার মতো - সে কখনো সোজা হয় নাকি ?

রাহুল ঘোষ এর মুক্তগদ্য পড়লেই মন কেমনের গল্পঃ (পড়তেই হবে)



পুরোনো খসড়া থেকে

*১*.

রোগশয্যায় উবু হয়ে মেঘ ও মনকেমন লিখতে গিয়ে মনে পড়লো, এই লেখা দেওয়ালে লাগালেই আবার ঠাট্টার ঝড় উঠবে! তোমার সঙ্গে সেই গজব তামাশায় যোগ দেবে কাকেশ্বর কুচকুচে। অট্টহাসে মাতবে পুরোনো এবং নতুন হরিদাস পাল। অতএব আমি একটা রাগী লেখা লিখবো! কিন্তু রাগী লেখাটার জন্য একটা নিশ্ছিদ্র রাত চাই। আমি এখন সেই রাতের সন্ধানী।


বিনিদ্র রাতেরও নিজস্ব উদযাপন থাকে। রাতের বুক চিরে ধাত্রীশহর যাওয়ার ট্রেন থেকে শুধু সেই উদযাপন দেখবো বলে আমি জায়গা পাল্টে একটা সাইড-লোয়ার বার্থে চলে যাই। রাতের প্রকৃতি খুব মন দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, কী এক আশ্চর্য খেলা! বুঝে গেলে আফশোস হতে পারে, কতটা সময় আমরা ঘুমিয়ে নষ্ট করি! হু-হু হাওয়া আর একের পর এক জনহীন স্টেশন পেরোতে-পেরোতে মনে পড়লো, কয়েকদিন আগেই একটা কবিতা-বই রিভিউ করলাম। নিরালা জংশন। বইটাও যদি নামটার মতো সুন্দর হতো! কিন্তু নাম তো বইয়ের মলাট। নাঃ, ঠিক বললাম না! নাম আসলে বইয়ের মুখের মলাট।


মুখের প্রসঙ্গে মনে পড়ে, নিজের 'মায়া-মায়া' মুখটাকে খুব অপছন্দ হচ্ছে ইদানীং! নার্সিসাস নই, কিন্তু মুখটাকে বেশ পছন্দই করতাম। কিন্তু এখন থেকে আমি নিজের একটা চালাক-চতুর মুখ রাখতে চাই। চশমার আড়ালে চাই মানানসই দুটো ধূর্ত চোখ। ওদের যেরকম আছে। ওটাই এখন দস্তুর। অর্ডার অফ দ্য ডে!


আজকাল অনেকেই বলে, দেওয়ালে লেখা লাগাতে নেই। এরকম ভুলভাল লিখলেও, না! লেখা চুরি হয়ে যায়। এমনকি বাক্যও! এমনকি শব্দও! এমনকি ভাবনাও! আমারও তাই মনে হয়। কিন্তু এটা আর লেখা হলো কই! বড়োজোর খসড়া। লেখা আর কাটা। কাটা আর লেখা। শেষমেশ শুধুই কাটা আর কাটা! কুচিকুচি করে। এইসব কাটাকুটি চুরি গেলে, যাক। যানে ভি দো ইয়ারোঁ! রাগী লেখাটা না-হয় পরে একদিন লিখবো। ওই কথাই রইলো তাহলে। চলো, ডান!


*২*.

