২১ এপ্রিল ২০২১

চলে গেলেন কবি

 


Shankha Ghosh was an Indian poet and critic. Ghosh got his undergraduate degree in Arts in Bengali language from the Presidency College, Kolkata, Kolkata in 1951 and subsequently his master's degree from the University of Calcutta in the year 1954. 
Born: 5 February 1932, Chandpur District, Bangladesh
Died: 21 April 2021, Kolkata

দীপ্তি চক্রবর্তী




কবি শঙ্খ ঘোষ স্মরণে 


থেমে যায় কতো ছায়াপথ

আকাশে আজ অকাল শ্রাবণ

বাতাসের চোখ দুটি ভারি ভারি

সাহিত্যে আজ আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র পতন

ভেসে যাবে ভেলা দূর থেকে দূর 

নিষ্পলক চোখ সময়ের ক্যানভাস

চুপিসারে ভোর আসে

আশীর্বাদের হাতটা রেখো মাথার ওপর

অন্তরের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই

          



মমতা রায়চৌধুরী




সবার মননে শঙ্খ 

(শ্রদ্ধেয় কবি শঙ্খ ঘোষের অমৃতলোকের যাত্রায় শোকস্তব্ধ হয়ে তাঁর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধায় আমার কবিতা )



যখন চারিদিক ভয়াবহ প্রতিকূলতায়,

মানুষ বড়ই অসহায়।

চিল শকুনরুপি সাম্রাজ্যবাদী শক্তির

 দাপটে বেঁচে থাকা নিরর্থক।

অসহায় ,বঞ্চনা, সংশয়ে দিশেহারা মানুষ,

তখন আশাহত মনে প্রস্ফুটিত 

'পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ', 'প্রহর জোড়া ত্রিতাল' 

'সকাল বেলার আলোয় ' আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি' র  অপরাজেয় শঙ্খ ঘোষ।

আজ অতিমারী ছিনিয়ে নিল নির্ভীক শঙ্খ,

যাত্রা হল  সীমাহীন অনন্ত পথে।

অমৃতলোকের যাত্রা হোক শুভ, 

সকল প্রতিকূলতা হোক পরাভূত। 

আমরাও জেগে উঠি' বাবরের প্রার্থনা', 

'আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি 'র দৃঢ় প্রত্যয়ে 

নির্ভীক সৈনিক মননের শঙ্খে ।

শুভমিতা বিশ্বাস

 



শঙ্খধ্বনি 



সে কি তবে, চলে গেল 

বহু চোখের ভাষা ছেড়ে

আমি তো জানি,

শঙ্খ বোবা না

 

সে  এখন জ্বলন্ত,নিবিড় সূর্যালোকের বাসিন্দা 

সে এখন সমুদ্র 

সে এখন নিদ্রার ভেতরের আলো



গ্রহের বাইরেও আজ শঙ্খের ধ্বনি

অর্পিতা মান্না




তিরোধানে আজ সাহসী কলম

 (কবি শঙ্খ ঘোষের শ্রদ্ধায় )


কাব্য বেঁধে শব্দ বুনে,

বেঁচে থাকা এক বুক ।।

আজ কেবলই চললো একা,

রইলো পরে সুখ ।।

আমরা তারই বাঁধন হবো,

আজ থাক সেই কথা ।।

শ্রদ্ধা রাখি, নত মস্তকে,

স্মৃতি হোক মৌনতা ।।


সাহিত্যের এক পাঁজর গেলো,

স্তব্ধ কবির হৃদয়।।

শঙ্খ কলম থমকে গেলো,

বিষাদ সূর্যোদয়।।

কবি তুমি আজ অশ্রু দিয়ে,

রাখলে আঁধার চোখে ।।

সৃষ্টি তোমার অন্তরে নিয়ে,

আজ আমরা শোকে ।।


মৃত্যু এবার শান্ত হও ,

অশ্রু বিন্দু ফেলো ।।

খোঁজ রাখেনা নিয়তির ঘর

কে গেলো কে এলো ।।

আমরা কেবল মুখ গুঁজে চলি,

কর্ম করি নিজের ।।

হত্যা করি, ধ্বংস করি

ধার ধারি না লাজের ।।


ভালো থেকো তুমি তারার দেশে,

সেখানেও লিখো প্রাণ ।।

কবিতার খাতা, কলমের হোক,

সৃষ্টিতে হোক স্নান ।।

অক্ষত থাক তোমার স্মৃতি

অক্ষর অন্তরে,

জন্ম নিও আবারো কবি,

কবিতার বালুচরে ।।


পূর্ণিমা ভট্টাচার্য




নীরব শঙ্খ


শব্দ কথার মায়াজালে

ভরা ছিল শঙ্খ খানি,

ঊর্মিমালীর বক্ষ থেকে

পেয়েছি অমূল্য সব রত্ন মণি।

    উঠতো বেজে ছন্দ লয়ে

   ভরতো সভা প্রাঙ্গণ

   স্তব্ধ যে আজ শঙ্খধ্বণি

   শোকের আচ্ছাদন।

না ফেরার দেশে দিলেন পাড়ি,

দূরে অনেক দূরে,

শব্দ তরঙ্গ ফেনিল হবে‌

দিশেহারা শঙ্খ ঝড়ে।


কবি তোমাকে সশ্রদ্ধ প্রণাম 🙏..টুকুন..

মিলন ভৌমিক




শ্রদ্ধাঘ্য


প্রিয় কবি শঙ্খ ঘোষ।।।

"বিশ্ববাসী শোকস্তব্ধ, বাকরুদ্ধ

তুমি আজ শায়িত,

আকাশে বাতাসে হাজারো মানুষের

কান্নার ধ্বনি,  আজ নেই কাছে।

বিষাদের ছায়া শোকে বিহ্বল

দেখতে পাবেনা অমর সৃষ্টি।

পুরাতন কবিতা বন্ধুত্ব করবে

চিরদিন মানবের সাথে,

থাকবে বিশ্বময় অমর হয়ে।

জীবন মানে অনিশ্চয়তা

জীবন মানে নানান অনুভূতি,

এই নিয়ে আমরা বেঁচে আছি।

বিশ্ব আজ মারণ ভাইরাসে

মানুষ গৃহবন্দী,

হৃদয় জুড়ে থাকবে তুমি

নূতন ভারত গড়ি।।।

শ্যামল রায়




কবি শঙ্খ ঘোষ কে


কবি শঙ্খ ঘোষ ছিলেন

শূন্যের ভিতরে নতুন এক ঢেঊ

নামটি  শঙ্খ ঘোষ।

বলতে ইচ্ছে করে

কথা কম বলতেন শুনতেন বেশি

শূন্য হলো সৃষ্টির উঠোন

জানাই শ্রদ্ধা শতকোটি প্রণাম।

কখনো প্রতিবাদে,

কখনো মানুষের কথা বলতেন।

তাই শঙ্খ ঘোষ লিখেছেন তার কবিতায়

আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে।

এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে

সেই এক বলা

কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো

কোনো ভাষা নেই

কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে

যতদূর মুছে নিতে জানে

দীর্ঘ চরাচর

তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই।

কেননা পড়ন্ত ফুল, চিতার রুপালি ছাই, ধাবমান শেষ ট্রাম

সকলেই চেয়েছে আশ্রয়

সেকথা বলিনি? তবে কী ভাবে তাকাল এতদিন

জলের কিনারে নিচু জবা?

শুন্যতাই জানো শুধু? শুন্যের ভিতরে এত ঢেউ আছে

সেকথা জানো না?

তাই শেষ পংক্তিতে বলছি-----+

আজ ফুলগুলো দিলাম শরীর জুড়ে

বেঁচে থাকুক চিরটা কাল আমাদের হৃদয় জুড়ে।

অলোক দাস




তুমি চলে গেলে কিছু না বোলে 


 প্রণাম হে কবি, তুমি চলে গেলে কিছু না বোলে I মনটা ব্যাকুল ছিলই, জেনেছি তুমি ভালো আছো I আজ বুজেছি, আমরা কেউ ভালো নেই I বলতে পারি শুধু টিকে আছি I জন্ম মৃত্যু যে স্বাভাবিক, তা আজ প্রমাণিত I তুমি ছিলে কবিতার রাজা I এতো সম্মানে ভূষিত, খুব কমই হয় I সন্ধ্যায় যখন শঙ্খ বাজবে, তোমাকে মোনে পড়বে I তুমি আজ সকলের হৃদয়ের মাঝে I যখন সময় হয়, যেতেই হয় জানি I  তাই আজকের দিনটা একটু ম্লান, কি যেন একটা হারিয়ে খুঁজে যাচ্ছি I সেকি তুমি ! প্রণাম হে কবি ভালো থেকো, থেকো শান্তিতে I

মোহাঃ হাসানুজ্জামান




কবি শঙ্খ ঘোষ এর স্মরনে


 


অ্যাকাডেমি(১৯৭৭) পুরস্কার প্রাপ্ত দুই বাংলা প্রখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ ওরফে চিত্তপ্রিয় ঘোষ আর নেই।খবর টি টেলিভিশন এর পর্দায় দেখে চমকে উঠেছিলাম।দেশে আবারো নক্ষত্র পতন , অপূরণীয় ক্ষতি কারণ মারণ ভাইরাস কোভিড-১৯। কবির মৃত‍্যুতে শোকপ্রকাশ রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী সহ দেশের প্রধান মন্ত্রী ,কবি সাহিত‍্যিক , সকল শ্রেনীর মানুষ ও  সাহিত্য প্রেমী দের।বিশ্ব বরন‍্যের এই কবি জন্মসূত্রে অখণ্ড ভারতবর্ষের বাংলাদেশের চাঁদপুর গ্রামের হলেও তাঁর ছাত্রজীবন ও কর্মজীবন আমাদের দেশে সিমাবদ্ধ। কলকাতার বিভিন্ন কলেজ সহ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় , দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর কর্মস্হল।


