০৬ এপ্রিল ২০২১

ওয়াহিদা খাতুন




চলো মজুরের গাই গান

        


দেখো প্রিয় সারা দেশে মাটির কর্ষণে 

যারা ফসল ফলায়;অন্ন দেয় তুলে,

 গুদাম ভরায় যারা দেহের লবনে,

হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে নিজ স্বার্থ ভুলে;

চৈতি ধানের খৈ এর গন্ধ নাকে নিয়ে

আলুবোখারার মাচায় চলো বসিগা--

তাদেরও ডাকবো খেতে সেখানে গিয়ে,

সড়ক বানাতে গিয়ে যাদের কাটে পা--


অস্থি-মজ্জায় তৃষ্ণা নিয়ে তৃষ্ণা মেটায়, 

সেখানে চলো,শিশিরে-ধোয়া ঘাসে বসে

করবো তাদের গান;খনিতে লোটায়

মাছিদের মতো রোদ্রতে চামড়া খসে;


যাদের প্রতি অঙ্গে ধুলি মাটির টান--!

চলো সখা,সেই মজুরের গাই গান--!!



রচনাকাল:- ২১/১০/২০২০ দুপুর ১টা ৩৬ মিনিট

শ্যামল রায় এর তিনটি কবিতা




গহ্বর জুড়ে এখনো থাকি


গাঢ় অন্ধকারের ভেতর

আলোর পথ খুঁজে নিতে

এখনো দৌড়াচ্ছি।

এখনো সচেতন হতে

সকালবেলা চেয়ে

সামিল হচ্ছি

যেখানে গেলে স্বপ্ন দেখতে পাবো

বাঁচতে পারব শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে।

তাই, গহ্বর জুড়ে থাকলেও

উঁকিঝুঁকি মেরে যাই

সাহস হয়ে দাঁড়িয়ে বাঁচতে।

যাই বলি না কেন?

সবেতেই কষ্ট আছে

দুঃখ আছে, যন্ত্রণা আছে

শান্তি পেতে গেলে,।

তবুও নানাবিধ ফুলবাগান

খুঁজে নিয়ে একটু শান্তি খুঁজি

গহ্বরে বেঁচে থাকলেও

আমার বেঁচে থাকা

সকলকে নিয়ে, ফ্যান ভাতের জন্য।

তবে গহ্বর থেকে বেরোতে

নীল আকাশ খুঁজছি

জুঁই ফুলে সাদা ভাত ।




ওম খুঁজে নিতে


তুমি কখনো বৃষ্টি হয়ে

ভিজিয়ে দাও মন

আবার কখনো রোদ্দুর হয়ে

কাঠফাটা মাটির মতন হৃদয় উঠোন করো।

এসব টাই শব্দের পর শব্দ সাজানো য়

আটপৌড়ে জীবনযাপন।

এসবের মধ্যে কখনো কখনো

অনুভূতির রঙে হারিয়ে যাই

সারারাত অঝোর বৃষ্টিতে

দুজনার বুক আঁকড়ে ওম খুঁজে নিই।


এলোমেলো মন


 সময় থাকছে না আর ,উড়ে যাচ্ছে স্বপ্ন

শেষ গন্তব্য কোথায়? খুঁজছি গভীর জলে

তবুও খুঁজছি গাঢ় অন্ধকারে 

কম খরচে বেঁচে থাকা ।


এলোমেলো মন

 তবুও বিকেলের ধূসর আলোয়

সোনালি সকাল খুঁজি..

খুঁজি ,সম্পর্কের নতুন অক্ষর গুলো।

লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব ( ইংল্যান্ড )




গাংচিল 



আমার হৃদয়ের মধ্যে খানে 

একটা নদী খনন করে ছিলাম

সেখানে মাঝে মধ্যে উড়ন্ত 

গাংচিল এসে বসতো -----

খানিকটা সময় কাটানোর জন্য ,

গাংচিলের ভিড়ে ,একটা শকুন এসে

যোগ দিয়ে তাদের সাথে 

সখ্যতা তৈরী করলো---

আমি অবাক হয়ে গেলাম 

শকুন টা কি কোন কুমতলব

নিয়ে এলো?


আমার হৃদয়ের নদী ছিলো

গাংচিলের জন্য উন্মুক্ত --

তাদের নিয়ে কিছুটা সময় কাটানোটা 

ছিলো আমার মুল উদ্দেশ্য 

আমি চেয়ে ছিলাম তাদের কিচির মিচির

শব্দের সাথে একটা সুন্দর --

রুচিশীল মনের ভাব তৈরী করতে,

আমার স্বপ্নের শহরে যতটুকু জাগয়া 

ছিলো সবই তাদের জন্য 

বরাদ্দ করে রেখে ছিলাম

কিন্তু-------?


