মোবাইলে টাইম পাশ, সম্বৃদ্ধ উল্লাস সাহিত্য হাসি ঠাট্টা খুনসুটি বিন্দাস পড়তে হবে নইলে মিস করতেই হবে। মোবাইল +91 9531601335 (হোয়াটসঅ্যাপ) email : d.sarkar.wt@gmail.com
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭
সমীরণ ঘোষ
কৃষ্ণগহ্বর
যা কিছু ছড়ানো আলো
ফিরে আসছে আমার ভেতর
ক্রমে ক্রমে সংকুচিত, আমার ভেতর এই আমি,কৃষ্ণপরিধি
মহাশূন্যের কোলে একা
ঘুমিয়ে পড়েছি
যা কিছু ছড়ানো আলো
ফিরে আসছে আমার ভেতর
ক্রমে ক্রমে সংকুচিত, আমার ভেতর এই আমি,কৃষ্ণপরিধি
মহাশূন্যের কোলে একা
ঘুমিয়ে পড়েছি
মতি গাজ্জালী
হাঁটা ভুলে গেছি
আমিও একা নই তুমিও একা নও
তবু আমার সাথে কোনো পা হাঁটে না
বরং তোমার হাঁটাও কেউ হেঁটে দেয়
অথচ আমি নিজেও আজকাল হাঁটা ভুলে গেছি।
কথা ছিলো এই মাটি সবার জন্য বুক পেতে রেখেছে
আমার ভার বইতে মাটির কষ্ট
তোমাকে বুক দেয় স্পষ্ট
সবই কি তবে অদৃষ্ট
না, ভাগ্যবানদের সৃষ্ট?
কথা ছিলো একই কণ্ঠে গাইবো গান
একই সুরের লয় তান
কণ্ঠ আমার মিলছে না আজ
তাই আমায় দিলে বাদ
তবু জানাই সাধুবাদ
সুর হারায়েও নেই কোনো লাজ।
আরও আরও কতো কথা
জন্ম থেকেই বিয়োগ ব্যথা
শুনছি তোমার বিজয় গাঁথা
হারালো আমার ছেঁড়া কাথা
হারতে হারতে ন্যূব্জ আমি
তবু হইনি বদ হারামি।
আমিও একা নই তুমিও একা নও
তবু আমার সাথে কোনো পা হাঁটে না
বরং তোমার হাঁটাও কেউ হেঁটে দেয়
অথচ আমি নিজেও আজকাল হাঁটা ভুলে গেছি।
কথা ছিলো এই মাটি সবার জন্য বুক পেতে রেখেছে
আমার ভার বইতে মাটির কষ্ট
তোমাকে বুক দেয় স্পষ্ট
সবই কি তবে অদৃষ্ট
না, ভাগ্যবানদের সৃষ্ট?
কথা ছিলো একই কণ্ঠে গাইবো গান
একই সুরের লয় তান
কণ্ঠ আমার মিলছে না আজ
তাই আমায় দিলে বাদ
তবু জানাই সাধুবাদ
সুর হারায়েও নেই কোনো লাজ।
আরও আরও কতো কথা
জন্ম থেকেই বিয়োগ ব্যথা
শুনছি তোমার বিজয় গাঁথা
হারালো আমার ছেঁড়া কাথা
হারতে হারতে ন্যূব্জ আমি
তবু হইনি বদ হারামি।
স্নিগ্ধসত্তা সুলেখা সরকার
ওজস্বল
পাখি উড়ে গেলে সে কখনো কখনো একটি পালক ফেলে যায়। সেভাবেই পড়ে থাকে আমার সাদা পৃষ্ঠায় কোন এক "ওজস্বল" নাম। কুড়িয়ে নেই না শুধু অপেক্ষা করি তৃতীয় ক্লীবের জন্য।
অ... ছেড়ে আসা প্রেক্ষাগৃহে নাট্যদল, গভীর নাটকীয়তা...শকুন্তলার ভর্ৎসনা, আমিও দাঁড়িয়ে থাকি রাই হয়ে কোন সে যুগের যমুনার কূলে, সন্ধ্যা ফেলে যায় রাত, কালোরা ঘরে ফেরে, ক্রমে আমিও কালো হই।
কালোকৃষ্ণ, কৃষ্ণরাই..... ধুৎ এসব ও যুগের কথা, আমার প্রেমে ওজস্বী- হাওয়া চেটে দেয় গাল থেকে চিবুক, ছুঁয়ে দেয় নাক, পাহাড়ি পথে বয়ে যেতে যেতে, চিমটি রেখে যায় পা-পাতায়। তোমরাও তো জানো এসব রক্ষণাবেক্ষণ, না না শুনতে শুনতেও নিয়ে নাও অনেককিছু।
অনেককিছুর পর তৃতীয় ক্লীব, ফিরে এসে হিসেব করে সবটা নেয়, জলপথ ওপরে তুলে নদীর বুক দেখে... শুধু আঁচড়ের দাগ, নামিয়ে রেখে জল, স্রোতে বয়ে যায় শেষটুকু নিয়ে, সন্ধ্যা নেমে আসে, পাখি ফিরে যায় ঘরে, সাদা পৃষ্ঠায় সংখ্যা হয়ে থেমে থাকে রাই, মৃত পালক অক্ষর লেখে।
পাখি উড়ে গেলে সে কখনো কখনো একটি পালক ফেলে যায়। সেভাবেই পড়ে থাকে আমার সাদা পৃষ্ঠায় কোন এক "ওজস্বল" নাম। কুড়িয়ে নেই না শুধু অপেক্ষা করি তৃতীয় ক্লীবের জন্য।
অ... ছেড়ে আসা প্রেক্ষাগৃহে নাট্যদল, গভীর নাটকীয়তা...শকুন্তলার ভর্ৎসনা, আমিও দাঁড়িয়ে থাকি রাই হয়ে কোন সে যুগের যমুনার কূলে, সন্ধ্যা ফেলে যায় রাত, কালোরা ঘরে ফেরে, ক্রমে আমিও কালো হই।
কালোকৃষ্ণ, কৃষ্ণরাই..... ধুৎ এসব ও যুগের কথা, আমার প্রেমে ওজস্বী- হাওয়া চেটে দেয় গাল থেকে চিবুক, ছুঁয়ে দেয় নাক, পাহাড়ি পথে বয়ে যেতে যেতে, চিমটি রেখে যায় পা-পাতায়। তোমরাও তো জানো এসব রক্ষণাবেক্ষণ, না না শুনতে শুনতেও নিয়ে নাও অনেককিছু।
অনেককিছুর পর তৃতীয় ক্লীব, ফিরে এসে হিসেব করে সবটা নেয়, জলপথ ওপরে তুলে নদীর বুক দেখে... শুধু আঁচড়ের দাগ, নামিয়ে রেখে জল, স্রোতে বয়ে যায় শেষটুকু নিয়ে, সন্ধ্যা নেমে আসে, পাখি ফিরে যায় ঘরে, সাদা পৃষ্ঠায় সংখ্যা হয়ে থেমে থাকে রাই, মৃত পালক অক্ষর লেখে।
অনুপ কুমার মুখার্জী
ঘুম, ঘুম আসছে না
ঘুম
ঘুম যে হারিয়ে গেলো
এই ক্লান্ত রাত্রির আঁধারে
সে বলল
ঘুমের গুলি খা
আমি গুলি চালিয়ে দিলাম
একজন বলল
ইতিহাস এর দুঃখ করিস না
আমি নিজেকে ইতিহাস থেকে বার করে নিলাম
এক এসে বলল
এক ঢোঁক খেয়ে দেখ
আমি নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম গেলাসে
বয়স্ক একজন বলল
হরি নাম জাপ কর
আমি করে দেখে নিলাম
আমি ঘুম খুঁজতে থাকলাম
খোলা চোখের পাতা থেকে
মৃগ আর মৃগতৃষ্ণার খেলা
অন্তহীন চলতে থাকলো
আমি স্বপ্নও দেখতে থাকলাম
খোলা চোখের তারা দিয়েই
ঘুম আরো দূরে যেতে থাকলো
চোখ বন্ধ হবার অপেক্ষা তে
ঘুম
আসবে নিশ্চয়
আসবে সে এক দিন
আর না হোক
এক সন্ধ্যা তে আসছে সে
জীবনের এক সন্ধ্যা তে
আসবে সে চির বন্ধু
বন্ধ করবে চোখের পলক
শুষে নেবে সব যন্ত্রনা
সব ক্লান্তি সব দ্বিধা
নেমে আসবে নিদ্রার ঠান্ডা স্পর্শ
ঘুম আসবে নিদ্রার কোলে
ঘুম, ঘুম, ঘুম
ঘুম
ঘুম যে হারিয়ে গেলো
এই ক্লান্ত রাত্রির আঁধারে
সে বলল
ঘুমের গুলি খা
আমি গুলি চালিয়ে দিলাম
একজন বলল
ইতিহাস এর দুঃখ করিস না
আমি নিজেকে ইতিহাস থেকে বার করে নিলাম
এক এসে বলল
এক ঢোঁক খেয়ে দেখ
আমি নিজেকে ডুবিয়ে দিলাম গেলাসে
বয়স্ক একজন বলল
হরি নাম জাপ কর
আমি করে দেখে নিলাম
আমি ঘুম খুঁজতে থাকলাম
খোলা চোখের পাতা থেকে
মৃগ আর মৃগতৃষ্ণার খেলা
অন্তহীন চলতে থাকলো
আমি স্বপ্নও দেখতে থাকলাম
খোলা চোখের তারা দিয়েই
ঘুম আরো দূরে যেতে থাকলো
চোখ বন্ধ হবার অপেক্ষা তে
ঘুম
আসবে নিশ্চয়
আসবে সে এক দিন
আর না হোক
এক সন্ধ্যা তে আসছে সে
জীবনের এক সন্ধ্যা তে
আসবে সে চির বন্ধু
বন্ধ করবে চোখের পলক
শুষে নেবে সব যন্ত্রনা
সব ক্লান্তি সব দ্বিধা
নেমে আসবে নিদ্রার ঠান্ডা স্পর্শ
ঘুম আসবে নিদ্রার কোলে
ঘুম, ঘুম, ঘুম
আফজল আলি
সুখ তীরবর্তী
আমার কবিতাগুলো ওরকম ছিল না যেরকম তোমরা বলছো
নদীচরে জেগে ওঠে ফাল্গুন মাস
২০১৭ সালেই আমি উন্মুক্ত হলাম
যখন মেঘ ডাকছিল খুব আর পিপাসা ছিল অতিরিক্ত
আমি নামলাম কয়েকটি স্বরবর্ণ উদ্ধারে
অন্যমনস্ক নিয়ে চলে দূরে কোথায়
ঢেউ তো ওখানেই আছে যেখানে ঘুম নিগ্রহ হয়
মনের কথা আর কাকেই খুলে বলি
মন তো মনের সাথেই লড়াই করছে ঘরে
বেদনার প্রলেপ মাখতে চিনির সরবৎ খেয়েছি
তবু শব্দযান এগিয়ে আসে
বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ ওই সুখ- তীরবর্তী
চায়ের কাপ অন্তর্বতী হল , কাঁপছিল , যারা কাঁপছিল
তারা সকলে ভাগ করে নিল
পাকা বেদনার কী দাম
বুক স্থবির , আমাকে নিরুপায়ের ঊর্ধ্বে রাখে
যদি কোনোদিন দেখা হয় , আমিও ভাগ করে নিতাম - ওহে দুঃখ কারে কয়
আমার কবিতাগুলো ওরকম ছিল না যেরকম তোমরা বলছো
নদীচরে জেগে ওঠে ফাল্গুন মাস
২০১৭ সালেই আমি উন্মুক্ত হলাম
যখন মেঘ ডাকছিল খুব আর পিপাসা ছিল অতিরিক্ত
আমি নামলাম কয়েকটি স্বরবর্ণ উদ্ধারে
অন্যমনস্ক নিয়ে চলে দূরে কোথায়
ঢেউ তো ওখানেই আছে যেখানে ঘুম নিগ্রহ হয়
মনের কথা আর কাকেই খুলে বলি
মন তো মনের সাথেই লড়াই করছে ঘরে
বেদনার প্রলেপ মাখতে চিনির সরবৎ খেয়েছি
তবু শব্দযান এগিয়ে আসে
বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ ওই সুখ- তীরবর্তী
চায়ের কাপ অন্তর্বতী হল , কাঁপছিল , যারা কাঁপছিল
তারা সকলে ভাগ করে নিল
পাকা বেদনার কী দাম
বুক স্থবির , আমাকে নিরুপায়ের ঊর্ধ্বে রাখে
যদি কোনোদিন দেখা হয় , আমিও ভাগ করে নিতাম - ওহে দুঃখ কারে কয়
অভিজিৎ রায়
আপেল বিষয়ক উত্তরপত্র