পেশায় অধ‍্যাপক হলেও নেশায় তিনি একজন বাস্তববাদী কবি সাহিত‍্যিক ছিলেন।তার লেখায় ফুটে উঠতো সমাজের বিভিন্ন চিত্র।এই সাহিত্য কলার জন‍্য তিনি ১৯৯৯ সালে দেশিকোত্তম সম্মান,২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরস্কার ও ২০১১ সালে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান *পদ্মভূষনে* তিনি সম্মানিত হন।এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে দুইবার সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার,রবীন্দ্র পুরস্কার সহ অন্যান্য অনেক পুরস্কার।

 বেক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন সৎ দার্শনিক এর মতো।ছাত্র-ছাত্রী দের সাথে তার বন্ধুত্ব সুলভ আচরন,সহকর্মী দের সাথে সখ্যতা ও নতুন কবি সাহিত্যিক লেখক দের অভিভাবক হিসেবে তার খ‍্যাতি ছিল চোখে পড়ার মতো।তার মৃত্যু টা যেন সাহিত্য জগৎ এ মহা-বটবৃক্ষের পতনের মতো।অনেকেই তাকে *জাতির বিবেক* বলে অভিহিত করেন।


তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু কাব‍্যগ্রন্থের মধ্যে অন‍্যতম "বাবরের প্রার্থনা" ,"মূর্খ বড় সামাজিক নয়", "পাঁজরে দাঁড়ের শব্দ" , "দিনগুলি রাতগুলি" ও গান্ধর্ব কবিতা গুচ্ছ প্রমূখ।


রবীন্দ্রনাথ বিশেষজ্ঞ হিসেবেও  এই কবির খ‍্যাতি আকাশ ছোঁয়া।*ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ* আজো গেঁথে সকলের হৃদয়ে ।তাঁর বড় গুন যেটা বরাবর আমাকে অনুপ্রাণিত করে এসেছে সেটি হলো রাজ‍্য সরকার অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বরাবর সোচ্চার  ছিলেন তিনি।


 ৮৯ বছর বয়সে আজ তার প্রয়ান।জন্ম গ্রহন করলে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করতে হবে এটা নিশ্চিত।তিনিও তাঁর বেতিক্রমি নন।আজ একটু অন‍্যের ভাষায় বলি


  "তুমি চলে গেছো আজ

ফিরবেনা আর কভূ স্বশরীরে

তবুও তুমি থাকবে চিরকাল

সারা বিশ্ববাসীর হৃদয় মনিকোঠারে ।"


শেষে শুধু এটুকুই বলার হে মহান  সাহিত্য বিপ্লবী আপনার পবিত্র আত্মার স্বর্গবাস হোক এই কামনা করি । জগতে আপনি রবেন সকলের অন্তরে চির উজ্বল ধ্রুবতারার মতো।


-----------–💐------------------

২০ এপ্রিল ২০২১

বাহাউদ্দিন সেখ




গুরুজন


স্মরণীয় শ্রদ্ধায়ে রয়েছো আমার মন প্রাণে হে গুরুজন

শৈশব থেকে ভালো-মন্দ এড়িয়ে রেখেছো অপুষ্ট গোলাপ ফুলের মন।

তুমি যে আমার আত্মা জ্ঞান ভান্ডারের  সঞ্চালন

তুমি আমার সকাল সন্ধ্যা ধীর কন্ঠ শব্দের স্পন্দন।

তুমি সরল শিশু তরুণ সৈনিকের সূর্যের কিরণ

করেছে তোমার কথায় কথায় কবি লেখক এর ধারন।

অপরূপ তোমার কথা বিন্দু বাঁশি ছন্দের কুল

তোমার হাতে গড়ালে কবিতা শিল্পী উজ্জল কানন ফুল।



মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ




আলাপে জ্ঞান


অন্তর চোখে তাকালাম,বিশ্ব প্রকৃতির দিকে।

চোখে তার অশ্রুজল,হৃদয়ে তাহার দুংখের ছল।

গৃহবধূ মহিলার মতো,ঘোমটা দিয়া কাঁদে।

তার বিচার পাইয়ে দেবে,বাতাস বয়ে চলে।

হঠাৎ থমকে দাঁড়ায়,বাতাস আমার সম্মুখে।

ছলছল চোখ জিজ্ঞাসা করলাম!বল আমায় বল?

বাতাসেরা করছে নালিশ,শোনরে সব শোন?

তুমি বা আমি,একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট মোরা।

তোমার কন‍্যাকে অলংকার দিয়ে ঢাকলে,যেমন লাগে সুন্দরী।

তেমনি গাছ-প্রকৃতি হলো,আমার রুপসজ্জার অলংকার।

তোমার সম্রাজের মানবজাতি,আমার রুপকে মাখাচ্ছে চুনকালি।

তাইতো পাচ্ছিনা দেখাতে কাউকে,কাঁদছি গৃহবধূর বেশে।

জগতের প্রকৃতি তোমরাই হলে আমার চোখে বিশ্বসুন্দরী।

আমি বলছি তোমায়,তুমি হলে জগতের রানী।

তোমার রুপদেখিয়া,পাগলের বেশে ঘুরি আমি।

আমার সম্রাজের মানবজাতি,তোমার গুরুত্ব বুঝবেই একদিন।

আর সেদিন এই মাটিতে রাঙিয়ে তুলবে,সবুজে ঘেরা কত কি!।

কবি:মিলন ভৌমিক




এসো হে নববর্ষ



নতুন বষ' বরর্ণে

কত আশা ছিল মনে,

খানা,পিনা, নাচগানে

আপনজন মিলবো একসাথে।

কবিতা,গান,পাঠ

বলবে সবাই উৎসবমুখর দিনে।

ঈশ্বর নিজেই তালাবন্দী

দেবতা রয়েছে দেবালয়ে,

ভক্তের ভয় হৃদয়ে।

যৌবন শেষ, হুজুগে পারিনি বেড়াতে

কবিতা লিখি দুঃখের দিনে।

ভালো থেকো সবাই নতুন বছরে

আমার কলম অনুগত ভালোবাসার কাছে।


রাকিবুল হাসান




একটি গোলাপ



যখন তুমি দুগ্ধপোষ্য

নবজাতক কুসুম কলি

দু-চোখ জুড়ে ঘুমের নেশায় অন্ধ

সারা শরীরে দুধের গন্ধ

আমি তখনও তোমায় ভালোবেসেছি।


যখন তুমি

কৈশোরী এক ষোড়শী

নবযৌবন প্রাপ্তি

বিশুদ্ধ নীল পালকের প্রজাপতি

আমি তখনও তোমায় ভালোবেসেছি।


যখন তুমি 

বর্ষা দিনের ভরা পুকুর

রূপালী জোছনায় টইটম্বুর

পূর্ণ হিল্লোলিত তোমার যৌবন

আমি তখনও তোমায় ভালোবেসেছি।


যখন তুমি

পৌড়ত্ব থেকে বার্ধক্য হবে 

60 থেকে 80 

কুঁচকে যাওয়া ফুল

আমি তখনও তোমায় ভালোবাসবো।


সকল প্রত্যাশা-রঙিন ভালোবাসা 

চাঁদনী প্রসর রাত

যখন করবে পরিত্যাগ

আমি তখনও তোমায় ভালোবাসবো।

শুরু থেকে শেষ/আপাদমস্তক ভালোবেসেই যাব।


তোমার প্রতীক্ষার প্রহর গুণে

নিঃসঙ্কোচে দাঁড়িয়ে থাকবো হাতে নিয়ে একটি গোলাপ।

ফাহমিদা ইয়াসমিন ( ইংল্যান্ড )


 


হতাশা


আজকাল অনেক চুপচাপ হয়ে গেছি 

বিমূর্ত সময়গুলো যেন আর ডাকে না আমায় আগের মত।

তাই আমি এখন নিস্পন্দিত জীবনে হতাশার গ্রাসে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ যেন। 

সাদা মেঘের ভেলার মত আমি ভেসে বেড়াই

পানিতে ফুটিয়ে তুলি বিবর্ণ জীবনের অপ্রতুল ঢেউ  হাওয়ার তালে তাকে এগিয়ে যাই এদিক সেদিক  তপ্ত দুপুরের হৃদয়ের কোণে ঝরে যায়

এক গহীন রাতের নিঝুম আলাপন। 

 তবু উদাস মনে এখনও তোমায় ভাবি

এবং ভেবে যাবো অনন্তকাল।

মহুয়া চক্রবর্তী




ভুলের পথে মানুষ


প্রকৃতি আজ রুষ্ট হয়েছে

বায়ুতে এসেছে বিষ

নিঃশ্বাসের আর বিশ্বাস নেই 

কে ফেরাবে এদের হদিশ।

বিশ্ব আজ ভয়ে কাঁপছে

বিষাক্ত রোগ এসে দুয়ারে কড়া নাড়ছে,

জাগো মানুষ জাগো এবার

একটু তো সজাগ হও--

 মিটিং মিছিলে না ঘুরে এবার

 নিজের ঘরের দিকে রওনা হও।

 চারিদিকে আজ চলছে ওই

 ভোট ভোট খেলা

 শ্মশানে  তাই বসেছে দেখো

 কতো লাশের মেলা।

 যাদের জন্য তোমরা আজ

 করছো এতো রেলি

 যেদিন তাদের দরকার ফুরাবে

  সেদিন তুমি হবে তাদের চোখের বালি।

  ভালো যদি বাসার হয়, 

  বাসো নিজের পরিবারকে

  ভালোবাসো নিজের সন্তানকে,

  ভালোবাসো নিজের মাকে, নিজের মাতৃভূমিকে।

  এরাই বোঝে তোমার মূল্য

  তুমি বিহীন তোমার পরিবার যে শূন্য।

  সমাজে আমরা সবাই মানুষ নামে খ্যাত

  মান আর হুশ বিহীন শুধুই স্বার্থে জর্জরিত।

১৩ এপ্রিল ২০২১

শুভ্র ব্যানার্জি




 জট

সকালে ঘুম ভাঙলেই আপনার মনে পড়বে  একটা জাঁদরেল জট যা আপনি পাকিয়ে ফেলেছেন জীবনের সুতোয় তা আবার ছাড়াতে বসতে হবে।যদিও আগের দিনও ছাড়াচ্ছিলেন।আগামীতেও ছাড়াবেন।তার মানে 'যাচ্ছে দিন'।

