টানাপোড়েন (৩২)
বৃষ্টিভেজা দুপুর
রেখা কত কিছু ভেবে রেখেছিল পুজোটা খুব এনজয় করবে। রিম্পাদির আসার কথা ছিল বাড়িতে। একদিনের জন্য এসেছিল।রিম্পাদি আসার দিন টা আনন্দে কেটেছে এতসব বিশৃঙ্খলাতার মধ্যেও।
বাড়িতে তুমুল অশান্তি। একদিকে মিলি(স্ট্রীট ডগ) ওর বাচ্চা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে। রেখা ও মনোজ এক চুলও বাড়ির এদিক ওদিক হতে পারে না। তাহলেই কপালে ওদের কষ্ট । সুরঞ্জন ফোন করেছিল পুজোতে যেতে । কিন্তু পারে নি। অন্যদিকে যৌথ সম্পত্তির টানাপোড়েন। রেখার শ্বশুর মশাইকে ঠকিয়ে ,জ্যাঠাশ্বশুর সব নিজের এবং তার সন্তানদের নামে যৌথ সম্পত্তি দখলে রেখেছেন। তাই রোজ অশান্তি। এরমধ্যে মিলির বেবি হওয়াতে ওদের কাজের লোকগুলোকে অব্দি এমনভাবে শেখানো হয়েছে, যাতে মিলিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় ।রেখা শুধু ভাবে এরা আর কত নীচে নামবে । মিলির সিঁড়ির নিচে বাচ্চাটা হওয়াতে । বাচ্চাগুলোর চোখ না ফোটায় সিঁড়ির নিচেই থাকবে। ।কিন্তু অজুহাত দেখিয়ে মিলিকে বের করে দেবার ওরা বাহানা খুঁজছে। যেহেতু মিলি বাচ্চাগুলোকে আগলে রাখে ,কোন ব্যাগ পত্র দেখলে বাচ্চাগুলোকে চুরি করে নিয়ে নেবে ভেবে 'ও' ঘেউ ঘেউ আওয়াজ করে ।কিন্তু যারা নিয়মিত চলাচল করছে ,তাদের কিন্তু কিছুই বলে না ।অথচ সেদিন পদিপিসি,কাজ না করে বাড়ি চলে গেছে।
আর রেখার জা , যা চিৎকার করে বলছে 'এখন আর মানুষ নয় বুঝলে,কুকুরের বাড়িঘর হয়ে গেছে।'
(ফোড়ন কেটে কথা বলছে)। এর জন্য কেউ বাড়িতে ঢুকতে পারবে না। বাসনপত্র রয়েছে ,কে মাজবে ?বাসি উঠোন কে ধোবে?
'অনেকক্ষণ চিৎকার চেঁচামেচির পর ,কেউ কোনো সাড়া দেওয়াতে । চুপ করেছে।
মনোজ রেখাকে এসে বলল 'মাথা ঠান্ডা রাখ। এখন যে করেই হোক এই দিনগুলোকে পার করতে হবে ।পরে ওর ঘরের ব্যবস্থা করা হবে।''
কিছুক্ষণ পরেই রেখার জা (রীতা ) হন্তদন্ত হয়ে রেখার দিকে ধাবিত হল।মনে হলো মৈনাক পর্বত ছুটছে।ইন্দ্রজিৎ যেমন রণ সাজে সজ্জিত হয়ে রামচন্দ্রকে বধের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল, ঠিক তেমনি।
রেখাকে এসে ডাকছে 'রেখা রেখা।।
রেখা রান্নাঘরে রান্না করছিল, শুনে সাড়া দিল "কি দিদিভাই?'
রীতা বলল ' একটু বাইরে এসো।'
রেখা বলে ' হাতটা ধুয়ে আসছি।'
আঁচলে হাত মুছতে মুছতে রীতা সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো ' কি বলছো, বলো?'
'রীতা বলল 'পদিপিসি মিলির জন্য কাজ না করে চলে গেছে । 'এখন এইসব কাজকর্মগুলো কে করবে বল?'