নিতান্তই নিজের সাথে লুকোচুরি খেলছি। আর, তারই মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ছি ক্লান্তিতে। প্রতিটি শব্দ খুঁজে খুঁজে এনে সাজাচ্ছি অবসর। তারপর নিজেকেই ঘাড় ধরে বলছি, 'ওঠ,' বলছি 'বোস'। নিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি নিউটনের আপেল মাটিতে পড়ে পড়ুক আমারটা যেন গাছে উঠতে পারে মাটি থেকে। আমার আপেল যেন কামড়ের অপেক্ষায় থাকে চিরকাল কিন্তু আমি শুধু চিরকাল বই ঘেঁটে ঘেঁটে নিউটনের আপেলেই কামড় মারবো। আমার আপেল আমার মস্তিষ্কের মতো অক্ষত থাক দেহে, মনে। মানসিক বা শারীরিক যন্ত্রণা দিতে পারে যে সব দাঁত বা যে সব পিঁপড়ে তারা সেইসব উঁচু ডাল ছুঁতে পারবে না, যেখানে ঝুলিয়ে রেখেছি আমার নিজস্ব আপেল। যদিও একদিন প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে সে আপেল পচে যাবে, যেমন গিয়েছিল নিউটনের। একদিন কাঠ-মাফিয়া কবিতার বেওসাতি করার লোভে সে আপেল গাছ কাটতে আসবে। নিউটন কিছু কবিতা লিখে ঝুলিয়ে রাখবে আপেলের গাছে আর আমি লুকোচুরি খেলব নিজের সঙ্গে, শব্দের সঙ্গে, আপেলের সঙ্গে, গাছের সঙ্গে, সবার সঙ্গে। লুকানোর জায়গা পাবো না। ধরা পড়ে যাব সবার চোখে। আপেলের চোখে, নিউটনের চোখে, আপেলের কোষ আর মস্তিষ্কের কোষের চোখেও।
নিতান্তই নিজের সাথে লুকোচুরি খেলছি। আর, তারই মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ছি ক্লান্তিতে। প্রতিটি শব্দ খুঁজে খুঁজে এনে সাজাচ্ছি অবসর। তারপর নিজেকেই ঘাড় ধরে বলছি, 'ওঠ,' বলছি 'বোস'। নিজে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি নিউটনের আপেল মাটিতে পড়ে পড়ুক আমারটা যেন গাছে উঠতে পারে মাটি থেকে। আমার আপেল যেন কামড়ের অপেক্ষায় থাকে চিরকাল কিন্তু আমি শুধু চিরকাল বই ঘেঁটে ঘেঁটে নিউটনের আপেলেই কামড় মারবো। আমার আপেল আমার মস্তিষ্কের মতো অক্ষত থাক দেহে, মনে। মানসিক বা শারীরিক যন্ত্রণা দিতে পারে যে সব দাঁত বা যে সব পিঁপড়ে তারা সেইসব উঁচু ডাল ছুঁতে পারবে না, যেখানে ঝুলিয়ে রেখেছি আমার নিজস্ব আপেল। যদিও একদিন প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মে সে আপেল পচে যাবে, যেমন গিয়েছিল নিউটনের। একদিন কাঠ-মাফিয়া কবিতার বেওসাতি করার লোভে সে আপেল গাছ কাটতে আসবে। নিউটন কিছু কবিতা লিখে ঝুলিয়ে রাখবে আপেলের গাছে আর আমি লুকোচুরি খেলব নিজের সঙ্গে, শব্দের সঙ্গে, আপেলের সঙ্গে, গাছের সঙ্গে, সবার সঙ্গে। লুকানোর জায়গা পাবো না। ধরা পড়ে যাব সবার চোখে। আপেলের চোখে, নিউটনের চোখে, আপেলের কোষ আর মস্তিষ্কের কোষের চোখেও।
সমরেন্দ্র রায়
পাখি ও মানুষ
পাখিদের আবাস আছে, দেশ কাল থাকেনা। উড়ে উড়ে দেখে নেয় নয়াচর, নয়তো পূর্বপুরুষের আস্তানা। কিছুদিনের জটলা, মিলেমিশে একাকার। আদান-প্রদান, আঁকাবাঁকা ছুটোছুটি। যাওয়া-আসা সেরে নিরালায় রাতঘুম। এরা বোঝেনা এপার-ওপার, সমুখে চলে আদিগন্ত। ভোরের উড়ান এসে খুলে দেয় সীমানার দরজা।
আমি শুনি ঘুঙুরের শব্দ ব্যাথাতুর প্রতিধ্বনি।
মন খারাপ হয়। নিজেকে চিনতে চিনতে দেখি হানাহানি।
মেপে রাখি নিরেট হৃদয়ের টানাপোড়েন। অনেকদিন হল
হারিয়েছি বটতলার পাঠশালা। এখন দেখি কলরবে মুখরিত ছালচটা পুরোনো দেয়াল। খসে খসে পড়ে যাবতীয় অন্ধকার। ভেবে দেখি যা কিছু অবয়ব সবটাই খোলস। দু-হাত দূরের বাসিন্দারাও ক্রুদ্ধ চাহনিতে দেখে নেয় এপারের বসতি কঙ্কাল। কেননা---
আজ অবধি আমাদের চোখ যাযাবর পাখি দেখিনি।
পাখিদের আবাস আছে, দেশ কাল থাকেনা। উড়ে উড়ে দেখে নেয় নয়াচর, নয়তো পূর্বপুরুষের আস্তানা। কিছুদিনের জটলা, মিলেমিশে একাকার। আদান-প্রদান, আঁকাবাঁকা ছুটোছুটি। যাওয়া-আসা সেরে নিরালায় রাতঘুম। এরা বোঝেনা এপার-ওপার, সমুখে চলে আদিগন্ত। ভোরের উড়ান এসে খুলে দেয় সীমানার দরজা।
আমি শুনি ঘুঙুরের শব্দ ব্যাথাতুর প্রতিধ্বনি।
মন খারাপ হয়। নিজেকে চিনতে চিনতে দেখি হানাহানি।
মেপে রাখি নিরেট হৃদয়ের টানাপোড়েন। অনেকদিন হল
হারিয়েছি বটতলার পাঠশালা। এখন দেখি কলরবে মুখরিত ছালচটা পুরোনো দেয়াল। খসে খসে পড়ে যাবতীয় অন্ধকার। ভেবে দেখি যা কিছু অবয়ব সবটাই খোলস। দু-হাত দূরের বাসিন্দারাও ক্রুদ্ধ চাহনিতে দেখে নেয় এপারের বসতি কঙ্কাল। কেননা---
আজ অবধি আমাদের চোখ যাযাবর পাখি দেখিনি।
মোহম্মদ শাহবুদ্দিন ফিরোজ
আব্বুলিস
ওই মেয়েটা তোকেই দেখে, প্রথম দিলাম আব্বুলিস
পাড়ার মোড়ে গান গেয়ে যাই, বেওয়ারিশ সুরের শিস
ঘরের ভিতর উঠোন থাকে উঠোন জুড়ে ছায়ার গাছ
সঙ্গে থাকে মাদলে তাল আকাশ জোড়া মেঘের নাচ।
জোয়ার নদী নৌকো দোলে দখিন হাওয়ার পাল তোলা
ওই মেয়েটা সন্ধে হলো এখনোও তোর চুল খোলা!
আলপথের ওই ঘাসগুলো সব শুকিয়ে গেছে রোদপুড়ে
চারখান সেই লিখছি চিঠি, দু'একটা রাস্তা জুড়ে।
পাড়ার মোড়ের ভাজার ঠেলায় মিটিং সিটিং ঝাড়ের বাঁশ
রাত বিরেতেই মস্তানি আর মন্দ লোকের সর্বনাশ।
অপেক্ষাতো অনেক হলো, পারলে তুই জানিয়ে দিস
আমরা নতুন ঘর করেছি তাই তোকে দিই আব্বুলিস
ওই মেয়েটা তোকেই দেখে, প্রথম দিলাম আব্বুলিস
পাড়ার মোড়ে গান গেয়ে যাই, বেওয়ারিশ সুরের শিস
ঘরের ভিতর উঠোন থাকে উঠোন জুড়ে ছায়ার গাছ
সঙ্গে থাকে মাদলে তাল আকাশ জোড়া মেঘের নাচ।
জোয়ার নদী নৌকো দোলে দখিন হাওয়ার পাল তোলা
ওই মেয়েটা সন্ধে হলো এখনোও তোর চুল খোলা!
আলপথের ওই ঘাসগুলো সব শুকিয়ে গেছে রোদপুড়ে
চারখান সেই লিখছি চিঠি, দু'একটা রাস্তা জুড়ে।
পাড়ার মোড়ের ভাজার ঠেলায় মিটিং সিটিং ঝাড়ের বাঁশ
রাত বিরেতেই মস্তানি আর মন্দ লোকের সর্বনাশ।
অপেক্ষাতো অনেক হলো, পারলে তুই জানিয়ে দিস
আমরা নতুন ঘর করেছি তাই তোকে দিই আব্বুলিস
গল্প - কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
স্যান্ডেল
স্কুলে ঢুকে যারপরনাই অবাক হলাম। পাকা একবছর পর দিলীপবাবু এসেছেন। অবাক হওয়ার কারণ তার তার দীর্ঘ অনুপস্থিতি নয়। দিলীপবাবুর পায়ে নতুন একজোড়া স্যান্ডেল। উনিশ বছর চাকরিজীবনে তার পায়ে স্যান্ডেল দেখিনি। সিনিয়র শিক্ষকদের কাছে শুনেছি চাকরিতে ঢুকেছিলেন খালি পায়ে। অবসরও নিয়েছেন খালি পায়ে। এমনকি বিয়ে করতেও গিয়েছিলেন খালি পায়ে। কেউই নাকি তাকে কোনোদিন জুতো পরতে দেখেননি।
----- 'কেমন আছেন? অনেকদিন পরে এলেন। ভেতরে আসুন।' দিলীপবাবুকে বললাম। দুবছর হল অবসর নিয়েছেন। দুবছরেই মনে হচ্ছে বয়স অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু হাসিটি তেমনই আছে।
----- 'ভালো আছি স্যার। পেনসনের কী একটা কাগজ এসেছে। বুঝতে পারছি না। অবশ্য বোঝার কথাও না।' বলে একমুখ হাসলেন।
----- 'বসুন।'
----- 'তাই আপনার কাছে একবার এলুম।' বলে দিলীপবাবু দাঁড়িয়েই থাকলেন। বসার কোনো লক্ষণ দেখালেন না। প্রসঙ্গত বলি দিলীপবাবু ছিলেন স্কুলের চতুর্থশ্রেণির কর্মচারী। নিজেও চতুর্থশ্রেণি পাশ। স্কুলের সব ঘর খোলা এবং বন্ধ করা, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ফাইফরমাশ শোনা ছিল তার কাজ। হাতে থাকত প্রচুর চাবির একটি গোছা। ধুতি ও পাঞ্জাবিসহ নগ্ন পদযুগল। এখন আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক। দিলীপবাবুর পেনসনের কাগজটা হাতে নিলাম। তেমনকিছু নয়। লাইফ সার্টিফিকেটের সাথে আধার কার্ড এবং আরও কিছু কাগজপত্র জমা দিতে বলা হয়েছে। দিলীপবাবুর পায়ের দিকে তাকালাম। স্যান্ডেল জোড়া ঘরের বাইরে খুলে রেখে এসেছেন। বললাম, 'জুতো তাহলে পরলেন?' দিলীপবাবু বললেন, 'কী করব স্যার, মারা যাওয়ার আগে বউটা জুতো পরার প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিল।'
হা করে তাকিয়ে থাকলাম। যতদূর জানি জুতো না পরা নিয়ে বউয়ের সাথে তার বিস্তর ঝামেলা হত। দুপক্ষই ছিলেন সমান জেদি এবং একগুঁয়ে।
দিলীপবাবুর পায়ের পাশ দিয়ে চৌকাঠের কাছে একজোড়া স্যান্ডেল দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে একজোড়া ভালোবাসা।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭
গল্প - নির্মলেন্দু কুণ্ডু
সম্পর্ক
—"কী রোজ রোজ ঐ পাগলটার কাছে যাও,ভালো লাগে না এসব!কতবার বারণ করেছি না!"