না!তেমন যাচ্ছেতাই দিন আপনার নয় এবং সত্যি সত্যি দীন তো আপনি নন।তাই পরোক্ষ 

প্রচুর অসুবিধে থাকলেও 'বেলা হবে'।বেলা হলে রোদ উঠবে।বিকেলও হবে আবার রাত।

আবার কিছুক্ষণ স্বপ্নের জটলা।

একে তো চৈত্র মাস দারুণ এ সময়

 লেগেছে বিষম ভোট কী জানি কী হয়।

কালকে এক পার্টির অভিনেতা নেতার ভূমিকা পেয়ে পাড়া বেড়াতে এসেছিলেন।মুখে মিষ্টি হাসি।কী সুন্দর চেহারা।লাল টুকটুকে, সর্বহারার ব্যথা নির্ঘাত বোঝেন।

আজ আবার পাশের পার্কে ফুল ভলিউমে মাইক বাজছে।না সিনেমার গান না।সকলে কেন অত্যন্ত সুখে আছি সেই কথা মনে করিয়ে দেবার গান।আশ্চর্য নিম্নমানের লেখা ও সুর।তেমনই গায়কের কণ্ঠস্বর।মাঝে মাঝে বন্দেমাতরম পাঞ্চ করা আছে লিরিকের যেখানে সেখানে।

আমার যে কী আনন্দ হচ্ছে কী বলব।আকাশে বাতাসে আনন্দ থৈ থৈ করছে।


করোনার লকডাউনে মানুষের স্বার্থে পুলিশ মাস্ক ছাড়া লোক দেখলেই কেলিয়ে বৃন্দাবন দেখাত।এখন করোনা নাই?নো মাস্ক। সব ঠিক হয়ে গেছে।ভোট কত বড় বালাই।লার্জার দ্যান লাইফ।আমি কে?মরি বাঁচি কার কী এসে গেল?লোক না পোক!ঠাকুর বলেছেন।

করোনা হোক আর ভোট হোক।জন্ম মৃত্যু তো লেগেই আছে।ওসব বিধাতার কোর্টের বল।

'মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক আমি ভোটার'।যাহ!মিলল না।মিলল না মিলল তোদের .....তো ছিঁড়ল।

এতো সবের মধ্যে মজাটি হলো এই আকালেও দু একজন জুটে যাওয়া যারা জট খুলতে আপনার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।আপনার সন্তান ওই ছুট্টে এসে গলা জড়িয়ে একবার বাবা বলে ডেকে উঠল।

ঠিক মনে হবেই -কোথায় 'বেলা হবে' আর 'যাচ্ছে দিন'।আহা জীবন এসবের অনেক উর্দ্ধে রে পাগলা।চশমা নাকে লাগা,জট খুলতে বোস।

এক কাপ রেড লেভেলের ন্যাচেরাল কিওর চা বানাও রাখী,আমি ব্রাশ করে আসছি।


গদ্য 

মাহমুদা রহমান ( যুক্তরাষ্ট্র , নিউইয়র্ক )




জৈবিকঘাতক


এবার আমার আমিত্ব জানান দেবো ,

প্রবল অনুভূতির দীঘিটি যেনো বিরান ছিলো !

হৃদয়ের পড়ে থাকা পিপাসার্ত সেই তির্যক দৃষ্টি 

এখনো  তোমার ,

সময় বরফে ক্ষীণ হিমায়িত আচ্ছাদিত বুকের 

তুষার !

প্লাবনের তীব্র স্রোতে নির্গত  লাভার প্রয়োজনে 

একাকী  স্রোতস্বিনী  ,

তোমার অনুভূতির সুক্ষ স্নায়ুকণার ভেঙে যাক 

রীতির প্রাচীর !

বহুবছরের সুপ্ত প্রবল অনুভূতির বিশাল শুকনো 

দীঘিটি প্রবল আছড়ে আজ ,

আড়চোখে পুরোনো দৃষ্টিতে  দুর্বার পাবার !

ঠিক তাই হয়তো জমে আছে বিনিদ্রার  অফুরান 

ক্ষুধা ,

জৈবিক শেষ ভোজ বিক্ষিপ্ত নির্বোধ কেনো এ 

বিশ্বাসঘাতকতা ?

আইরিন পারভীন




আমাদের রাফিয়ারা


আমাদের অনেকের ছোটবেলা কেটেছে খুব সাধারন ভাবে।১৬ই ডিসেম্বর ও ২১শে ফ্রেরুয়ারী এবং ২৬শে মার্চ বা পহেলে বৈশাখ এইদিন গুলি উদযাপন করেছি সাধারন ভাবে ও যথাযোগ্য মর্যাদায়।  কিন্তু বর্তমানে পালন ও উদযাপন মনে হয় একটু ভিন্ন আঙ্গিকে। 


আমাদের সময় এই তারিখ গুলো পালনে বা উদযাপনে কোন বিশেষ ড্রেস কোড ছিল না। আজকাল ড্রেস কোড মেইনটেইন করতে হয়। যেমন রাফিয়ারা পাচঁভাইবোনের সংসার। বাবা চাকুরীজীবি। রাফিয়া এই অনুষ্ঠান উদযাপনে বাবার কাছে লাল সবুজ ড্রেস চাই কারন তার বান্ধবীরা সবাই পড়বে। তার মা উত্তর দিল কেন তোমাকে গেল বছর ১৬ই ডিসেম্বর এ লাল সবুজ জামা কিনে দেওয়া হয়েছে। অতএব আবার কেন??

রাফিয়া উত্তর দেয় ওটা দিয়ে হবে না ওটা সব বন্ধুরা দেখেছে এবং ফেইসবুকে ও ছবি দিয়েছি।


আসলে রাফিয়াকে একটা জামা দেওয়া খুব বেশী কিছু যে তা নয়। কিন্তু তার এই অহেতুক খরচ ও বখাটেপনা তার বাবা মা পছন্দ করছেন না। রাফিয়ার মা আমার বন্ধু তাই আজ সকালে ফোন করে মেয়ের এই বখাটেপনার কথা গুলো শেয়ার করলেন। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় আচ্ছা আমরা কি এইদিন গুলি পার করিনি। ছবি আকাঁর প্রতিযোগীতা, দেয়াল পত্রিকা লিখন আরো কত কি করতাম। আমরা কিভাবে আমাদের প্রতিভা বিকশিত করবো তারই চেষ্টা ছিল আর আজ লাল সবুজের পোশাক পড়ে পার্কে পার্কে আড্ডা দেওয়া যেন বিশেষ দিনগুলির পালন ও উদযাপন।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান




জীবন‌বোধ



জীবন তো বু‌ঝি এভা‌বেই অনা‌দিকাল পর্যন্ত বহমান থাক‌বে একেবা‌রে মহাপ্রলয়ংক‌রের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। কখনও মে‌ঘে ঢে‌কে যা‌বে আবার সূ‌র্যের রোদ এ‌সে তা‌কে ক্ষে‌দিয়ে পদ্মা পার ক'র‌বে আবার হয়ত বা কোন দিন মেঘ ও রোদ দু'‌টোর যে‌কোন একটার প্রতাপ বা রাজত্ব দীর্ঘক্ষণ যাবৎ আকা‌শে দৃশ্যমান থাক‌বে। 


        জীব‌নের স্বল্পকালীন জমা মেঘগু‌লো স‌রে গে‌লেই হয়তবা জীব‌নের আকাশটা নীল হ‌য়ে পূ‌র্বের মত আ‌বিভূর্ত হ‌বে, শুভ্র রঙ্গীন আ‌লোয় যেন জীব‌নের দিগন্ত‌টি উদ্ভা‌সিত হ‌বে আর আমার-আপনার জীব‌নের সকল কর্মকান্ডগু‌লোও এ‌কেবা‌রে স্বাভা‌বিক হ‌'য়ে আস‌বে ধী‌রে ধী‌রে।


            আর এছাড়া জীব‌নের মেঘ য‌দি দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় কিংবা এ‌কেবা‌রে নাইবা কা‌টে, কোন অসু‌বিধা তো হবার কথা নয়। যে‌হেতু, এই কষ্টগু‌লোর কশাঘা‌ত জীব‌নের বি‌ভিন্ন প‌রিস‌‌রে খে‌তে খে‌তে তা একপ্রকার যেন সহনীয় এক পর্যা‌য়ে এ‌সে আজ দাঁ‌ড়ি‌য়ে‌ছে।

                    

                বড় বড় কষ্ট, দুঃখ আর বেদনা সহ্য ক'র‌তে ক'র‌তে সেগু‌লো যেন আজ ন‌স্যির মত হ'য়ে গে‌ছে। আর যে বেপ‌রোয়া চ‌লে আর একলা চলা যার বহু আ‌গে থেকেই অভ্যেস গ‌ড়ে উ‌ঠে‌ছে তার কা‌ছে তো এটা কোন ক‌ষ্টের বিষয়ই নয় বরং তার কা‌ছে থোড়াই কেয়ার করার মত অবস্থা আর‌ কি! 


