উপন্যাস
টানাপোড়েন১০৭
ভ্যাকসিন পর্ব
মমতা রায় চৌধুরী
রেখা কলম থামালো আর মনে মনে বলল
'যাক বাবা ,সম্পাদকের কথা রাখতে
পেরেছি ।অবশেষে উপন্যাসের আজকের পর্ব টা লিখে শেষ করা গেল ।ক'টা বাজে দেখি তো? তাড়াতাড়ি টাইম টা দেখল ওরে বাপরে, রাত্রি 12:30। এখনই তো পাঠাতে হবে লেখাটা। এ বাবা ফোনটাই খুলে দেখা হয়নি। ওরে বাপরে কতগুলো মেসেজ এসেছে। লাস্ট মেসেজ এসেছে 'আমি আপনার জন্য ওয়েট করছি ।তাড়াতাড়ি লেখা পাঠান।'
রেখা মনে মনে ভাবল ছি: ছি: ছি: একবারও দেখা হয়নি ফোনটা খুলে। রেসপন্স করে নি। ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে।'
রেখা ভাবল' না, আগে উপন্যাসের আজকের পর্ব টা পাঠাই তারপর ক্ষমা চেয়ে নেব।'
গল্পটা পাঠিয়ে দিল।
সঙ্গে সঙ্গে মেসেজ আসলো 'থ্যাংক ইউ সো মাচ 💕'
রেখা মেসেজ পাঠালো "খুবই দুঃখিত।'
আবার মেসেজ আসলো' আমার মেসেজের জন্য?'
রেখা মেসেজ পাঠাল' আরে বাবা, না ,না,
না ।এসব বলে লজ্জা দেবেন না।
সম্পাদক লিখলেন 'তাহলে?'
রেখা লিখল'আমার লেখা পাঠাতে দেরি হলো ,আপনাকে অনেকক্ষণ ওয়েট করতে হলো এজন্য।'
তিনি লিখলেন' ভালো লেখার জন্য হাজার বছর ধরে ওয়েট করা যেতে পারে।'
রেখা লিখল "আর লজ্জা দেবেন না। সত্যিই খুবই দুঃখিত।'
তিনি লিখলেন 'এভাবে বলবেন না তো কষ্ট লাগে।'
রেখা লিখল' ঠিক আছে, আপনাকে থ্যাঙ্কস জানাচ্ছি।"
তিনি লিখলেন' আমার জন্য তো আপনাকে কতটা সময় নষ্ট করতে হচ্ছে বলুন ?খুব খাটাচ্ছি আপনাকে।'
রেখা লিখল 'এইটার জন্য আমি যে ভিতরে ভিতরে কতটা সমৃদ্ধ হচ্ছি এটা জানেন না?'
সম্পাদক লিখলেন ', না ম্যাডাম আপনাকে আর ডিস্টার্ব করবো না ।শুভরাত্রি ।কালকের জন্য আপনাকে তো আবার রেডি করতে হবে। একটু না ঘুমুলে হবে না ,ঘুমান।'
রেখাও লিখল 'শুভরাত্রি।'
ফোনটা রেখে রেখা এক গ্লাস জল খেলো। ভাবল মনোজএখনো ওঘরে কি করছে ?আজও কি ওই ঘরেই থাকবে ও?'
