৩১ জানুয়ারী ২০২১

J

 J

I

 I

H

 H

G

 G

F

 F

E

 E

D

 D

C

 C

B

 B

AA

 Aa

৩০ জানুয়ারী ২০২১

 ই

 ই

 ই

 ই

 এ

রি

 রি

 উ

ইই

 ইই

 ই

 আ

২৯ জানুয়ারী ২০২১

H

 H

J

 J

I

 I

H

 H

G

 G

F

 F

E

 E

D

 D

C

 C

B

 B

A

 A

২৮ জানুয়ারী ২০২১

তৈমুর খানের তিনটি কবিতা পাঠ



দুর্ভিক্ষের কৃষক 


কবিতারা সব উড়ে যাচ্ছে অদৃশ্য পালকে 


আমি বাড়ি ফিরতে পারছি না 


সূর্য ডুবলে অন্ধকার নেমে এসে বসছে ঘাড়ে 


ফাঁকা মাঠ, কিশোরী সবজি ক্ষেত শহরের ছাদে 


                                                 উঠে শিস দিচ্ছে 


তারও ফুল ফুটছে,


                              চুম্বন পাঠাচ্ছে বাতাসে 




আমার হা-হুতাশ ভরা গোধূলি 


সিঁদুর মুছে বিধবার পোশাকে 


মেঘ জড়িয়ে চলে যাচ্ছে অন্ধকারে 



আমি একা শস্যহীন দুর্ভিক্ষের কৃষক 


খাতা ও কলম ফেলে নৈঃশব্দ্যের কাছে 


                                রেখে যাই শব্দবীজ….. 




 

হারানো কোনও স্বরলিপি 



হাওয়া আনছে চুলের গন্ধ 


এই নিশিপুর নূপুর পরে 


তুলছে আবার নাচের ছন্দ 



মেঘ-বৃষ্টির বার্তা উড়ছে 


অন্ধকারে চুম্বন ছুঁড়ছে 


আলোর কাছে আজকে অন্ধ 



পরশখানি লাগছে এসে 


হারানো কোনও স্বরলিপি 


হৃদয় গলছে অস্থিরতায় 



কী নাম ওর? অনেক নামেই 


ব্ল্যাকবোর্ডে ছবি ফুটছে 


ফুল ফোটাচ্ছে অপরাজিতা 



উড়ছে আঁচল, ঝড়ের পাখি 


ডানা ঝাপটায় সন্ধিক্ষণে 


মুগ্ধ বালক চেয়ে থাকি উদাসীন 



হাওয়ার কাছে কষ্টগুলি বাক্যহীন 



নাটক 



 বৃষ্টির ভেতর কথা বলছে গাছ


 তাদের স্নানের দৃশ্য দেখতে দেখতে 


পৃথিবীতে নেমে আসে নরম প্রভাত।


 আমাদের বেঁচে থাকা টুকু আলোর কোটেশনে রেখে বেড়াতে বেরোই


 অথবা স্থির জানালা থেকে বাড়িয়ে দিই হাত।


 পুরনো  নিভৃত  কিছু নিরুচ্চার ভাষা


 গড়ে ওঠে নিয়তির পরাগমোচনের মতো


 রঙে ও  রেখায় আঁকা রাতের পিপাসা।



 সমস্ত বর্ষাকাল জুড়ে আমরা শুধু মঞ্চ সাজাই


 বেঁচে থাকাটুকু তো আমাদের শিখে নেওয়া অভিনয়।

জয়িতা বর্ধন




এক মুঠো রোদ্দুর

 


দিতে পারো এক মুঠো রোদ্দুর জীবনের উপবনে।

দিতে পারো নিরব আশ্রয় মনের গহনে।

হতে পারো দিনান্তে পরম নিরালায় চখাচখির গভীর প্রেমের রূপ ......

যা বহতি মধুর ।

হতে পারো পৌষালী ধানের

মিষ্টি সুবাস ।

মুছে যাক সকল বেদনা

সকল হা-হুতাশ ।

গড়ে উঠুক একমুঠো রোদ্দুরের মত জীবনের আলপনা।

গোলাম কবির




দোহাই, সুবোধ!


কুয়াশার হিমেল চাদরে ঢাকা 

দূর্বা ঘাসের মখমল বুকে পড়ে থাকা

 সুরভিত শিউলি আর গাছিদের সদ্য কাটা

খেজুরের রসের হাঁড়িতে ঠোঁট ডুবানো 

 নাম না জানা অতিথি পাখিদের দোহাই, 

দোহাই শীতের ভোরে নদীতে স্নান শেষে

 ফিরতে থাকা সিক্তবসনা লজ্জাবনত 

পল্লী বধুর, দোহাই শীত সকালের 

মিষ্টি সোনা রোদে মা'র কোলে শুয়ে থাকা

 অবোধ শিশুর, আর দূরে দূরে 

থেকো না সুবোধ! এই ভীষণ অবেলায়

 তোমাকে আমার খুবই প্রয়োজন। 

দেখছো না ; তুমি নেই বলে কেমন ম্রিয়মাণ

 হয়ে আছে প্রকৃত মানুষের মুখ গুলো,

 জীবনযাপন হয়ে পড়েছে কঠিন ও

 অর্থহীন! তুমি নেই বলে এখন 

মানুষ গুলো আর মানুষই নয়, 

যেনো  এক একটা হিংস্র পশু, 

কখনোবা তার চেয়েও খারাপ কিছু!


" পাহাড়ি নীলকান্ত পাখি "


বেদনার বিধ্বস্ত নীলিমায় উড়ে বেড়ায়

 পলাতক সুখের পাহাড়ি নীলকান্ত পাখি।

 ওর শরীর জুড়ে যে কালচে নীল রঙ , 

তা আমারই বেদনার গাঢ় কষ্ট শুষে হয়েছে।

 ওর ঠোঁটে যে লাল রঙ দেখো , 

তা আমারই রক্তাক্ত হৃদয়ের !

আবার ওকে যখন ডানা মেলে 

আকাশে উড়তে দেখো, 

তখন ওর ডানায় যে সাদা রঙ এর

অংশ ভেসে ওঠে, তা হলো আমারই

 শুদ্ধতম প্রেমের রঙে রাঙানো! 

তাই আমার ভালবাসার আরেক নাম,

 পাহাড়ি নীলকান্ত পাখি।

প্রেমাংশু শ্রাবণ কবির




একজন প্রেমিকের উক্তি


দেখা হবে ফের আগামী সকালে 

অদূর আগামী কালে, 

তোমার তনুতে ছোঁয়াবো আবার অনন্ত এই পাঁচটি আঙ্গুল। 

জন্ম দোলানো পাঁচ জোড়া নখ প্রজাপতি করে,

চিতল চিবুকে অঞ্জলি দেবো নবীন পূজারী, শরীরের সব ধনুক স্বভাব মুছে নেবো কোনো মাধবীলতা মুখ গুজে থাকা ভোরের শিশিরে 

ভুলে যাবো ক্ষোভ, 

ক্ষরণের দাগ! 

অতীতের কোলাহল। 


তোমার শরীরে মাধবীর ঘ্রাণ ফুটলে

কখনো দেখা হবে ফের। 

তোমার দু’চোখে ফসলের বীজ দৃষ্টি জড়ালে 

দেখা হবে ফের। 


তোমার চিবুক আলো করা তিল 

বাংলাদেশের পতাকার মতো সবুজ রক্তের মতো লাল টিপ হয়ে জ্বলবে ভীষণ 

দেখা হবে ফের। 


যুগল তোমার ভ্রু-ভঙ্গিমায় শুক্লাদ্বাদশী আকাশের চাঁদ, 

শোষিতের হৃত বুকের সাহস ফোটাবে যখন আবার হাসিতে, আকাশ উজাড় তারার মতো তোমার শরীরে ফুটলে অশেষ অবিনাশী ফুল 

ইচ্ছা বকুল

দেখা হবে ফের 

দেখা হবে ফের।

রেবেকা সুলতানা রেবা




পানসে জীবন


কখন ও মেঘ কখন ও রোদ্দুর

হাঁসি কান্নার গোলক ধাঁধা 

জন্ম নিয়েই আলো আধাঁরির খেলা।


মানুষের জীনবটাই একটা রহস্যকাব্য

লুকিয়ে আছে কত জানা অজানা খেলা

কেউ কি যানে কখন ফুরায়ে যাবে

এই জীবনের লেনাদেনা?