গদ্য

                                  

                      আর তাই সে বু‌ড়ো আঙ্গুল দে‌খি‌য়ে দে‌খি‌য়ে সোজা আ‌গে বাড়‌তেই পা‌রে আর বল‌তেই পা‌রে যে' "who cares" আ‌মি কা‌রো খাই না প‌রি না কা‌রো চাকুরী ক‌রি।

                                                 

                         

আস‌লে সৃ‌ষ্টিকর্তার না‌মে সদা পথ চ'ল‌লে কোন বিপদই বু‌ঝি বিপদ ম‌নে হয় না। তাই আমা‌দের জীব‌নের সকল চলার পথ শুরু হোক একমাত্র পরম করুণাময় সৃ‌ষ্টিকর্তা আল্লাহতায়া'লার না‌মেই।

সালমা খান

 


 

ডাকবাক্স



সেই তো উনিশ শতকের পর 

হতে, পড়ে আছি অযত্নে অবহেলায়,

অপেক্ষা করি দিনের পর দিন

মাসের পর মাস গড়িয়ে বছর,

কতকাল ডাকপিয়নের ডাক শুনিনা,

ডাকঘর বানিয়েছে ভৃমিঅফিস 

আমাকে ফেলে রেখেছে ময়লার স্তুপে।

জানো, অপেক্ষায় থেকে থেকে 

গায়ে মরচে পড়ে।

সুখ দুঃখ  ভালোবাসারা ছিলো

 এ ডাকবাক্সে ভরা 

খুব খাঁটি ছিলো আমাদের প্রণয় কথা

এ যুগের মুঠো ফোনের মতো

 সস্তা নয়,

আমার খসে পড়া জঙ ধরা দেহে

যদি মায়া হয় চিঠি দিও 

করুণা করে হলেও একটা চিঠি লিখো

তোমার যতো এলোমেলো 

ভাবনা আছে ,

ওখান থেকে একটা শব্দ তুলে দিও।

যদি ভাবনারা নাইবা আসে অন্তত ,

সাদা কাগজে তোমার আঙুলের স্পর্শ দিও।

যদি ভুল বানানে মাটিতে ছুঁড়ে  

ফেলো সমস্ত কাগজ 

ঐ ছেঁড়া কাগজের টুকরো টুকু দিও

মন থেকে শব্দেরা যদি মুছেও যায়, 

তবুও খামে ভরে দিও টকটকে 

কিছু গোলাপের পাপড়ি। 

ময়ূরের পেখম হতে নিও গাঢ় সবুজ রঙা নীল পালক,

প্রজাপতির ফোটা ফোটা পাখনা হতে হাজার বুটি টিপ ।

সূর্য থেকে চেয়ে নিও রোদে ভেজা এক ফোঁটা শিশির,

না হয় দিও ভোরে ডাকা দোয়েল পাখির শিষ

ভুল করে হলেও ভুলে চিঠি দিও

খামে,

মিথ্যা করে হলেও, বলো ভালোবাসা নিও।

ওয়াহিদা খাতুন "গজল"




রমজানের খশবু



রমজানেরি খশবু এলো পাপেরি ধরায়,

আদর করে চুমে নেরে মাখরে সারা গায়;

হৃদয় খুলে যে যা পারিস দুহাতে দান কর,

জ্বিন,ফেরেশতা খুশিতে আজ সিজদাতে লুটায়!

রমজানেরি খশবু এলো পাপেরি ধরায়!


মর্জিমতো চলাফেরা ছেড়ে দে সবাই ;

রোজার মাসে যাদের ঘরে খাবার টুকু নাই,

খুরমা,খেজুর কেনার মতো পয়সা যাদের নাই,

দুঃখী জনের মুখে হাসি ফোটা ভালোবাসি, 

নিজেকে আজ বিলিয়ে দে  তাদেরি সেবায়!

রমজানেরি খুশবু এলো পাপেরি ধরায়!


বেহেশতে আজ যেতে যে চাস মওলারি দরবার ;

শুকিয়ে থেকে রোজা রেখে ফায়দা হবেনা,

সাচ্ছা মনে না চলিলে কিছুই হবেনা,

অন্ধ হয়ে অহংবোধে ভুল পথে না চলে;

চক্ষু খুলে দেখবো আগে শরীয়ত কি বলে;

রোজার মাসে তওবা করো থাকতে রে সময়!

রমজানেরি খুশবো এলো পাপেরি ধরায়!

আদর করে চুমে তারে মাখরে সারা গায়!!


রচনাকালঃ-১৩/০৪/২০২১ রাত ৯টা ২১ মিনিট। 


১১ এপ্রিল ২০২১

মোঃ লিকসন আহম্মেদ




ঋত ও প্রকৃতি-



বসন্ত আর চৈত্রৈর অবসানে-

গ্রীষ্ম আসে বৈশাখের নিমন্ত্রণে!

চৈত্রৈর খরা শেষে,

বৈশাখী ঋতু হাসেঁ-!


প্রকৃতির প্রয়োজনে,

গ্রীষ্মের আয়োজনে-

নিলর্জ্জের মতো সে- 

থেকে যায় বহুদিন!

বহু ঝড় আর বৃষ্টিতে,

একাকার করে রাত্রীদিন।

রিনা দাস




আজব শহর কলিকাতা 


ছিল কলিকাতায় ব্যাঘ্রবাহিনী

ছিল বাঘের বাসা

বাঘের মতো ছিল যারা 

ছিল যাওয়া আসা ৷


কালের নিয়ম অনুসারে

হলো তাদের অস্ত

উচ্ছৃঙ্খলতার রাজনীতিতে

সবাই এখন ত্রস্ত ৷


নেই এখন কলিকাতায়

সেই আভিজাত্য

নেই কুলের ঠিকঠিকানা

এক্কেবারে ব্রাত্য ৷


নেই এখন কলিকাতায়

দখিন হাওয়ার সন্ধ্যা

নেই এখন শ্যামল তরু

প্রকৃতি প্রায় বন্ধ্যা ৷


মুখোশধারী কলিকাতা 

পশুদের তুল্য

সৎ মানুষের নেই সাহস

নেই কোন মূল্য ৷


আজব শহর কলিকাতা

বর্ননার নাই শেষ

ধন্য ওহে কলিকাতা 

আছ তুমি বেশ ৷

আরিফ রেজা




ধর্ষিতা আমার মা



একটা দুঃস্বপ্ন --

অতপরঃ ঘুম ভেঙে গেল

লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলাম।


মানুষ পোড়ার গন্ধ নাকি বারুদ গন্ধে কন্ঠনালী আবদ্ধ! 

বুঝ আসেনা কিছুতেই। 

মানুষের উপর প্রভুত্ব করতে করতে গ্রহ উপগ্রহকে খাচ্ছি নাকি গিলে!


মুক্তির মিছিলে নির্যাতিতের শ্লোগানে মুখরিত হচ্ছে বাঁচার মন্ত্রপাঠ,

ইতিহাস নাকি যুদ্ধ নাকি মহাযুদ্ধের ঘোষণা ?

কিংকর্তব্যবিমূঢ়, ঘরের ভিতরে বিচলিত আমি।


জানালার আর্শিতে চোখ মেলে দেখি, হৃদয় আঙ্গিনা বিধ্বস্ত,  পৃথিবী হচ্ছে খন্ডিত।

ভাঙনের ভারে কাঁপতে কাঁপতে দু'চোখে জল এসে গেল।


এ কোন সভ্যতা? দিগম্বর শরীরের দিকে কি তাকিয়ে আছে  জড়বাদীরা?

সহসা চোখে আঁধার ভেদ করে বারংবার পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখি, পৃথিবী তো ভালো নেই।


পৃথিবী খেয়েছে মানুষ, নাকি

মানুষ খেয়েছে পৃথিবী? 

ওরে কাপুরুষের দল, লক্ষ কোটি প্রতিবাদী কি আজ মরে গিয়ে মাটিতে গেছে মিশে?


এবার তোরা ঘুরে দাঁড়া! আর মূঢ়তা নয়।

মোর প্রশান্ত পারেও কত মহাজীবনের শান্তি আজি আক্রান্ত 

নব নব সৃষ্টিতে দৈত্য দানবে করে নিষ্ঠুর আঘাত অবিশ্রান্ত....

সজিব আল হাসান




পথিক ও প্রেমিকের গল্প


আমারে ছেড়ে দিয়ে একটা সংসার পেয়েছো ঠিকই, কিন্তু যৌবনের প্রথম কালে আমার সাথে একসাথে রাস্তায় ঘুরার অনুভূতি গুলা আর পাইলা কই!!


আমারে ছেড়ে যাওয়াতে আমি যতটা নিঃসঙ্গ হয়েছি তার থেকে বেশি একাকিত্বে আছে চিরচেনা রাস্তাটা! রাস্তাটা মাঝে মাঝে অভিমান করে বলে উঠে-


ইস আরেকবার যদি মানুষ দুইটা আবার এসে দেখে যেতো আমায়!

আর কত চলে যাওয়ার পর ,কারো থেমে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়!কারো জীবনে কেউ থেকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক। আমার চেয়ে বেটার অপশন পেলে কেউ থেকে যায় না।


দুজন মানুষ রোজ একই পথে চলতে চলতে কেমন জানি পথটাকে আপন করে ফেলে! ওই রাস্তাটার প্রতিটা ধূলোকণার সাথে কেমন জানি একটা মায়া বসে যায়!


চিরচেনা রাস্তার সাথে সম্পর্ক খুব গভীর পর্যায়ে চলে যায় ঠিকই, কিন্তু কেন জানি মানুষ দুটোর ভেতরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়! যতদিন যেতে থাকে ততই একজনের সাথে আরেকজনের হৃদয়ের বন্ধন ছিন্ন হতে শুরু করে!


মানুষ বাস্তবতার দোহাই দিয়ে চলে যায় কিন্তু আসলে তারা নিজের স্বার্থের জন্য দূরে সরে যায়! ইচ্ছে করলে তারা থেকে যেতে পারতো!


পথটা পথিকে ঠিকই ভালোবেসে ফেলেছে, তুমি মানুষ হয়ে কিভাবে চলে গেলে?