একবার বিছানাটা দেখে নিল কি অসহায় ভাবে পড়ে রয়েছে। রেখা নিজের দিকে তাকালো নিজের কি কি পরিবর্তন হয়েছে, তার চেহারার কোনো পরিবর্তন হয়েছে, নাকি মনের পরিবর্তন হয়েছে ?বোঝার চেষ্টা করল ।ওর সাথে এরকম করছে তবে কি তিথির সর্বনাশা উর্ণজালে বন্দি?অথচ এই ঘরটাতে একটা সময় ছিল ভালোবাসার বন্ধন, স্পর্শ ,যেন সাড়া দিত।
এক একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ঘুমাতে গেল নিজের বিছানায়। আর মনে মনে ভাবল কেন নিজের বিছানা বলছি বিছানাটা ছিল দুজনার ।কখনো যে দুটো বালিশ এক হয়নি কেবা খবর রাখে আর এখন দুটো বালিশ এর মাঝখানে যেটুকু ফাঁক,সেটাকে মনে হয় লক্ষ যোজন ফাঁক ।ছোঁয়া যায় না ,ধরা যায় না ,অনুভব করতে হয় ভেতরে ভেতরে। মনের ক্যানভাস এর রং তুলির আঁচড় দিয়ে শিল্পী আঁকার চেষ্টা করছে কিন্তু সেই মনের সন্ধান কোথায় আছে !কোন গহীন বনে আছে জানে না'। স্মৃতিরা ভিড় করে আসে। রেখা মনে করে যদি সেই সময়টা ফিরে পাওয়া যেত। হয়তো অনেক কিছু শুধরে নেয়া যেত।'
এসব ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত-অবসন্ন চোখ দুটি ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আসে।
ভোরের আলো ফুটতে ই রেখা ঘুম থেকে উঠে পড়ে, তাকিয়ে দেখে পাশে সেই শূন্য বিছানা। পাশে মনোজের বালিশটাকে নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে তাঁকে আলতো করে হাত বোলাতে থাকে আর ভাবে কেন এরকম হয়ে যাচ্ছে সময় গুলো, কেন দূরত্ব তৈরি হচ্ছে। বালিশে ছড়িয়ে থাকা সেই গন্ধ ভেতরে নেবার চেষ্টা করে এক সময় এই গন্ধটা পাগল করত যখন দূরে কোথাও মনোজ যেতো ।সারাক্ষণ রেখা মনোজের এটা ওটা নিয়ে নাড়াচাড়া করত আর তার ভেতর থেকে গন্ধ নিয়ে ভাবার চেষ্টা করত , মনোজ তার পাশেই
আছে ।অথচ আজ দেখো একটা ঘরের পরেই অথচ হাত বাড়িয়ে তাকে ধরা যায় না।'
রেখা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উঠে পড়ে ঝটপট মেনে নিতে চেষ্টা করে আর ভাবে ' না ওয়েট করলে হবে
না ।আজকে ভ্যাকসিন আছে। ঝটপট প্রাতঃক্রিয়া সেরে নেয় সে। তারপর ছোট্ট গোপালকে তুলে তার ভোগচাপিয়ে চলে যায় রান্নাঘরে। শুধু তার গোপাল নয় আরো ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে ।
ওদের কেউ তো খাওয়াতে হবে। এরমধ্যে তো একজন জানান দিয়েই দিয়েছেন চিৎকার করে আগে লিলিটা বেশী চিৎকার করতো খিদে পেলে। আর লিলির কথা ভেবে কি হবে? লিলি তো ছেড়ে চলে গেল রেখাকে।
ঝটপট দুধের প্যানটা বসিয়ে দেয় গ্যাসের একটি চুল্লিতে অন্য আরেকটি তে বসিয়ে দেয় চায়ের জল। ফ্রিজ থেকে আটা মাখা টা বের করে নিয়ে ঝটপট কয়েকটা রুটি করে ফেলে তারপর দুধ গরম হলে রুটিগুলো তাতে ফেলে হাত দিয়ে একটু চটকে নিয়ে দিয়ে আসে বাচ্চাগুলোকে।
এদিকে জল ফুটতে থাকে চায়ের এসে চায়ের পাতা গুলো দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে চাটাকে নামিয়ে নেয় ।একটা কাপের চা নিজের জন্য ঢালে আর বাকিটা ফ্লাক্সে রেখে দেয় ।কারণ মনোজ কখন উঠবে তারতো কোন ঠিক নেই। অন্য একটি পাত্রে ডিম সেদ্ধ বসিয়ে দেয় আজ কাল সকালে মনোজএকটা একটা করে ডিম সেদ্ধ খাচ্ছে। এর মধ্যেই কলিংবেল বাজতে থাকে 'জয় শ্রী কৃষ্ণ, জয় শ্রী কৃষ্ণ, জয় শ্রী কৃষ্ণ।'
রেখা সবেমাত্র চায়ে মুখটা দিয়েছে ,তারপর ঘড়ির দিকে তাকায় এখন কে আসবে ? মাসির আসার এখনো তো সময় হয়নি। চায়ের কাপটা হাতে নিয়েই হাউসকোটটা গায়ে বুলিয়ে নেয় নাইটি পড়ে দৃষ্টিকটু লাগে। দরজাটা খুলেই তো অবাক "ওমা মাসি, এত সকাল-সকাল?'