হারিয়ে ফেলছি অনেক প্রিয়োজন

রেখেছিলো যারা স্বপ্ন আর সাহসে

আমার আমিতে গভীর মমতায়

স্নেহে আদরে ভালোবাসায় উদারতায়

কাছে ডেকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিতো

 আমার অস্তিত্বে যারা লেপ্টে ছিলো

তারা হারিয়ে গেলো আবলিলায়।


আমি বেঁচে আছি এখনো মরিনি

একটু একটু করে মরে যাচ্ছি 

ছুঁয়ে দিতে পারিনি কখনো

ভালোবাসার বিশাল আকাশ

বিষাদ আর ক্লান্তি এসে ভর করে

দেহ আর  মনে আমার আমিতে

ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাই স্বাদ, রস, গন্ধ

কিছুই নেই পানসে এ জীবনে।

এরশাদ


 


উন্মাতাল

                                              


ভুল ছিলাম

ভুল আছি

ভুল থাকবো।

আমি যদি শুদ্ধ হই

কেউ একজন আমাকে বলবে না

একটু ভদ্র হওতো ;

আমার কনুই বেয়ে ঝুলে পড়া আস্তিন 

গুটিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করবে না কেউ একজন।

কেউ একজন মেকি রাগে বলবে না

উফফফ,একটু গোছালো হতে পারো না!

আমি চাই,কেউ একজন রাগ করুক

খুব বিরক্ত হোক।

চারমিনারে আগুন জ্বালিয়ে যখন কুন্ডলী বাতাসে ছেড়ে

একটু উদাস হবো

আমি চাই কেউ একজন এসে বুকে মাথা রেখে

প্রান চঞ্চল চপলতায় বলে উঠুক

যাযাবর,অনেক ভালোবাসি তোমায়।

আমি তোমাকে চাই 

আমার ভুলের মাঝে।

আমার এলোমেলো চুলের মাঝে

পঞ্চাঙ্গুলী বুলিয়ে কেউ একজন বলবে না

ইসসস,দিন দিন খুব বাউন্ডুলে হয়ে যাচ্ছো।

সর্বোপরি, আমি বাউন্ডুলেই হতে চাই

তোমার চৌকাঠে চরন ফেলে

একমুঠো নিজেকে গুছিয়ে নিতে চাই।

অলোক দাস




একটি মেয়ের জীবন


গীতাদি, তুমি এতো ভুল করলে কেন? ভালোই তো ছিলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে I স্বামীহারা হয়ে কর্মস্তলে I ওরা তোমায় স্বপ্ন দেখালো, কেড়ে নিলো তোমার ভরা যৌবন I তুমি স্বীকৃতি চেয়েছিলে, দেয় নি তা তোমাকে I আজ তুমি কতো অসহায়, জীবনের হিসাব নিকাশ মেলাতে পারছো না I সবই এখন ধার, মেয়ের ভালোবাসা, তাও আজ নেই I নিঃস্ব, রিক্ত তুমি ! মেয়ে পরের বাড়ির জন্য - শুধু সম্মন্ধ সম্মান I এখন একটাই পথ I স্বামীর ছবি রেখে ফেলো রোজ দু ফোঁটা চোখের জল I যা হোয়ে গেছে ভুলে যাও, আসুক নতুন ভোর I

তাহসান কামরুজ্জামান




অপরিচিতা



অপরিচিতা তোমার কণ্ঠস্বরে অসম্ভব রকমের মায়ার মোহনজালে মুগ্ধ করে তুলে;

ভীষণ ভাবে জমাটবদ্ধ অনুভূতিগুলো কে ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করে সতেজ প্রাণ ফিরিয়ে দেয় হৃদয়ের মনিকোঠায়। 

বেঁচে থাকার স্বপ্নের চারাগাছ রোপণ করতে শিখাই তোমার মুখের হাসি! 

একসঙ্গে পথচলাতে অনুপ্রেরণা যুগান দেয় নীরব চোখের ভাষা। 


অপরিচিতা,

নিস্তব্ধ হৃদয়ের আঙিনায় ভালোবাসি শব্দের স্বাধীনতার ঘোষণা করতে চাই! 

চোখের চাহনিতে শতাব্দীকাল বেঁচে থাকার অধিকার স্থায়ীভাবে বসবাসের উপযোগী করে নিতে চাই। 


অপরিচিতা,

পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় কবিতার পঙক্তি রচনা করতে চাই! 

এলোকেশী চুলের গন্ধে নিজেকে  নতুনভাবে প্রেমিক বলে স্বীকারোক্তি দিতে অদম্য ইচ্ছে করে। 

অদৃশ্যের বন্ধনে মায়াভরা কথার ফুলঝুরিতে বিলিয়ে দিতে ইচ্ছে জাগে। 


অপরিচিতা,

একটুকরো জায়গায় দিবে;মনের মনিকোঠায়?

ভালোবাসার সমারোহে জড়িয়ে রাখবো! 

রাতের আধারে রাতজাগা পাখির মতো স্মৃতিচারণ করে ডায়েরির পাতায় লিপিবদ্ধ করে রাখা উপহার দিবো।

জামান আহম্মেদ রাসেল




আমি হতাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমিক


শুরু থেকেই যদি তুমি শুধু আমার হতে

শুরু থেকেই যদি শুধু আমায় চাইতে ,

তবে আজ আর আমি এতটা বেয়ারা হতাম না

প্রহর শেষে ক্লান্ত হয়ে স্বপ্ন হারাতাম না।।


যদি তোমার প্রথম শেখা গানটা আমায় শোনাতে

তোমার প্রথম দেখা স্বপ্নপুরুষ যদি আমিই হতাম ,

প্রথম দেখা তোমার আকাশটা যদি আমায় দিতে

তবে আমি আজ এতটা নিঃস্ব হতাম না।


ধুলোমাখা পথে যদি আমার হাত ধরেই প্রথম হাঁটতে

যদি আমায় ঢেলে দিতে একটু একটু করে জমিয়ে তোলা তোমার প্রথম আবেগ ,

তোমার ছোঁয়া যদি শুধু আমিই পেতাম সেই প্রথম অনুভূতির

তবে আমি আজ আর দুঃস্বপ্নে এতটা বিভোর হতাম না।


তোমার লেখা প্রথম চিঠি যদি আমাকেই লিখতে

তোমার প্রথম কবিতার ছন্দে যদি আমায় মেশাতে ,

দুরু দুরু বুকে ভীরু ঠোঁটে যদি ভালবাসি কথাটা প্রথম আমাকেই বলতে 

তবে আজ আর আমি এতটা বিষাদের কাব্য লিখতাম না।


তোমার প্রথম অপলক চেয়ে থাকা যদি হতো শুধুই আমার পানে,

তোমার প্রথম অভিমানের দাগটা যদি আমার উপরই স্থির হতো।

তোমার প্রথম জোসনা মাখা যদি আমার সাথেই হতো কোন এক রাতে,

তবে আজ আমার বেঁচে থাকাটা হতোনা সমস্ত শূন্যতার সাথে।।


যদি তোমার আঁচলটা আমিই ছুঁতাম তোমার প্রথম শাড়ী পরার

দৃষ্টি জালে যদি আমিই প্রথম বেঁধে নিতাম তোমার লাজেভরা চোখ দুটো ,

যদি বেলকনিতে দাঁড়িয়ে তোমার প্রথম কেশ মেলানো আমিই দেখতাম

তবে সত্যিই আজ আর এতটা বিনাশ হতোনা আমার হৃদয়ের।


যদি সত্যিই আমি হতাম কারো প্রথম প্রেমিক

কারো প্রথম আশার যাদুকর; প্রথম বিরহের জল ,

যদি কেউ প্রথম আমাকেই কাছে টেনে নিতো পরম আবেশে

তবে আমিই হতাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ প্রেমিক সব ইতিহাস ভেঙ্গে অবশেষে।।

আমির হাসান মিলন




ভণ্ডের আজকাল


আমি অতি মূর্খ না জ্ঞাণী ?   

তা কি আর জানি-মানি ! 

শুধু মনের জোরে , এই ভুবন ঘরে  

স্বার্থের ঘানী টানি । 


সম্মান আবার কাকে দেবো 

কেঁড়ে-কুঁড়ে সবটা নেবো 

আমি সব জান্তা , জানি এই ভানটা 

যুক্তির কাছে কেন যাবো ! 


