১৫ ডিসেম্বর ২০২০

সৌগত রাণা কবিয়াল



বায়োস্কোপ


আজকাল হাতের দশ আঙুলের দশ ইচ্ছে ! 

বেচারা কব্জিসন্ধির হয়েছে বিশাল জ্বালা ,

তাহলে একবার ভাবো তো,

মন শরীরের কি হাল ? 

চারপাশে পেটমোটা ইঁদুরের থৈথৈ উচ্ছ্বাস,

কে রাখে পাড়ার চায়ের দোকানের

কালো ছেলেটির খবর ?

কালো ছেলেটারও একটা 

বুক হৈচৈ জীবন ছিলো,

কিন্তু ঐযে যেদিন থেকে 

ওর দশ আঙ্গুলের ইচ্ছে ফুটলো,

সেদিন থেকেই, ছেলেটার পেটে জল জমছে !

জলের গন্ধ কতো রকম,

যে যখন চাচ্ছে যেমন ! 

গন্ধগুলোরও আজকাল মরণ দশা,

মানুষের যে আজকাল বড্ড সুখের নেশা ! 

এই শহরে সবাই রাজা,

দশ আঙ্গুলের ইচ্ছে রাজা !

শুধু ঐ কালো ছেলেটার সবুজ মাঠের

রংবেরং এর ফড়িংগুলো,

একা হয়েই বেঁচে রইলো !

কাঠবিড়ালের মন নিয়ে 

সব সবুজগুলো ধূসর হলো ,

সুখি হতে হয় বলে

শহরবাসী সুখী হলো,

কি দারুণ সুখী হলো,

আহা,মলো,মলো,মলো,মলো...

                           

ফাহমিদা ইয়াসমিন




বাংলাদেশ


মায়ের মুখে ছিলো

সন্তান হারা শোক

বাবার মুখে ছিলো

কত যে আর্তনাদ

ভাইয়ের শপথ ছিলো

মুক্তি চাই শুধু মুক্তি চাই

প্রিয় স্বাধীনতা আমার।

কালোরাত দূর হয়ে জেগেছিলো আলো

স্বাধীনতা তুমি বড়ই বেদনার

এই সেই কাল রাত

মুছেনি আজো যার হাহাকার।


কতযে লাশ আর রক্তে ভেসেছিলো স্বদেশ আমার

হায়েনাদের বুলেটে

স্বাধীনতা তুমি সেই সবুজ পাতা

আমার কবিতার খাতা

যেখানে শ্রেষ্ঠ কবিতার নাম বাংলাদেশ।

শাহারা খান




শত্রুমুক্ত দেশ


লাল সবুজের ঐ বিজয় নিশান,

উড়ছে বাতাসে পত পত করে।

বিজয়ের ঐ নিশান আনতে,

কত প্রাণ গেলো অকালে ঝরে।


বাবা হারালো স্নেহের সন্তান,

বোন হারালো স্বামী।

পুত্র শোকে কাতর মাতা,

আজও কাঁদে দিবস যামি।


ইজ্জত হারিয়ে কত মা,বোন,

হলো যে বীরাঙ্গনা।

কত মজুর হারালো ভিটা,

নেইকো কারো অজানা।


জীবন বাজী রেখে যারা,

করলো দেশকে স্বাধীন,

তাদের কথা কেমনে ভুলবো,

কেমনে শুধিবো তাদের ঋণ?