ফিরোজ আহমেদ জুয়েল




 প্রিয়তমা


তুমি জানো কি না,জানিনা,

আমার নিরব চোখের ভাষা;

তুমি বোঝো কি না,বুঝিনা,

সুপ্ত হৃদয়ের না বলা কথা;

তবুও ভালোবেসে যাবো অন্তবিহীন,

করে যাবো তোমার আমি,শুভ কামনা।


আমার নিরব ভাষার সাক্ষি,

প্রকৃতির সাথে মিশে থাকা-

গাছ পালা আর পশুপাখি;

নদীর ঢেউ এর সাথে মিতালি করে,

জানাবো আমি,মনের অভিব্যক্তি;

তবুও তোমায় বলবোনা কখোনো,

সদা একরাশ আমি ভালোবাসি। 


আমার মনের ফুলদানিতে আছে,

তোমার সৌরভেরই ছোঁয়া;

রেশমি চুলের সুবাসে হৃদয়,

ব্যকুল মাতওয়ারা;

তুমি জানবেনা কোনদিন,জানতেও পারবেনা;

কি ছিলো আমার মনে,

তোমার প্রতি অপ্রিতিম ভালোবাসা।


ভয় হয় যদি তুমি,ভুলবুঝো আমায়,

নিরবে বলে যায় ভালোবাসি তোমায়;

যেটুকু পেয়েছি আমি স্মৃতি হয়ে রবে,

অবসরে একাকি না হয়,

স্বপ্নে মিশে যাবে।

স্বপন কুমার ধর




আনমনে



একটু স্পর্শ,মিষ্টি হাসি, আর -

আধফোঁটা মুখ নিঃসৃত শব্দগুলো,

বদলে দিয়েছিল আমাকে,

ভুলিয়ে দিয়েছিল,প্রিয়াহীনের

অদৃশৃ যন্ত্রণা,আবছা হচ্ছিল স্মৃতি।

ডেকে সে ছাড়াতো শয্যা,

হয়তো বলতে চাইত -

"ওঠো খেয়ে নাও", "বেরোতে হবে",

কর্ম জীবনের দৈনিক রুটিনে।

ভরসা যোগাত, আশ্বস্ত করত,

জীবনের প্রতি ক্ষণে, প্রতি মুহূর্তে।

সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরলেই, তার দর্শনে

দুর হত সমস্ত ক্লান্তি, চিন্তা,অবসন্নতা।

পাশে এসে বসে শোনাত,

সারাদিনের অভিযোগ,অনুযোগ,আর -

শেষে চলত তার মান-অভিমান,

ভাঙ্গানোর পালা, আদরের পালা।

এমনি করেই কাটছিল,আনন্দের দিনগুলি,

আর চলছিল অতীত বিয়োগ যন্ত্রণার উপর প্রলেপ।


হঠাৎ একদিন নিয়তির ডাকে অকালে,

সে ও, কন্যা ও চলে গেল,

আর আমি হয়ে পড়লাম,একা

সম্পূর্ণ একা,প্রকৃত একা, আর -

আজ ও খুঁজে বেড়াচ্ছি, তাদের

নিজেরই আনমনে, অজানা জগতে,

যদি একটিবার, অন্তত একটিবার,

স্ব-বিলীন এর আগে, কোথাও দেখা পাই।

১০ এপ্রিল ২০২১

মোহাঃ হাসানুজ্জামান




একচল্লিশ


আজ আমি একচল্লিশ

একাকী নয় আমার জগৎ,

নেই মনে কোন সংকীর্ণতা

নবীন-প্রবীনে ভরা আমার ভূবন।



জীবনের মাঝে তিক্ত অভিজ্ঞতা

আপনজনের দুঃখে লাগে ব‍্যাথা,

তবু আজও সক্রিয় আমার মূল‍্যবোধ

পদাতলে পৃস্ঠ সমাজের অশ্লীলতা।


খুঁজেছি পথ আমি বাস্তবতার ভিড়ে

দেখেছি পৃথিবী সংসারের হাত ধরে,

জীবনটা আমার হয়েছে ছন্দময়

সেজেছি নতুন সাজে অভিজ্ঞতার সঞ্চয়।


করেছি আমি অস্বিত্বের নির্মাণ

অজস্র চিন্তা ভাবনায় উচ্ছ্বসিত প্রান,

ভাসছি আমি উজান স্রোতে

দিন আসে দিন যায় নিয়মের ভেলায়।


হৃদয় কিনারায় নেই দূরত্বের ব‍্যাবধান,

কোলাহলের মাঝে নিজেকে খুজি প্রতিক্ষণ,

বিশ্বাসের মাঝে অতিবাহিত এই দীর্ঘ পথ

আমার একচল্লিশের জীবন বড় বিচিত্রময়।

মধুমিতা রায়




আঁধার শেষে...


আগুন দিও,গনগনে আগুন

পলাশের প্রেম আর মহুয়ার নেশা কেটে যাক

সমস্ত ঘৃণা জড়ো  হোক,

মাঝে মাঝে উগরে দেওয়া ভালো সমস্ত জ্বালা,


পুড়িয়ে দেওয়া ভালো সমস্ত ললিত মেকি আখ্যান

জ্বলে উঠুক তৃষ্ণা, উত্তপ্ত হোক মাটি

যদি লাগে লাগুক দাবানল,ছাই হোক অন্ধকার।


রাত্রিশেষ হলে

স্বপ্নেরা দানা বাঁধুক

বৃদ্ধরা নির্ভয়ে এসে দাঁড়াক মিছিলে

মসৃন নীলিমায় ফুটে উঠুক

নতুন বছর।



মোঃ মুরাদ




তুই সরোবরি 



অরণ্য শেখালো ঝড় সয়ে যাওয়া

আমি তা ভুলবো বলো কিভাবে ?

বসন্ত হতে চেয়েছি বলে তবে কি

ঝরে যায় দুঃখ পাতা এভাবে ?


মায়া ভরা তুই সুখের সরোবরি

আমি র্নিবিঘ্নে পেরিয়েছি সীমান্ত,

তুই আকাশ আমার বলেই আজ

ডানা খুলে দেখি আমি মানুষ তো!


তোর মোহে মায়া জাদু জড়ানো

হাসির রোদে মেলে ধরি পাখনা,

তোর চোখে চোখ রাখতে গেলে

মৃদুকন্ঠে বলিস "আহা, থাক না"।


তোর চোখ জড়ানো থাক স্মৃতিপটে

থাক কিছু ধুলোমাখা জীবন নাটক,

তুই উপন্যাস হয়ে রেখে যাস রাত

আমি কাজল পথে হারানো সে পাঠক...

শ্যামল রায় এর দুটি কবিতা




নতুন নতুন পাতারা সব


নামিদামি গাছপালারা সব

এক পায়ে দাঁড়িয়ে 

শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে

সবকিছু ভুলে থাকে কেমন করে!

এসব ভাবনা, মন জুড়ে থাকে

অবাক করে

আমিও যেন থাকি ওদের মতো করে।

কিছুদিন আগেই ছিল পাতাহীন

ঝরে যাওয়া গাছপালা রা

এখনও বেশ সজীবতা নিয়ে

রোমান্টিকতা হয়ে পড়েছে

আমার চোখে দেখা গাছপালার সব।

আমি কখনো কখনো জানালার পর্দাটা সরিয়ে

দুচোখ মেলে দেখি, ভাবি 

কত সুখ আছে ওদের ভেতরে

সজীবতা নিয়ে আছে দাঁড়িয়ে ।

আমিও এই ভাবে বাঁচতে চাই

সবাই দেখুক, আশা রেখে বাঁচুক

ঠিক যেভাবে বেঁচে আছে গাছপালারা।



শুধুই প্রয়োজনে থাকি


প্রয়োজনে থাকার পরেও

কিছু একটা প্রয়োজন থাকা দরকার

দেশের জন্য ,নইলে দশের এর জন্য

কিংবা নির্ভেজাল একটা ভালোবাসার জন্য।

এটাই প্রয়োজন হতে পারে জীবন যাপনে।

কিন্তু এখনকার প্রয়োজন

নিজের ছাড়া অন্য কিছু নয়

এখনকার প্রয়োজন

একাকীত্ব, নিজে ভালো থাকা

নিজেই ক্রমশ বড় হয়ে ওঠা।

এসব টাই এখনকার হালচাল

তবুও পথে ধুলোবালি মেখে

চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে

ঐতো সূর্য উঠেছে

সকালবেলা আছি, ঠিকানা আছে

ঝরে যাওয়া পাতার মাঝে

গজিয়ে উঠবে নতুন নতুন পাতা

এখানেই দুচোখ মেলে বলবো

আমার বেঁচে থাকাটা এই ভাবেই

কচিপাতা দের মত জেগে থাকা

কখনো ভালবাসায়

কখনো দুঃখের পাশে

সুখ নিতে শ্বাস-প্রশ্বাস ফেরি

ভাঙা পাড়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলি

নতুন তুমি, ভালো থেকো তুমি

আমাদের সকলের জন্য

সকালবেলা আছি ,ঠিকানা আছে।

শুধুই খুঁজে নিতে যতটা দুঃখ কিংবা কষ্ট।

শুধুই প্রয়োজনে থাকি তা নয়

সকাল বেলার জন্যও অপেক্ষায় থাকছি।

মাসুদ রানা


 


মেয়েটির নাম নদী 


ভালোবেসে মেয়েটির নাম নদী দিলাম -

নদী বলল, মাঝি!

ও মাঝি উত্তাল ঢেউয়ে ঢেউয়ে নৌকো ভাসাবে?

আমি যাবো, যাবো তোমার নায় । অথৈজলের বায়না করে এক বুক ধুকপুকানি দিবো তোমায়। 

আমি যাবো তোমার নায়।

মাঝি বলল ঢেউ কখন বয় ?

নদী বলল ,

ঐ যে জলের সাথে হাওয়ার মিতালি যখন হয়।

মাঝি তখন বলল হেসে ডেকো , ডেকো তবে, 

ভাসাবো না হয় জলের তালে।

খানিক বাদে  ডাকলো নদী, 

মাঝি... 