রেখা বলল-'কেন ?মিলি কি করেছে?'
রীতা বলল ' কি করে নি বলো? (দুই হাত তুলে দেখালো) ঘেউ ঘেউ করে বাড়ি মাথায় তুলে নিয়েছে। পদিপিসি ভয় পেয়ে গেছে।'
রেখা বলল 'পদিপিসীকে তো মিলি চেনে। ওনাকে তো কিছু বলার কথা নয়। আর যদি ঘেউ ঘেউ করেই থাকে। তাহলে ,আমাদেরকে ডাকতো ।সেটা করলেই তো হতো। চলে যাবার কি আছে?"
রীতা বলল "অত কথা তো আমি বাপু বলতে পারব না। তবে এখন কাজগুলো কে করবে?'
তখন রেখা বাধ্য হয়ে বলল 'ঠিক আছে ।সে বাসি উঠোন ধুয়ে দেবে ।তাহলে তো কোন অসুবিধা নেই
এই কথা বলার পর রীতা চলে গেল।'
আসলে এইভাবে রেখাকে জব্দ করছে। মিলি যেহেতু সদ্যজাত মা।সন্তানের প্রতি সবসময় একটা নিরাপত্তার দায়িত্ব ওর ওপর। মায়েরা সন্তানের জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিতে পারে ।তাই সে অবলা জীব হলেও তার মাতৃত্বকে অস্বীকার করা যায় না ।সেজন্যই বলা হয়েছিল কোন অসুবিধা হলে রেখা বা মনোজকে ডাকতে। কিন্তু তা না করে বাড়ি চলে গেছে। আসলে এগুলো যে পুরোটাই নাটক ,তা বুঝতে অসুবিধে হয় নি রেখার।
নানা কারণে একটা কি রকম যেন একটা বিশৃংখল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ।বাড়িতে রেখার মনেও বিন্দুবিসর্গ শান্তি নেই। মনোজের সঙ্গেও চলছে একটা যেন টানাপোড়েন ।আগামীকাল লক্ষ্মী পূজার প্রস্তুতি। রেখা কালবিলম্ব না করে নিচে গিয়ে উঠোনটা ধুয়ে দিল। আর উপর থেকে জেটি শাশুড়ি, রেখার জা ,ভাসুর সবাই দেখতে লাগলো আর হাসতে লাগল নিজেদের মধ্যে।
রেখার একটুও কষ্ট হয় নি। জানে সে যা করছে একটা অবলা জীব এর জন্য করছে।তা যে যতই বদমাইশি করুক না কেন? তবে মনে মনে সবসময় মনোজের কথাটাই ভাবছে। আজকাল কি হয়েছে কে জানে?
ওর কি কোন অফিস সংক্রান্ত সমস্যা চলছে ?সেটাও তো শেয়ার করে নি ।'
হঠাৎ করেই মনোজকে লক্ষী পূজোর ফর্দ ধরিয়ে রেখা বলল 'এই ফর্দটা রাখো। বাজার করতে হবে।'
মনোজ চিৎকার করে বলল 'তোমার কবে আক্কেল হবে বল তো ?যখন তখন যা কিছু ধরিয়ে দিলেই হলো।আমি যেতে পারবো কি পারবো না ,সেটা একবারও মাথায় আসলো না।'
রেখা তো হতবাক। ফ্যাল ফ্যল করে মনোজের দিকে তাকিয়ে শুধু বলল 'আমি বুঝতে পারি নি।'
মনোজ বলল ' কবে বুঝবে তুমি আমাকে ?তোমার তো ওই একটাই কথা ।বুঝতে পারি নি। ভাগশেষ।'
রেখার চোখ দিয়ে জল পড়তে লাগল টপটপ করে আর কোন কথা বলল না। সে শুধু ভাবতে লাগলো
অকারণে অনেক কথা শোনাল ।রেখা ভীষণ কষ্ট পেয়েছে ।
