মা-বাবা আল্লাদ
আট নং তিতকুমার আগারপাড়া চৌরাস্তার পাশে একটা মাটির দেওয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি এক দরিদ্র কৃষকের ঘর।ঐ দরিদ্র কৃষকের নাম আরফাত সেখ এবং তানার স্ত্রী নাজিরা সেখ দুজনে সুখচ্ছান্দে বসবাস করে।এখন তারা ছয় সন্তানের বাবা-মা।তাদের সন্তানেরা খুব অভাব অনাটনের মধ্যে দিয়ে বতর্মানে তারা অনেক বড়ো হয়েছে।তাদের বড়ো ছেলের নাম তাহের এবং ছোটো ছেলের নাম আলংগীর।একে একে তিন ছেলে ও একটি মাত্র কন্যাকে বিবাহ দিয়েছে।তানার স্ত্রী প্রতিদিন নামাজ পড়েন।ভোরে নামাজ সেরে সকালবেলায় সংস্বারের যাবতীয় কাজ সেরে দুপুরে রান্না খাওয়ার পরে একটু বিশ্রাম ও নেবার প্রয়োজন মনে করেন না,আবার উঠে দেখি সংস্বারের কাজ করে। কোথায় গরু দেখভাল করা,কোথায় ছাগল দেখভাল করা,কোথায় নাতি-নাতনীদের সাথে গল্পে মেতে ওঠা।কোথায় মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধলে ঝগড়া থামানো -----এভাবেই কেটে চলে তানার প্রতিদিনের দৈনন্দিন জীবন।
এত পরিশ্রম করার পরও ঐ মানুষটাকে কোনোদিন ক্লান্ত ভাব দেখলাম না এবং জিজ্ঞাসা করলে বলেন উপর আল্লা আমাকে সবসময় সুস্থ রেখেছেন এবং ক্লান্তভাব আমাকে মনে করিয়ে দেননা তাই মনে হয় না।আমি এখন প্রতিদিন রাতে আমার মা-বাবার সাথে এক সঙ্গে বসে ভাত খাই।সকাল-দুপুরে একসঙ্গে বসে খাওয়া খুব একটা হয় না।কারণ আব্বা ব্যবসার কাজে সকালে বেরিয়ে যায়।আমি টিউশান যায় ইস্কুলে যায় তাই আর খাওয়া হয়ে ওঠে না।।
মা-বাবা যে কেমন হয় তা আমার বাবা-মাকে দেখলে,একটু হলেও অনুভব করতে পারি।আমার কাছে বাবা-মা মানে বটবৃক্ষের ছায়া।আমাদেরকে জন্মের দিন থেকে শুরু করে যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে লেখাপড়া শিখিয়ে বড়ো মানুষের মতো মানুষ করেছেন।এই ঋণ সাতবার জন্ম নিলেও শোধ করতে পারবো না।কথায় আছে মায়ের একফোটা দুধের ঋণ শোধ করা যাবে না--এটাই সর্বশ্রেষ্ঠ সত্য কথা।
কিন্তু ভাগগের কি পরিহাস,বিধীর কি বিধান সেই মমতাময়ী মা-বাবাকে সবসময় দেখতে পায় ফুটপাতে,
বৃদ্ধাশ্রমে,সংস্বার সংস্বার করে পাগল হয়ে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে।এই দৃশ্য যখন চোখে দেখি কার কি অনূভুতি হয় জানিনা,তবে আমার চোখ থেকে পানি ঝরে।তাই সবাইকে বলতে চায় মা-বাবাকে অসহায় ভেবে আজ যে রাস্তায় বের করে দিচ্ছো,বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছো কাল তুমিও তো একজন অসহায় হয়ে যাবে,আর তখন যদি তোমার ছেলে বউ এমন নিকৃষ্ট কাজ করে!তখন তোমার মাঝে কতটা যন্ত্রণা-কষ্ট হবে তা একবার হলেও চিন্তা করো।নইলে ঐ দৃশ্য তোমাকে ও দেখতে হবে।আজ যে ব্যবহার তোমার মা-বাবার সাথে করছো।সেদিন ঐ চরমপরিস্থিতির জন্য দ্বায়ি কে তা নিশ্চিত বুঝতে পারছো।
সর্বশেষে আমার বার্তাটা এটাই যে বাবা মার সেবা যত্ন মানে জান্নাত বা স্বর্গকে খুঁজে পাওয়া।কিন্তু কি দূর্ভাগ্য আমাদের যেটা করলে আল্লা,ঈশ্বর বা খোদা খুসি হন এবং সেটা না করে অবহেলা আর অসহায় ভেবে তাদেরকে আমরা পুত্রের স্নেহ থেকে বঞ্চিত করি।শুধু তাই নয় তাদেরকে নির্মম ভাবে দুঃখ -কষ্টের মাঝে ভাসিয়ে দি।যারা সারাজীবন ভেবে এসছে আমার ছেলে মেয়ে বউ হাসি-খুসিতে থাকুক,আর আজ আমরা তাদের সাথে কি ব্যবহার করছি তা আমরা নিজেরাই জানি----তাই এই প্রশ্নের উওর তোমাদের কাছ থেকে জানবো।
একটা কথা মনে রেখো সময় কোনোদিন কারোর জন্য থেমে থাকে না কিন্তু সময় এখনো তোমার শেষ হয়ে যায়নি।সময়ের সাথে সাথে নিজেকে পরিবর্তন করো।যেদিন নিজের মধ্যে এই পরিবর্তন আনতে পারবে সেদিন পৃথিবীর সব সুখ আনন্দ অনূভব করতে পারবে।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much