ঘড়িতে তিনটে-চল্লিশ মানে 'বিফোর টাইম'। রাতের অন্ধকার চিরে ঝলমলে প্ল্যাটফর্মে রেখে দিয়ে গেল ট্রেন। আরও যারা নেমেছিল, তারা সব গেল কোথায়! একটু আগেভাগেই এসে পড়েছি, ধাত্রীশহর। এখনই ঘরের দিকে যাওয়ার কোনো মানে হয়! আমি বরং আরও কিছুক্ষণ রাতের অকপট রূপ দেখি। 


আমি স্টেশনের ভিতরে দাঁড়িয়ে কফি খাই, স্টেশনের বাইরে গিয়ে সিগারেট। খবর-কাগজ ছেপে নিয়ে আসতে শুরু করা গাড়িগুলো দেখি। তাদের কাছে নিজেদের ভাগ বুঝে নিতে হকারদের কী ব্যস্ততা! কালকেই কিন্তু এই কাগজগুলো ঠোঙার সমান হয়ে যাবে! আমি একমনে ওদের একদিনের আয়ু দেখি। এত রাশিরাশি অক্ষরের অপচয় দেখি। 


অপচয় অবশ্য চরাচরের সর্বত্র আছে। গমরঙের চড়াই-উতরাই থেকে আকণ্ঠ শুষে নেওয়া আলোর সব স্বাদ আমার লেখায় অজস্রবার আসে। আসতেই থাকে। সেও তো একরকমের অপচয়! অক্ষরের নয়; অনুভূতির। কারণ, তারপরেও যেমন চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকে এই আদিগন্ত, তাকে অন্ধকার ছাড়া আর কোনো নামে ডাকা যায় না। তবুও আমার তো চিরকালই 'বেচারা দিল ক্যায়া করে, সাওন জলে, ভাদো জলে'! 


ঋতুর কথা এল যখন বলি, নকল হেমন্তজাতকে ভরে গেছে পৃথিবী। মুখোশেরা সহজেই মানুষের রূপ ধরে থাকে তাই। মিথ্যার ব্যক্তিগত কুহক নিয়ে বেঁচে আছো ভ্রান্ত মানুষ! তবুও আমাদের যাবতীয় ছয়-নয় এবং নয়-ছয়ের দিব্যি, মুখোশদের ধারেকাছে তুমি যেয়ো না কোনোদিন। 


সকালের আলগা পায়ের শব্দে ঘুম আসে, কিন্তু ঘোর ভেঙে যায়। এখানে শহর জেগে উঠছে। ভোরের প্রথম ডাউন ট্রেন ঢুকবে এখনই। মর্নিং-ওয়াকারদের সঙ্গে পা মেলাবো আজ? নোটবুকের এই পাতাটিকে মুড়ে রাখবো। দূর থেকে আশা ভোসলে আবার ভেসে আসবেন, 'আসবো আরেকদিন, আজ যাই'!

প্রেমাংশু শ্রাবণ কবির



পদ্যবীজ

যে-দিন প্রেমের সঙ্গে থাকি 

পাল্টে নিই ঘুম সংজ্ঞা , 

ঘুণে ধরা রতিব্যাকরণ।


আমার অনন্তে তুমি 

তোমার অনন্তে আমি 

দেহ জলে ডুবে আছে---

ঝরে পড়া মন। 


ভুলে গেছো, যাও...

তবু আছে একটা ছোট্ট দায়, 

মনে রাখা শেখালে যখন 

এবার শিখিয়ে দাও 

ভোলার উপায়।

মধুমিতা রায়



সে


সেই ছেলেটা ভীষনরকম আবেগপ্রবণ

কঠিন খোলে ঢেকে রাখে নরম শরীর

সেই ছেলেটা একগুঁয়ে আর বড্ড সরল

বুকের মধ্যে লুকিয়ে রাখে কষ্টপ্রহর।


সেই ছেলেটা ইচ্ছে করে শুধুই ক্ষেপায়

ইচ্ছে করে বানিয়ে বলে গল্পকথা,

চোখের তারায় ঝিলিক ভরা দুষ্টুমি

সেই ছেলেটা ভীষন পচা, এক্কেবারে যা তা।


সেই ছেলেটা সত্যি ভালবাসতে পারে,

সত্যি পারে জিতে নিতে সব বাজি,

নিঃশব্দেও বলতে পারে সবকিছু

হয়ত সবই গভীর চোখের কারসাজি!


