০৪ এপ্রিল ২০২১

আসমা মতিন (লণ্ডন)




হরিৎ প্রান্তরের মেয়ে



ফুল ফসলের লীলাময়ী শ্যমল নিকেতনে 

নির্জন পথ ধরে মেয়ে টি সহস্র বার হেঁটেছে 

ভ্রমণ করেছে সহস্র মনের গহীনে 

শ্রম ঘাম ভোজী সবুজ প্রান্তরে থোকা থোকা ব্যথা 

ব্যথার স্বাদ ও চেকে দেখার চেষ্টা করতো সে

রস ভরা আম কাঁঠালের বনবাদরে চরে বেড়াতো সে অকুণ্ঠে পান করেছে সকল ফলের রস।বহুজাতি বহু ভাষাভাষী মানুষ মানুষের কাঁচাঘর,পাকাঘর শ্রেনী ভেদও একই চত্বরে তবে তার কাছে মানবপ্রেমই জয়ী হতো।

আজানের মধুর সুর নাগধূপের ধোঁয়া পাহাড়ী ভ্রমরের গুনঞ্জন পাখিদের শিস দেয়া ঘুম ভাঙানো ভোর।

পথে যেতে যেতে দুটিপাতা একটি কুঁড়ি, কৃষ্ণচুড়ার রঙ  চা এর গাছ গোলাপ পাপড়ির সাথে অনেক কথা বলা হতো তার 

নবীণ স্রোতস্রিনী  প্রাকৃতির উদ্যানে মিলেমিশে একাকার তার অনুভূতি চাশ্রমিকের অবিরাম শ্রম,রমণীরা  পায়ে খাড়ু গলায় হাসুলী বাজুবন্ধ বাহুতে, সারাটা দিন তাদের পাতা তুলার দৃশ্য এ নিয়ে ছিলো তার গভীর ভাবনা 

এমনি এক নৈসর্গিক লীলভূমির নাগরিকগণ হাসিকান্নায় ব্যস্ত জনপদে

মেয়ে তার আপনারে খোঁজে পাওয়া মনে মনে কথা বলা।

বাংলাবাড়ির বারান্দার দুই পাশে শিউলি করবীর শাখায়  প্রভাতী শিহরণ দেখার আনন্দ পুরোটা ই সে লুটেছে

বাগানে রাত ঝরাতো ফুল ফুলের মালায় ভোরের বারান্দায়  শৈশব সাজিয়ে সে রাখতো।

কৃষ্ণচুড়া গন্ধরাজ কলাবতী আরও কত কি ফুলের সৌরভ এগুলো বাগানে পরস্পরের আত্মীয় হয়েই ছিলো ।

দুপুর যখন পশ্চিমে একটু হেলান দিতো 

 শীতকালের উষ্ণ রোদ ফুল বাগানে 

 ফরিং ধরার হৈচৈ পড়তো খেলার সাথিরা

সেই  শ্যামলিমা মায়া বিথীকা 

আর কোথাও নেই তুলনা।

হটাৎ একদিন নিয়মের কাছে হার মেনে নিতে হলো, মালতিলতার ফটকে জড় হলেন সকল, সকল হৃদয়ে বেদনা বিধুর  অথচ বিদায় জানাতে হবেই 

সময়ের স্রোতে  প্রবাহিত হলো ভাটির দিকে 

হে শৈশব কোনও এক রাজকুমারের ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বিদায় হে শৈশব তোমাকে বিদায়। 

চাপাতার ঘ্রাণ গন্ধরাজ ফুল হে কৃষ্ণচূড়া তোমাকে বিদায়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much