আমি যে রাজার রাজা 

বাকি সব আমার প্রজা 

যে পড়বে পায়ে , চলবো তাঁকে নিয়ে 

বাকিদের দিই সাজা । 


আমিই আমার সনদ লিখি 

রাত জেগে তা নিজেই দেখি 

আমি অনেক বড় , এবার পায়ে পড়ো 

শেখাবো কেমন করে দিচ্ছি ফাঁকি ।

২৭ জানুয়ারী ২০২১

সাবা সাবরিন




পাকদণ্ডী


তোমার হৃদয়ের পাকদণ্ডী বেয়ে সেই কবে 

থেকে, উঠছি তো উঠছিই। এই ওঠার কি 

কোনও শেষ নেই? না কি বারবার পড়ে 

গিয়ে আবারও উঠি? শুধু উঠছি এটুকুই 

মনে থাকে। ওঠার আগে পিছের সব স্মৃতি 

যে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যায় বারবার। 

প্রতিবার উঠতে থাকা যেন এক একটি 

নতুন পৃথিবীর সূচনা। মহা বিস্ফোরণের 

পর যেভাবে নতুন পৃথিবীর সূচনা হয় ঠিক

সেভাবেই তোমার দিকে যাওয়ার পথটাও 

একটু একটু করে প্রশস্ত হয়। হয়তোবা-

কোনদিন ঠিক পোঁছে যাব তোমার কাছে, 

তখন আর পথের কোন কষ্টই আমার মনে 

থাকবে না। তখন তুমি আর আমি মিলে 

নতুন পৃথিবীর সূচনা করব। যে পৃথিবীতে 

শুধু প্রেম ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।

সালমা খান




মায়া ঘোর 



স্মৃতি গুলো খন্ড খন্ড করে জোড়া

দেই রোজ আমি 

অংক কষে গণনা করি সমগ্র  জায়গায়  তুমি ।

আয়ত্ত করবো বলে, আর্তস্বরে ডাকি বহুবার

দূর থেকে সাড়া দেয়  অতীন্দ্রিয়  কে এক আঁধার ,

তোমাকে যতই  বাঁধি বাহুডোরে

হাত ফসকে  চলে যাও অনেক  দূরে।

যতই  তোমাকে মেলাতে  যাই অমৃতে গন্ধ গরলে ,

হয় না সব, ভেসে যায়  অন্ধ জলে।

যখনি তোমার চোখে চোখ  রাখি

আদ্যপ্রান্ত  আমুল ট্র্যাজেডি 

হাসে  নির্মম  নিয়তি।

যতই আমি মায়ার ঘোরে হাঁটি

অবচেতনের গহীনে দেখি 

আকাশ জুড়ে  অজস্র তারবাতি,

ছুঁয়ে  দিতেই হোঁচট  খেয়ে পড়ি।

মোঃ হা‌বিবুর রহমান




মুখচ্ছ‌বি ভা‌সে তবুও হৃদয়প‌টে



তার মু‌খের‌ দি‌কে ‌কেন যেন আর তাকা‌তেই পারিনা,

অ‌নেকবার তাকা‌নোর চেষ্টা ক‌রেও তাকা‌তে পা‌রি‌নি।

হে‌রে যে‌তে যে‌তেও হারিনি আবার ভুল‌তেও পা‌রি‌নি।

বার বার তাকা‌নোর চেষ্টা ক‌রেও অব‌শে‌ষে মন চায়‌নি।

অথচ, তার প্রতি তেমন ঘৃণা বা অ‌ভিমানও জন্মায়‌নি।

কিন্তু কেন যেন তার দি‌কে আমার তাকা‌তে মন চায়‌নি।

অ‌নেক ভে‌বে‌ছি, বেশ গ‌বেষণা ক‌রেও উত্তর মে‌লে‌নি।

মন থে‌কে তাহ‌লে কি তার নাম চিরত‌রে মু‌ছে ফেল‌বো?

জা‌নি এটা কখনই সম্ভব নয় বা মো‌টেই সহজসাধ‌্য নয়,

আর তা‌কে যতই ভুলার চেষ্টা ক‌রিনা কেন পা‌রি না তা

কেন যেন সে ছায়ার মত ক‌রেই অনুসরণ ক‌রে আমাকে,

তার মুখচ্ছ‌বিটা ভে‌সে উ‌ঠে  আমার নরম হৃদয়পুরে‌টে।

রীনা দাস


 


কালীপূজো


কৌটি টাকার কালী পূজো !

কি এসে যায় তাতে ?

কেউ তো আর এক পয়সা

দেয়না আমার হাতে ?


হাজার খুশীর নিত্য লহর

চলছে আনাগোনা

আমার মনে খুশীর ছোঁয়া

পাইনা এককনা ৷


যেদিকে দেখি আলোর মালা

জ্বলছে পথ, ঘাট

সে আলোতে আমার মনে 

বসেনা চাঁদের হাট ৷


পূজোর আলোয় সবার মন

আনন্দে যায় ভরে

খিদের জ্বালায় ঘুম আসেনা

ছটফট করি ঘরে ৷


মায়ের পূজোয় খুশী হোতাম

পেতাম যদি ভাত

রুক্ষ মেজাজ ঠান্ডা হতো

খুশীতে হোতাম মাত ৷


ঝাঁ চকচকে হোকনা শহর

বহুতল শত বাড়ি

গরীব,দুঃখী কষ্ট পেলে 

হয় কি মনোহারি ?

এন এ আলম ( সীমু )




কবি


ওহে কবি তুমি রবি তুমি কখনো চাঁদের জোছনা 

তুমি প্রেম তুমি বিদ্রোহ

তুমি নদী আটকে দেওয়া বালুচরের অটল মোহনা 


ওহে কবি তুমি জ্বলন্ত অগ্নির জ্বলন্তঅক্ষর,

মনের জ্বলন্তভাষা। 


ওহে কবি তুমি শীতল প্রেমের রাজপুরুষ 

তুমি মিঠা, ঝাল কিছু তামাশা। 


ওহে কবি তুমি পাতালপুরীর রূপকথা

আবার,  

তুমিই বিধবার সাদা বসনা। 


ওহে কবি তুমি অনাহারক্লিষ্ট মায়ের করুণ চোখের যাতনা 

ওহে কবি তুমি ক্ষুধার্ত দেব-শিশুর 

ভাবলেশহীন ভাষা বোঝা এক সাধনা 


ওহে কবি  তোমার কবিত্বশক্তি যেন কখনওই

কলম চালাতে থামেনা। 


ওহে কবি তুমি রবি

তোমার আলো যেন কভু নিভে না।

মহুয়া চক্রবর্তী




 ভালোবাসা 



ভালোবাসা -  তাকে কি দেখেছো কখনো !  সে কেমন হয় গো , তার স্পর্শ পেয়েছো কি? জীবন জুড়ে শুধু অবহেলার চোরাবালি, যেখানে শুধু তলিয়ে গেছি আমি। 

 ভালবাসাকে শুধু দূর থেকে দেখেছি,

দূর থেকেই সে দিয়ে গেছে হাতছানি

যখন কৃষ্ণচূড়ার বুকে, লাল আবিরের দল খেলে,

 আমি তখন বিষাদ মনে শূন্য পথ পানে চেয়ে থাকি, সে আসবে ভেবে। 

মনের ঘরে জীবন প্রদীপ খানি জ্বালিয়ে রাখি।

তুমি আসবে বলে, কামিনীর সাজে সেজে, 

আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে হাত

নিজের প্রাণের মাঝে।

কবে আসবে তুমি,

সম্মুখের পথে

দীপ্ত শিখাটি নিয়ে আছি

তোমার পথপানে চেয়ে   পুড়বে বলে রয়েছে আশায় 

আমার নিরব হিয়া।

কবে পাবো তোমার ভালোবাসার

ছোঁয়া।

মিলন ভৌমিক




কল্পনার দেশ


পৃথিবী যদি কল্পনার দেশ হতো

মানবজাতি থাকত সুখে।

সীমাহীন দারিদ্রতা পৃথিবীতে

যদি না থাকতো, থাকতো মহাআনন্দে।

দুঃনীতি,কম'হীন,দূবলশ্রেনী

যদি না থাকতো, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ,ধম'ঘটে,

 হতোনা গণআন্দোলন।

সাইকোথ্যাব যদিনা থাকতো

ওরা অনেক বছর বাঁচত।

শক্তিধর রাষ্ট্রযন্ত্রের দাদাগিরি

শোষনও শাষনে যদিনা থাকতো

ছোট্ট রাষ্ট্র গুলো শান্তি পেত।

বুদ্ধিজীবীরা পৃথিবীময় যদি একহতো

স্বর্গের দেশ হতো।

মহাভারতে রথের কল্পনা থেকে

রকেটের যদি হয় সৃষ্টি,

যুগের শেষে কল্পজগৎ

হতে পারে বাস্তব মুখী।

কল্পদেশে থাকবো বেঁচে

অনন্তকাল ধরে,

বিদায় চাইনা পৃথিবীর কাছে।

টুলটুল দেবনাথ (শিপ্রা) নিবন্ধ




মধুসূদনের কাব্য প্রতিভা

মধুসূদনের কাব্য প্রতিভা(১ম ভাগ)


ছাত্রজীবন থেকেই মাইকেল নিজের কবি শক্তির পরিচয় দিয়েছিলেন। কবি প্রধানত ইংরেজি ভাষাতে কবিতা রচনা করতেন এবং একদিন তিনি মহাকাব্য রচনা করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেছিলেন। সে সময় রিচার্ডসন তার কবিতা পড়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন। ভূদেব মুখোপাধ্যায় ছিলেন মধুসূদনের বন্ধু এবং তিনি স্বীকার করে গিয়েছেন যে ইংরেজি সাহিত্যে তাদের সময়ে কোন ছাত্রই মধুসূদনের সমকক্ষ ছিলেন না।