যাদুর কিছু ব্যাপার স্যাপার তার জানা

আঙুল ছোঁয়ায় ঝরায় কিছু শিউলিফুল

ঝুঁকে পরা চুলের ভাঁজে ভাঁজে

জমিয়ে রাখে মেঘগন্ধী মন ব্যাকুল।

অর্কদীপ সরকার



ব্যর্থ এ শৈশব


ঘাসের বুকে পা রেখে আকাশ পানে চেয়ে থাকা

বৃষ্টিভেজা শীল কুড়ানোর অনুভূতিরা বড্ড ফাঁকা।।


পুকুরঘাটে জলের বুকে দস্যি শিশুর উঠতো ঢেউ

অনলাইনে ক্লাস আছে যে, পুকুর ঘাটে যায় না কেউ!!


বিকেল বেলায় একটু খেলা কংক্রিটের ওই দালান টায়।

ছটার সময় ড্রয়িং আছে, তাড়াতাড়ি আসা চাই।।


মোবাইলের কীপ্যাডে ক্রিকেট আর ফুটবল

একলা ঘরে আটকে আজ নজরুলের তরুণ দল।।


পশ্চিমের অস্তাচল, বাসায় ফেরা পাখির ডাকে।

বঞ্চিত অনুভূতি! রবি, রুশোরা বইয়ের পাঁকে!!

নীলাঞ্জন কুমার



না হয় হলো সাদামাঠা কবিতা 

মেগা সিরিয়ালের মতো সাদামাঠা  কবিতার 

ভেতরে ছুটে আসে হাজারো কৌতুক , 


তা পড়ে নারীদের চাবুক অনুপ্রেরণা , 

পুরুষের ভেতরে উপেক্ষার শেড।


খাওয়া শোওয়া কামনার ভেতরের 

সহজ দিক জাপটে ধরলে 

কেন যে দমবন্ধ লাগে !


না হয় এলো সাদামাঠা কবিতা 

অন্তত একটি, কোন উদাসীন চাহিদায় ; 


হরেক দৃশ্যের থেকে প্রকৃত দর্শন 

নাই বা হল উচ্চারণ !


মাখো মাখো হাততালির ভেতরে 

অন্ততঃ একটু দুঃখ ছোঁয়া থাক।

ওয়াহিদা খাতুন


চাই সাম্যের অধিকার

ক্ষমতার সমতা হোক ন্যায্যের দাবি,

আর্য-অনার্য মিলে সবাই করি পণ,

মনুষ্যত্বের হাতে আসুক যক্ষ-চাবি;

ফসলের ভাণ্ডার হোক সম বন্টন,

কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ নয়--মন করো সাদা--

বিত্ত-ভৃত্যের পার্থক্য অনেক তো হলো;

বন্ধু,অন্তর দহনে আর নয় কাঁদা--

সবাই হেসে বাঁচবো উচ্চ শিরে বলো;


পুত্র-কন্যা,অজ্ঞ-বিজ্ঞ,সব তাঁর দান--

 জাতি-ঈর্ষা,উচ্চ-নীচ মুছে দাও ভাই-- 

নিছক ক্ষোয়াচ্ছ কেনো মানব কল্যাণ?

মনুষ্যত্বের উপরে আর কিছু নাই;


ভুলে যাও বৈষম্য সাম্যের করো জয়--!

মুক্তচিন্তায় বিশ্ব,হোক আলোকময়--!!