ও মাঝি, আমায় একটি আকাশ দিবা? মেঘে ভরা আকাশ জলটুসটুসে আকাশ , যেথা বৃষ্টি ছুঁবে অধর চিবুক । এমন আকাশ , এমন বৃষ্টির আকাশ। আচ্ছা মাঝি  , আমার তুমি আমার বৃষ্টি  হবে ,

মাঝি বলল সে আবার কী,

বৃষ্টি কখনো হওয়া যায় নাকি? 

নদী তখন হেসে কুটিকুটি , যাহ্ বোকা মাঝি । শালুকপাতার গল্প শুনাবে মাঝি ? 

ফুলে ফুলে গেঁথে দিবে মালা ?

গুঁজে দিবে কী সে ফুল খোঁপার চুলে? 

মাঝি তখন ভাবছে ভীষণ, কী ফুলে কী হয়। শালুকফুলে প্রিয়ের কথা। আচ্ছা আমি মালা করে দিবো তোমায় । আবার খানিক ডাকলো নদী, 

মাঝি, ও মন মাঝি 

আমায় একটু সুখ দিবা ?

মাঝি তখন চুপকথাতে , মৌণ করে বলল মাঝি 

সে আবার কি?

নদী বলল, ঐ যে অসুখের এক সুমিষ্ট ফল , খেতে নাকি ভীষণ মজা। 

দিবা কি না বলো ?

মাঝি বলল গত বর্ষার কথা।

আঙুর ক্ষেতে বিশ্বাস ডুবেছিল, ঘরে ঘরে আগুন লেগেছিল,

প্রেমিকেরা সব মরেছিল। দিবো যদি চাও । 

হঠাৎ নদী চুপসে গেল , তারপর 

আড় চোখ করে বলল সব প্রেমিক কী মাঝি আর জলের মতো হয়? 

যা মাঝি চাই না আমার সে সব, 

তবে তুমি নৌকো ভাসিয়ো, খানিক না হয় মায়ায় বেঁধো। মাঝি চুপচুপ করে বলল যে নদী দিক চিনে মিশে গেছে বুকের ত্রিমোহনায় , তাকে কী মায়ায় না বেঁধে রাখা যায় ।

মাঝি তখন বলল হেসে চলো নদী চলো , ঢেউয়ের অভিলাষে ভেসে ভেসে যাই। তারপর মেয়েটি নদী হল, মাঝির বুকের গোপন নদী, গোপন নদী।

নাজনীন নাহার




 মানবতাচাই 



আমি অবাক হই না বা বিস্মিতও হই না

আমি রীতিমতো কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ি! 

যখন আমার চারপাশের আগাছা গুলো তাদের দুর্গন্ধমাখা পচনকৃত অঙ্গে নির্লিপ্তের মতো আমাকে পেঁচিয়ে ধরে!

শ্বাসরোধ করতে চায় তাদের জোরের ক্ষমতায়!

হ্যাঁ, আমি এই সমাজের কথা বলছি, সমাজে বসবাসরত পচনকৃত মনুষ্যত্বের কথা বলছি, 

আমি পঁচে যাওয়া মানবতার কথা বলছি!

শুধু আমি নই আমার মতো আরো অনেকে বলছে।

মানবতা আজ কোথায়?

কতবারই তো প্রশ্নবাণে জর্জরিত মানবতা!

কে দেয় সেই উত্তর?

কোথায় গেলে পাবো তার খোঁজ?

আমি ন্যায়-অন্যায়, নীতি-দুর্নীতি এসবের যোগ বিয়োগে পড়তে চাই না, আমি বিয়োগান্ত চাই।

আমি সবকিছুর উর্ধ্বে মানবতাকে চাই।

কে দিতে পারে আজকের এই দুর্গন্ধময় সমাজ থেকে সেই মানবতা; যা পঁচে গলে যাচ্ছে?

একের পর এক চলছে রাজনৈতিক, মানবিক ধর্মীয় জাতিভিত্তিক অপপ্রচারের কূটকৌশলতা!

ধর্ষণ, রাহাজানি, খুন-খারাপি, চাঁদাবাজি, আমজনতার উপর জুলুম, অত্যাচার, নিপীড়ন, শোষণ এসব তো নিত্য নৈমিত্তিক খেলা জাতিরক্ষার নামে জাতির দুষ্কৃতীদের কাছে।

এই যে লকডাউন; 

লকডাউনের ইতিবৃত্ত কি?

আমি বলছি,

সমাজ বা জাতির কিছু মগজবান মানুষ লকডাউনের পোস্টালে উতরে দিচ্ছে তাদের অসুস্থ ক্ষমতা!

ভাইরাস কতোটা শুষে নিচ্ছে জানি না!

তবে সমাজের শোষকদল নিংড়ে নিচ্ছে জাতির নাসারন্ধ্র!

খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষের পেটে লাথি মেরে বিলাসবহুল এসি রুমে শ্লোগানের শ্লেষ শুনতে পাই

তবু আমি নিরুপায়; অপরাধ আমি আমজনতা,

ক্ষমতা ঐ সকল মগজ শূন্য মনুষ্যত্বহীন মানুষের হাতে! 

হাসি পায় তবুও তারা মানুষ!

আমি অতি সাধারণ তাই অসাধারণ কিছু করার সাহস আমার নেই!

মানব বন্ধন আজ ছিন্ন হয়ে গেছে এ কথা ভাবলেই ডুকরে ওঠে হৃদয়!

তবু আমি মানবতা চাই!

কিন্তু কোথায় গেলে পাই?

মোঃ তরিকুল ইসলাম




অনুকাব‍্য


করোনায় বিষাক্ত ধরণী আবার

চারি দিকে ঘন গাঢ় অন্ধকার,

সুযোগ সন্ধানীরা করে মহাপাপ

না আছে তাদের শোক পরাতাপ।


হৃদয় থেকে হৃদয় বিমল হোক সবার

প্রাণ সঞ্চারিত হোক ধরণীতে আবার,

এ ভূমিতে ছুঁয়ে যাক সুখ শান্তি সমৃদ্ধি

দূর হোক যত সব নীতিহীন রাজনীতি।

রাকিবুল হাসান




উর্বশী



তুমি এলোকেশী

উর্বশী

কুসুমিত এক ষোড়শী

বৃষ্টি ভেঁজা ফুল।


তুমি মায়াবতী

অরুন্ধতী

উদ্ভাসিত চন্দ্রকান্তি

রূপক কবিতার মূল।


তুমি প্রদীপ্ত সুনয়না

স্বর্গবারাঙ্গনা

একাগ্র চিত্ত আরাধনা

আমার সঠিক ভুল।


তুমি আকৃষ্টকারী লাবণ্যময়ী

মধুময় ছন্দময়ী

মমতাময়ী

উৎকলিকা বকুল।


তুমি ভিঞ্চির শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম মোনালিসা

আমার সুপ্রিয় কলিজা

শৈশবে হারানো পুতুল।

স্বপন কুমার ধর

 



কবি নই


আমি কল্পনা করতে ভালবাসি,

কিন্তু উড়তে চাই না।

আমি অক্ষর কর্মী, অক্ষর সাজাই,

কিন্তু অক্ষর বিশেষজ্ঞ নই।

আমি লিখতে চাই, লিখি ও,

কিন্তু কবি নই।


যখন লিখতে বসি, তার আগে,

মনের মধ্যে ভেসে ওঠে বিভিন্ন ছবি।

চেষ্টা করি তাকে, বর্ণের তুলিতে,

বাস্তবে আঁকতে, নিজের মত করে।

শব্দচয়ন হেতু, রাফ খাতায় চালাই,

বারংবার কাটাকুটি আর পরিবর্তন,

বর্ণের, শব্দের, বাক্যের, মাত্রার।


লিখতে বসে ভাবতে থাকি,

আনমনা হই আর এগিয়ে চলে,

ঘড়ির কাঁটা টিক্ টিক্ করে,

জানান দেয় সময়ের, কিন্তু.…

মগ্নতার আবেশে, খেয়ালই থাকে না।


এমনি করে লিখতে বসে, একদিন

হঠাৎ মনে হল, কবিতার রাফ খাতাটায়,

কেউ যেন উঁকি মারছে, উপহাস করছে।

চশমার মধ্যে দিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখি যেটা,

সেটা কবিতা নয়, মনের কাল্পনিক ছবিগুলো,

অক্ষর হয়ে পাশাপাশি বসে আছে, 

আর অট্টহাসি দিয়ে বলছে,

কল্পনা ও তোমার, অক্ষর ও তোমার,

লেখনী ও তোমার, অঙ্কন ও তোমার,

কিন্তু তুমি কবি নও।

বাহাউদ্দিন সেখ




 গল্পঃ 

             ভালোবাসার শব্দ ও গন্ধ নেই


      

   


ভেবেছিলাম ডাইরির পাতায় পাতায় গল্প লিখব তোমাকে নিয়ে, যেখানে থাকবে আমার আর তোমার অসংখ্য হাজার হাজার "কিন্তু" "কেন"? কিন্তু আজ তা হয়নি। কারণ তুমি ভালোবাসা পরিপূর্ণতা করনি।  নদীর উর্মির ঢেউয়ে আজ নৌকা মাঝপথে ছেড়ে এসেছ তুমি তবুও যেন আজ কোন বায়ু বাতাস এর গর্জনের শব্দ নেই কোন গন্ধ নেই কোন ভালোবাসার ছন্দ নেই। আজ গল্পটি লিখতে বসেছি যে এই কারণে জ্বলন্ত বক্ষস্থল বনভূমির স্পর্শ পেয়েছি তাই আমি তোমাকে নিয়ে গল্প লিখতে বসেছি।



তোমার কি মনে আছে প্রিয়তমা প্রথম দেখার অনুভূতি প্রথম প্রেমের ছন্দবেশী।

কিন্তু তা আমার সেই প্রথম দেখা স্পর্শহীন প্লাবন-বন্যা আর জলস্ফীতি গর্জন শব্দ আজও মনে আছে। জানিনা ? তোমার সেই কথাগুলো আজ মনে আছে কি?


