সতী দাহ
উত্তুরে হাওয়া তখনো যৌবন ছোঁয়নি
তবু লাল বেনারশি আর সিঁথীতে সিঁদুর পড়ে
চলে যেতে হলো অচেনা সংসারে।
যৌবনের কড়া নাড়তেই, সাদাথান আর ঘটি ভর্তি
জলের ধারায় ধুয়ে দিলো সব সিঁদুর।
তারপর প্রস্তুতি নিতে হলো সহপমরণের।
ধর্মের নামে চলে নারী হত্যার মহাজজ্ঞ
সতীত্ব রক্ষার নামে জীবন্ত তুলে দেয় জলন্ত চিতায়। মানুষ তো নই ছিলাম যেন পুরুহিত তন্ত্রের দাসী
ওরা মানুষ হওয়ার আগেই পুরুষ হয়ে ওঠে, ধার্মিক হওয়ার আগে পুরুহিত সাজে।
নিষ্ঠুর-নির্মম প্রথার বলি হতে সাজালো বিধবাকে লালশাড়ি আর সিঁদুর পড়িয়ে টানতে টানতে নিয়ে গেলো গঙ্গার পাড়ে,
যেখানে সাজানো চিতায় স্বামীর মরদেহ,
ওখানে ছুঁড়ে ফেলা হবে লেলিহান আগুনের কুন্ডে
জীবন্ত শরীর।
তখনই তোমাকে খুব মনে পড়ছিলো মা, আর
চিৎকার করে ডাকছিলাম তোমায়,
মা দেখো, তোমার আদরের মেয়ে বিয়ে নামক দাসত্বের বলি, জীবন্ত পুড়ছি আমি আর আমার নারীত্ব।
বাচঁতে বড় ইচ্ছে করে মা,
এখনো হয়নি যাওয়া মল্লিকা বনে, মেঘচুলে জড়াইনি শিউলির মালা।
তুমি শুনবে না জানি, পৌঁছুবেনা অস্ফুট স্বর,
তবু তোমার নামের জপ করি।
হয়তো,সেদিন ঈশ্বরের চোখে ছিলো জল।
তাইতো নির্মম-নির্দয় আর নিষ্ঠুর প্রথার অবসান করতে ঈশ্বর পাঠালেন এক মানব দূত।
নারীর আর্তনাদ তাকে ব্যথিত করে তুলেছিলো,
এই জঘন্য কুপ্রথার বিরুদ্ধে বিল্পব করে বন্ধ করেছিলেন সতীদাহ,
দেখালেন আলোকিত সমাজের দিশা,
এনে দিলেন বেঁচে থাকার অধিকার।
তাইতো হে রাজা রামমোহন তুমি আজও নারীত্বের অলঙ্কার।
অলঙ্করণ : সানি সরকার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much