                 

কলেজ জীবনে কবি তার এক বন্ধু কে বলেছিলেন, 'I happened to be a great poet, with I am almost sure I shall be'. তার এই কথা পরবর্তীকালে প্রমাণিত হয়েছিল।আ ১৮৪৩ সালে তিনি আত্মীয়-স্বজন পিতা-মাতা কাউকে না জানিয়ে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে মাইকেল নামে অভিহিত হন। ফলে তিনি হিন্দু কলেজে পড়ার অধিকার হারান এবং পরে Bishop's কলেজে ভর্তি হন। তারপর ১৮৪৮সালে একদিন সকলের অজ্ঞাতসারে মাদ্রাজে চলে আসেন। মাদ্রাজে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন পাশাপাশি ' পত্রিকা পরিচালনার কাজ হাতে নেন।মাদ্রাজে থাকাকালীন সময়ে তিনি তামিল,তেলেগু, গ্রিক ও হিব্রু ভাষার উপর অধিকার অর্জন করেন। পূর্বে তিনি সংস্কৃত ইংরেজি এবং ফরাশী ভাষাতেও বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। মাদ্রাজ থেকে প্রকাশিত 'Madras Circulator' Magazine 

এ মধুসূদন দত্ত 'Timothy pen poem' ছদ্মনামে A Vision Captive Lady' শীর্ষক একটি ইংরেজী কাব্যে পৃথ্বীরাজ সংযুক্তার কাহিনী তুলে ধরেন। সময়টা ছিল ১৮৪৮-১৮৪৯ খ্রিস্টাব্দ ।তিনি এই কাব্য রচনা করেg অনেকটা খ্যাতি লাভের আশা করে থাকলেও ফল হলো তার বিপরীত। তার উপর ইংরেজ সম্পাদকের কাছে অনেক ভর্তসিৎ হন। পাশাপাশি বেথুন সাহেব মধুসূদনের কাব্য পাঠে তার প্রভূত প্রশংসা করে থাকলেও গৌড় দাস লিখেছিলেন যে,মধুসূদন যদি মাতৃভাষার শ্রীবৃদ্ধির জন্য তার প্রতিভা নিয়োজিত করেন তবে তিনি স্বদেশের ও উপকার করবেন এবং নিজেও সুখ্যাতি লাভ করবেন।গৌরদাস বসাক একথা বন্ধুকে জানিয়ে দিয়ে বেথুন সাহেবের সাথে সহমত হয়ে মধুসূদনকে বাংলা কাব্যে অবতীর্ণ হতে অনুরোধ করেন।

স্বপন কুমার ধর



 চলো, কাজ করি


না, আর বসে থাকবো না, চলো কাজ করি,

বসে থাকার অর্থই,

মস্তিষ্কে আজন্মার জন্ম দেওয়া,

প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার লড়াইয়ের জন্য,

কারো কাছে হাত পাতা, মাথা নিচু করা,

কিছু আবেদন-নিবেদন-আর্তি একান্তে,

দয়ার ভিক্ষে না পেলে, চোখে জল, ঝাপসা চারিদিক,

মনে অশান্তি, জীবন হতাশময়।


না, আর বসে থাকবো না, চলো কাজ করি,

বাধা-বিপত্তিতে হার মানবো না,

নিজের পায়ে দাঁড়াবো, আগামীর পথ খুলবো,

আলো আসবেই, অন্ধকার কাটবে- ই,

গাছের পাতারা উদ্বেল হবে,

সমুদ্রের ঢেউ ও পা ছুঁয়ে যাবে,

সীমাহীন আকাশের একপ্রান্ত থেকে,

অন্ধকারময় জীবনে শুকতারা ও দেখাবে,

আলোর প্রবেশ দ্বার, জীবন হবে গতিময়,

না, আর বসে থাকবো না, চলো কাজ করি।

আইরিন মনীষা




আবার কি হবে দেখা 



বেলা যে আমার পড়ে এলো 

স্মৃতিফলকে রয়ে গেলো, 

ভাবি বসে এই অবেলায়

আসবে কি ফিরে আঙ্গিনায় । 


বলছি আমি তোমার কথা

বিরহে বাড়ছে মনের ব্যথা,

অভিসারে তুমি আসতে যখন

খুঁজে পেতো সুখ মননে তখন। 


আবার কি হবে দেখা বন্ধু

দুইজনে গড়বো  প্রেমের সিন্ধু,

মিলনের সুরে হারাবো দুজনে

দূর দূরান্তের ওই নির্জনে...।


অপেক্ষার প্রহর হয় না শেষ 

রয়েছি এখনো তোমাতেই বেশ,

আসো যদি ফিরে কাননের পর

আমার জীবনে আসবে নতুন ভোর।

২৬ জানুয়ারী ২০২১

সানি সরকার




ঈশ্বরের খিদে ও শীতকাল 


শীতের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঈশ্বররা হাসছেন 

এই হাসির ভেতরে খিদে চেপে রাখার 

ওষুধ মেশানো আছে? 


পথ চলতি একজন ব্যক্তি বললেন : 

শীতের রাস্তায় 

এতগুলি মানুষ 

তাঁদের শীত করে না... 


পাশ থেকে আরেকজন বললেন : 

কোনও কোনও মানুষদের 

শীত করতে নেই, খিদে পেতে নেই 

আমরা সকলেই জানি, কখনও কখনও 

ঈশ্বরের শীত ও খিদে থাকতে নেই... 


শীতের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঈশ্বররা হাসলে 

আমাদের শীতকাল ফুরিয়ে যায় 

ওঁদের দেখে আমাদের শীত, তেষ্টা ও খিদে মরে যায়

আনার কলি ( টোকিও, জাপান )




 মনোযোগ 


তোমাকেই দেবো সবটুকু 

অম্ল, বিষ , সুধা যা কিছু।

প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্প , সুনামি 

অতঃপর যতটুকু বেঁচে যাই আমি। 

ঊষার আশা , গোধূলির শেষ চাওয়া 

অবশেষ তার যতটুকু যায় পাওয়া। 

জানতো আমার আছে সামান্য রতন 

ক্ষয়ে যাওয়া আয়ু , মুক্ত মন। 

যা কিছু আমার দেবো তোমায়

শুধু মনোযোগটুকু দিও আমায়।

হামিদুল ইসলাম



পাঞ্জা

          

              

বৃষ্টির শব্দে আজ মুখরিত হৃদয় 

        প্রতিটি শিরায় শিহরণ

           মাতৃদুগ্ধে স্বাদ নেয়

                    ইতিহাস ।।


বৈরিতার শঙ্খচূড়ায় হতাশাগ্রস্ত জীবন 

       বিভেদের ছায়ারা সজাগ

         প্রতারণা বন্ধুর গলায় 

                   বারোমাস ।।


হেলায় হারিয়ে ফেলি চেতনার রোমকূপ

      শ্বাপদদের সাথে বাঁধি ঘর

        মৃত‍্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ি

                    নিরন্তর ।।

শান্তা কামালী




প্রথম বসন্ত দিনে 



তোমার বক্ষে যুগল শঙ্খচূড় উদ্ধত 

ভঙ্গিমায় ডুব দেয় বারেবারে... 

তখন তুমি সান্ধ্য সিনানরতা

হেমাগ্নি সরোবরে... 


দূর হতে আমি দেখেছি

 অরূপ  রূপ,

মদন জ্বরে পুড়েছি একাকী 

নীরবেতে নিশ্চুপ। 


ভ্রমর হতে চেয়েছিলো মন 

অনুক্ত প্রলোভনে,

ঢেউ গুলো যেমন জড়িয়ে ছিলো 

নিবিড় আলিঙ্গনে... 


তেমন ই ভাবে চেয়েছিলো 

আমার এই বাহু দুটি 

তখনই প্রস্ফুটিত শাপলা কোঁড়কে 

অকাল কুজ্ঝটি...


নিঃজ্ঝুম চারিপাশ.... 

হাঁপড়ের মতো ফুলে ওঠে ফুসফুস,

কি এক ঝড়ের পূর্বাভাস। 


সমাপ্ত হলো স্নান... 

আমার বুকের শুকপাখী টা

গায় পুরাতনী গান...


"নিশীথ জাগিয়া রয়েছি বঁধুয়া.... 

আমি শুক তুমি সারি...