রেখা ভাবছে 'ও কি করেছে? বাড়ির পুজোর জন্য ই ফর্দটা ধরিয়েছে ।এত চিৎকার করার কি আছে ?এটাই তো বুঝতে পারছে না।'
শেষ পর্যন্ত রেখাকেই লক্ষ্মী পূজার ফর্দ নিয়ে যেতে হয়েছে বাজার করতে।
ভেতরে ভেতরে সব সময় একটা কষ্ট রেখার।এতদিনের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম মনোজ রেখার প্রতি এতটা রিয়াক্ট করল ।রেখার কি অপরাধ নিজেই বুঝতে পারছে না ।বারবার নিজের আত্মসমালোচনা করছে কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না কোনো হদিস ।এইসব ভাবনা চিন্তা মাথায় নিয়ে সন্ধ্যেবেলাটা একটু বসেছে ,কিভাবে কি জোগাড় যন্ত্র করবে?পুরোহিত মশাইকে খবর দেয়া ,ফোনবুক ঘেটে ঘেটে নম্বর জোগাড় করে তাকে ফোন করা। এর পর ঢাকওয়ালাকে খবর দেয়া। সমস্ত কিছুই কন্টাক্ট করেছে রেখা। বড্ড ক্লান্ত লাগছে রেখার। বরাবর মনোজ এই সমস্ত কাজ গুলো করে। মনোজের যা মেজাজ বিগড়ে আছে ,ধারে কাছে যেতেই রেখা সাহস পাচ্ছে না। এর ই মধ্যে রাত সাড়ে দশটায় হঠাৎই ফোন।রেখা ফোন রিসিভ করে ক্লান্ত স্বরে বলে 'হ্যালো'।
ওপার থেকে কণ্ঠ ভেসে আছে 'আমি বড়দি বলছি রেখা।'
রেখা এবার বালিশ ছেড়ে উঠে বসে ধড়ফড় করে। আর মনে মনে ভাবে হঠাৎ বড়দির ফোন?
রেখা বলল 'হ্যাঁ দিদি ।বলুন?'
বড়দি বললেন 'তোমার কি শরীর খারাপ?'
রেখা বললে 'না দিদি ।বলুন। একটু ক্লান্ত আছি।'
বড়দি বললেন আসলে গলার স্বর টা শুনে তাই মনে হলো তো? যাই হোক কাজের কথায় আসি।
কালকে তোমাকে একবার স্কুলে আসতে হবে?'
রেখা বললো 'কেনো দিদি?
এখন তো ছুটি চলছে।'
বড়দি বললেন 'হ্যাঁ ছুটি চলছে কিন্তু এসআই অফিস থেকে আজকেই একটা মেসেজ এসেছে,আগামীকাল স্কুলে স্কুলে মাননীয় মন্ত্রী শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন ।সেই শুভেচ্ছা বার্তার পত্রটিকে গ্রহণ করতে হবে। স্কুলের হেড অফ দা ইনস্টিটিউশন না থাকলেও হবে ।অন্য কোনো প্রতিনিধি গ্রহণ করলেও হবে। তাই..'
রেখা বলল ' দিদি লোকাল টিচারকে বললে হয় না?'
বড়দি বললেন 'হ্যাঁ ।আমি ফোন করেছিলাম। শুধুমাত্র অনিন্দিতা ছাড়া ,বাকিরা সবাই আউট অফ স্টেশন। 'অনিন্দিতার আবার জ্বর সেজন্য তোমাকেই বলছি। কেন তুমি কি আউট অফ স্টেশন?'
রেখা বললো ' না দিদি। রেখা যে কি জ্বালায় জ্বলছে এটা বড়দিকে কি করে বলবে?কত রকম সমস্যায় জর্জরিত ।অপরদিকে তো নাও করতে পারবে না। আসলে বড়দি অনেকটাই ভরসা করেন রেখার উপর । নিজের অসুবিধা সত্তেও এবং স্কুলের কথা ভেবে জিজ্ঞেস করল' ওনারা 'কটায় আসবেন?'