মরেও তারা হয়েছে অমর,

জানাই তাদেরে সন্মান।

ইতিহাসের পাতায় লেখা রবে,

তাদের স্মৃতি চির অম্লান।


আজকে মোরা স্বাধীন ভাবে,

হাঁটছি শত্রুমুক্ত দেশে।

দেশের কল্যানে ব্রথ হয়ে,

মরবো দেশকে ভালোবেসে।

এস. এ. তালুকদার



ভয় নেই হারানোর 


নির্লোভ ভালোবাসায় হারানোর নাহি ভয়

হাজার মাইল দুরে গেলেও

হৃদয়ের অলিন্দে সৃষ্ট ভালোবাসা

জাগ্রত রয় __

কাউকে ভালোবাসা মনের স্বাধীনতা

ভালোবাসা পাবার আশা

ভিন্ন হৃদয়ের মর্জি,

আমার ভালোবাসা বিরহহীন

নীর্মল সুখে ভরা__

প্রিয়ার স্বরুপ আমি নব সাজে

হৃদয় দিয়ে গড়ি

কল্পলোকে অভিসারে

ভাসাই প্রেমের তরী,

নির্লোভ ভালোবাসা যার

হারানোর ভয় নেই তার__

সোহেল আহম্মেদ




কিশোর মুক্তিযোদ্ধা


ফারহাত নামে একজন কিশোর 

মুক্তিযোদ্ধা ছিলো, 

নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ফারহাত 

শত্রুর ক্যাম্পে গেলো।


যাওয়ার আগে তাঁর শরীরে 

বোমা বেঁধে নিলো,

সেই বোমারই বিস্ফোরণে 

ক্যাম্পটি উড়ে গেলো।


জীবন দিয়ে ফারহাতেরা 

আনলো স্বাধীনতা,

কতো ফারহাত জীবন দিলো 

অজানা সেই কথা।


ফারহাতের ত্যাগ স্মরণ হলে 

নুয়ে আসে মাথা,

যাদের রক্তে লেখা হলো 

বাংলার বিজয় গাথা। 


ফারহাতেরা যায়নি মরে

সগৌরবে উড়ে,

লাল সবুজের ডানা মেলে 

বাংলার গগন জুড়ে।


( কবিতাটি বিশিষ্ট কবি ও লেখক শ্রদ্ধেয় ফাহমিদা ইয়াসমিনের লেখা  মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক শিশুতোষ গল্পের বই "ফারহাতের বিজয়" এর কাহিনী অবলম্বনে রচিত )

তাহের মাহমুদ




সংশয় 


ওপাশে কে আছ যে তোমার কাছে চেনাজানা

এপাশে হাজার চোখের ভীড় আমার অচেনা।


ওপাশে সরব আলো আঁধারের ফাঁকে ফাঁকে

এপাশে মন হাসে নীরব অভিমানী সুর আঁকে।


ওপাশে আকাশটা শ-বর্ণ পেখমে নীল ছড়ায়

এপাশে পাতালপুরের ডাক হাঁকে চিরনিদ্রায়।


ওপাশে মন উল্লাসে হাসে সুখের কানাকানি

এপাশে কে ধেয়ে আসে অশুভ শোকের বাণী।


ওপাশে দ্বীপ জ্বেলে রয় দিন আলো দেয় চাঁদে

এপাশে এ কিসের অতো বিদগ্ধ মুখোশ কাঁদে।


ওপাশে এতো কি গুঞ্জন বেঁহুশের কানাকানি

এপাশে এতো সুধা তবু না পাওয়ার হাতছানি।

আমার মা কবি সালেহা খাতুনের লেখা ( সালমা খান )



মন


প্রতিহিংসার আগুনে তুমি সারা জীবন জ্বলবে!

তুমি আমার পথের কাঁটা ঝাড় জঙ্গল উপড়ে দিলাম ছুড়ে ,

পথ পেয়েছি খুঁজে।

সব আনন্দের  উর্রদ্ধে আমি এখন  চাই যারে অন্তরে ,

সে আমাকে দেয়না ধরা,

 মোর ভাবনা থাকে তাকে ঘিরে ,

 সর্বদা থাকে সে আমার হৃদয় জুড়ে ,

গোধুলীর এই শেষ বেলাতে হাঁটছি

  পিছল সরু পথে !

 পা পিছলে না যাই যেন পড়ে!

 রুহটাকে  বস করেছি না যাই যেন ফসকে,

জীর্ণ শীর্ণ হয়ে পড়ে ছিল হ্নদয়ের এক কোণে !

এখন সে মোটা তাজা আমার কথাই উঠা বসা,

 আমাকে সে মানে!

কষ্টে শিষ্টে ভালো আছি আমরা দুজনে,,

তাহমিনা সিদ্দিকা




আমি জননী বলছি



আমি জননী বলছি এ পেটে তোমরা ছিলে, কারণ জননী সব অত্যাচার সহ্য করে যে সেই তো মা,

এত সুন্দর পৃথবীর যার মোহ তোমরা ছেড়ে স্বর্গেও যেতে চাওনা,কারণ নারীর সাথে বোঝাপারার কাজটা তোমরা এ ভাবেই সেরে নিতে চাও,সদ্য ফোঁটা পুষ্প কলিকে তোমরা স্যুপ বানিয়ে খাও।

গুপ্তাঙ্গ খুঁজে বের কর তারপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটো,তোমরা পুরুষ