যুগ যুগ ধরে আমাদের দু'জনা

বাইবো জীবন তরী।

শ্যামল রায়ের দুটি কবিতা




 মানুষই ভগবান 


মানুষের ধর্ম মানে আদর্শবোধ মূল্যবোধ সততা

মানুষের পাশে দাঁড়ানো সাহায্য করা

এর প্রকৃত অর্থ ধর্ম যার নাম মানবিকতা

এখানে সম্পূর্ণ হতে পারি আমরা

বিভিন্ন নামে ডাকতে পারি

কখনো ভগবান কখনো আল্লাহ কখনো যীশু খ্রীষ্ট।

যে সব মানুষের বিবেক ও চেতনাবোধ নেই, 

তারা সম্পূর্ণ মানুষ নয়। ধর্মের নামে কুৎসা শুধু হয়।

চেতনা বোধ না থাকলে

মনুষত্ব তৈরি হয় না

তাই বেঁচে থাকার মাঝে নানান কিছু ভাবি আমরা

কখনো নানান উক্তি করে থাকি

 চিত্রা না থাকলে বলি জ্ঞান নেই, তাই পশু। 

আবার কখনো কোন  মানুষ 

জ্ঞানরুপ দেশলাই দ্বারা 

সংসারের তথা মানুষের 

অজ্ঞানতা দূর করে আলোর

পথ যারা দেখিয়ে থাকেন তারা মানুষ

  নাম হতে পারে ধর্ম ,যিনি দিশা দেখান,

 তিনি হচ্ছেন ভগবান আল্লাহ

 বা যীশু খ্রীষ্ট হতে পারেন।

 এই ভাবনাটা এখন অনেকটাই দিশাহীন 

তাই মাতামাতি ধর্ম নিয়ে মানবিকতা নেই। 



সবকিছুই ডাকছে

 

 সমুদ্রর ঢেউ ডাকে

আমরা বলি গর্জন করছে

আমরা সকলেই ডাকি

তারমধ্যে এরকমটা হতে পারে

পাখি ডাকছে চঞ্চল অচঞ্চল পরিবেশে 

কুকুর কাঁদছেতো কাঁদছেই চারপাশ জুড়ে

গরু ডাকছে, বিড়াল কাঁদছে 

শিশু কাঁদছে কৃষক কাঁদছে 

পাশের বাড়িতে কাঁদছে।

কেঁদে ওঠার সুর সব কিছুতেই 

 চারপাশ জুড়ে।

আমি-তুমি দেখেও দেখছি না, শুনেও শুনছি না।

প্রতি ঘরের দেয়ালে কান পেতেশোনো, দেয়ালও কাঁদছে। 

তুমিঝ দ‍্যাখো, শুনেও শুনছে না, কেউ

গুমরে গুমরে কাঁদছে সবাই

শুধুই দেখছি ,ভাবছি না কেউ ই

যারা ভাবছি ,করার নেই কিছুই--- 

কান্নায় শুধুই  এখন জল ।




মুন চক্রবর্তী




মাটির সন্ন্যাসী শপথ


এই মাটির শপথে এসেছিল ছাব্বিশ জানুয়ারি 

যাঁর শুধু অনুরাগ ছিল না,ছিল বিপ্লবী আগুন

স্বরাজের মিছিলে বুলেটে বুক দিয়ে গেছে অগনন

সমতার জয়গানে কলম লাঙল মাটির আলিঙ্গনে।


হাজার প্রাণের বলিদানে প্রজাতন্ত্রের বিজয় তিলক 

মাটির সন্ন্যাসী শপথে ভাগবত,ভগবতী,ভাগীরথী মৌন সাধক।


রক্ত ফেনিল উচ্ছাসে ভেঙেছে সব প্রাচীর, কণ্যা কুমারীর বুকে মগ্ন তাপস।

এই মাটিতে "হল বলরাম স্কন্দে উপাড়ি ফেলিব বিশ্ব' কবির হুংকারে ঘর ঘরে বীর বীরাঙ্গনা কাজী নজরুল।


শস্য শ্যামলার প্রজারা পৃথিবীর মানচিত্রে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি 

লাল কার্পেটে হাঁটছে যখন দলাদলির দালাল

বুকের রক্ত ঝরছে নির্বোধ কাঙালের,সমতার বিচার রাখছে ইতিহাস।

মাটির সন্ন্যাসী শপথ বিপুল সম্ভারের সম্ভবনা নিয়ে 

রৌদ বৃষ্টি ঝরে ভোটের বাক্সে বন্দী অরাজকতা।


রক্ত দিয়েছে ঢেলে তারুণ্যের সকাল,গোধূলিতে শ্মশান কবরে শুকনো ফুলে--

বৈরাগ্যের মৃত্যু সাজিয়ে মুনি ঋষির তপ ভূমি প্রজাতন্ত্রে বেশ আছে

সব ভুলেছে মিছিলের অভুক্ত প্রজা,মাটির সন্ন্যাসী শপথে।


জাতীয় পতাকা বিক্রির বাজারে ছেলে মেয়েরা 

শহিদ তর্পনে ছেঁড়া কাপড়ে মূখের  হাসিতে

মিলেছে নির্বাক শপথ জাতীয় পতাকার নীচে 

"জন গন মন" তেরঙ্গায় কবিগুরুর মাটির সন্ন্যাসী শপথ।

সুলতানা চৌধুরী পারু ( ইংল্যান্ড )



জন্ম হোক নতুন গল্পের 



সবাই তো ভালোবেসে দিতে চায় 

আমি না হয়.একটু আঘাতই দিব


দেখতে চাই তোমার কলম থেকে 

কতো ভালোবাসার কালি ঝরে.! 


ঝরে পড়ে পড়ুক অনবরত 

শিলা বৃষ্টির মতো

বৃষ্টি হয়ে ;


পৃষ্ঠা গুলো ভিজে গিয়ে কবিতার জন্ম হোক -জন্ম হোক নতুন গল্পের।

ঈমাম উদ্দিন




বিদ্রুপ প্রেম 

 


আমি কতবার পুড়েছি বিদ্রুপ প্রেমের 

উল্লাসে,  

বাড়াস না তুই আমার সেই পুরনো 

মনের ক্ষত,প্রেম প্রেম প্রহসনে  

চিতার দহনে জ্বলছি,জ্বলছি অবিরত।


তুমি কি নিয়েছ কখনো নিঃশ্বাসে  অন্তর 

পুড়ার বিকট গন্ধ,কেন কখনো কি 

পড়নি তুমি বিরহ গাথা কবিতার 

ছন্দ,হয়ত প্রেম মানেই দিয়ে যাওয়া 

ফিরে চাওয়া মন্দ। 


প্রেম বলতে নেই কিছু মনে হয় গল্প 

প্রেমে কি সুখ আছে নাকি সব কল্প 

কত চঞ্চলা মন স্তব্ধ করে ভালো 

বাসার তন্ত্র,প্রেম মানে কাছে পাওয়ার 

কাঙালের মূলমন্ত্র।

জয়িতা বর্ধন




 হে নূতন



নূতন বছর নূতন বছর

 নব রূপে এসো ,

তুমি আমার মর্মে মর্মে  মেশো।।

 নূতন বছর তুমি মোছাও গরিবের চোখের জল ।

মানব মনের দারুন দোলাচল৷

 নূতন বছর তুমি যেন হও সুখের কারিগর ।

তোমার ছোঁয়ায় পায়ে যেন      সব ....

সুখী হৃদয়ের ঘর ।

নূতন বছর নারীলোলুপ ধর্ষকদের দাও উচিত শিক্ষা, দাও তাদের মানবতার দীক্ষা। তুমি অন্ধজনের হাতটি ধরো মনে জোগাও বল,

 তুমি যেন হও নতুনত্বের দৃঢ় ফলাফল।

 গৃহহীনে দাও ঘর,

 তুমি হয়ো নাকো পর।

 নতুন বছর

 তুমি পলাশ দিও 

রাঙিয়ে দিয়ে মন ।

হয়ে ওঠো মোর পরম আপনজন৷

তুমি হও শিমুল ফুল

জীবনের রঙে রঙ ছবি হয়ে ভরে উঠুক হৃদয়ের দুকুল৷ হাসি দিয়ো  দিও ভালোবাসার সুর ।

 আর দিও একমুঠো সজীবতার রোদ্দুর ।

হুমায়ুন কবির সিকদার




হৃদয়কুঞ্জে


হৃদয়ের গোপন ঘরে যে জন করে বসবাস 

কী এমন সাধ‍্য আমার তাকে করি উপহাস?