বড়দি বললেন 'ওটাই তো মুশকিল রেখা।কিছু বলেন নি। বলেছেন এগারোটা থেকে থাকতে। একটা তো নির্দিষ্ট টাইম দেবেন সে সবকিছু দেন নি।'
রেখা বললো ' তাহলে দিদি কটা অব্দি থাকতে হবে এটা না বললে হয় ,বলুন ? সাড়ে চারটার দিকে থাকা সম্ভব?'আগামীকাল আবার লক্ষ্মী পুজো। যদিও লক্ষ্মী পুজো দুদিন পড়েছে।'
বড়দি বললেন 'তবুও আমি আর একবার যোগাযোগ করব ধীরেন বাবুর সঙ্গে। তোমাকে জানাবো ।তবে তুমি ধরেই নাও এগারোটার মধ্যে স্কুলে যেতে হবে।'
রেখা বলল 'ওখানে কি করতে হবে দিদি?'
বড়দি বললেন 'তেমন কিছুই করতে হবে না। উনারা আসবেন শুভেচ্ছা বার্তার পত্রটি দেবেন ।সেটি তুমি গ্রহণ করবে,সঙ্গে ফটো তুলবে।সেই ফটোগুলোকে গ্রুপে আবার পোস্ট করে দেবে কেমন,?'
রেখা বলল 'ঠিক আছে দিদি।'
বড়দি বললেন 'তাহলে তুমি ঠিক সময়ে পৌঁছে যেও কেমন? আমি জানি ,তুমি ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবে ।তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে।'
রেখা বলল 'ওকে দিদি।'
রেখা ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেল । লক্ষ্মীপূজো না হয় পরশুদিন করবে। কিন্তু মিলিদের খাবার ব্যবস্থা করতে হবে ।সুমিতা কাজে আসবে কি ,আসবে না ।ওর তো কোন ঠিক ঠিকানা নেই। যা কাজ আজকেই গুছিয়ে নিতে হবে ।সবথেকে বড় মনে অশান্তি লাগছে মনোজকে নিয়ে।
সন্ধ্যার পর থেকে একটা কথাও মনোজ রেখার সঙ্গে বলে নি। রেখা যে মনোজকে বলবে,আগামীকাল স্কুলে যাবে,সেটাও বলতে পারছে না।মিলির বাচ্চাগুলোকে নিয়েই যত চিন্তা।কি করবে ভেবে পাচ্ছে না। অবশেষে খাবার টেবিলে মনোজকে রেখা বলল 'আগামীকাল স্কুলে যাব। তাই মিলিদের খাবারটা তুমি ঠিকঠাক দিয়ে দিও।'
মনোজ কোন কথারই উত্তর দিল না ।খেয়ে উঠে চলে গেল। রেখার চোখ ফেটে জল পড়তে লাগল।
একটা চিন্তা মাথায় নিয়ে ঘুমাতে গেল।
এদিকে ভোর থেকেই শুরু হয়ে গেছে বৃষ্টি ।মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে ।চারিদিকে কিছু দেখা যাচ্ছে না। রেখা ট্রেন ধরে স্কুলে পৌঁছালো। স্কুলে গিয়ে দেখছে দিলীপ দা গেট খুলে দাঁড়িয়ে আছে । একগাল হেসে কাছে এগিয়ে এসে বলল ' দিদি শুভ বিজয়া।'
রেখাও একগাল হেসে মনের কষ্টটাকে চেপে বলল 'শুভ বিজয়া।ভালো আছেন তো সবাই?'
দিলীপ দা বললেন 'হ্যাঁ দিদি। আপনারা?'