—"ও-ও যে আমায় মা বলে ডাকে বাবা,মা হয়ে সন্তানের ডাকে সাড়া না দিই কি করে!"কোনরকমে কান্না গিলে কথাগুলো বলেন নীলিমা দেবী৷
আর পাঁচটা মেয়ের মতো নীলিমা দেবীর যখন বিয়ের কথাবার্তা চলছে,তখন থেকেই সবাই সাবধান করে দিচ্ছিল সাংসারিক নানা ব্যাপারে৷শাশুড়ীর কথা শুনে চলা,স্বামীকে দেবতাজ্ঞান করা,বাড়ির কাজকর্ম মুখ বুজে করে যাওয়া এরকম হরেক উপদেশ আর পরামর্শে বিয়ের আগে থেকেই শ্বশুরবাড়ি সম্বন্ধে একটা অজানা ভীতি কাজ করছিল নীলিমার মনে৷কিন্তু বিয়ের পর নিজেই অবাক হয়ে গেল নীলিমা৷কোথায় শাশুড়ীর দজ্জালপনা!তিনি যে মায়ের থেকেও আপন৷কথায় কথায় বলতেনও,নীলিমাকে এনে উনি ওঁর মেয়ের শখ পূর্ণ করেছেন৷স্বামীটিও দিলদরিয়া মানুষ৷রাশভারী অধ্যাপকের বর্ম পরে থাকলেও স্ত্রীর সাথে রঙ্গ-রসিকতায় কম যেতেন না৷নীলিমাও বুঝতেন,স্বামী তাঁকে প্রচন্ড ভালোবাসেন৷তাঁদের সেই ভালোবাসারই ফসল অনিন্দ্য,ওঁদের ছেলে৷অনিন্দ্য হওয়ার পর আনন্দটা যেন আরও
বেড়ে গিয়েছিল নীলিমার সংসারে৷কিন্তু এত সুখ বোধহয় বিধাতার সহ্য হলনা৷শাশুড়ির মৃত্যুর পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম মিটতে না মিটতেই এক গাড়ী দুর্ঘটনায় স্বামী প্রমথেশবাবুও প্রাণ হারালেন৷সেই থেকে তাঁর পেনশনের কিছু টাকা আর কয়েকটা টিউশনি—এভাবেই বড় করে তুলেছেন নীলিমা দেবী তাঁর ছেলেকে৷কোনদিনও অভাব বুঝতে দেননি৷সাধ্যের বাইরে গিয়েও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করিয়েছেন৷ছেলে যখন নামী সংস্থায় চাকরী পেল,গোটা পাড়ায় মিষ্টি বিলিয়েছেন৷
সেই একই পাড়ায় এক বটতলায় হঠাৎই এসে উপস্থিত হয় এক জটাওয়ালা যুবক৷গালের দাড়ি,উস্কোখুস্কো চুল,নোংরা পোশাক দেখে সবাই এক মুহূর্তেই বুঝতে পারে লোকটা রামপাগল৷দুয়েকবার তাড়াবার চেষ্টাও করে,কিন্তু পাগলটা রে-রে করে তেড়ে আসায় সেই চেষ্টায় ক্ষান্ত হয় পাড়ার লোকে৷কয়েকজন অতি-উৎসাহী তখন হাতের কাছে পড়ে থাকা ইঁট ছুঁড়তে থাকে পাগলটাকে লক্ষ্য করে৷মন্দির থেকে ফেরার পথে দৃশ্যটা দেখেই রুখে দাঁড়ান নীলিমা দেবী৷
—"এই কি করছো কি তোমরা?থামো,থামো বলছি!"
—"সরে যান জেঠিমা৷ও একটা পাগল৷এক্ষুনি কিছু একটা ক্ষতি করে দেবে আপনার৷"
—"কে পাগল নয়,বাবা!এই দুনিয়ায় প্রত্যেকেই তার নিজের নিয়মে পাগল৷আর ক্ষতি,রাখে হরি মারে কে!"
নীলিমা দেবীকে পাড়ার ছেলেপুলেরা একটু মান্য করে৷তাই ইঁট ছোঁড়া ছেড়ে আস্তে আস্তে চলে যায় জায়গাটা ছেড়ে৷নীলিমা দেবী এবার পাগলটার দিকে ঘুরে তাকান৷লোকটা এতক্ষণ ভয়ে কুঁকড়ে ছিল৷তিনি এগিয়ে গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন—"তুমি কে বাবা?"
পাগলটা বোবা অর্থহীন দৃষ্টিতে নীলিমা দেবীর দিকে তাকায়৷বোধহয় বোঝার চেষ্টা করে ইনি ওর বন্ধু,না শত্রু৷
—"ভয় পেয়ো না,বাবা!আমি তোমায় মারবো না!তোমার খুব খিদে পেয়েছে,না?এই নাও,এই মিষ্টিগুলো খাও৷এখন আমি আসি,কেমন!তুমি কিন্তু কোথাও যেও না!কারো কোন অনিষ্টও করো না৷"
উনি উঠে একটু এগিয়েছেন,হঠাৎ—"মা!"
চমকে ঘুরে তাকালেন নীলিমা দেবী৷আঃ,কতদিন তিনি এ' ডাক শোনেননি৷যে ছেলেকে এত কষ্ট করে মানুষ করলেন,সেও যেন কেমন পাল্টে যাচ্ছে৷আগে অফিস থেকে ফিরে নানা কথা বলতো৷ধীরে ধীরে সেটুকুও বন্ধ হয়ে গেল৷এখন কথা বলতে 'খেতে দাও','দরজা বন্ধ করে দাও' ইত্যাদিতেই সীমাবদ্ধ৷মা ডাকটাও তাই অনেকদিন শোনেননি নীলিমা দেবী৷তাই আজ হঠাৎ এই অপরিচিত পাগলটার মুখে 'মা' ডাক শুনে সেই ফল্গুধারার মতো বয়ে চলা মাতৃত্বস্নেহধারা যেন নতুন গতিমুখ পেল৷সেই থেকে পাগলটাকে রোজ খাবার,অনিন্দ্যর পুরনো জামাকাপড় দিতে লাগলেন৷পাগলটাও কেমন যেন মা-নেওটা হয়ে উঠল ধীরে ধীরে৷পাড়ার অন্য কাউকে কিছু বলে না৷কেউ মারতে বা খোঁচাতে এলে খেঁকিয়ে ওঠে ঠিকই,কিন্তু কখনোই কাউকে মারতে যায়না৷ও অবশ্য মায়ের এই ভালোবাসাটুকু সেই গাছতলায় বসেই উপভোগ করতো৷কখনো নীলিমা দেবীর বাড়ি যায়নি৷নীলিমা দেবীও তা মেনে নিয়েছিলেন৷কারন অনিন্দ্য যখন থেকে পাগলটার কথা জানতে পেরেছিল,তখন থেকে মায়ের সাথে দূরত্বটা যেন আরও বড় হয়ে উঠেছিল৷মায়ের কাজে অসন্তোষও প্রকাশ করতো প্রায়ই,এমনকি গলাবাজিও হত মাঝে মাঝে৷পাড়ার লোকেরাও ওর এরকম ব্যবহারে অবাক হত,কিন্তু নাক গলাতো না৷
হঠাৎ একদিন সকালবেলায় দেখা গেল পাগলটা নীলিমাদেবীর বাড়িতে গিয়ে দরজায় ধাক্কা মারছে৷পাড়ার লোকেরা সেই শব্দে বেরিয়ে এসছে৷অনিন্দ্য তখন অফিসের কাজে বাইরে গেছে৷পাড়ার লোকেরা পাগলটার এরকম আচরণে অবাকই হল,কারন এত দিনে এই প্রথম পাগলটা এরকম করছে৷তাছাড়া নীলিমা দেবীই বা কোথায়!উনিই পাড়ায় সবার আগে ওঠেন৷অথচ এত আওয়াজেও ঘুম ভাঙছে না!পাগলটা প্রতিবেশীদের দেখতে পেয়ে ছুটে গেল ওদের কাছে৷মুখ দিয়ে বিচিত্র আওয়াজ করতে লাগলো,আর বারবার আঙুল দিয়ে নীলিমা দেবীর বাড়ির দিকে দেখাতে লাগলো৷দুয়েকজন কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেল সেই বাড়ির দিকে৷নিজেরাও ধাক্কা দিল দরজায়৷কিন্তু শব্দ না পেয়ে অজানা আশঙ্কায় দরজা ভেঙে ঢুকে দেখলো খাটে পড়ে আছে নীলিমা দেবীর নিথর দেহ৷
ছেলেকে খবর পাঠানো হল৷ছেলে বিকেলেই ফিরে এল৷এসেই জিজ্ঞেস করলো—"বডিটা কখন দাহ হবে?আমাকে আবার ফিরতে হবে৷একটা ইমপর্ট্যান্ট মিটিং সারতে হবে!"ছেলের এই মনোভাবে প্রতিবেশীরা যারপরনাই বিস্মিত হল৷পাগলটা কিন্তু তখনও বাইরে বসে অঝোর ধারায় কেঁদেই চলেছে৷
পরের দিন সকালে দেখা গেল সেই বটতলায় পাগলটা মরে পড়ে আছে!
—"কী রোজ রোজ ঐ পাগলটার কাছে যাও,ভালো লাগে না এসব!কতবার বারণ করেছি না!"
—"ও-ও যে আমায় মা বলে ডাকে বাবা,মা হয়ে সন্তানের ডাকে সাড়া না দিই কি করে!"কোনরকমে কান্না গিলে কথাগুলো বলেন নীলিমা দেবী৷
আর পাঁচটা মেয়ের মতো নীলিমা দেবীর যখন বিয়ের কথাবার্তা চলছে,তখন থেকেই সবাই সাবধান করে দিচ্ছিল সাংসারিক নানা ব্যাপারে৷শাশুড়ীর কথা শুনে চলা,স্বামীকে দেবতাজ্ঞান করা,বাড়ির কাজকর্ম মুখ বুজে করে যাওয়া এরকম হরেক উপদেশ আর পরামর্শে বিয়ের আগে থেকেই শ্বশুরবাড়ি সম্বন্ধে একটা অজানা ভীতি কাজ করছিল নীলিমার মনে৷কিন্তু বিয়ের পর নিজেই অবাক হয়ে গেল নীলিমা৷কোথায় শাশুড়ীর দজ্জালপনা!তিনি যে মায়ের থেকেও আপন৷কথায় কথায় বলতেনও,নীলিমাকে এনে উনি ওঁর মেয়ের শখ পূর্ণ করেছেন৷স্বামীটিও দিলদরিয়া মানুষ৷রাশভারী অধ্যাপকের বর্ম পরে থাকলেও স্ত্রীর সাথে রঙ্গ-রসিকতায় কম যেতেন না৷নীলিমাও বুঝতেন,স্বামী তাঁকে প্রচন্ড ভালোবাসেন৷তাঁদের সেই ভালোবাসারই ফসল অনিন্দ্য,ওঁদের ছেলে৷অনিন্দ্য হওয়ার পর আনন্দটা যেন আরও
বেড়ে গিয়েছিল নীলিমার সংসারে৷কিন্তু এত সুখ বোধহয় বিধাতার সহ্য হলনা৷শাশুড়ির মৃত্যুর পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম মিটতে না মিটতেই এক গাড়ী দুর্ঘটনায় স্বামী প্রমথেশবাবুও প্রাণ হারালেন৷সেই থেকে তাঁর পেনশনের কিছু টাকা আর কয়েকটা টিউশনি—এভাবেই বড় করে তুলেছেন নীলিমা দেবী তাঁর ছেলেকে৷কোনদিনও অভাব বুঝতে দেননি৷সাধ্যের বাইরে গিয়েও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং করিয়েছেন৷ছেলে যখন নামী সংস্থায় চাকরী পেল,গোটা পাড়ায় মিষ্টি বিলিয়েছেন৷
সেই একই পাড়ায় এক বটতলায় হঠাৎই এসে উপস্থিত হয় এক জটাওয়ালা যুবক৷গালের দাড়ি,উস্কোখুস্কো চুল,নোংরা পোশাক দেখে সবাই এক মুহূর্তেই বুঝতে পারে লোকটা রামপাগল৷দুয়েকবার তাড়াবার চেষ্টাও করে,কিন্তু পাগলটা রে-রে করে তেড়ে আসায় সেই চেষ্টায় ক্ষান্ত হয় পাড়ার লোকে৷কয়েকজন অতি-উৎসাহী তখন হাতের কাছে পড়ে থাকা ইঁট ছুঁড়তে থাকে পাগলটাকে লক্ষ্য করে৷মন্দির থেকে ফেরার পথে দৃশ্যটা দেখেই রুখে দাঁড়ান নীলিমা দেবী৷
—"এই কি করছো কি তোমরা?থামো,থামো বলছি!"