গাংচিলের ভিড়ে থাকা শকুনটি

আসলেই একটা দুষ্টু প্রকৃতির---

শকুনটি যখন গাংচিলের সাথে এসে

আমার হৃদয়ের নদীর পাড়ে বসতো

তখন আমার ভীষণ কষ্ট হতো,

একটা যন্ত্রণায় ছটফট করতো

আমার হৃদয় নদী---

হঠাৎ দেখতে পেলাম নদীর পানি

রক্তের মতো লাল,

আমি বিশ্বাস করতে পারছি না

কেন শকুন টি রক্তাক্ত করলো

আমার হৃদয়ের নদী।

সোমা বিশ্বাস




মুখ মুখোশের অন্তরালে



মানুষকে কম চিনলেই বোধহয়;

বেশি ভাললাগে!

চেনা মুখ অচেনা হয়ে যায়-

সাং ঘাতিক কিছু ভাললাগা,

 না ভাললাগা বা কোন ঘটনা;

যেগুলি মাঝে মাঝে নানা মুহূর্ত তৈরী করে এক অচেনা 

আবেশের অন্তরালে;

চেনামুখ হয় যায় মুখোশের মতো!

আবার কখনো অচেনা মন, মুখ

আর মানুষগুলি কোন মুহূর্তে

হ্নদয়ে এসে জমাট বাঁধে; 

ধীরে চলা শীতল স্রোতের মত,

শান্ত আবেগের মত,

মনকে আদর করে-

যেন অদ্ভুত ভাললাগার ভরসা:

মনকে স্নিগ্ধ করে

মুখোশ হয়ে ওঠে চেনা মুখের মত!

আসলে আমরা বোধহয়;

ঠিক করে বুঝে উঠতে পারিনা-

মুখোশ কখোন মুখ হবে;

আর মুখ হবে মুখোশ!?

প্রেমাংশু শ্রাবণ




প্রথম বসন্তের কবিতা


কিশোরী মেয়েটি ভাবে--

সে রাজকুমারী, 

টগবগ ঘোড়ায় চড়ে একদিন 

আসবে তার রাজকুমার 

পৌরাণিক স্বপ্নে..... 


কিশোর ছেলেটি ভাবে

সীমানা অতিক্রমের গল্প,

শিমুল ফুলে রক্তরাগ কাহিনী। 


অনূঢ়া বৃক্ষের পাতায় পাতায় 

ফূর্তিমতী হাওয়ার উপন্যাস। 


মেয়েটি যুবতী হতে হতে 

ভাবে---

যুগল মূর্তির প্রেমগাঁথা,

ভালোবাসার রঙধনু ঘর। 


ছেলেটি যুবক হতে হতে

ভাবে---

বসন্ত ফিরে ফিরে আসবে আবার...।

মুন চক্রবর্তী




তরাজু 


মেপে চলা একটি নির্বাহ 

কত কেজি কত গ্রাম 

এই নির্বাহ বেয়ে নেমে এসেছে অবিশ্বাস 

বাজার মূল্যে বিক্রি করা অধিকার!

সহজে পাওয়া মসনদ কাঁপছে প্রতিশ্রুতিতে

ফুটপাতের গর্ত থেকে দুর্গন্ধ ঢাকতে গোলাপ জলের ফোঁয়ারা।

 ক্ষুধার্তের পাতে জুটছে অর্ধেক চাঁদের আলো 

ফ্রি শব্দটি বেশ আয়োজন করে মাপজোখে ব্যস্ত

অবুঝের কাঁধে ৠণের পরিসংখ্যান মেপে দিতে তরাজুর অভাব নেই,সব ভালোর তরাজু।

সকল অবতারের ভিড়ে মাপা হবে না হাজার শহিদের সংগ্রামী পথ।

দরজার কড়া নড়ে উঠছে অপ্রাকৃতিক মৃত্যুতে

প্রকৃতির বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছে জীবাশ্ম।

তরাজুর কাছাকাছি পরে আছে মাপজোখের পাথর।

নির্বাহের পাথরে আঁকা আছে ঐশ্বর্যের ভালোবাসা।

এরশাদ


 একটি ফিরে তাকানোর ইতিহাস

 


আমরা অনেকদিন চোখে চোখ রাখি না প্রিয়তমা

অনেকদিন একে অন্যের শব্দে মাখি না, ভালোবাসার প্রলেপ।আমাদের ভালোবাসা আজ

অলীক কোন শকূনের মৃত শরীর

অপেক্ষমান মৃত্যুর উপমায় নির্জন পাহাড়ে বৃদ্ধ 

শকূনের নীরব চোখ আকাশের পানে তাকিয়ে থাকা

একরাশ হা-হুতাশ।


আমাদের ভালোবাসা আজ কেভিন কার্টারের উলঙ্গ শিশুর নিথর দেহ;যার মৃত্যু শকূনের অপেক্ষার আহার