মাসি বলল 'মাগো ,আজকে এক জায়গায় যাব?'
রেখাব হেসে বললো ও তাই? তা বেশ করেছো।
মাসী বললো তোমায় একটু অসুবিধেয় ফেললাম নাগো বৌমা?
রেখা বললনা মাসি ,অসুবিধা কি? আমি তো উঠে ই যাই। বরং তুমি এত সকাল-সকাল ,তোমার শীতকাল তো। তাই বলছি।
মাসী বললো" আর আমাদের শীত, গ্রীষ্ম,বর্ষা।'
রেখা চায়ের কাপটা এগিয়ে দিয়ে বলল 'এই নাও মাসি চা খাও আজকে। কি খাবে চায়ের সাথে বিস্কুট , না মুড়ি খাবে?'
মাসী বললো বৌমা মুড়ি খাবার আজকে সময় নেই গো?'
রেখা বলল' তা বেশ ,তাহলে বিস্কিট খাও।'
মাসি বলে' এতগুলো বিস্কিট দিলে?'
রেখা বলল 'ও মা তোমার পেট ভরবে?
মাসী বললো তাহলে তোমার মুড়ি খাওয়াই ভাল ছিল সে তো একই সময় লাগবে।
রেখা বলল 'কিছু সময় লাগবে না খাও তুমি।'
মাসী বললো' কত আদর করে বল বৌমা তুমি কত জায়গায় কাজ করেছি এইভাবে কেউ আপন করে কথা বলে না গো সবাই কাজের লোক বলে কেমন যেন একটা দূরত্ব রাখে।
রেখা কোন কথা বলে না শুধু মাসির দিকে তাকিয়ে হাসে
মাসী বললো তুমি আমার দিকে তাকিয়ে কি দেখছো গো মা?
রেখা বলল তোমায় দেখছি.।
মাসি বলেছে তো আমি বুঝতেই পারছি কি দেখছ এতো কি লেখা আছে?
রেখা বলল 'কি লেখা আছে? লেখা আছে তোমার যে বয়স হয়েছে তোমার এখন কাজ করা উচিত নয় কিন্তু দেখো মানুষকে পেটের জন্য কিনা করতে হয়?
মাসী বললো 'আমার কপাল বৌমা।'
রেখা বলল তোমার কয় ছেলে মেয়ে?
মাসী বললো ছেলে তো একটাই মেয়ে আছে।
রেখা বলে তোমার ছেলে কি করে?
মাসি পড়লো ছেলে তো কাজ করতো ভালোই কিন্তু ছেলের স্ট্রোক হয়েছে একটা দিক প্যারালাইজড পড়ে আছে ঘরে আমার উপরে সংসারটা।
রেখা বলল ' ও বাবা।'
মাসি বলল "ছেলের বউটাকেও কাজ করতে হচ্ছে।'
মাসি বলল ওই দেখো কথায় কথায় কত দেরি হয়ে গেল।
রেখাও ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল হ্যাঁ মাসি, আমারও দেরি হয়ে গেল। অন্য দিন শুনবো।
মাসি বলল আমাদের দুঃখের বারোমাস্যা কে শুনবে গো বৌমা,?