—"সরে যান জেঠিমা৷ও একটা পাগল৷এক্ষুনি কিছু একটা ক্ষতি করে দেবে আপনার৷"
—"কে পাগল নয়,বাবা!এই দুনিয়ায় প্রত্যেকেই তার নিজের নিয়মে পাগল৷আর ক্ষতি,রাখে হরি মারে কে!"
নীলিমা দেবীকে পাড়ার ছেলেপুলেরা একটু মান্য করে৷তাই ইঁট ছোঁড়া ছেড়ে আস্তে আস্তে চলে যায় জায়গাটা ছেড়ে৷নীলিমা দেবী এবার পাগলটার দিকে ঘুরে তাকান৷লোকটা এতক্ষণ ভয়ে কুঁকড়ে ছিল৷তিনি এগিয়ে গিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন—"তুমি কে বাবা?"
পাগলটা বোবা অর্থহীন দৃষ্টিতে নীলিমা দেবীর দিকে তাকায়৷বোধহয় বোঝার চেষ্টা করে ইনি ওর বন্ধু,না শত্রু৷
—"ভয় পেয়ো না,বাবা!আমি তোমায় মারবো না!তোমার খুব খিদে পেয়েছে,না?এই নাও,এই মিষ্টিগুলো খাও৷এখন আমি আসি,কেমন!তুমি কিন্তু কোথাও যেও না!কারো কোন অনিষ্টও করো না৷"
উনি উঠে একটু এগিয়েছেন,হঠাৎ—"মা!"
চমকে ঘুরে তাকালেন নীলিমা দেবী৷আঃ,কতদিন তিনি এ' ডাক শোনেননি৷যে ছেলেকে এত কষ্ট করে মানুষ করলেন,সেও যেন কেমন পাল্টে যাচ্ছে৷আগে অফিস থেকে ফিরে নানা কথা বলতো৷ধীরে ধীরে সেটুকুও বন্ধ হয়ে গেল৷এখন কথা বলতে 'খেতে দাও','দরজা বন্ধ করে দাও' ইত্যাদিতেই সীমাবদ্ধ৷মা ডাকটাও তাই অনেকদিন শোনেননি নীলিমা দেবী৷তাই আজ হঠাৎ এই অপরিচিত পাগলটার মুখে 'মা' ডাক শুনে সেই ফল্গুধারার মতো বয়ে চলা মাতৃত্বস্নেহধারা যেন নতুন গতিমুখ পেল৷সেই থেকে পাগলটাকে রোজ খাবার,অনিন্দ্যর পুরনো জামাকাপড় দিতে লাগলেন৷পাগলটাও কেমন যেন মা-নেওটা হয়ে উঠল ধীরে ধীরে৷পাড়ার অন্য কাউকে কিছু বলে না৷কেউ মারতে বা খোঁচাতে এলে খেঁকিয়ে ওঠে ঠিকই,কিন্তু কখনোই কাউকে মারতে যায়না৷ও অবশ্য মায়ের এই ভালোবাসাটুকু সেই গাছতলায় বসেই উপভোগ করতো৷কখনো নীলিমা দেবীর বাড়ি যায়নি৷নীলিমা দেবীও তা মেনে নিয়েছিলেন৷কারন অনিন্দ্য যখন থেকে পাগলটার কথা জানতে পেরেছিল,তখন থেকে মায়ের সাথে দূরত্বটা যেন আরও বড় হয়ে উঠেছিল৷মায়ের কাজে অসন্তোষও প্রকাশ করতো প্রায়ই,এমনকি গলাবাজিও হত মাঝে মাঝে৷পাড়ার লোকেরাও ওর এরকম ব্যবহারে অবাক হত,কিন্তু নাক গলাতো না৷
হঠাৎ একদিন সকালবেলায় দেখা গেল পাগলটা নীলিমাদেবীর বাড়িতে গিয়ে দরজায় ধাক্কা মারছে৷পাড়ার লোকেরা সেই শব্দে বেরিয়ে এসছে৷অনিন্দ্য তখন অফিসের কাজে বাইরে গেছে৷পাড়ার লোকেরা পাগলটার এরকম আচরণে অবাকই হল,কারন এত দিনে এই প্রথম পাগলটা এরকম করছে৷তাছাড়া নীলিমা দেবীই বা কোথায়!উনিই পাড়ায় সবার আগে ওঠেন৷অথচ এত আওয়াজেও ঘুম ভাঙছে না!পাগলটা প্রতিবেশীদের দেখতে পেয়ে ছুটে গেল ওদের কাছে৷মুখ দিয়ে বিচিত্র আওয়াজ করতে লাগলো,আর বারবার আঙুল দিয়ে নীলিমা দেবীর বাড়ির দিকে দেখাতে লাগলো৷দুয়েকজন কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেল সেই বাড়ির দিকে৷নিজেরাও ধাক্কা দিল দরজায়৷কিন্তু শব্দ না পেয়ে অজানা আশঙ্কায় দরজা ভেঙে ঢুকে দেখলো খাটে পড়ে আছে নীলিমা দেবীর নিথর দেহ৷
ছেলেকে খবর পাঠানো হল৷ছেলে বিকেলেই ফিরে এল৷এসেই জিজ্ঞেস করলো—"বডিটা কখন দাহ হবে?আমাকে আবার ফিরতে হবে৷একটা ইমপর্ট্যান্ট মিটিং সারতে হবে!"ছেলের এই মনোভাবে প্রতিবেশীরা যারপরনাই বিস্মিত হল৷পাগলটা কিন্তু তখনও বাইরে বসে অঝোর ধারায় কেঁদেই চলেছে৷
পরের দিন সকালে দেখা গেল সেই বটতলায় পাগলটা মরে পড়ে আছে!
সুব্রত হাজরা
ব্যথার সম্পর্ক
তোমার সাথে আমার একটিই সম্পর্ক
তা হলো ব্যথার।
যেখানে যেখানে ব্যথারা ঘুরপাক খায়
সেখানে সেখানে তোমায় খুঁজে পাই।
তোমার কথার মধ্যেই আমি আছি।
বিশ্বাস না হলে পরখ করো
বুকের ওপর হাত দিয়ে দেখো
সকল ধুকপুকানিতে সেই 'তরুণ'-
এলোমেলো চুল,ঘোলাটে স্বপ্নিল চোখ
অবহেলার পোশাকে বড়ই পাগলাটে
যাকে তুমি আদর করে বলতে - কেয়ারলেস বিউটি।
আজ ২৬ শে সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর দিন
দেবব্রতর কথাতে কলম ধরা।
কিন্তু বারবার তোমার ছবি কেন ভেসে আসছে
তুমি কি আমায় মনে করছ?
ব্যথারা এখন কথা হয়ে কোথায় উড়ে যায়
পিপাসু ঠোট , তোমার লিপগ্লসের গন্ধে
বড়ই উচাটন করে।
তুমি কি আমায় ভাবছ?
তুমি কি কাঁদছ?
এ ব্যথার বিন্দু বিন্দু রেণু আমায় ভিজিয়ে চলেছে
আমি ভিজছি।
আমি কাঁদছি।
না পেয়েও হারানো ব্যথারা আমায় ঋদ্ধ করে চলেছ
মামমাম, তুমি কত দূরে অথচ কত কাছে?
দেবযানী বসু
সলিলা হও গো
সাগরমমতা ছিল দিঘি তোর. মহাঘোষ অন্তরে. দিঘি-দিদিদিদিদি.... খুন্তি হাতা দিয়ে নেড়ে দি ৫.৫ মিলিয়ন বছর বয়সে তোর. হারিয়ে যাওয়া বর্ষাবর্ষ গুনতে গুনতে. মা হারা মেছো নৌকোরা শুখো কোল জাপ্টে. মা মরা মা মড়া. বীরপুরুষ জাহাজেরা পড়ে পড়ে ঘুমোয় আর বালি খায়. চোরাবালি চুরি করে খায়. এখন পেয়েছে তোকে লবণবাতিকে. বুকে পাতা রেললাইনে খেলা করে মাছ. আমি মহাসচিব আসি তোর কাছে. পালাতে পারি নি. পারি নি. আমারও আশ্রয় উল্টোনো জাহাজ পাঁচ মিলিয়ন বছরের.
সাগরমমতা ছিল দিঘি তোর. মহাঘোষ অন্তরে. দিঘি-দিদিদিদিদি.... খুন্তি হাতা দিয়ে নেড়ে দি ৫.৫ মিলিয়ন বছর বয়সে তোর. হারিয়ে যাওয়া বর্ষাবর্ষ গুনতে গুনতে. মা হারা মেছো নৌকোরা শুখো কোল জাপ্টে. মা মরা মা মড়া. বীরপুরুষ জাহাজেরা পড়ে পড়ে ঘুমোয় আর বালি খায়. চোরাবালি চুরি করে খায়. এখন পেয়েছে তোকে লবণবাতিকে. বুকে পাতা রেললাইনে খেলা করে মাছ. আমি মহাসচিব আসি তোর কাছে. পালাতে পারি নি. পারি নি. আমারও আশ্রয় উল্টোনো জাহাজ পাঁচ মিলিয়ন বছরের.
মোনালিসা রেহমান
জলজ
একটু বৃষ্টি হলেই জল
জমে মাটির শরীরে
নরম মাটির দেয়াল ঘেঁষে
বেড়ে ওঠে চারাগাছ
শ্যাওলা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে
দেওয়াল ফেটে চৌচির
দুয়েকটা ইট হাড় জিরজিরে....
ডানা ভাঙা পাখি।
ইমারত ভাঙার শব্দ ক্ষীণ
কারুকার্য খচিত রাজপ্রাসাদে
আজ নান্দনিকতা বেমানান
উত্তরআধুনিক প্রেক্ষাপটে
স্রষ্টা নিজেই দিকবিশূন্য
প্রদোষকালে পাখিদের
ডানা ঝাপটানো কিসের ইঙ্গিত!
রাত্রিকালে এক পক্ষকাল
নির্ঘুম স্বপ্নদোষ........
একটু বৃষ্টি হলেই জল
জমে মাটির শরীরে
নরম মাটির দেয়াল ঘেঁষে
বেড়ে ওঠে চারাগাছ
শ্যাওলা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে
দেওয়াল ফেটে চৌচির
দুয়েকটা ইট হাড় জিরজিরে....
ডানা ভাঙা পাখি।
ইমারত ভাঙার শব্দ ক্ষীণ
কারুকার্য খচিত রাজপ্রাসাদে
আজ নান্দনিকতা বেমানান
উত্তরআধুনিক প্রেক্ষাপটে
স্রষ্টা নিজেই দিকবিশূন্য
প্রদোষকালে পাখিদের
ডানা ঝাপটানো কিসের ইঙ্গিত!
রাত্রিকালে এক পক্ষকাল
নির্ঘুম স্বপ্নদোষ........