ফ্রাইপেনে আস্ত ভেজে খাও।

বলেছি জননী বোকা নয় তার প্রজ্ঞা এত সাধারন নয়,শুনে রাখ কান খুলে শুনে রাখ, নারীই ঈশ্বর তোমাদের মত নর অসুর সৃষ্টি করেছিলাম আমার আত্মরক্ষার জন্য,আর আজ তোমরা

মায়ের দিকে লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছ

আর অবশ্যই এটা তোমাদের জন্য

দুঃসংবাদ আর ধ্বংসাত্মক।

প্রতিটি মুহুর্তে তোমরা নারীকে

বিক্ষুব্ধ করে চলছ, তোমাদের অন্তঃ দৃষ্টি

মরে গেছে,তোমাদের প্রজ্ঞা নেই তোমরা

কি দেখনি তোমাদের অতীত।

শ্রীকৃষ্ণের বৃন্দাবন? তোমরা কি লাইলী-মজনু,ইউসুফ-জুলেখা,চন্ডীদাস-রজকিনী, রাধা-কৃষ্ণ

প্রণয়কে অস্বীকার কর?কেন ত্যাগের

মহিমায় গড়িয়ান হতে পরনি !

আফসোস পেশী শক্তি দিয়ে নারীকে

অধিকার করার বৃথা প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছ,  হীরা ফেলে কাঁচ কুড়াচ্ছ তোমাদেরএ ঔদ্ধাত্য বন্ধ কর জরুরি।

নতুবা তাবৎ পৃথিবী নরকে পরিণত

হবে, আর যদি প্রণয়কে নতুন করে

খোঁজ প্রকৃতির দিকে তাকাও দেখ

ওখানে একই বাগানে নানান উদ্ভিত

নানান পাখি,নানান পশু এখনও

গোত্র সম্প্রতি দলবদ্ধতায় কি ভাবে

প্রজন্মান্তরে টিকে আছে, আর আমরা নারী-পুরুষ স্রষ্টার প্রতিনিধিত্ব বজায় রেখে কেন পারছিনা শ্রেষ্ঠ জীবের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে।

এসো আমরা প্রথমে মানু্ষ হই তারপর স্রষ্টার অহংকারে আমরা হই গর্বিত জীবাত্মার শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

মনি জামান



স্বপ্ন নীড়

 


আজ হৃদয় হৃদয়ে হোক আলিঙ্গন,

মন মনের কথা ভাবুক সারাক্ষণ।

স্বপ্ন পুরনের ইচ্ছের কথা আমাদের ভালোবাসার কথা,

নির্জনতায় স্বপ্ন সুখ বুনে যায় যাক 

না প্রেম।

নীলিমা ছড়াক কিছু রঙ আকাশ 

হোক রঙিন,

জ্যোৎস্না ছড়াক আলো মেঘের কার্নিশে ছায়াপথে হোক চাঁদ তারার গোপন আলাপন।

প্রজাপতি পাখনা মেলুক বসন্তে 

ফুটক কিছু ফুল,

তারপর না হয় বাবুই পাখির শিল্প 

কর্মে গড়ুে উঠুক ছোট্ট একটি স্বপ্ন 

নীড়।

বর্ণচোরা প্রেম হয়ে উঠুক আজ তিলোত্তমা,

শব্দ কন্যারা হয়ে উঠুক সক্রিয়।

তারপর অপেক্ষা কষ্টকে অতিক্রম 

করে কাছে টানুক সব ভালোবাসা,

সব কষ্টের বিসর্জন হোক প্রেম স্পর্শে।

শিল্পি তার রঙতুলির আঁচড়ে পূর্ণতা 

দিক তার শিল্প কর্মের,

তারপর ছুঁয়ে যায় যাক না দু'জনের 

বিরহী তনুমন।

তারপর হয় হোকনা একটা রঙধনু,

আকাশ মেঘকে কাছে টানুক নিবিড় করে।

বৃষ্টি ভিজাক মাটি তারপর না হয় 

দুজনে হবো চির সবুজ,

যেখানে প্রেম হয় বৃষ্টি আর মাটির।

মাকসুদ




স্মৃতি 

 

আজ সময়টা শূন্যে ভাসে,

বিশ্বাসটা দুমড়ে মুচরে ফ্যালফ্যালিয়ে হাসে।

শেষ বললেই সব কিছু আজ

হয়না শেষ কিছুই..

স্মৃতিরা কালো ধোঁয়ার মত

তাড়িয়ে বেড়ায় পিছু।