২৫ নভেম্বর ২০২০

শান্তিব্রত চট্টোপাধ্যায়



বারোটা বেজে যায় 

ঘড়িতে এখন বেলা বারোটা প্রায় 

ধর্মতলা স্ট্রীট পেরোতে পেরোতে

যন্ত্র এবং জন্তুর চিল চিৎকার।

ট্রাম গুমটির কোণ ঘেঁষে  

দুটো জীবন্ত লাশ বাড়িয়ে চলেছে   

পাওনা দেনার তুমুল উত্তেজনা।  

শহিদ মিনারের দিক থেকে

তীরবেগে উড়ে আসা প্রায় দুষ্প্রাপ্য  

এক দাঁড়কাকের মুখ থেকে 

হঠাৎ খসে যায় টুকরো গতকাল।   

পুলিশবুথের ঠিক পেছন কোণ ঘেঁষে   

মধুমেহ জর্জরিত এক মুতুবাবুর      

অদ্ভুত পোজে চেন খুলতে খুলতে  

সে কি চলকে ওঠা তৃপ্তির হাসি !  


নষ্ট জলের নর্দমায় গড়িয়ে ঘড়ির কাঁটা   

গুটি গুটি পায়ে রাত বারোটার দিকে;    

চৌরঙ্গী পার্কস্ট্রীট জীবনদীপের চক্রব্যুহে 

অনবরত ঠোকাঠুকি খেতে খেতে 

এইবার নিশ্চিন্তে চুকে বুকে যাবে  

ক্লান্ত দিনলিপির ধূসরিত কোলাজ।

দুপায়ের ফাঁকে লবণাক্ত কোলভাগ  

চিড়বিড়িয়ে ছটফট করে উঠে    

খুঁজতে থাকে নখের আয়েশি নখরা!

মেচেতা ভরা পালিশে তা দিয়ে    

হেসে ওঠে খসখসে শিফন কিন্নরী।  

শেষ হর্ণের তালে তালমিলিয়ে উছলে ওঠে    

চিরচিহ্নিত বিস্ময়বোধক অব্যয়েরা।  

সোনালী তরলের মৌতাতে গা ভাসিয়ে      

বীরপুঙ্গবের বোতাম খোলা পৌরুষ 

উন্মত্ত জন্তুর আক্রোশে ঝাঁপিয়ে    

মাত্রাহীন সন্ত্রাসে ডুবে যেতে থাকে      

কল্লোলিনীর গভীর উন্মুক্ত গহ্বরে।  


এভাবেই কি তবে বারোটা বেজে যায়!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much