উদার আকাশ
একরামূল হক শেখ
রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় 'উদার আকাশ' পত্রিকার 'ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা-১৪২৪' উদ্বোধন করেন । 'মানবজমিন' নামক কালজয়ী উপন্যাস, জনপ্রিয় 'ফটিক' চরিত্রের স্রষ্টা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় উদার আকশ পত্রিকার বিষয় বৈচিত্রের পাশাপাশি সম্প্রীতি ও সৌহার্দের এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। তিনি আরও বলেন, সমাজের বৌদ্ধিক বিকাশে সাহিত্য-সংস্কৃতির বেশি বেশি চর্চা খুবই জরুরি।
উদার আকাশ পত্রিকার তরুণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, চারদিকে ভেদাভেদ আর অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে। এই সময় সাহিত্য-সংস্কৃতিই মানবিকতার জয়গান গাইতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে আমাদের। তিনি আরও বলেন, এর আগে উদার আকশ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা এবং উদার আকাশ প্রকাশনের গ্রন্থ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, শঙ্খ ঘোষ, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, মোস্তাক হোসেন, জয় গোস্বামী, দীপক ঘোষ, আবুল বাশার, সুনন্দ সান্যাল, নজরুল ইসলাম, প্রভৃতি বরেণ্য বাঙালি উদ্বোধন করেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন আমার অন্যতম প্রিয় কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তিনি এপার বাংলা ও ওপার বাংলা এবং আমাদের রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে মিলন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এই শুভক্ষনে তিনি ঘোষণা করেন, 'উদার আকাশ' পত্রিকা ও প্রকাশনের উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ২০১৭ কলকাতার আইসিসিআর হলে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উদার আআকাশ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে 'টাইমস বাংলা'-র তরুণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রোহিত, 'অয়োময়' পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রাশিদ, 'নতুন গতি' পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক অসিত ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণাধর্মী মননশীল প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশই 'উদার আকাশ' পত্রিকার ট্র্যাডিশন। এ-সংখ্যাতেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল: উনিশ শতকের গীতিকবিতায় রোমান্টিকতা (ড. তাপস বসু), নৈতিকতা যেন আজ নিভু নিভু দীপশিখা (ড. মীরাতুন নাহার), প্রদোষে প্রাকৃতজন: ইতিহাস এখানে সাহিত্যের ফুল হয়ে ফোটে (ড. সাইফুল্লা), রবীন্দ্রনাথের নারীভাবনা: প্রসঙ্গ কালান্তর প্রবন্ধের 'নারী' (অনন্যা রায় পাটোয়ারী), মঙ্গল কাব্যে নিম্নবর্গের অবস্থান (নুরুল আমিন বিশ্বাস), নজরুল মানসে রাধাকৃষ্ণ প্রেম প্রসঙ্গ ( রাতুল গোস্বামী), চৈতন্য উত্তর যুগে বাংলার বৈষ্ণব সমাজে ধর্ম ও পাটবাড়ি (অমিত মণ্ডল), আজও খুঁজি হিমুকে ( ড. আমিনা খাতুন), ধর্মমঙ্গল: আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির সমীকরণ ( ড. বিপুল মণ্ডল ) প্রভৃতি। দুটো গ্রন্থ সমালোচনা: রোকেয়া মূল্যায়নে প্রাসঙ্গিক ভাবনা (ড. আফরোজা খাতুন) এবং ড. আম্বেদকর এবং রাহুল সাংকৃত্যায়নের দৃষ্টিতে ভারতবর্ষের সামাজিক ন্যায়বিচার ( সুপ্রিয়া বিশ্বাস)। আপনাদের মামুলি পাঠক অর্থাৎ আমার একটি নিবন্ধ ' উপদল বৃত্তান্ত : প্রসঙ্গ মুসলমান সমাজ' এতে স্থান পেয়েছে।
'উদার আকাশ' পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যাটিতে কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, বিশেষ রচনা, রাজনীতি, কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে স্মৃতিচারণা, গ্রন্থ-সমালোচনা, স্মরণ, বিশ্বসাহিত্য, নাট্য-পরিচয়, চৈতন্যচর্চা, উর্দু উপন্যাস নিয়ে আলোচনাসহ বিভিন্ন বিষয় স্থান পেয়েছে।
সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, এপার বাংলা ও ওপার বাংলার মানুষের মিলন প্রয়াসে বিগত ১৬ বছর নিয়মিত 'উদার আকাশ' পত্রিকাটি তিনি প্রকাশ করছেন। পাঠক সমাজকে সমৃদ্ধ করতে তিনি এই প্রয়াস নিয়েছেন।
এই সংখ্যায় দুই বাংলার পাঠক দরবারে দাগ কাটতে উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যায় কলম ধরেছেন মণিমালা বাগানী, দেবাশিস বিশ্বাস, পম্পা শীল, অনিকেত মহাপাত্র, হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশান্ত কুমার ঘোষ, প্রমথনাথ সিংহ রায়, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, ওয়ালে মহাম্মদ, শুভাশিষ গায়েন, নূপুর কাজী, রফিকুল হাসান, অশোক কুমার দত্ত, কবিরুল ইসলাম কঙ্ক, রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায়, জাকির হোসেন স্মৃতিজিৎ, সুব্রতা ঘোষ রায়, প্রবীর ঘোষ রায়, গোলাম রাশিদ, বাসুদেব দাস, লালমিয়া মোল্লা, শিবনাথ রায়, মোনালিসা রেহমান, নুরুল আমিন বিশ্বাস, ড. ইছামুদ্দিন সরকার, ড. সুমিতা চট্টোপাধ্যায়, রুবিয়া খাতুন, ফারুক আহমেদ ও মৌসুমী বিশ্বাস সহ আরও অনেকের লেখায় সমৃদ্ধ এবারের সংখ্যাটি। সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে দারুণ প্রচ্ছদ উপহার দিয়েছেন সারফুদ্দিন আহমেদ।
উদার আকাশ পত্রিকাটি কলেজ স্ট্রিটে পাতিরাম, দে'জ, ধ্যানবিন্দু, মল্লিক ব্রাদার্স ও অভিযান পাবলিশার্সে পাওয়া যাবে।
সম্পাদক : ফারুক আহমেদ
মূল্য: ৫০/-
কথা: 7003821298
রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় 'উদার আকাশ' পত্রিকার 'ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যা-১৪২৪' উদ্বোধন করেন । 'মানবজমিন' নামক কালজয়ী উপন্যাস, জনপ্রিয় 'ফটিক' চরিত্রের স্রষ্টা শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় উদার আকশ পত্রিকার বিষয় বৈচিত্রের পাশাপাশি সম্প্রীতি ও সৌহার্দের এই প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান। তিনি আরও বলেন, সমাজের বৌদ্ধিক বিকাশে সাহিত্য-সংস্কৃতির বেশি বেশি চর্চা খুবই জরুরি।
উদার আকাশ পত্রিকার তরুণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানান, চারদিকে ভেদাভেদ আর অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টির চক্রান্ত চলছে। এই সময় সাহিত্য-সংস্কৃতিই মানবিকতার জয়গান গাইতে উদ্বুদ্ধ করতে পারে আমাদের। তিনি আরও বলেন, এর আগে উদার আকশ পত্রিকার বিভিন্ন সংখ্যা এবং উদার আকাশ প্রকাশনের গ্রন্থ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, শঙ্খ ঘোষ, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়, মোস্তাক হোসেন, জয় গোস্বামী, দীপক ঘোষ, আবুল বাশার, সুনন্দ সান্যাল, নজরুল ইসলাম, প্রভৃতি বরেণ্য বাঙালি উদ্বোধন করেছেন। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন আমার অন্যতম প্রিয় কথাসাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে তিনি এপার বাংলা ও ওপার বাংলা এবং আমাদের রাজ্যের ভিন্ন ভিন্ন সম্প্রদায়ের মাঝে মিলন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এই শুভক্ষনে তিনি ঘোষণা করেন, 'উদার আকাশ' পত্রিকা ও প্রকাশনের উদ্যোগে আগামী ১৪ নভেম্বর ২০১৭ কলকাতার আইসিসিআর হলে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। উদার আআকাশ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে 'টাইমস বাংলা'-র তরুণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রোহিত, 'অয়োময়' পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রাশিদ, 'নতুন গতি' পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক অসিত ঘোষ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গবেষণাধর্মী মননশীল প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশই 'উদার আকাশ' পত্রিকার ট্র্যাডিশন। এ-সংখ্যাতেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল: উনিশ শতকের গীতিকবিতায় রোমান্টিকতা (ড. তাপস বসু), নৈতিকতা যেন আজ নিভু নিভু দীপশিখা (ড. মীরাতুন নাহার), প্রদোষে প্রাকৃতজন: ইতিহাস এখানে সাহিত্যের ফুল হয়ে ফোটে (ড. সাইফুল্লা), রবীন্দ্রনাথের নারীভাবনা: প্রসঙ্গ কালান্তর প্রবন্ধের 'নারী' (অনন্যা রায় পাটোয়ারী), মঙ্গল কাব্যে নিম্নবর্গের অবস্থান (নুরুল আমিন বিশ্বাস), নজরুল মানসে রাধাকৃষ্ণ প্রেম প্রসঙ্গ ( রাতুল গোস্বামী), চৈতন্য উত্তর যুগে বাংলার বৈষ্ণব সমাজে ধর্ম ও পাটবাড়ি (অমিত মণ্ডল), আজও খুঁজি হিমুকে ( ড. আমিনা খাতুন), ধর্মমঙ্গল: আর্য ও অনার্য সংস্কৃতির সমীকরণ ( ড. বিপুল মণ্ডল ) প্রভৃতি। দুটো গ্রন্থ সমালোচনা: রোকেয়া মূল্যায়নে প্রাসঙ্গিক ভাবনা (ড. আফরোজা খাতুন) এবং ড. আম্বেদকর এবং রাহুল সাংকৃত্যায়নের দৃষ্টিতে ভারতবর্ষের সামাজিক ন্যায়বিচার ( সুপ্রিয়া বিশ্বাস)। আপনাদের মামুলি পাঠক অর্থাৎ আমার একটি নিবন্ধ ' উপদল বৃত্তান্ত : প্রসঙ্গ মুসলমান সমাজ' এতে স্থান পেয়েছে।
'উদার আকাশ' পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যাটিতে কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, বিশেষ রচনা, রাজনীতি, কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে স্মৃতিচারণা, গ্রন্থ-সমালোচনা, স্মরণ, বিশ্বসাহিত্য, নাট্য-পরিচয়, চৈতন্যচর্চা, উর্দু উপন্যাস নিয়ে আলোচনাসহ বিভিন্ন বিষয় স্থান পেয়েছে।
সম্পাদক ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, এপার বাংলা ও ওপার বাংলার মানুষের মিলন প্রয়াসে বিগত ১৬ বছর নিয়মিত 'উদার আকাশ' পত্রিকাটি তিনি প্রকাশ করছেন। পাঠক সমাজকে সমৃদ্ধ করতে তিনি এই প্রয়াস নিয়েছেন।
এই সংখ্যায় দুই বাংলার পাঠক দরবারে দাগ কাটতে উদার আকাশ ঈদ-শারদ উৎসব সংখ্যায় কলম ধরেছেন মণিমালা বাগানী, দেবাশিস বিশ্বাস, পম্পা শীল, অনিকেত মহাপাত্র, হীরক বন্দ্যোপাধ্যায়, সুশান্ত কুমার ঘোষ, প্রমথনাথ সিংহ রায়, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, ওয়ালে মহাম্মদ, শুভাশিষ গায়েন, নূপুর কাজী, রফিকুল হাসান, অশোক কুমার দত্ত, কবিরুল ইসলাম কঙ্ক, রঘুনাথ চট্টোপাধ্যায়, জাকির হোসেন স্মৃতিজিৎ, সুব্রতা ঘোষ রায়, প্রবীর ঘোষ রায়, গোলাম রাশিদ, বাসুদেব দাস, লালমিয়া মোল্লা, শিবনাথ রায়, মোনালিসা রেহমান, নুরুল আমিন বিশ্বাস, ড. ইছামুদ্দিন সরকার, ড. সুমিতা চট্টোপাধ্যায়, রুবিয়া খাতুন, ফারুক আহমেদ ও মৌসুমী বিশ্বাস সহ আরও অনেকের লেখায় সমৃদ্ধ এবারের সংখ্যাটি। সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে দারুণ প্রচ্ছদ উপহার দিয়েছেন সারফুদ্দিন আহমেদ।
উদার আকাশ পত্রিকাটি কলেজ স্ট্রিটে পাতিরাম, দে'জ, ধ্যানবিন্দু, মল্লিক ব্রাদার্স ও অভিযান পাবলিশার্সে পাওয়া যাবে।
সম্পাদক : ফারুক আহমেদ
মূল্য: ৫০/-
কথা: 7003821298
অর্ণব মণ্ডল
ফানুস উড়ানোর ইতিহাস খুঁজে
তুমি জীবন দেখো নি.....!
দেখেছো-
ফানুস ওড়ানো সমারোহ,
পূর্ণিমার নিষ্ক্রিয় দূষণ
ক্যামেরা বন্দি আতস বাজীর উচ্ছাস
অ্যালকোহলের বিসার্জন!
ছুঁয়েছ-
ব্যাস্ত কি-বোর্ড
কামনার শীৎকার,
গুপ্ত কোনো নিরোধক রক্তের দাগ,
কাটাছেঁড়া মুক্তি!
বুঝেছ কি-
কেন ঈশ্বর?
কেন মহাভিনিষ্ক্রমণ?
কেন ফানুস?