ঘুমের স্বপনে বিশাল ঝিঁঝি পোকার ভালোবাসা স্নেহ প্রেম পেয়েছি, পেয়েছি বাঁশির ছন্দের সঙ্গে সেই গানের সুর নদীর সেই তীরে। আজ যেন সেই স্পর্শ ভুলতে পারিনি। জানতাম না চোখের পাতা খুলিলে সেই গড়ানো বিশাল স্বপ্নের ভালোবাসা প্রেম প্রীতি ভেঙে পড়ে যাবে। যদি জানতাম তবে চিরস্থায়ী জন্য চোখ বুজে ভালোবেসে যেতাম। আজ দেখেছি আজ বুঝেছি স্বপ্ন ঘুমের মধ্যেই দেখা যায়। চোখের পাতা খুলে নয়।



জানতে কি চেয়েছো প্রিয়তমা আজ আমি কেমন আছি? আমি জানতে চেয়েছি বারবার তুমি কেমন আছো,কিন্তু আজ কোন লিখতে বসিনি চিঠি বসিনি কোন ফোনে এসএমএস করতে লিখতে বসেছি শুধু তোমার আমার বিরহের গল্প।



তোমার কি মনে আছে আমাকে দেখানো সেই স্বপ্ন গুলি? যেটি তুমি বলেছিলে আমি আর তুমি ফাল্গুনের লাল জ্বলন্ত বসন্ত ফুলের মত প্রেম-ভালোবাসা রামধনুর রঙ্গের মতো রাঙাবো। তোমার কি মনে আছে সেই দেখানো স্বপ্ন গুলি যেটি বলেছিলে তুমি  পড়ে থাকবে লাল শাড়ি, কপালে টিপ, চোখে কাজল, পায়ে নুপুর আলতা, হাত ভরা চুড়ি আর রুলি আর আমি পড়ে থাকব পাঞ্জাবি আর পায়জামা আর তোমাকে স্বপ্নের দেশে নিয়ে যাব। তোমার কি মনে আছে?


যদি আগে জানতাম প্রেম ভালোবাসার এতই থাকে কষ্ট ভরা নদী তবে হয়ত সেই নদীর কিনারায় স্পর্শ অনুভূতি বায়ুর সঞ্চালন বৃদ্ধি করতাম না। যদি আগে জানতাম আকাশ পথে সূর্য ও চন্দ্রের থাকে কালো মেঘের ভয় তবে আমি তোমার আকাশ পথে পাখি হয়ে উঠতাম না। নিজে নিজেকে মাঝে মাঝে ভাবি বড় অন্যায় করেছি ভালোবেসে তোমায়। কিন্তু কি করি বল দোষ নেই আমাদের। দোষ ছিল হিংস্র বন্ধু শত্রুর বিশ্বাসে। জানো কি? আজ আমি বিশ্বাস করি না মনকে বিশ্বাস করিনা মানুষকে বিশ্বাস করি শুধু ঈশ্বরকে।



আজ বড় কষ্ট হয় তোমার সেই স্মৃতি গুলির কথায়। আজ বড় কষ্ট হয় তোমাকে সেই অন্ধকার গলিতে ছেড়ে আশায়। আজ আমি মানুষের প্রেম-ভালোবাসায় অক্ষম অসহায়।


আজও ধরে আছে চন্দ্রে কালো রাতের অমাবস্যা।


ভালোবাসার শব্দ নেই, নেই কোনো গন্ধ

গর্জন করে না নদীর তীরে প্রেম প্রীতির ছন্দ।

ভেঙেছে হৃদয় ভেঙেছে মন অন্ধিসন্ধি

রেখেছ তুমি স্মৃতির তরে বক্ষস্থলে প্রেম ছন্দের বন্দি।


আজ যেন তোমার ভালবাসার শব্দ শুনতে ইচ্ছে করে । কিন্তু চাইলেও যেতে পারিনা। যেতে ইচ্ছে করে সেই প্রথম দেখার নদীর তীরে। ইচ্ছে করে তোমাকে সেই আগের মতো হাত ধরে ভালোবাসি কথাটি স্পর্শ করার অনুভূতি।



রক্তে ভরা তোমার আমার  বাঘ হিংস্রের লবণাক্ত

করিলাম হর্ষ বহুল মনস্তাপ বিসর্জনে বিলাস মুক্ত।



যদি ধরতে পারতাম মুখোশ পরা বন্ধুর সাজ। তবে আজ হয়তো আমরা দুজন হতে পারতাম এক। ধরতে পারিনি বলেই চিরস্থায়ীর জন্য তোমায় বিসর্জন দিলাম।

আজ বন্দী ঘরে থাকতে ইচ্ছে করে। কারণ মানুষের এত মুখোশ পরা রুপ আর পারি না সহ্য করতে। তাই আজ তোমাকে বিসর্জন দিয়ে প্রায় ঘরে বন্দী থাকতে ইচ্ছে করে। লিখতে ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে কবিতা নাটক গল্প।


আমার আত্মা আমার কাছে 

                         মনটা যেন তোমার

ভালোবাসা রইল যেন 

                          স্মৃতির তরে আমার

০৭ এপ্রিল ২০২১

শুভমিতা বিশ্বাস




প্রেমাদর


পাহাড়তলির অন্ধকারে

 খেপার সাথে যাব

নির্জন সেই রাস্তাধারে 

একসাথে মেঘ হবো


বৃষ্টিমাখা আমার হাতে 

ভিজবে যখন খেপা

বাঁধনছাড়া হয়ে যাবে

মাধবীলতার খোঁপা


ভাঙবে চুড়ি পূর্ণিমাতে

নদীর মনে ঢেউ 

আমার খেপার উদাস চোখে

 কাব্য লেখে  কেউ

জারা সোমা




নির্বাসন


 ইচ্ছেনদীতে ভাঁটা পড়লেই 

আকাশে চাঁদ ওঠে থালার মতো


বেবাগ শব্দেরা ঘুরে বেড়ায় প্রজাপতির ছদ্মবেশে 


 মধ্যবিত্ত জীবন পাতে কাঁটা বাছতেই

    রাত গড়িয়ে পড়ে ঘন আঁধারের গায়ে


    তখন  জোনাককে নক্ষত্র ভেবে ভ্রম হয় 


 ভ্রমণকারী বাতাসে যে মেয়েটা সামলাতে থাকে বেণী        সেও আঁচল পাতে জোছনা প্রেমে


 কিন্তু একবার সর্বনাশা  মেছো নেশায় পেলেই


   চৈতী মেয়ের কপালে কালাপানি নির্বাসন।।


 

শাহারা খান ( ইংল্যান্ড )




গাঁয়ের বধু

 


গাঁয়ের বধু নায়ে চড়ে 

যাচ্ছে বাপের বাড়ি।

মুখে তার মিষ্টি হাসি,

পরনে ঢাকাই শাড়ি।


ঘোমটা দেয়া বধুকে আজ,

লাগছে দেখতে বেশ।

বাপের বাড়ি যাচ্ছে বধু,

খুশির নাইরে শেষ।


এতদিন পরে মুক্ত হাওয়ায়,

আজ ঘুরবে ইচ্ছে মতো।

শশুর বাড়ির বাঁধা নিষেধ,

পরোয়া করি নাতো।


কোথায় তোরা শৈশব সাথী,

আয়রে ছুটে আয় সবাই।

হারিয়ে যাওয়া দিনগুলি,

আবার ফিরে পেতে চাই।


রাখাল ছেলের বাঁশি শুনবো,

বটতলায় বসি পাশাপাশি।

প্রাণ খুলে কইবো কথা,

দুঃখ ভুলে করবো হাসাহাসি।


শশুর বাড়ির রাজপ্রাসাদে,

বন্দিনী লাগে আমায়।

বাবার বাড়ির স্বাধীনতা,

বল কোথায় পাওয়া যায়?

শ্যামল রায়




 চোখে ধরা পড়ে


উত্তরের হাওয়ায় জানালার পর্দাটা

সরালে দেখা যায়

নানান ধরনের গাছপালার ফাঁকে

গজিয়ে ওঠা নতুন পাতাদের

জোসনা রাতে ভারি মজা লাগে।

আর চারপাশে একাধিক কয়েক তালার বাড়ি

কাছাকাছি ছাদে হঠাৎ দেখা হয়েছিল

সদ্য বিবাহিত নারীকে

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

নতুন । ভিতরে আতঙ্ক কাজ করছিল

অথচ দেখতে পেয়েছিলুম তার ইশারা

আমাকে ভাবিয়েছিলো, ঘুম আসেনি 

একদিকে যমুনা ছিল অন্যদিকে গঙ্গা ভাগিরথী

দুয়ের মাঝে ঢেউ খেলেছিল সারাটি রাত

দু চোখে ধরা পড়েছিল তার মুখ।

হঠাৎ মুখোমুখি

নতুন কিছু করার নতুন কিছু বলার থাকে

এসব উধাও। সময় নেই বিবাহিত স্বামীর

সময় কাটে না, ভিতরে যন্ত্রনা

এ যেনো ঘন একটা অন্ধকারের জালে জড়িয়ে পড়া 

শুধুই আলোর পথ খুজছিলাম

তুমি যদি আলো হও আমি হব দিশা।

আমার বেড়ানো ছাদ হয়ে উঠুক

বৃষ্টিতে ভেজা নীল শাড়ির আঁচল

তুমি থেকো সারাক্ষন চোখে চোখ রেখে

শুধুই আমার জন্য --+।

মুনা ইসলাম




আলু,পটল সবজি



আমি করলা হবো 

তিতার মাঝে মিঠা।

মিছে বেগুন হলে পরে

চুলকানিতে সাজা। 


আলু হলো ফ্যাটের রাজ্য

ওজন বৃদ্ধির বাপ,

বেশি হলে মোটা ভুড়ভুড়ি

দেবে অভিশাপ।।


কচুর মত হলে পরে

বাঁশ দিতে মজা,

দুষ্ট মরিচ প্রতিরোধে

থাকবে না আর বাঁধা।


লবন হলো সেরা পুষ্টি

গোল্ডেন A+

কম বেশি হলে পরে

কল  শুধুই মাইনাস। 


মিষ্টি কুমড়া নামে মিষ্টি

চিনি লাগে তাতে,

আড়ালে যে দেয়াল হাসে

জানে শুধু কাকে।


পটল হলো আদর্শ সবজি

যাহার নেই তো কোন দোষ।

ইলিশ মাছে হেসে বলে

বেশ...বেশ...বেশ....