রেখা বলল সে দেখা যাবে।
রেখা ঝটপট তরকারি কাটাই ছিল বাটা মাছের ঝাল, পালং শাকের ঘন্ট ও ধনেপাতা চাটনি এই করবে বলেই মনে স্থির করলো ।সেইমতো গ্যাসের চুলায় কড়াই বসিয়ে দিল। রান্নার তোড়জোড় করল।
রান্না কমপ্লিট হতে হতেই রেখা মনোজকে গিয়ে চা দিয়ে আসলো আর বলল তুমি আজকে অফিস যাবে না?
মনোজ সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে বলল 'না ।"
রেখা বলল জলখাবার রাখা থাকলো খেয়ে নিও আর দুপুরে ঠিক সময়ে খাবার খেয়ে নিও । তারপর মিলিদেরও খাবার ঠিক করে দিয়ে দিও। কথাগুলো বলে একমুহূর্ত দাঁড়ালো না রেখা।
রেখা ঝটপট স্নান করে, পুজো করে ,খাবারটা খেয়ে ,স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা দিল। স্টেশনে পৌঁছাতে পৌঁছাতে ট্রেন ঢুকে গেছে দেখতে পেল। দৌড়ে দৌড়ে গিয়ে ট্রেনে উঠল ।ট্রেন থেকে নেমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হসপিটালে পৌঁছে গেল।
রেখা হসপিটালের গেটে পৌঁছাতেই ফোন বেজে উঠলো ।
রিংটোন বেজে উঠলো তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম...।
রেখা ব্যাগ্ হাতরে হাতরে ফোনটা বের করলো ।বের করে দেখছে বড়দির ফোন।
রেখা ফোনটা রিসিভ করে বলল 'হ্যাঁ 'বলুন।
বড়দিদি বললেন তুমি পৌছে গেছো রেখা?
রেখা বলল হ্যাঁ দিদি এই তো হসপিটালে।
বড়দি বললেন আমাকে টেনশন মুক্ত করলে রেখা যদিও আমি জানি তোমাকে যখন কাজটা দিয়েছি তুমি ঠিক আসবে আসলে আমার টেনশন হচ্ছিল তোমার কাজ আছে বলছিল ওই জন্য যাই হোক এটলিস্ট এসেছ তো।
রেখা বলল হ্যাঁ দিদি কথা যখন দিয়েছি আসবো তো অবশ্যই।
বড়দি বললেন আমি জানি আছে রেখা শোনো আমি তাহলে পঞ্চমীর হাতে পাঠিয়ে দিচ্ছি হ্যা পোর্টালের খাতাটা আর ব্ল্যাংক পেজ ও পাঠিয়ে দিচ্ছি ওদের নাম রোল নাম্বার সেকশন সিগনেচার করিয়ে নিও ঠিক আছে।
রেখা বলল ঠিক আছে দিদি
বড়দি বললেন তুমি আমাকে আপডেটগুলো জানাতে থেকো আর কোনো অসুবিধা হলে আমাকে অবশ্যই কিন্তু ফোন ক'রো কেমন?
রেখা বললো ' ঠিক আছে দিদি।'
এরমধ্যে রেখা দেখতে পেল কতগুলো মেয়ে ড্রেস পড়ে আসেনি জিজ্ঞেস করল এই তোর এড্রেসটা আছে সেখানে বরদি কথাটা শুনতে পেয়ে বললেন ওদের কে বাড়ি পাঠিয়ে দাও রেখা বল ডেসি না পড়িলে ভ্যাকসিন হবে না।
রেখা বল তাহলে ভাবুন দিদি কি অবস্থা তার মধ্যে কিন্তু গার্জেন হয়েছেন সঙ্গে।
বড়দি বললেন আগে স্কুলের কিছু নিয়মকানুন শিক্ষকরা তবে ভ্যাকসিন নেবে।
রেখা বলে তুমি ভ্যাকসিন নেবে আগে ড্রেস পড়ে আসো।
অভিভাবক বললেন ওর একটু অসুবিধা আছে লেখা গুলো কিসের অসুবিধা না আমাদের হসপিটালে আসলে তো সব জামা কাপড় কাচতে হয় সেজন্য ভাঁজ করা শাড়িটা পরবে।
রেখা কেমন অবাক হয়ে গেলো কথা শুনে গুলো বলেন কি আপনি স্কুলের হয়ে এসেছে ভ্যাকসিন নিতে সেখানে ড্রেস পরে আসবে না আর হসপিটাল এসেছে কাজ করবেনা এটা কখনো হয়?