শিখেছ-
অবৈধ আবদার
নীল তিমির আঁচড়,
বিস্তৃত সুখে 'চাহিদা'
মূল্যহীন প্রতিকার!
যদি বুঝে জানতে চাও জীবন...
শেখো তবে সাহিত্যের দর্পণে
'নিমিত্ত আধুনিকতা'
ফানুস উড়ানোর ইতিহাস খুঁজে ।
তুমি জীবন দেখো নি.....!
দেখেছো-
ফানুস ওড়ানো সমারোহ,
পূর্ণিমার নিষ্ক্রিয় দূষণ
ক্যামেরা বন্দি আতস বাজীর উচ্ছাস
অ্যালকোহলের বিসার্জন!
ছুঁয়েছ-
ব্যাস্ত কি-বোর্ড
কামনার শীৎকার,
গুপ্ত কোনো নিরোধক রক্তের দাগ,
কাটাছেঁড়া মুক্তি!
বুঝেছ কি-
কেন ঈশ্বর?
কেন মহাভিনিষ্ক্রমণ?
কেন ফানুস?
শিখেছ-
অবৈধ আবদার
নীল তিমির আঁচড়,
বিস্তৃত সুখে 'চাহিদা'
মূল্যহীন প্রতিকার!
যদি বুঝে জানতে চাও জীবন...
শেখো তবে সাহিত্যের দর্পণে
'নিমিত্ত আধুনিকতা'
ফানুস উড়ানোর ইতিহাস খুঁজে ।
গোপাল বাইন
সমুদ্রে হাঙর ছাড়া আর কিছু নেই
হাঙর শুশুকের মত নয় , মানুষের সাথে কিংবা
জলচর অন্য প্রাণীদের তার কোন
নিবিড় হার্দিক সম্পর্ক আজও গড়ে ওঠেনি l
হাঙর ধারাল দাঁতে নৃঃসংশতা আর পেটের
আগুনখিদে নিয়ে জীবন যাপন করে
হাঙরের খিদে আর নৃঃসংশতার বলি যারা হয়
তারা জানে সমুদ্রে হাঙর ছাড়া আর কিছু নেই
হাঙর শুশুকের মত নয় , মানুষের সাথে কিংবা
জলচর অন্য প্রাণীদের তার কোন
নিবিড় হার্দিক সম্পর্ক আজও গড়ে ওঠেনি l
হাঙর ধারাল দাঁতে নৃঃসংশতা আর পেটের
আগুনখিদে নিয়ে জীবন যাপন করে
হাঙরের খিদে আর নৃঃসংশতার বলি যারা হয়
তারা জানে সমুদ্রে হাঙর ছাড়া আর কিছু নেই
সাজিদা ইসলাম
কলকাতার প্রতি
কলকাতা,তুমি কি এই সেই কলকাতা
হয়তো যাকে আমি মনের গভীর থেকে দেখতে চেয়েছি,
জানতে চেয়েছি,উপলব্ধি করতে চেয়েছি,আসলে তুমি কি?
কেন তোমার এত মহিমা,এত গৌরব?
রাতের আঁধারে তুমি জোনাকির আলো,ঝি ঝি পোকার গান
দিনের আলোয় তুমি সোনালী রোদ্দুর,ব্যস্ত গানের সুর
প্রতিটি মুহূর্তে আলো ছড়াও ফুলকি হয়ে ।
তুমি হয়তো অনেক কিছু দিয়েছো কিন্তু পারোনি দিতে
সেই মহিমা যেখানে বসন্তের সকালে শোনা যায় কোকিলের গান
শোনা যায় বাতাসের মর্মর শব্দ, গাছেদের অব্যক্ত কথা ...
কলকাতা,তুমি কি এই সেই কলকাতা
হয়তো যাকে আমি মনের গভীর থেকে দেখতে চেয়েছি,
জানতে চেয়েছি,উপলব্ধি করতে চেয়েছি,আসলে তুমি কি?
কেন তোমার এত মহিমা,এত গৌরব?
রাতের আঁধারে তুমি জোনাকির আলো,ঝি ঝি পোকার গান
দিনের আলোয় তুমি সোনালী রোদ্দুর,ব্যস্ত গানের সুর
প্রতিটি মুহূর্তে আলো ছড়াও ফুলকি হয়ে ।
তুমি হয়তো অনেক কিছু দিয়েছো কিন্তু পারোনি দিতে
সেই মহিমা যেখানে বসন্তের সকালে শোনা যায় কোকিলের গান
শোনা যায় বাতাসের মর্মর শব্দ, গাছেদের অব্যক্ত কথা ...
ফিরোজ আলি (আবির )
রঙ
কার আলোয়
বুক মেলা তোর,
খেলিস, কার চোখে ফাঁকি...
আলোর আলো কত আওয়াজ দিলো
তবু,তোর অন্ধকারেই থাকি...।।
কার আলোয়
বুক মেলা তোর,
খেলিস, কার চোখে ফাঁকি...
আলোর আলো কত আওয়াজ দিলো
তবু,তোর অন্ধকারেই থাকি...।।
শীলা বিশ্বাস
প্রেরণা
ঠিক আঁকড়ে ধরা নয়
ঠিক সরিয়ে ফেলাও নয়
মধ্যিখানে রয়ে যাওয়া সম্পর্ককে
তোমরা কি নামে ডাকো?
বন্ধু অথবা প্রেমিক
এই দুই সম্পর্কের মাঝে
হাইফেন হয়ে ঝুলে থাকা
বন্ধুর মত প্রেমিক
অথবা প্রেমিকের মত বন্ধুকে
আমি প্রেরণা বলে ডাকি ।
ঠিক আঁকড়ে ধরা নয়
ঠিক সরিয়ে ফেলাও নয়
মধ্যিখানে রয়ে যাওয়া সম্পর্ককে
তোমরা কি নামে ডাকো?
বন্ধু অথবা প্রেমিক
এই দুই সম্পর্কের মাঝে
হাইফেন হয়ে ঝুলে থাকা
বন্ধুর মত প্রেমিক
অথবা প্রেমিকের মত বন্ধুকে
আমি প্রেরণা বলে ডাকি ।
মীর রাকেশ রৌশান
হৃদয়সুরের ডাক
জীবনের জৈবরস ফেলে এসেছি নিরোর বেহালায়।
ছুঁয়ে দেখো তোমার মধ্যে সুর বেঁচে আছে কি না।
সুর অন্তহীন পথ।
সঞ্চিতা দাস
অনিয়ম
কয়েক মুঠো নম্র বায়ুমণ্ডল টলতে টলতে চামচে এসে গেছে বলেই
কোমল নদী ডানা মেলে না,
কাছে এসে
অনিয়ম করে ফের দূরে যাওয়ার খেলায় মেতে ওঠে
চিরপরিচিত হয়েও ছদ্মবেশে আর কতদিন জলপটি দিতে পারে কেউ ..
তবে থাকল না
সেই বারান্দার ছায়াচোখ।
ইশারার লালচে কাচে লবণহ্রদের বাঁকে
মাতোয়ারা সুর সভ্যতার গোল মুখে
আলতো আদর দেখে নাম রাখে-
স্বপ্নের চশমা ।
এছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
স্ক্রিনে ভেসে ওঠে
কত অনুতপ্ত ভোর
না বলা অনেক কালের কথায়
শুভেচ্ছার গন্ধ বসতেই একঝাঁক বৃষ্টি এলো! বৃষ্টি আসে!
কয়েক মুঠো নম্র বায়ুমণ্ডল টলতে টলতে চামচে এসে গেছে বলেই
কোমল নদী ডানা মেলে না,
কাছে এসে
অনিয়ম করে ফের দূরে যাওয়ার খেলায় মেতে ওঠে
চিরপরিচিত হয়েও ছদ্মবেশে আর কতদিন জলপটি দিতে পারে কেউ ..
তবে থাকল না
সেই বারান্দার ছায়াচোখ।
ইশারার লালচে কাচে লবণহ্রদের বাঁকে
মাতোয়ারা সুর সভ্যতার গোল মুখে
আলতো আদর দেখে নাম রাখে-
স্বপ্নের চশমা ।
এছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট নেই।
স্ক্রিনে ভেসে ওঠে
কত অনুতপ্ত ভোর
না বলা অনেক কালের কথায়
শুভেচ্ছার গন্ধ বসতেই একঝাঁক বৃষ্টি এলো! বৃষ্টি আসে!
শুভ্র ব্যানার্জী
প্রবাসী
যে ঘর ছেড়েছে সেকি চেনে আসমান?
প্রবাসী নদীতে অবগাহনের স্মৃতি
নিকানো উঠোন, পুরনো মশারি, বাগান
ভুলে যায় গান,একান্ন সম্প্রীতি?
চেনা পথ লেখে অচেনা গ্রহের সন্ধান
স্বপ্ন-উড়ালে বিরহ ক্ষণস্থায়ী
ডেকে নেয় পথ বাতাসে মিশলে সন্ধা
সফল পাখীরা শততই পরিযায়ী!
যে ঘর ছেড়েছে সেকি চেনে আসমান?
প্রবাসী নদীতে অবগাহনের স্মৃতি
নিকানো উঠোন, পুরনো মশারি, বাগান
ভুলে যায় গান,একান্ন সম্প্রীতি?
চেনা পথ লেখে অচেনা গ্রহের সন্ধান
স্বপ্ন-উড়ালে বিরহ ক্ষণস্থায়ী
ডেকে নেয় পথ বাতাসে মিশলে সন্ধা
সফল পাখীরা শততই পরিযায়ী!
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
সৌরভ তালুকদার
যদি বৃষ্টি হতাম
যদি বৃষ্টি হতাম!
কি করতি বৃষ্টি হলে?
আমার দুঃখে জল হয়ে ঝড়তি?
আমার দু নয়ন বেয়ে?
না রে পাগলি...
যদি বৃষ্টি হতাম,
সাদা আকাশের ধবধবে মেঘ হতাম;
তবে তোকে হাত না লাগিয়েই ছুয়ে নিতাম,
তোর ওই গাল গুলোকে বসন্তের রঙে রাঙ্গিয়ে দিতাম,
তোর দুঃখ আমার গায়ে মেখে নিতাম।
পলাশের বনে যখন তুই প্রজাপতি কুড়োতে যেতি;
সেখানে আমি ঘাসের শিশির হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
ইস আর বলিস না,
ঘাসেরা রাগ করতো না বুঝি?
তারা রাগ করবে কেন?
তারাও যে প্রেমে কাতর,
তোর পাশে আমাকে দেখার জন্য কাতর,
তারা রাগ করবে না।
তাই বুঝি, তবে সেই প্রজাপতিরা
তারা যে তোর স্পশে হারিয়ে যেত
না রে পাগলি, সে ও যে ভালোবাসার প্রতিক,
আমি ভালোবাসা পাবার জন্যই তো বৃষ্টি হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
সাদা আকাশের মেঘ হতাম।
যদি বৃষ্টি হতাম!
কি করতি বৃষ্টি হলে?
আমার দুঃখে জল হয়ে ঝড়তি?
আমার দু নয়ন বেয়ে?
না রে পাগলি...
যদি বৃষ্টি হতাম,
সাদা আকাশের ধবধবে মেঘ হতাম;
তবে তোকে হাত না লাগিয়েই ছুয়ে নিতাম,
তোর ওই গাল গুলোকে বসন্তের রঙে রাঙ্গিয়ে দিতাম,
তোর দুঃখ আমার গায়ে মেখে নিতাম।
পলাশের বনে যখন তুই প্রজাপতি কুড়োতে যেতি;
সেখানে আমি ঘাসের শিশির হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
ইস আর বলিস না,
ঘাসেরা রাগ করতো না বুঝি?
তারা রাগ করবে কেন?