গোলাম রববানী




বেশি মনে পড়ে



ভুলতে পারি নে,

ভুলতে চাইলেই ভোলা যায় না।

অতীত যায় চলে 

আসলে অতীত চলে যায় না।

অতীত থেকে যায় সংগোপনে 

মনের কোণে খুব যতন করে। 


আলোতে ভালো দেখা যায় না,

কালোতে আলো হয়ে জ্বলে মনে।

কখনো অন্ধকারে কখনো বা একাকিত্বে,

চমৎকার এক অনুভূতি টেনে হৃদয় ক্ষরণে!


ভুলতে পারি নে,

ভুলতে চাইলেই বেশি মনে পড়ে।

আবদুস সালাম




 নপুংস

 


আকাশ কেঁদে চলেছে সারা রাত

তারারা খসে পড়ছে অজান্তেই

দুঃখের নিশান বয়ে আনছে হোটিটির দল

ভাগ্য দেবতা চোখে পট্টি বেঁধে বসে আছে


আলোর রোশনাই ভেসে চলেছে ভ্রান্ত আসকারা

অন্ধকারে গুমরে মরছে নির্বাসন দন্ড

মিথ‍্যের খাঁচায় আছে বন্দী হয়ে আছে স্বপ্ন

ভালোবাসার আকাশে বয়ে চলেছে মরুঝড়


সৌভাগ‍্যের বিছানায় শুয়ে আছে করোনা

হাওয়ায় ভাসছে মারণাতঙ্ক

সভ‍্যতার ক্ষত ধুয়ে দিচ্ছে রক্ত


মানবিক স্কুলে ছেলেদের আমরা পাঠায়না

আকাশের তারারা তাই কাঁদে

ফুলেরা  সুবাস ছড়াবে না বলে দিয়েছে

আমরা নপুংসক হয়ে চলেছি দিন দিন।

মোঃ সরোয়ার হোসেন




অলৌকিক দামি 


অজান্তেই কেন দুঃখ দিলাম তোমাকে

চাই-নিতো হতে কারো, কষ্টের কারণ 

তাহা মন কেন করে, যা করা বারণ

কেন অপরাধ বোধ তাড়ায় আমাকে?

যাহা চাই অন্ধ চোখে, মিছে অকারণ

মন চঞ্চলিয়া উঠে,ছুটে তার ডাকে

সে পরাণে যদি প্রেম, অবশিষ্ট থাকে

তব_ মিনতি তোমাতে, করিও স্মরণ।


কী ব্যাকুল তিয়াসা রে, মনে কত সাধ!

এই ভালোবাসাহীন, মানুষটি আমি

তোমার নয়নে মুগ্ধ! স্বাধীন অবাধ 

জেনো,আমি হতে পারি প্রণয় আসামি 

চাইলে ভাঙ্গতে পারি, সব বাঁধা বাঁধ।

তুমি যে আমার কাছে, অলৌকিক দামি!

স্বপন কুমার ধর




অদৃশ্য উপন্যাস



অনেক দিনের ইচ্ছা, একটা

কবিতা লিখি তোমার জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার ঠোঁটের জন্য।

আবার কখনো ভাবি, একটা

গল্প লিখি তোমারই জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার কাছে শুনবো বলে।

কখনো কখনো মনে হয়, একটা

গান লিখি তোমারই জন্যে,

কেবল তোমারই জন্য,

তোমার কন্ঠে শোনার জন্য।


লিখতে বসে সবার আগে ভাবি,

সব লিখব, মন খুলে লিখব,

কেবল তোমারই জন্যে,

শুধুই আমাদের জন্য।

লিখতে বসে দেখি, কলম সরে না,

কি লিখবো, কিভাবে লিখবো,

যা কেবল তোমারই জন্যে,

শুধুই আমাদের জন্য।


তবে কী ইচ্ছেটা অপূর্ণ থাকবে!

এত বসন্ত কাটিয়েছি যার সাথে,

তার প্রতিটি ক্ষণ যেন,

এক-একটি পাতা, যার

প্রতিটি শিরা-উপশিরায় আছে,

হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, সান্নিধ্যের

মান- অভিমান, প্রেম-ভালোবাসা,

আরো কত কী! যা দাম্পত্য,

জীবনের সাথে প্রবহমান,

এ তো স্বরচিত কোন কবিতা নয়,

গল্প ও নয়, গান ও নয়, একটা

চলমান সমগ্ৰ উপন্যাস, যা অদৃশ্যভাবে

লিখে চলেছি, মনের কলম দিয়ে,

হৃদয়ের পাতায়, লিখবো ও আজীবন।

বাহাউদ্দিন সেখ




 শিল্পীর আঁকা ছবি



তোমার রঙে শিল্পী হয়ে আঁকতে চেয়েছিলাম ছবি

স্মৃতির হয়ে রইল যেন কষ্ট ব্যথা সবই

কবির ডাইরির পাতায় পাতায় শিল্পীর 

শিল্প কথা

বুকে ভরা অপুষ্ট তরুণ কাঁচা প্রেমের 

রক্তের সঙ্গে চলছে যেন ব্যথা।

তুমি ছিলে আমার রক্তে ভরা ঊষা 

গোলাপি ফুলের শাখা

সেকালের কথা মনে পড়ে, পড়ছে অশ্রুজলে রক্ত মাখা।

বিরহের পথে স্বপ্নে শুনি তোমার কন্ঠে গানের ছন্দ

ভাসছে না যেন আজ তোমার আমার 

প্রেম-প্রীতির সুগন্ধ।

আমার আত্মা আমার কাছে মন যেন

 আজ তোমার

জীবন যেন রয়েছে শিল্পীর প্রেমের আঁকা ছবি হাহাকার।

পাহাড়ের বক্ষস্থলে বন্দনী রয়েছে লুপ্ত গুপ্তধন।

কাল বৈশাখী তাণ্ডব প্রলয়ে দিয়ে গেলে কষ্টে ভরা মন।

০৬ এপ্রিল ২০২১

ওয়াহিদা খাতুন




চলো মজুরের গাই গান

        


দেখো প্রিয় সারা দেশে মাটির কর্ষণে 

যারা ফসল ফলায়;অন্ন দেয় তুলে,

 গুদাম ভরায় যারা দেহের লবনে,

হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে নিজ স্বার্থ ভুলে;

চৈতি ধানের খৈ এর গন্ধ নাকে নিয়ে

আলুবোখারার মাচায় চলো বসিগা--

তাদেরও ডাকবো খেতে সেখানে গিয়ে,

সড়ক বানাতে গিয়ে যাদের কাটে পা--


অস্থি-মজ্জায় তৃষ্ণা নিয়ে তৃষ্ণা মেটায়, 

সেখানে চলো,শিশিরে-ধোয়া ঘাসে বসে

করবো তাদের গান;খনিতে লোটায়

মাছিদের মতো রোদ্রতে চামড়া খসে;


যাদের প্রতি অঙ্গে ধুলি মাটির টান--!

চলো সখা,সেই মজুরের গাই গান--!!



রচনাকাল:- ২১/১০/২০২০ দুপুর ১টা ৩৬ মিনিট

শ্যামল রায় এর তিনটি কবিতা




গহ্বর জুড়ে এখনো থাকি


গাঢ় অন্ধকারের ভেতর

আলোর পথ খুঁজে নিতে

এখনো দৌড়াচ্ছি।

এখনো সচেতন হতে

সকালবেলা চেয়ে

সামিল হচ্ছি

যেখানে গেলে স্বপ্ন দেখতে পাবো

বাঁচতে পারব শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ে।

তাই, গহ্বর জুড়ে থাকলেও

উঁকিঝুঁকি মেরে যাই

সাহস হয়ে দাঁড়িয়ে বাঁচতে।

যাই বলি না কেন?

সবেতেই কষ্ট আছে

দুঃখ আছে, যন্ত্রণা আছে

শান্তি পেতে গেলে,।

তবুও নানাবিধ ফুলবাগান

খুঁজে নিয়ে একটু শান্তি খুঁজি

গহ্বরে বেঁচে থাকলেও

আমার বেঁচে থাকা

সকলকে নিয়ে, ফ্যান ভাতের জন্য।

তবে গহ্বর থেকে বেরোতে

নীল আকাশ খুঁজছি

জুঁই ফুলে সাদা ভাত ।




ওম খুঁজে নিতে


তুমি কখনো বৃষ্টি হয়ে

ভিজিয়ে দাও মন

আবার কখনো রোদ্দুর হয়ে

কাঠফাটা মাটির মতন হৃদয় উঠোন করো।

এসব টাই শব্দের পর শব্দ সাজানো য়

আটপৌড়ে জীবনযাপন।

এসবের মধ্যে কখনো কখনো

অনুভূতির রঙে হারিয়ে যাই

সারারাত অঝোর বৃষ্টিতে

দুজনার বুক আঁকড়ে ওম খুঁজে নিই।


এলোমেলো মন


 সময় থাকছে না আর ,উড়ে যাচ্ছে স্বপ্ন

শেষ গন্তব্য কোথায়? খুঁজছি গভীর জলে

তবুও খুঁজছি গাঢ় অন্ধকারে 

কম খরচে বেঁচে থাকা ।


এলোমেলো মন

 তবুও বিকেলের ধূসর আলোয়

সোনালি সকাল খুঁজি..

খুঁজি ,সম্পর্কের নতুন অক্ষর গুলো।