রেখা বলল 'সবাই ভালো আছে।'কতটা যে ভালো আছে ,সে শুধু রেখাই জানে কিন্তু সৌজন্যবোধের জন্য তো বলতেই হবে।
সঙ্গে সঙ্গে দিলীপ দা বলল 'দিদি একদম ভিজে গেছেন তো? যান ভেতরে গিয়ে চেঞ্জ করে নিন। না হলে চারিদিকে যা জ্বর জ্বালা হচ্ছে।'
অনেকদিন পর স্কুলে এসে সত্যিই খুব ভালো লাগছে ।কিন্তু চারিদিক শুধু শূন্যতা শূন্যতা। পাশের চেয়ারটায় রিম্পাদি বসে। রিম্পাদি তো ক্ষণিকের অতিথি। এসব সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে সময় গড়িয়ে দুটো বাজে তখনও তাদের দেখা নেই। ঠিকা আড়াইটে নাগাদ দিলীপদা এসে বললেন ' দিদি এসআই অফিস থেকে লোক এসেছেন? তবে দিদি চেনা কাউকে লাগলো না। আপনি আসুন।'
রেখা বলল ' আপনি ওনাদের ভেতরে নিয়ে আসুন।'
দিলীপদা ঘাড় নেড়ে চলে গেলেন।
একটু পরেই দিলীপ দা এসে বললেন ' দিদি উনাদের এই ঘরেই ডেকে আনছি।'
রেখা শুধু বলল ' ঠিক আছে।'
হঠাৎই স্টাফ রুমে যাকে ঢুকতে দেখলো রেখা ।দেখে তো অবাক হয়ে গেল এবং সেই ভদ্রলোক অবাক হয়ে গেলেন। সৌজন্যবশত রেখা বলল 'নমস্কার ভিতরে আসুন।"
আগন্তুক ভদ্রলোক সৌজন্যবশত নমস্কার জ্ঞাপন করলেন।
রেখা দিলীপ দা কে বলল দিলীপ দা উনাদের একটু মিষ্টি মুখের ব্যবস্থা করুন বিজয়ার পরে আসলেন তো? আর মালাদি এসেছে একটু চা এর ব্যবস্থা করতে বলুন।'
দিলীপদা ঘার ছেড়ে চলে গেলেন।
ভাবছে হঠাৎ সুব্রত কোথা থেকে হাজির হলো। রেখার জীবনে কি ঘটতে চলেছে ,কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। হঠাৎই সুব্রতের সঙ্গে থাকা ভদ্রলোক বললেন আমি একটু স্কুলটা ঘুরে দেখছি আপনি বসুন।
রেখাকে একা পেয়ে সুব্রতবাবু বললেন 'তুমি এই স্কুলে আমাকে চিনতে পারছো? অনেকদিন পর তোমাকে দেখতে পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছে ।ভালো আছো তো?'
রেখা তো প্রথমে ভেবেছিলো স্বপ্ন দেখছে ।এখন দেখছে না বাস্তবের মাটিতে আছে ।ভাবতে পারছে না সুব্রত এসআই হয়ে স্কুলে এসেছে।
শুধু ঘাড় নেড়ে বলল হ্যাঁ।
এরপর মাননীয় মন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পত্রটি স্বয়ং এসআই সাহেব রেখার হাতে দিলেন এবং ছবি তোলা হলো।
রেখা ভাবতে পারছে না ,শেষ পর্যন্ত সুব্রতর সঙ্গেই তাকে ছবিটা তুলতে হলো ।এটা কি ভবিতব্য?
এদিকে বৃষ্টি থামছে না বড়দি ফোন করে খবর নিলেন।
থাকে অনেক অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন বললেন 'এই জন্যই তো তোমাকে এত ভালোবাসি রেখা। তোমাকে কোন কাজ দিলে তুমি সহজে না করো না। তোমার ওপর ভরসা করা যায়।'
রেখা শুধু বলল 'না, না, দিদি এটা তো আমাদের ডিউটি।'
বড়দি বললেন 'তোমাকে তো সেই ৫টার ট্রেন ধরতে হবে।সাবধানে এসো।'
সুব্রত বাবু বললেন'তোমাকে স্টেশনে পৌঁছে দেয়া হবে আমাদের গাড়িতে।'
রেখা কিন্তু কিন্তু করলেও গাড়িতে যেতেই হলো। কিভাবে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে না গিয়ে কোনো উপায় ছিল না। আর মনে মনে ভাবছে সেই কলেজ লাইফের কথা ।সুব্রত কি সেই আগের মতই আছে? আজ সেই বৃষ্টির দুপুর আর কলেজ লাইফের বৃষ্টির দুপুর, দুটোর মধ্যে বিস্তর তফাৎ।