২৫ ডিসেম্বর ২০২০

মাহমুদু হাসান গালিব

 


মেঘবলাকার ইতিকথা


মেয়েটি মেঘ হতে চেয়েছিল,

ডিঙি নৌকোর ছেঁড়া মাস্তুলে আঁকতে চেয়েছিল মদিরতার আমেজ,

বলাকার সাদা ডানায় ভেসে;

 এক আকাশ লিখতে চেয়েছিল নভোনীলের বুকে

খেয়ালখাতার আস্তিনে লুকোতে চেয়েছিল;

কিছু উদ্দাম যাতনাপুঞ্জ....

যা স্থবির করে বারবার,মুছে দেয় কল্পলোক;

রাতের বিষণ্ণতাঘেরা নির্মোহ কেকাধ্বনির মতো।

কোনো একদিন,ঝাপসা কুয়াসার চাদরে,

দেখা গিয়েছিল রামধনুর রঙমিলান্তি,

সাময়িক;হয়তো বা অলিক

অথবা কোনো আগামী রূঢ়বাস্তবের আগাম খতিয়ান

বোঝেনি; মগ্নঘোরাশ্রিতা শ্রান্ত দিগাঙ্গনা,

জোনাকির আনম্র আলোয় দেখেছিল

বিধাতাকে একটু একটু চুঁইয়ে পড়তে;

কালের শিখিপাখা রঙ বদলেছিল ক্ষণিকেই।

মেয়েটি আর উড়ে বেড়ায় না,

আঁধারিয়া বাতাস ঢেকে শুয়ে থাকে গুটিসুটি,

গম্ভীর স্বরে গোঙায় যন্ত্রণায়; বিশ্বাসভঙ্গের ভাঙাচাবি

আলগোছে ঝোলে পিঠের ওপর,

জঙধরা তালাটায় আর মোচড় দেওয়া হয় না,

খুলে যায় না কোনো আশ্চর্য গুহার জাদুদরওয়াজা

যেখানে থরে থরে রূপকথা লুকিয়ে থাকে।

মেয়েটি এখন বর্ষা হয়েছে,

কারণ-অকারণে ঝরে পড়ে সাহারার বুকে,

প্লাবন নামায়;তছনছ করে যাপনচিত্র

একূলের ধ্বংসায়ণ লেখে ওকূলের সৃষ্টিসূত্র,

ভাঙার মাঝে গড়ে ওঠার এক নৈসর্গিক পিছুটান 

তবু কোনো একদিন গুরুগুরু স্বরে;

কিছু ব্যথা নেমে আসে সময়ের বুক চিরে,

বিদীর্ণ করে শুষ্কহৃদয় শোনায় বিরহিয়া অঙ্গীকার,

প্রলয় শেষে;বৃষ্টিস্নাত ছাতিমফুল রোদ মেখে হাসে

সময় চলে আবার সময়ের রাস্তায়;

শুধু এক মেঘদূতী হারায় বিস্মৃতির অন্তরালে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much