দেখা যায় না ছোঁয়া যায় না, যায় না কথাবলা 

অনুভবে প্রতিক্ষণে তার পথেই চলা।


হবে দেখা বলবো কথা স্বপ্ন দেখি রোজ

খুঁজে বেড়াই জগতজুড়ে পাইনি আজো খোঁজ।


চুপি চুপি হৃদয়ে হাঁটে পাইনি পদচিহ্ন 

প্রতিনিয়ত তার ধরন পাল্টে হচ্ছে ভিন্ন।


শব্দগুলো ফাটল তোলে বাজে হৃদয়-কানেও 

সুর বাজেনা মনকাড়েনা অমরগাঁথা গানেও।


বুকের খাঁচার অচিনপুরে অচিন পাখির বাস

সকাল বিকাল খুঁজে ফিরি বছরের বারোমাস।


আপনমনে একলাই যে কত কথা শুনতে পাই

চেতন ফিরে দেখি আবার মন-মাধুরী পাশে নাই।


একতারাটা যখন বাজে শুনছি নিত‍্য করুণসুর

বেহালাটা বলছে কানে তার বসবাস অচিনপুর।


সুর সোহাগের জাদুতে বোনা ভালোবাসার গদি

তার বিহনে হৃদয়কুঞ্জে বইছে বিষাদনদী।

২৫ জানুয়ারী ২০২১

লুৎফুর রহমান চৌধুরী রাকিব ( ইংল্যান্ড)




তোমাদেরকেও ঘৃণা 


তোমাদের ঘৃণা থেকে শিখেছি 

বেঁচে থাকার জন্য নতুন এক সংগ্রাম  

তোমরা চেয়ে ছিলে তোমাদের ঘৃণা 

আমাকে ময়লা নর্দমায় নিয়ে যাবে

না, কখনো না--

এটা নিতান্তই ছিল তোমাদের ভুল ধারণা 

তোমাদের ঘৃণা আমাকে নষ্ট করতে পারেনি 

বরং আমার কলম শক্তিশালী করে তুলেছে।


তোমাদের ফেলে দেওয়া থু থু থেকে

অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি

তোমরা চেয়ে ছিলে তোমাদের থু থু 

আমার শরীর, দুর্গন্ধে ভরে যাবে

না,কখনো না----

এটা ছিল তোমাদের ভুল সিদ্ধান্ত 

তোমাদের ফেলে দেওয়া থু থু 

আমার শরীর স্পর্শ করেনি---

বরং আমার কলমকে সাহসী করে তুলেছে ।


তোমাদের পেতে রাখা কাঁটা থেকে

অনেক কিছু জানতে পেরেছি 

তোমরা চেয়ে ছিলে ---

তোমাদের পেতে রাখা কাঁটা 

আমার বুকটা রক্তাক্ত করে দেবে

না,কখনো না---

এটা ছিল তোমাদের ভুল হিসাব

তোমাদের পেতে রাখা কাঁটায় আঘাত লাগেনি

বরং কলমের বুক আরো শক্তিশালী করেছে।

স্বপন কুমার ধর




২৬শে জানুয়ারী


বহু শহীদের রক্ত ঝরিয়ে,

দূর করেছি ব্রিটিশ অধীনতা,

প্রায় দু-শতকের লাঞ্ছনা,অত্যাচার এর,

পরে পেয়েছি স্বাধীনতা।


স্বাধীন হয়েই গড়তে পারিনি মোরা,

নিজেদের শাসনব্যবস্থা,

বাধ্য হয়েই শাসিত হচ্ছিলাম,

ব্রিটিশ প্রবর্তিত ব্যবস্থায়।


১৯৫০ এর ২৬শে জানুয়ারীতে,

শপথ নিয়েছি "আমরা, ভারতীয় জনগণ",

গড়েছি দেশ সার্বভৌম,

মানবো না কারো বারণ।


নিজেদের শাসন নিজেরাই করবো,

থাকবে না কোন ভেদাভেদ,

প্রতিষ্ঠা করবো সাম্যের অধিকার,

থাকবে সৌভ্রাতৃত্বের পরিবেশ।


ঐ দিনেতেই আমরা রচেছি ভারতীয় সংবিধান,

সর্ববৃহৎ গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে, আজ ও তা অম্লান।

আধুনিক যুগের বিশ্ববাসী, বিস্ময়ে হতবাক,

কৌতুহলী দৃষ্টি সর্বদাই তাদের, করেছে নির্বাক।


শপথের সেই দিনটিকে মোরা,

হৃদয়ে করেছি ধারণ,

গণ প্রজাতন্ত্র দিবস রুপে পালন করি,

"আমরা, ভারতীয় জনগণ"।

সঞ্জয় আচার্য




অবয়বহীন হয়ে যাচ্ছি


অবয়বহীন হয়ে যাচ্ছি আমি,


অবয়বহীন হয়ে যাচ্ছে সবকিছু, খুব তাড়াতাড়ি

মেঘের আড়াল থেকে সুপক্ক জ্যোৎস্নার মতো অবসরও।


বাঁশির সুর বেয়ে হওয়ায় ঠেস দেওয়া রাখাল

রোদভাঙা সকালের যৌথজীবন টুকু নিয়ে যাবে বলে

দুটো গঞ্জের পাখিকে দিয়েছিল আমাদের শীতকাল।

সেও নাকি শরীর ছাড়তে ছাড়তে ক্রমশঃ বিলীয়মান।


ওখানে তাই ফাগুনের নিটোল দেহ বৃন্তে মিশে যাচ্ছে 

মাঘের বোঁটায় চুপি চুপি রেখে যাওয়া

আইবুড়ি টকস্বাদ,



অথবা যে লাজুকি ভাষা শরীর ডুবিয়ে নিয়ে হেঁটে যাওয়া

ভিজে বসনের মতো আদ্র করে রেখেছিল  রুদ্র জীবন।

আবছায়া চোখে সেও দেখে গতকাল--

ক্ষীণ হতে হতে অবয়বহীন হয়ে গেল

আমাদের এ পাড়ার ছোটো নদীটি

আমাদের এ পাড়ার মেলামেশা শীতকাল টুকু।

প্রেমাংশু শ্রাবণ




 রাত প্রহরীর কয়েকটি প্রশ্ন


অনুভূতির আঁচলে মুড়ে তুলোট অন্ধকার, সোনার পালঙ্কে কাঁদে সুপ্ত সকাল। 

মেঘলা আকাশের এলোকেশি দুরন্ত মেঘবালিকার চুলে লেগেছে বৈশাখী আয়োজন। 

ইলশেগুঁড়ি আলোর মাঝে হিমেল পরশ, 

মনের কালিমায় লাগে স্বপ্নপাপ মোচনের আগুন। 

যায় বুঝি বেলা, বর্ষার আলতো ছোঁয়ার...... 

সে কেনো বোঝেনি? 


হিমাদ্রীর বনবাসী মন, বিশ্রামহীন লাঙ্গল কাঁদে মাঠে।আহা,ফসলের গান,মুচকি হাসির ঘোমটা মাখা মুখ, 

ভেজা পদ্যের গালে লেপটে থাকা একবিন্দু বর্ষাজল!

সকাল গড়িয়ে দুপুর, মুক্তোর মতো জ্বলজ্বলে সাতরঙ.....

--সে আসেনি বলে ভিজবো না?


বিকেল হাসে ভেজা ঘাসের রঙে, বোধহীন সময়টাকে বাঁধতে ঘড়ির কাঁটায় 

মনের আকালে কষ্টের বালিয়াড়ি..... 

একাকী কাঁদছে সদ্য ফোটা কদম;

মোহনায় বুদবুদ তোলে ইলশে স্বপ্ন। নীল টিপ ভিজে যায় অশ্রুজলে....

--সে খোঁজে নাকি, হিসাবের খাতা? 


পোয়াতি জোছনায় সেরে স্নান, বর্ষার আদলে অবগাহন, অরাত্রিকার চোখে!কোথাকার বৈরাগী সুর হারিয়ে যায় --তাল,লয়,স্বপ্ন ছাড়িয়ে।

মেঘের মতো মন, চোখ মুখ গুজে বালিশে 

খোঁজে জোছনার রঙ। 

কালবেলা বুঝি ভোর হয় ;সুর্যের ডাকে পাখিরা ওঠে এখনো ঘুম থেকে.... 

--সে বুঝি দেখিনি জোছনার রঙ? 


ইকুয়েশন গুলো খুঁজে ফেরে জটিল ব্যাখ্যা।

ফাইল বন্দি লেখনির ভিড়ে ধুলোপড়া সমাধান! 

রাতের আঁধারে ফাঁসি হয় বোধের প্রহরীর

মিথ্যার জয়ে হাসে ফণা তোলা বাস্তব..... 

--সে চোখ কি অন্ধ হয়ে গেছে?


ডাস্টবিনে শুকনো মুখ, সুখের অসুখে জটিল জন্ডিস। 

হলদেটে চোখ, ভাসা-ভাসা মুখ---বন্ধ বিবেকের বাসি ভবিষ্যৎ....ফেলে আসা রাত

কেটে যাওয়া দিন 

গড়াচ্ছে হালের বলদ 

ফেরিওয়ালার কাঁধে.....