তারাও যে প্রেমে কাতর,
তোর পাশে আমাকে দেখার জন্য কাতর,
তারা রাগ করবে না।
তাই বুঝি, তবে সেই প্রজাপতিরা
তারা যে তোর স্পশে হারিয়ে যেত
না রে পাগলি, সে ও যে ভালোবাসার প্রতিক,
আমি ভালোবাসা পাবার জন্যই তো বৃষ্টি হতাম।
তোর পায়ের নুপুর হতাম।
সাদা আকাশের মেঘ হতাম।
সৌরভ ব্যাটবল
যখন দূর্বা লাল
আলটপকা স্বভাব সাথে সৌজন্যের অভাব
তার বাড়ির যত দূর্বা সবই লাল,
রাতের তারা গোনে, স্বাধীন রংচটা রিংটোনে,
বুকসেল্ফে জমায় রঙিন সাতসকাল।
মন ভরায় অক্সিজেনে, যখন দুঃখগুলো কেনে,
রোজ রাস্তা থেকে কুড়োয় ভালোবাসা,
ভেজা বাতাস নিয়ে খেলে, সে যে রঙ চেনেনা জলের,
তার পকেট ভর্তি ঘুর্ণি সর্বনাশা।
রোজ দেওয়ালে পেরেকে, নতুন ফুল ফোটাতে শেখে,
তার হাতের রেখায় লাট্টু অমিতাভ,
এই জংধরা পৃথিবীর যখন জল ঝরানোর জিগির
তার বৃষ্টি ভিজে মরচে হবার খোয়াব।
তাই বৃষ্টিদিনের শেষে যখন প্রত্যেকে অভ্যেসে
ভেজা বর্ষাতিতে গুছিয়ে নিচ্ছে কাল,
সব পাগলাটে ইচ্ছেরা, খোঁজে রাস্তা বাড়ি ফেরার,
শুধু দূর্বাগুলো একইরকম লাল।
আলটপকা স্বভাব সাথে সৌজন্যের অভাব
তার বাড়ির যত দূর্বা সবই লাল,
রাতের তারা গোনে, স্বাধীন রংচটা রিংটোনে,
বুকসেল্ফে জমায় রঙিন সাতসকাল।
মন ভরায় অক্সিজেনে, যখন দুঃখগুলো কেনে,
রোজ রাস্তা থেকে কুড়োয় ভালোবাসা,
ভেজা বাতাস নিয়ে খেলে, সে যে রঙ চেনেনা জলের,
তার পকেট ভর্তি ঘুর্ণি সর্বনাশা।
রোজ দেওয়ালে পেরেকে, নতুন ফুল ফোটাতে শেখে,
তার হাতের রেখায় লাট্টু অমিতাভ,
এই জংধরা পৃথিবীর যখন জল ঝরানোর জিগির
তার বৃষ্টি ভিজে মরচে হবার খোয়াব।
তাই বৃষ্টিদিনের শেষে যখন প্রত্যেকে অভ্যেসে
ভেজা বর্ষাতিতে গুছিয়ে নিচ্ছে কাল,
সব পাগলাটে ইচ্ছেরা, খোঁজে রাস্তা বাড়ি ফেরার,
শুধু দূর্বাগুলো একইরকম লাল।
সায়ন্তনী ধর
একটা অন্য মেয়ের গল্প
সত্যবাদী হতে চেয়েছিলাম আমি,নারীবাদী নয়,
সত্যিকথা বলতে চেয়েছিলাম, সব সময়ের জন্য
আমি যে স্বাদ পেয়েছিলাম সত্যের,
তোমরা যারা মিথ্যে কথা বল,
সাজিয়ে ফেল নিজের দুনিয়াটা মিথ্যে দিয়ে
তারা জানো, মিথ্যে বলাটা ঠিক কতটা কষ্টের,কতটা রং মাখিয়ে বললে মিথ্যেটা সত্যির মত লাগে,
আর তাইই আমি হয়ে চেয়েছিলাম সত্যবাদী।
এই সত্যি কথা বলার অভ্যেসটা মায়ের সাথেই থাকতে তৈরি হয়েছিল আমার,
মা বলত আমি শুনতাম,আর তৈরি করছিলাম নিজের সেই ক্ষমতা,
ঘরে-বাইরে আমাকে নিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে মা –কে,
হয়ত আমার একটা দিদি আছে বলেই আমাকে নিয়ে এত সংশয় ।।
খুব ঘটা করে লক্ষ্মী পুজো হত,আমাদের বাড়ীতে
কিন্তু মা ছাড়া আর সকলের উপরেই বোধ হয় এই লক্ষ্মী-ই ভারী হয়ে গেল,
তাই আমি মেয়ে জেনে বাবা মা-কে সত্যিটা সাহস করে বলতে পারল না,
আমি মরে যাওয়ার আগে মায়ের পেটেই মেরে দিল আমায়
বলল- আমি নাকি আগেই মরে গেছি, সত্যি বললে যে আরো একটা লক্ষ্মী এসে যেত
কিন্তু আমি বেঁচেছিলাম বিশ্বাস কর,আমি নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম মায়ের সাথেই
ওই ডাক্তারটা কুচি কুচি করে ফেলল আমায়,
কিন্তু সেদিন মা জানত সত্যিটা,আমি মরিনি ,
আমি মেয়েছিলাম তাই-ই আমাকে মরার আগেই মরতে হল
আজও আমি ওদের দেখি, সবাই ভালই আছে নিজের খুশীতে মিথ্যের চাদরে নিজেদের ঢেকে
শুধু মা ভাল নেই,
কিন্তু মা, আমি ভুলিনি তোমার শিক্ষা -
“যে সত্যির নিজেই নিজের রঙে রঙিন, ওর আলাদা করে কোন রঙ লাগে না
সত্যির স্বাদ শুধু তারাই জানে যারা এটাকে উপলব্ধি করে”
কিন্তু মা এই সত্যির জন্যই যে শেষ অবধি আমার আর শেষ রক্ষা হল না।
সত্যবাদী হতে চেয়েছিলাম আমি,নারীবাদী নয়,
সত্যিকথা বলতে চেয়েছিলাম, সব সময়ের জন্য
আমি যে স্বাদ পেয়েছিলাম সত্যের,
তোমরা যারা মিথ্যে কথা বল,
সাজিয়ে ফেল নিজের দুনিয়াটা মিথ্যে দিয়ে
তারা জানো, মিথ্যে বলাটা ঠিক কতটা কষ্টের,কতটা রং মাখিয়ে বললে মিথ্যেটা সত্যির মত লাগে,
আর তাইই আমি হয়ে চেয়েছিলাম সত্যবাদী।
এই সত্যি কথা বলার অভ্যেসটা মায়ের সাথেই থাকতে তৈরি হয়েছিল আমার,
মা বলত আমি শুনতাম,আর তৈরি করছিলাম নিজের সেই ক্ষমতা,
ঘরে-বাইরে আমাকে নিয়ে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে মা –কে,
হয়ত আমার একটা দিদি আছে বলেই আমাকে নিয়ে এত সংশয় ।।
খুব ঘটা করে লক্ষ্মী পুজো হত,আমাদের বাড়ীতে
কিন্তু মা ছাড়া আর সকলের উপরেই বোধ হয় এই লক্ষ্মী-ই ভারী হয়ে গেল,
তাই আমি মেয়ে জেনে বাবা মা-কে সত্যিটা সাহস করে বলতে পারল না,
আমি মরে যাওয়ার আগে মায়ের পেটেই মেরে দিল আমায়
বলল- আমি নাকি আগেই মরে গেছি, সত্যি বললে যে আরো একটা লক্ষ্মী এসে যেত
কিন্তু আমি বেঁচেছিলাম বিশ্বাস কর,আমি নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম মায়ের সাথেই
ওই ডাক্তারটা কুচি কুচি করে ফেলল আমায়,
কিন্তু সেদিন মা জানত সত্যিটা,আমি মরিনি ,
আমি মেয়েছিলাম তাই-ই আমাকে মরার আগেই মরতে হল
আজও আমি ওদের দেখি, সবাই ভালই আছে নিজের খুশীতে মিথ্যের চাদরে নিজেদের ঢেকে
শুধু মা ভাল নেই,
কিন্তু মা, আমি ভুলিনি তোমার শিক্ষা -
“যে সত্যির নিজেই নিজের রঙে রঙিন, ওর আলাদা করে কোন রঙ লাগে না
সত্যির স্বাদ শুধু তারাই জানে যারা এটাকে উপলব্ধি করে”
কিন্তু মা এই সত্যির জন্যই যে শেষ অবধি আমার আর শেষ রক্ষা হল না।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
পবন বর্মন
প্রদীপ
প্রদীপ তোমার বিয়ে দেবে
সিঁড়ি পেতে দেবে ভালোবাসা অবধি
ছুড়ে ফেলা আলো
কুড়িয়েছে কালো মিয়েটি
মিয়েটি আঙুল হয়ে উঠছে
সেই আঙুলে ধরতে চায়
তোমার স্বপ্ন
তোমার আলো
মেয়েটি
ভিতরের শব্দে
গেঁথে ফেলা বন্দুক তুলে রাখে
বালিশচাপা রাখে তার বয়স
তুমি
গলে যাওয়া রাস্তায় একটু হেল্প করো
প্রদীপ তোমার বিয়ে দেবে
সিঁড়ি পেতে দেবে ভালোবাসা অবধি
ছুড়ে ফেলা আলো
কুড়িয়েছে কালো মিয়েটি
মিয়েটি আঙুল হয়ে উঠছে
সেই আঙুলে ধরতে চায়
তোমার স্বপ্ন
তোমার আলো
মেয়েটি
ভিতরের শব্দে
গেঁথে ফেলা বন্দুক তুলে রাখে
বালিশচাপা রাখে তার বয়স
তুমি
গলে যাওয়া রাস্তায় একটু হেল্প করো
জৈদুল সেখ
ভাষাহীন ভালবাসা
শিশিরের সৌন্দর্যে সকলে স্নান করতে পারে না,
দুহাত ভরে মাখতে পারেনা তার স্নিগ্ধতা
সকলের মধ্যেই ভালবাসা থাকে
কিন্তু তার ভাষা হৃদয় থেকে অনূভব করতে কেটে যায় দীর্ঘ সময়!
তাই তো চাতকের মতো এখনো ভাবি
ঝর্ণার স্নিগ্ধতা পেতে যে গোলাপ পাঠিয়েছি
তার অপেক্ষা এখনো নিমফলের মতো শ্লেষপূর্ণ
হয়তো নিবেদন ছিল ঠিক কিন্তু ভাষা ছিল সুবাসহীন।
আসলে ভালোবাসার চেয়ে ভালো ভাষার বড়ই অভাব।
শিশিরের সৌন্দর্যে সকলে স্নান করতে পারে না,
দুহাত ভরে মাখতে পারেনা তার স্নিগ্ধতা
সকলের মধ্যেই ভালবাসা থাকে
কিন্তু তার ভাষা হৃদয় থেকে অনূভব করতে কেটে যায় দীর্ঘ সময়!
তাই তো চাতকের মতো এখনো ভাবি
ঝর্ণার স্নিগ্ধতা পেতে যে গোলাপ পাঠিয়েছি
তার অপেক্ষা এখনো নিমফলের মতো শ্লেষপূর্ণ
হয়তো নিবেদন ছিল ঠিক কিন্তু ভাষা ছিল সুবাসহীন।
আসলে ভালোবাসার চেয়ে ভালো ভাষার বড়ই অভাব।
দীপক আঢ্য
ক্ষত
গভীর ক্ষতকে এড়িয়ে চলি সযত্নে
বেঁধে রাখি, আরও আঘাতের ভয়ে
পাশ কাটাই। ধীরে সন্তর্পণে
ব্যস্ততার সময় কেমন বৃদ্ধ হয়ে ওঠে
মানসিক পঙ্গুত্ব গ্রাস করে স্থিরতা
কেবল বিস্বাদের সময় চলে অনবরত
বিকেল আসে,
ক্ষতরা টনটন করে - ব্যথা মাপি মনের গভীরে
ক্রমশ আমিই 'আঘাত' হয়ে উঠি...
জাস্টিফিকেশনের মাত্রা পার হয় দিগন্তের সীমা
ক্ষতর বাঁধন খুলি
গলাগলি করে আছে যন্ত্রণা আর ভালোবাসা!
গভীর ক্ষতকে এড়িয়ে চলি সযত্নে
বেঁধে রাখি, আরও আঘাতের ভয়ে
পাশ কাটাই। ধীরে সন্তর্পণে
ব্যস্ততার সময় কেমন বৃদ্ধ হয়ে ওঠে
মানসিক পঙ্গুত্ব গ্রাস করে স্থিরতা
কেবল বিস্বাদের সময় চলে অনবরত
বিকেল আসে,
ক্ষতরা টনটন করে - ব্যথা মাপি মনের গভীরে
ক্রমশ আমিই 'আঘাত' হয়ে উঠি...
জাস্টিফিকেশনের মাত্রা পার হয় দিগন্তের সীমা
ক্ষতর বাঁধন খুলি
গলাগলি করে আছে যন্ত্রণা আর ভালোবাসা!
লাকী খান
আহত
তোমার ভালবাসা না থাকলে
অস্তিত্ব-ই বা কী ?