তোমার চোখে আমি সেদিন দেখেছিলাম

অন্য মানবীকে,ভালোবাসা হারিয়ে যে মানবী এখন

দন্ডায়মান গ্রীক দেবীর স্ট্যাচু যেন।

আমরা এখন দু'জন ভীন গ্রহের স্বপ্নচারি প্রিয়

তুমি এখন উত্তরে থাকো

আমায় না হয় দক্ষিণে খুঁজে নিও।

সীমা সোম বিশ্বাস



 সম্পর্ক 


ঠিক মনে পড়ে না

তোমার আমার আলাদা হওয়ার কথা 

শৈশব থেকে কৈশোর দুজনে পাশাপাশি হেঁটে চলা ।

এরপরপৃথিবীর একদিকে আমি 

অপরদিকে তুমি 

যেন একটি নদীর দুটি মুখ।

সময়ের হাত ধরে জীবন বয়ে চলে।

দেখতে দেখতে এলো সেদিনের সেই 

নিয়মের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া আমার।

কিন্তু হায় রে ভাগ্য!

নববধূর গন্ধ যেতে না যেতে 

শুরু হয় নিত্যদিনের 

দেনা পাওনার হিসেব নিকেশ!

বহু বছরেও সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি

মননকে ছুঁয়ে যাওয়া তো হয়নি।

যা হয়েছে ভালোবাসা হীন  অভ্যেস!


জীবনের বেলা শেষে হঠাৎ ফিরে এলে তুমি!

কি করছি,কেমন আছি 

কুশল জানার মাঝে

শুরু হলো পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ ।

আজ মন বাঁধা মানে না 

বহু বছর ধরে জমে থাকা বেদনা,

ভালোবাসা, রাগ,মান অভিমান 

সব যেন ছিটকে বেরিয়ে আসতে চায় 

এক এক করে মনের গহ্বর থেকে ।

গোপন কাঁটা বুকে নিয়ে 

কতবার ভেবেছি পাগলা বাতাস

যেমন দরজা দেয়খুলে

তেমনি তুমি আসবে আমার ঘরে, 

শুধু অপেক্ষা আর অপেক্ষা 

তোমার দেখা পায়নি তবু!

আজ তুমি বলছো ,

বন্ধুর অফুরান ভালোবাসায় সিক্ত  ।কখনই হারতে পারো না বন্ধু ।

তোমার মধ্যে যে সৃজনশীল শক্তি 

তাকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলো দূর বহুদূর ।

তোমার প্রতিষ্ঠা আমার ভালোবাসা 

এখন তোমাকে দেবার কিছুই নেই! 

শুধু এগিয়ে চলা, কিছু করে যাবার পালা ।

হে বন্ধু আমার ,তোমার অসীম সাহস 

আমাকে দাও ।বন্ধুত্বের বন্ধন যেন  না টুটে।জানিনা একে সম্পর্ক  বলে কিনা?

শমশের হায়দার কাদেরী




 ব্ল্যাক হোল  



একুশে মার্চ  — সমান দিন রাত

অথচ,  আমার আকাশে রাত — নিত্য বারো মাস! 

তোমার কোন্ নীতল গহ্বরে

ভালোবাসার  আলো কণা —

কোন্ অভিকর্ষের টানে জানিনা

বারবার ফিরে ফিরে যায়—

একটুও দেখতে পাইনা  

অথচ, তোমাকেই ভাবতাম  

সূর্যের চেয়েও বিশাল এক নক্ষত্র ;

তবে, একফোটা আলো পাইনা কেনো? 

নাকি তুমি কোনো ব্ল্যাকহোল নীতল ? 

তবে,  তা'তেেই ঝাপ দেবো ;

যদিও জানি,  এ'মন তা'তেও  হবেনা শীতল।

মাসুদ করিম


 


আজব খেলা 



প্রেমের খেলা বড়ই মধুর 

যদি খেলতে পার

ভূল লোকেতে দিলে মন 

জীবনে বাজবে বার,

ভালবাসি বললে ববললে শুধু 

হয়না প্রেমের পড়া

হৃদয় দিয়ে গড়তে যে হয় 

প্রেমের জীবন গড়া।


ছোট্ট বেলায় খেলছি কত  

এক্কা দোক্কা আর কানা মাছি খেলা

বড় হয়ে শিখলাম যে এক 

আজব প্রেমের খেলা,

প্রেমের মাঝে আছে যে হায় 

হরেক রকম কষ্ট। 

উল্টো পাল্টা করলে প্রেম 

জীবন যে হয় নষ্ট।


ফিস ফিসিয়ে রাত্রী জেগে 

করলে আলাপন

পকেটেতে পয়সা বিনে রয়না 

কভু প্রেমেরি বাঁধন,

প্রেম যদি চাও করতে তুমি 

নিজের সাথেই কর

জীবনটা কে ভালো বেসে 

মধুর করে গড়ো।