---সে বোধ অনুভবহীন?


মায়াবী আলো, স্বপ্নের গোটা গোটা অক্ষরে প্রেমের চিঠি। 

মৃত স্বপ্নের মতো এক শিশি ড্রাগ!তুমি নেই তাই পৃথিবীটা কালো,প্রেমের নদীতে আজ হাঙরের চাষাবাদ! 

নীল কষ্টের আঁচলে কাঁদে টুকরো সুখ..... 

--সে ভাসেনি স্বপ্নের নোনাজলে? 


নির্বাক গন্ধ ওড়ে হাওয়ায়, মর্গের ষ্ট্রেচার থেকে।

চোখের কোণে লেগে থাকা শুকিয়ে যাওয়া অশ্রুজল!

বেওয়ারিশ হয়ে শুয়ে থাকা ওয়ারিশের সাদা কাপনে

বুকের ক্যানভাসে আঁকা তার মানুষ নামের সার্টিফিকেট।

ছোট ছোপ ছোপ রক্ত কণিকা ;

পাজড় মগজ আর স্মৃতি.... 

--সে কি শ্রেণীহীন সমাজের বুকে?

সাবা সাবরিন




 অসভ্যতার চারাগাছ



সভ্যতার চাষ করতে গিয়ে, প্রকৃতির রাজ্য ধ্বংস করে, এ জনপদে লাগিয়েছ তোমরা অসভ্যতার চারাগাছ। প্রাকৃতিক থেকে হয়েছ তোমরা যান্ত্রিক। তোমাদের যান্ত্রিক পদচারণায় এ জনপদ এখন মুখরিত। এ জনপদে এখন শুধুই যান্ত্রিক কোলাহল। প্রচন্ড কোলাহল।


তোমাদের যান্ত্রিক কোলাহলে বিরক্ত হয়ে শীতের পাখিরা এখন আর এ জনপদে আসে না। শকুনের দলও এ জনপদ ছেড়ে চলে গেছে অনেক দূরে। এ জনপদে এখন আর শৃগালের হুকা হুয়া ডাক শোনা যায় না। জোনাকিরাও এ জনপদ ছেড়ে চলে গেছে সুদূরে। মানুষের কোলাহলে এ জনপদ এখন আর মুখরিত হয় না। এ জনপদে এখন শুধুই যান্ত্রিক কোলাহল। প্রচন্ড কোলাহল।


প্রকৃতির মাঝে, প্রকৃতির সাজে, প্রকৃতির রাজ্যে নারীর ছিল অবাধ বিচরণ। সেই নারীর স্বাধীনতা হরণ করে প্রকৃতি থেকে সৌন্দর্য কেড়ে নিয়েছ। নারীর পায়ে শৃঙ্খল পরিয়ে বিজয়ীর হাসি হেসেছ, অথচ তোমাদের দৃষ্টিতে শৃঙ্খল পরাতে ব্যর্থ হয়েছ। সভ্যতার আশায় অন্তরে অসভ্যতার চাষ করে তোমরা যে সমাজ পেয়েছ সেখানে মানুষ নেই সবাই যন্ত্র। এ জনপদে এখন শুধুই যান্ত্রিক কোলাহল। প্রচন্ড কোলাহল।


সভ্যতার চাষ করতে গিয়ে, শত- সহস্র নিয়মের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে, তোমরা কি পেয়েছ তোমাদের কাঙ্খিত সভ্যতা? সভ্যতার জন্য স্বাধীনতার জন্য আজও তোমাদের লড়াই করতে হয়। অথচ প্রকৃতির রাজ্যে ছিল না কোনও নিয়ম, ছিল না কোনও শৃঙ্খল। কিন্তু স্বাধীনতা ছিল, মানুষ ছিল। এ জনপদে এখন মানুষের কোলাহল শোনা যায় না। এ জনপদে এখন শুধুই যান্ত্রিক কোলাহল। প্রচন্ড কোলাহল।

সামসুজ জামান




নেতাজীর গান 


নেতাজী, নেতাজী, নেতাজী, 

ছিলে সবার প্রিয় তুমি নেতাজী।

 শিশুর মনে স্বপ্ন দিলে,

 ভীরু মানুষকে তুমি  জাগালে,

 প্রকৃত বীর তুমিই ছিলে,  নেতাজী।।

 ভারতবাসীর চোখের জল মুছাতে,

 অত্যাচারের চিহ্ন তাদের ঘোঁচাতে,

 যে পথ নিলে কাটায় সে পথ ভরানো,

 মুখে তবুও হাসি ছিল জড়ানো।

 এগিয়ে গেলে বীরের মতো ধরলে মরণ বাজি।।

 দিল্লি চলো, দিল্লি চলো-র মন্ত্রে ওই,

 জনগণের মুখে দেখো ফুটছে খই।

স্বাধীনতার বাণী দিয়ে আনলে বল

 ভারতবাসী গাইল সুখে এগিয়ে চল।

 দুর্বলতার আগল ঠেলে ছুটতে মানুষ রাজি।

 স্বাধীনতার  ফুলে ফুলে ভরল দেশের সাজি।।

                       ---------------

মনি জামান




 এবার মানুষ হও পুরুষ

 


খুচরা পেটের ক্ষুধা নেই এবার পাইকাবী রেটে ছেড়ে দাও তোমার স্থুল পেটের দাবীর সবটুকু,সময়ের স্রোত অবিরাম চলছে স্বার্থ সংলাপ।

বিবাহ নামের মলম চুক্তিতে বারবার আসতে হয় পোড়ামুখির,জানি কবুল খপ্পরে মায়ের অপমৃত্যুর দিন শেষ হবে না কোন দিন।

আর কত যৌন সুখ নিয়ে বাঁচবে হে

অসুর,ধর্মের নামে নরকযজ্ঞ চিতার  আগুন আর কত জ্বালবে।

এখন গল্পের সময় নেই এবার এসো চুক্তিতে আমাকে কি ভাবে চাও,প্রেম ভালোবাসায় নাকি নির্যাতন যৌতুক অনুরাগ সম্পুরকে?

নাকি শুধু প্রজন্ম চুক্তির দেন মোহরে।

জীবন সংসার নামে বেশ্যার বেশভুষায় ছোট্ট ঘরটিতে আর কত সন্তর্পণে বিচরণ করবে,আর কত নির্যাতন মোহড়ায়।

এবার মানুষ হও পুরুষ তুমি,এসো সংবিধান ধারায় একটি পাকা চুক্তির কাবিন নামা হোক।

যেখানে আমি সর্বপরি তোমার "মা,

আর একবার এসো মা মাটির দামেই আর একবার কেনো আমায় হে পুরুষ।

রেহানা রেখা




ভাবনা


দু'চোখ বেয়ে জল নেমে আসে

যখন বিজনে ভাবি! 

মিটাইনি আমি জীবনের যত শখ

মিটাইনি কারো দাবী।

বনে বনে বাদলের নিঝুম দুপুর

কেনো তোলে  অবেলায়

এই হৃদয়ে,বেদনার সুর।

আমিতো চেয়েছি যেতে দ্বিধাহীন মনে

সমুদ্রের পাড়েএক দেবদারু বনে,

যেখানে নিবিড় শান্তির ছায়ার শয্যায়,

কেনো যে বারবার  বাধা দেয়

মোর হৃদয়ের আঙিনায়।

আকাশ বাতাস ডাকে আমায়

পখিরা বলে  ছুটে আয়,

আমি চাই ছুটে যেতে

কেবলই  মুক্ত সীমানায়।

পাতাঝরা দিন বলেছে আমারে

চেতনার জ্বলে অমৃত সূর্য

আলো আবিরে নাচি,

যতই আধাঁর ঢাকুন আমারে! 

আমি আছি কেবল আমারই কাছাকাছি।

অনেক গধূলি-ধুলো

উড়ে যেতে দেখেছি বাতাসে,

ঝরা পাতা, আরো কতো পাখি! 