যেন মরীচিকার দিকে এগিয়ে চলা l
চোরাবালি রাস্তাজুড়ে -
দ্যাখো তৃষ্ণা ভরা ভেজা শরীর
বালির সাথে লেপ্টে আছি আমি l
তোমার প্রেম বাতাসে মিশে গেছে
আবেগের দহনে বরফ হয়ে জমে গেছি l
বর্ষায় তুমি কদম ফুলের মত লাল
আবেগের দরজা ভেঙে দাও l
আমার ভীষণ মাথা যন্ত্রণা
কেন আমি বারবার প্রেমে পড়ি !
তারা যে আমাকে ঠকায়,
তোমার চোখের নাচন আমার মণ চুরি করেছে
একটা চোরের মতন l
খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াও
বৃষ্টি হয়ে ঝরবো তোমার উপর l
তোমার ভালবাসা না থাকলে
অস্তিত্ব-ই বা কী ?
যেন মরীচিকার দিকে এগিয়ে চলা l
চোরাবালি রাস্তাজুড়ে -
দ্যাখো তৃষ্ণা ভরা ভেজা শরীর
বালির সাথে লেপ্টে আছি আমি l
তোমার প্রেম বাতাসে মিশে গেছে
আবেগের দহনে বরফ হয়ে জমে গেছি l
বর্ষায় তুমি কদম ফুলের মত লাল
আবেগের দরজা ভেঙে দাও l
আমার ভীষণ মাথা যন্ত্রণা
কেন আমি বারবার প্রেমে পড়ি !
তারা যে আমাকে ঠকায়,
তোমার চোখের নাচন আমার মণ চুরি করেছে
একটা চোরের মতন l
খোলা আকাশের নিচে দাঁড়াও
বৃষ্টি হয়ে ঝরবো তোমার উপর l
সোহেল রানা (ফকির)
সংবাদ
সবুজ গিলে নীল পৃথিবী
সান্ত্বনা দেয় রাতের তারা ।
আকাশ ঘিরে মেঘ সারথি
অন্ধরাতে জীবন মরা ।
বৃষ্টি হলেই জাগে সত্ত্বা
সূর্য ডাকে সবুজ ভোর ।
গিলতে থাকে ইচ্ছে হত্যা
তোমার আমার গায়ের জোর ।
জ্যোস্না হাসির চেতন উল্লাস
মায়াবী রাত নিদ প্রহরী ।
প্রবাহমান মৃদু বাতাস
প্রেমের শোকের কোজাগরী ।
উপড়ে নিবে ধরণীর কোল
ছুঁড়ে দিবে ক্রুর আর্তনাদ ।
সৃষ্টিকর্তার শ্বাশত বোল
খেয়াল খুশির হলুদ সংবাদ ।
সবুজ গিলে নীল পৃথিবী
সান্ত্বনা দেয় রাতের তারা ।
আকাশ ঘিরে মেঘ সারথি
অন্ধরাতে জীবন মরা ।
বৃষ্টি হলেই জাগে সত্ত্বা
সূর্য ডাকে সবুজ ভোর ।
গিলতে থাকে ইচ্ছে হত্যা
তোমার আমার গায়ের জোর ।
জ্যোস্না হাসির চেতন উল্লাস
মায়াবী রাত নিদ প্রহরী ।
প্রবাহমান মৃদু বাতাস
প্রেমের শোকের কোজাগরী ।
উপড়ে নিবে ধরণীর কোল
ছুঁড়ে দিবে ক্রুর আর্তনাদ ।
সৃষ্টিকর্তার শ্বাশত বোল
খেয়াল খুশির হলুদ সংবাদ ।
মুন চক্রবর্তী
বারবার ফিরাও যদি
নাভি গর্ভ হতে ফিরাও যদি অস্থিত্বের সংকটে
একটু একটু করে প্রতিজ্ঞার লেলিহান তুলি ।
সিঁদুরের আঁড়ালে বৈদিক মন্ত্রের ছাই উড়িয়ে শ্মশানে মাতৃ আরাধনা ।
নাভি গর্ভ হতে ফিরে তাকাই সূর্য সম তেজে
অস্থিত্ব রহিত মাতৃ রূপেন সংস্থিতা ।
বড় বেশি প্রলোভনের প্রয়োলব্ধতা খুঁজে
নিজেদের চরম বিপর্যয়কে ধর্মের নামাবলতী জড়িয়ে
উচ্চারিত মন্ত্রের একাংশে আত্ম প্রবঞ্চনা বহুরূপী সমাজ ব্যবস্থায়
বীরঙ্গনা নাভি গর্ভ হতে প্রখর দীপ্তি গন্ডুষে পান করে ।
প্রকৃতির অপূর্ব বেলাভূমিতে আলিঙ্গনে ফিরে জননী রূপে
ভূমিষ্ট জননী থেকে ।
নাভি গর্ভ হতে ফিরাও যদি অস্থিত্বের সংকটে
একটু একটু করে প্রতিজ্ঞার লেলিহান তুলি ।
সিঁদুরের আঁড়ালে বৈদিক মন্ত্রের ছাই উড়িয়ে শ্মশানে মাতৃ আরাধনা ।
নাভি গর্ভ হতে ফিরে তাকাই সূর্য সম তেজে
অস্থিত্ব রহিত মাতৃ রূপেন সংস্থিতা ।
বড় বেশি প্রলোভনের প্রয়োলব্ধতা খুঁজে
নিজেদের চরম বিপর্যয়কে ধর্মের নামাবলতী জড়িয়ে
উচ্চারিত মন্ত্রের একাংশে আত্ম প্রবঞ্চনা বহুরূপী সমাজ ব্যবস্থায়
বীরঙ্গনা নাভি গর্ভ হতে প্রখর দীপ্তি গন্ডুষে পান করে ।
প্রকৃতির অপূর্ব বেলাভূমিতে আলিঙ্গনে ফিরে জননী রূপে
ভূমিষ্ট জননী থেকে ।
জয়ন্ত দত্ত
চোর পুলিশখেলা
কাতারে কাতারে লোক চলেছে।চোর দেখতে।
চোর ধরা পড়েছে পাড়ায়।আমিও দৌড় লাগাই।কৌতুহল নিয়ে পৌঁছে যাই ভিড়ের কাছাকাছি...
সমবেত চড়, ঘুসি,সিগারেট ছ্যাকা--থ্যতলানো নাক মুখ ,রক্ত গড়িয়ে রাস্তায়।চারিদিকে বিচরণশীল উৎসুক ভারিক্কী মুখ!
ভাবতে থাকি ---ঐ থ্যতলানো মুখের চোয়ানো
রক্তের অবিকল ---ফাইল চুরি কথা,আমানত চুরি ব্যথা ---আরও আরও চুরি---পুকুর চুরি তক!!
কাতারে কাতারে লোক চলেছে।চোর দেখতে।
চোর ধরা পড়েছে পাড়ায়।আমিও দৌড় লাগাই।কৌতুহল নিয়ে পৌঁছে যাই ভিড়ের কাছাকাছি...
সমবেত চড়, ঘুসি,সিগারেট ছ্যাকা--থ্যতলানো নাক মুখ ,রক্ত গড়িয়ে রাস্তায়।চারিদিকে বিচরণশীল উৎসুক ভারিক্কী মুখ!
ভাবতে থাকি ---ঐ থ্যতলানো মুখের চোয়ানো
রক্তের অবিকল ---ফাইল চুরি কথা,আমানত চুরি ব্যথা ---আরও আরও চুরি---পুকুর চুরি তক!!
কাকলী দাস ঘোষ
আকুতি
ধর কোনদিন যদি
ভোর সীমানায় পাখীর গানে গানে ,
হারিয়ে খুঁজি তোমার চোখে পদ্মপুকুর শিশির ,
তুমি কী আমায় ফিরিয়ে দেবে বন্ধু ?
মিনতি শোন দিও না ফিরিয়ে
সাগর কুমারী আমি ,
আমার চোখেই ফিরবে তোমার
ভালবাসার নীর l
ধর কোনদিন যদি
ভোর সীমানায় পাখীর গানে গানে ,
হারিয়ে খুঁজি তোমার চোখে পদ্মপুকুর শিশির ,
তুমি কী আমায় ফিরিয়ে দেবে বন্ধু ?
মিনতি শোন দিও না ফিরিয়ে
সাগর কুমারী আমি ,
আমার চোখেই ফিরবে তোমার
ভালবাসার নীর l
০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
হৃদিগান
তোমার কাছে সকালের রোদ
বিকেলের গোধূলি,
তোমার কাছে জমিয়ে রাখা
মনের বাঁধন খুলি ।
তোমার কাছে সন্ধ্যেতারা
তোমার কাছে আলো,
তোমার কাছে চাঁদ সূর্য
আকাশপ্রদীপ জ্বালো ।
তোমার কাছে আয়নামহল
নিজের প্রতিচ্ছবি,
তোমার কাছে পদ্য লেখা
পংক্তিগুলো সবই ।
তোমার কাছে রাগ-বিরাগ
তোমার কাছে গান,
তোমার কাছে প্রিয় কথা
গোপন অভিমান ।
তোমার কাছে হারিয়ে যাওয়া
এবং ফিরে আসা,
তোমার কাছে রাখা আছে
হৃদয় ভালোবাসা ।
তোমার কাছে সকালের রোদ
বিকেলের গোধূলি,
তোমার কাছে জমিয়ে রাখা
মনের বাঁধন খুলি ।
তোমার কাছে সন্ধ্যেতারা
তোমার কাছে আলো,
তোমার কাছে চাঁদ সূর্য
আকাশপ্রদীপ জ্বালো ।
তোমার কাছে আয়নামহল
নিজের প্রতিচ্ছবি,
তোমার কাছে পদ্য লেখা
পংক্তিগুলো সবই ।
তোমার কাছে রাগ-বিরাগ
তোমার কাছে গান,
তোমার কাছে প্রিয় কথা
গোপন অভিমান ।
তোমার কাছে হারিয়ে যাওয়া
এবং ফিরে আসা,
তোমার কাছে রাখা আছে
হৃদয় ভালোবাসা ।
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক
পাখপাখালি
একটি পাখি ভীষণরকম
দুষ্টুমিতে পাকা,
সকাল বিকেল কিচিরমিচির
যায় না চেপে রাখা ।
আরেক পাখি বনউদাসি
উদাস হয়েই থাকে,
সবুজপাতার ডালের ভিতর
মনকে ভরে রাখে ।
একটি পাখি বাঁধনছেঁড়া
এদেশ ওদেশ ঘোরে,
রূপকথাদের গল্পগুলো
সাজায় তেপান্তরে ।
আরেক পাখি বেজায় রকম
ঘরকুনো এক বাবু,
উড়ান ডানার স্বপ্ন ছেড়ে
অলস ঘুমে কাবু ।
একটি পাখি দারুণ স্মার্ট
কথা চোখে-মুখে,
রাগ-বিরাগের ভুবনডাঙায়
থাকে দারুণ সুখে ।
আরেক পাখি ছন্নছাড়া
নেইকো কোনো রাগ,
সুযোগ পেলেই এদিক ওদিক
হঠাৎ ভাগম-ভাগ ।
একটি পাখি আরেক পাখি
নানা পাখির খেলা,
আকাশ জুড়ে রঙিন যত
পাখপাখালির মেলা ।
একটি পাখি ভীষণরকম
দুষ্টুমিতে পাকা,
সকাল বিকেল কিচিরমিচির
যায় না চেপে রাখা ।
আরেক পাখি বনউদাসি
উদাস হয়েই থাকে,
সবুজপাতার ডালের ভিতর
মনকে ভরে রাখে ।
একটি পাখি বাঁধনছেঁড়া
এদেশ ওদেশ ঘোরে,
রূপকথাদের গল্পগুলো
সাজায় তেপান্তরে ।
আরেক পাখি বেজায় রকম
ঘরকুনো এক বাবু,
উড়ান ডানার স্বপ্ন ছেড়ে
অলস ঘুমে কাবু ।
একটি পাখি দারুণ স্মার্ট
কথা চোখে-মুখে,
রাগ-বিরাগের ভুবনডাঙায়
থাকে দারুণ সুখে ।
আরেক পাখি ছন্নছাড়া
নেইকো কোনো রাগ,
সুযোগ পেলেই এদিক ওদিক
হঠাৎ ভাগম-ভাগ ।
একটি পাখি আরেক পাখি
নানা পাখির খেলা,
আকাশ জুড়ে রঙিন যত
পাখপাখালির মেলা ।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)