রচনাকাল:--২২/১০/২০২০ দুপুর ১টা ৩ মিনিট! (সনেট নং ৩০)

শাহীন রায়হান



একলা কাঁদে

একলা কাঁদে দোয়েল আমার

জুৃঁই চামেলি পাতা বাহার

জংলী পুকুর পাড় মেঘনা নদীর ধার

খুকুর প্রথম পাঠ

ছোট্ট গাঁয়ের হাট।


একলা কাঁদে ফুল পরী গাঁও

জোনাক পোকা পাল তোলা নাও

একটি তারা জলের ধারা

মেঘনা নদীর ঘাট

শেষ বিকেলের মাঠ।


একলা কাঁদে স্মৃতিগুলো

প্রজাপতি পথের ধুলো

মনটা আমার সোনা ধানে 

দোয়েল পাখির গানে গানে

ছোট্ট সবুজ গাঁয়

হারিয়ে যেতে চায়।

মনোয়ারা পারভীন


হেমন্তকাল

কার্তিক মাসে হেমন্তকাল

ঝরে গাছের পাতা,

আবছা শীতে সবার ঘরে

লাগে কিন্তু কাঁথা।


সকাল বেলা শিশির ভেজা

সবুজ দূর্বা ঘাসে,

চাদর গায়ে হিমেল হাওয়া

পূর্ব থেকে আসে।


বিলে ফোটে পদ্ম শাপলা

রাতে জোনাক পোকা,

দেখতে লাগে অনিন্দ্য সব

না দেখলে খাই ধোঁকা।


ঋতুর রাজা হেমন্ত কাল

নবান্ন যে আসে,

ঘরে ঘরে পিঠাপুলির

বাহার চোখে ভাসে।


পুলি ভাপা চিতল পাঠি 

কত রকম পিঠা,

দাদীর হাতে তৈরী পিঠা

খেতে লাগে মিঠা।


হেমন্তকাল শীতের আমেজ

নিয়ে ধরায় আসে,

হিমের হাওয়া বয়ে চলে

বাড়ির আশে পাশে।

দেবব্রত সরকার



হৃদয়শ্যাওলা 


দেখেছ লিখেছি কখনো কবিতা বলেছো কি তাকে একা 

আমিও কেমন হেরেছি একাই হারেনি তো তার দেখা 

সবুজ রাঙানো জলজ শ্যাওলা খেলছে কি একা জলে !

হৃদয়ে ছলকে শ্যাওলা গোপনে শুনেছে যে যায় বলে


তবুও আঘাত জড়িয়ে ছড়িয়ে বিষাদে কি ঢাকে মুখ 

আমার ঘরেতে ন"জন শুয়েছি  একলা তো নয় দুখ 

একলা তোনয় আমার প্রেমিকা দেখছো কি তাকে শুনি !

তোমার উপরে প্রেমের প্রলেপ দিয়েছি জানো কি তুমি 


যদিও জানলে জানার কথা না তাহলে কি তবে রূপ 

রূপের ঝলকে ঝলসে আঁধার হৃদয় যে হয় চুপ 

হাসছে পথিক আপন খেয়ালে হেসেছে কি একা একা 

দেখিনি তো তাকে একাই হেসেছে গোপনে যে কাঁদে দেখা

 

পথিক পথের ওপরে হারিয়ে ফেলেছে যে তার ঘর 

এপথে নজর দিয়েছে পথিক পৃথিবী তো নয় পর 

পথিক দিয়েছে পথের ঠিকানা সকলে কি বুঝে পাবে 

আপন খেয়ালে দিনের গুনতি গুনিয়ে সে চলে যাবে


পথিক খাবেনা খেতেও চায়না খাবার সে দিয়ে যায় 

আমরা যখন খাবার খেয়েছি খুশিতে সে ভরে যায় 

নিজের নামটা শুনতে চেয়েছে এটাও কি তবে ভুল 

মানব জনম আসেনা সহজে পথিক কি তবে মূল ?

 প্রাণকে এনেছে আপন ক্রোধেতে করেছে যে রিপু দান 

রিপুর জ্বালাতে মানুষ হেরেছে সত্যের কি বদ নাম 

পথিক চেয়েছে পথের ঠিকানা দিয়েছে যে এনে য্প 

যেজন মানুষ হয়েছে মনন বরণে সেজন তো করে তপ্