সেই পাখি আর ফিরে আসে নাই

তবু কেনো স্মৃতি ভাই, ফিরে ফেরে আসে,

পালক উড়ে পড়ে মোর হৃদয়ের ঘাসে।

হাবিবুর রহমান হাবিব




ক‌বিতার আলাপন



কাব‌্যময় জীবন এ এক অ‌বিচল প্রবচন,

যে শব্দ পথ দেখা‌তে শেখায় না,

তা কখ‌নো কাব‌্য হ‌তে পা‌রে না ।

তবু ব‌য়ে চ‌লে মেঘ রৌ‌দ্রের খেলা,

এরই মা‌ঝে অ‌বিরাম চ‌লে ক‌বিতার আলাপন ।

এরা ম‌নে হয় মায়াভ‌স্কি ও নজরু‌লের ক‌বিতা প‌ড়ে না,

শে‌ষের ক‌বিতা প‌ড়ে কিন্তু শর‌তের শ্রীকান্ত প‌ড়ে নাই,

এখা‌নেই র‌বি ঠাকু‌রের ট্রে‌জে‌ডি,

জাত,ধর্ম,শ্রেণি মারা‌তে পা‌রে নাই ।

জীবন‌কে খু‌জে পাওয়া যায় ম‌্যা‌ক্সিম গোর্কী‌তে,

সুকান্ত জ্বে‌লে‌ছে ক‌বিতার মি‌ছি‌লে অ‌গ্নি‌শিখা,

আমরা মে‌নে নি‌য়ে‌ছি ম‌্যা‌কেয়াভ‌্যা‌লির,

আধু‌নিক রাজত‌ন্ত্রের রাষ্ট্র চিন্তা ।

ক‌বিরা যখন হ‌য়ে যায় বু‌দ্ধিজী‌বি,

তখন শ্রেণিহীন বু‌দ্ধিজী‌বি হ‌য়ে যায় রা‌ষ্ট্রের দালাল ।

ক‌বিতা,শিল্প, সা‌হিত‌্য প‌ড়ে থাক ময়লার চৌবাচ্চায়,

পদক,পুরস্কার,শ্রেষ্ঠত্ব আমা‌দের চাই -ই-চাই ।

ফরমান সেখ



বন্ধু মানেই


বন্ধু মানেই,   দুয়ার খোলা

    মনের থেকে মন,

বন্ধ মানেই,   নাইকো বিপদ

      মস্ত আপনজন।

বন্ধু মানেই,   ভালোবাসা

     অন্তরে অন্তরে,

বন্ধু মানেই,   মাদাত পাওয়া

      সকল প্রান্তরে।

বন্ধু মানেই,   হাসি-খুশী

    ব্যাথা ভুলার যন্ত্র,

বন্ধু মানেই,    সকল কাজে

       পরামর্শের মন্ত্র।

বন্ধু মানেই,   এক্কাগাড়ি

    মুক্ত মনের পথিক,

বন্ধু মানেই,   হাজার বায়না

      নানা রকম গতিক।

বন্ধু মানেই,   বুকের সাহস

      আস্ত মনের বল।

বন্ধু মানেই,   পাগলামি আর-

      গোপাল ভাঁড়ের দল।

বন্ধু মানেই,  গল্প-আড্ডা

  সকাল-বিকাল-সাঁঝে,

বন্ধু মানেই,  মুক্ত ভাষা

    যুক্ত সকল কাজে।

বন্ধু মানেই,   আকাশ-পাতাল

       সুখ নদীর ঢেও--

বন্ধু মানেই,   পাগলা-হাওয়া

     মনের মানুষ কেও।।


২৪ জানুয়ারী ২০২১

 K

J

 J

I

 I

H

 H

G

 G

F

 F

E

 E

D

 D

C

 C

B

 B

A

 A

২৩ জানুয়ারী ২০২১

ওয়াহিদা খাতুন



সনেট নেতাজী





স্বাধীনতা সংগ্রামী হে কিংবদন্তী বীর

 সর্ব-প্রিয় পৌরুষ দেশের কর্ণধার ;

স্বদেশের জন্য যাঁর সর্বউচ্চে শির;

সুভাষচন্দ্র ছিলেন জাতির আধার ;

 চরমপন্থি নেতা তিনি দ্বিগবিজয়ী, 

আজাদ হিন্দ বাহিনীর যে উদ্ভাবক;

ব্রিটিশ বিরোধী লড়াক্কুতে কালজয়ী,

তেজদীপ্ত উদ্ভাসিত আপাদমস্তক ;


আমৃত্যু লড়াই ছিলো দেশমাতৃকা-জন্য,

স্বাধীনতার আলো করতে উন্মোচন 

বীরত্বের জৌলুষে মানসপটে ধন্য;

ছিন্ন করতে পরাধীনতার বন্ধন ;

বিশ্বের অন্তরে যাঁর সর্বউচ্চে স্থান--!

হে দেশনায়ক জানাই অশ্রু-প্রণাম--!!



দেবব্রত সরকার


স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও




যে কথা শুনিনি কানে

মুখে বই পড়ে শেখা 

সে কথা রক্ত কথা 

দিল্লি পারি-ভাষা

তোমার চোখের পরে 

যে ভারত ডাকে 

তোমাকে ডাকছি আজ

আমরা লাখে লাখে 

সেই দিন না জেনে না বুঝে

করেছে যা ভুল 

তাই কি বিদ্বেষ হৃদে 

পারি বিদেশে অতুল 

আজ যদি তুমি ফের এসে 

আমাদের সামনে দাঁড়াও

মুঠো হাত খাঁড়া করে

তেজশ্রী রুপ-মেখে ফিরে তাকাও

আমার ভারত আমার এ দেশ

উল্লাস উল্লাস হবে 

তুমি এসে স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও 

সেই স্বাধিন,স্বাধীনতা ফিরে পাবো কবে ?

জারা সোমা

 


নির্ভূল ফর্মূলা


হঠাৎ করে ডাক এলেই ওলোট পালোট

 ইচ্ছেগুলোর স্মৃতিদূষণে ফোটে পদ্ম 

লেটার বক্সে স্থায়ী মরচে বসত

 অজানা অভিমান হারিয়ে ফেলে ঠিকানা 


হরিবোলে জীবন্ত হয় জীবনমুখী গান

সারা রাস্তায় ছড়ানো সাদা খইয়ে 

  রাগ - অনুরাগ - অভিমান 

 ব্যর্থপ্রেম গেয়ে ফেলে রূদালী


শূন্য থেকে মহাশূন্যের মধ্যেই 

  যাবতীয় অঙ্ক ও নির্ভূল ফর্মূলা।।।


মমতা রায় চৌধুরী 




 নেতাজি তোমাকে ফিরে আসতেই 





স্বাধীনতার ৭৪বছর পরে এসেও-

দেশবাসী  তোমার ফিরে আসার অপেক্ষায়।

তাই তোমাকে ফিরে আসতেই হবে,

আজ যে তোমাকে ভীষণ দরকার।

চেয়ে দেখো,স্বাধীন ভারতের -

দিকে দিকে শুধুই ক্ষতচিহ্ন।

ধর্মান্ধতা, প্রাদেশিকতার ছোবল,

সাম্প্রদায়িকতার রক্তলিপ্ত কুৎসিত

চেহারা আঁচড় কাটছে প্রতিনিয়ত।

আজও অশিক্ষা ,কুসংস্কার রন্ধ্রে রন্ধ্রে,

নারীর আব্রু হচ্ছে ধুলায় লুণ্ঠিত।

দরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের ঘরে নিত্য হাহাকার,

আজও কৃষক তার পায় না প্রাপ্য সম্মান।

 স্বাধীন ভারতের এহেন চিত্র দেখে

প্রতিনিয়ত আঁতকে উঠছি।

কে আসবে সংকটমোচন বজরংবলী হয়ে?

কে আছে সেই অন্যায় প্রতিবাদের 

আপোষহীন সংগ্রামী মূর্ত প্রতীক?

সর্বধর্ম সমন্বয়ের যুগান্তকারী প্রিয় দেশনেতা,

তাই তোমাকে ফিরে আসতেই হবে,

দেশবাসীর  স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে।

নার্গিস জামান




অনুকাব্য


একটি আঙ্গিনা পেরোতে কতটা সময় লাগে, বলতে পারো? 


কখনো কখনো সময়ের স্থবিরতায় একই আঙ্গিনার উপন্যাসে কেটে যায় জীবনের বেলা! 


দাম্ভিক পৃথিবী কখনও থামে না, থেমে যায় জীবন!

হাকিকুর রহমান




থাকুক পড়ে



থাকুক পড়ে চিন্তা চেতনাগুলো

ধরার ধুলোয় মিশে,

থাকুক পড়ে বেহায়া ইচ্ছেগুলো

যেখানে সেখানে ছড়ানো

পাইনে তো তাই, অন্য দিশে।


থাকুক পড়ে অসহ্য যন্ত্রণাগুলো

পথের পাশে দাঁড়িয়ে,

থাকুক পড়ে অসামঞ্জস্যতাগুলো

নেয় নিক, দু’হাত বাড়িয়ে।


থাকুক পড়ে মঙ্গল-কল্যাণের কথাগুলো

রোজনামচার পাতা ভরে,

থাকুক পড়ে পরিত্রাণগুলো

ঘুণে ধরা সমাজটার হাত ধরে।


থাকুক পড়ে পরিশুদ্ধিত প্রকাশগুলো

আধাঁরের মাঝে লুকোনো,

থাকুক পড়ে হিসেবের খাতাটি

অনিয়ন্ত্রিতভাবে, কারণ আসল

হিসেবটাতো হয়নি এখনও চুকোনো।