১৬ নভেম্বর ২০২১

লেখক শান্তা কামালী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "বনফুল"২৫

চোখ রাখুন স্বপ্নসিঁড়ি সাহিত্য পত্রিকার পাতায় লেখক শান্তা কামালী'র  নতুন ধারাবাহিক  উপন্যাস "বনফুল" 




বনফুল
( ২৫ তম পর্ব ) 


আস্তে আস্তে ছেলে মেয়েদের ভীড়  কমতেই জুঁই পলাশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল,পলাশ দৌড়ে এসে জুঁইয়ের হতে ধরে বললো জুঁই তুমি খুশি তো?  জুঁই তখন আনন্দে বাকরূদ্ধ হয়ে গেছে,জুঁইয়ের দুচোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে। পলাশ জুঁইকে প্রশ্ন করলো জুঁই তুমি কাঁদছো কেন? 
জুঁই পলাশের হাত ধরে বললো এমনিই, চলো আগে  গাড়িতে ওঠো, গাড়িতে উঠতে যাবে সেই সময় জুঁইয়ের মাথা ঘুরে চক্কর দিয়ে পড়ে যাচ্ছিলো।ঠিক সময়ে  তখন পলাশ জুঁইকে ধরে গাড়িতে উঠে বসতে সাহায্য করলো। গাড়িতে উঠে পলাশ জিজ্ঞেস করল জুঁই এর আগে ও আমি লক্ষ্য করেছি তোমার মাথা ঘুরে চক্কর দিতে! তুমি কি ডাক্তার দেখিয়েছো?  তখন জুঁই বললো আজ তোমার রেজাল্ট বের হবে বলে সারা রাত ঘুম আসেনি, হযতো সেই জন্য এমন হয়েছে, বাদ দাও তো এইসব কথা। চলো আগে কিছু খাই।
জুঁই ড্রাইভার কে রেস্টুরেন্টে যেতে বললো। ড্রাইভার ওদের পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেল। ভিতরে ঢুকে নিরিবিলি দেখে এক সাইডে একটা সিঙ্গেল টেবিলে বসলো। আজ জুঁই পলাশের সব পছন্দের খাবার অর্ডার করলো, জুঁই পলাশকে বললো আজ আমি এতো খুশি যে তোমাকে বুঝিয়ে বলতে পারবো না...।
  পলাশ বললো জুঁই আমি বুঝতে পেরেছি,কিন্তু...
কোনো কিন্তু নয়,আগে খেয়ে নাও....।
ওয়েটার ঠিক সেই  সময়ে খাবার এনে রাখলো টেবিলে। 
পলাশ জুঁইকে খাবার পরিবেশন করছে দেখে জুঁই আশ্চর্য হচ্ছে....।
 পলাশ  নিজের খাবারও গুছিয়ে প্লেটে  নিয়ে প্রথম চামচ খাবার জুঁইয়ের মুখে তুলে দিলো.....দ্বিতীয় চামচ খাবার তুলে দিতে যাচ্ছে জুঁই বাধা দিতে চাইলো, তখন পলাশ বললো জান না একবার কিছু নিতে নেই। খাওয়া শেষ হলো ওয়েটার বিল নিয়ে এলো জুঁই ব্যাগ থেকে নোট বের করে দিলো।
পলাশ বললো জুঁই বিল আমি দিচ্ছি।জুঁই বললো একটাও কথা বলবে না,চুপ করে ভালো ছেলের মতো বসো তো। 
ওয়েটার বিল এবং টাকার চেঞ্জ নিয়ে এলো। জুঁই ট্রে তে একশো টাকা রেখে বাকি টাকা ব্যাগে ঢুকিয়ে বললো চলো,ওঠা যাক।
রেস্টুরেন্টে থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে জুঁই ড্রাইভারকে বললো ভালো মিষ্টির দোকানে চলুন। ভালো মিষ্টির দোকানের সামনে গাড়ি থামতেই জুঁই পলাশ দুজনেই গাড়ি থেকে নেমে দোকানে ঢুকে সবচেয়ে ভালো মানের মিষ্টি তিন রকমের তিনটে করে প্যাকেটে নিয়ে, দুই কার্টনে সমান ভাগ করে প্যাকিং করে নিলো।
 মিষ্টির দাম জুঁই দিচ্ছে দেখে পলাশ জুঁইয়ের হতে ধরে বললো জুঁই তোমাদের বাসার মিষ্টি দাম আমি পেমেন্ট করবো।
জুঁই বললো ঠিকআছে,করো।কি দারুণ মিল ওদের, জুঁই পলাশের বাসার জন্য মিষ্টি কিনলো আর পলাশ জুঁইয়ের বাসার জন্য। 
পলাশকে নামিয়ে জুঁই নিজের বাসায় পৌঁছে মিষ্টির কার্টন টেবিলে রেখে মাকে জড়িয়ে  ধরলো,মা বললেন, কি হলো রে জুঁই, মিষ্টির কার্টন! কিচ্ছু বুঝতে পারছি না তো বিষয়টা?
 জুঁই বললো আম্মু পলাশ রেকর্ড মার্কস নিয়ে পাশ করেছে, আর মিষ্টি পলাশ কিনে পাঠিয়েছে। 
মনোয়ারা বেগমের চোখেমুখে  খুশির বিদ্যুৎ খেলে গেলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much