না আমাদের বাড়িতেও তো একটা নিয়ম আছে অভিভাবক বললেন।
রেখা বলল 'দেখুন বাড়ির নিয়ম বাড়িতে। স্কুলের নিয়ম স্কুলেতে ।স্কুলের হয়ে যেহেতু এসেছে স্কুলের নিয়মটা মানতেই হবে ।lরেখা সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যেক মেয়েকে মুখে আঙ্গুল দিয়ে দাড়াতে বলল আর এক হাত দুরত্ব রেখে দাড়ালাম ।প্রত্যেকের আধার কার্ড চেক করতে লাগল তারপর নাম এন্ট্রি করে ভ্যাকসিনের জন্য মেয়ে পাঠাতে লাগলো।
হসপিটাল কর্তৃপক্ষ কুড়িটা করে মেয়ে রেডি রাখুন ভ্যাকসিন এর জন্য কুড়ি জনকে কিন্তু লাগবেই এখানে কোন ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।
রেখা বলে ঠিক আছে তাই হবে।
হসপিটালের যিনি সিনিয়র নার্স ছিলেন তিনি বললেন বাহ । নিয়েছে আপনার মতো তো কেউ সিস্টেমেটিক ভ্যাকসিন নিতে পারেনি খুব ভালো লাগলো।
ছাত্রীরা কথাটা শুনতে পেয়ে বললে আমাদের এখানে ভীষণ নিয়মনিষ্ঠ নিয়মের এদিক ওদিক হতে দিতে চান না এবং ভীষণ সিস্টেমেটিক কাজ করেন।
সিনিয়র নার্স বললেন" হ্যাঁ সে তো দেখে বোঝাই যাচ্ছে তোমরাও ম্যামকে দেখে অনেক কিছু শিখতে পারবে ওনাকে ফলো করো কেমন।,
এর মধ্যে একজন মেয়ে ইনজেকশন নিতে ভয় পাচ্ছে বলছি ম্যাম লাগবে লাগবে আমি ইনজেকশন নেবো না। রেখা ওকে অনেক করে বোঝালো যে দেখ কোন কিছু লাগবে না আমি তোর পাশে গিয়ে বসব। দেখ আমার সঙ্গে একটা দুটো কথা বলতে বলতে কখন যে তোর ভ্যাকসিন হয়ে যাবে তুই বুঝতে পারবি না।
মেয়েটির নাম সোহানা খাতুন।
ওর যে গার্জেন এসেছেন উনি বলছেন ম্যাম আমার মেয়ে খুব ভয় পাচ্ছে।
সোহানার মাকে আশ্বাস দিয়ে বলল" কোন ভয়ের ব্যাপার নেই ,আমি ওর পাশে থাকব।'
শেষ পর্যন্ত 142 টি মেয়ের ভ্যাকসিন হলো। টোটাল নবম শ্রেণীর ছিল দেড়শ জন ।তার মধ্যে কারো বয়স হয়নি আবার কারোর জ্বর, ঠান্ডা লেগেছে বলে ভ্যাকসিন নিতে পারল না।
রেখা বড়দিকে ফোনে জানাল কতগুলো মেয়ের ভ্যাকসিন হয়েছে।
বড়দি বললেন' হয়ে গেল রেখা? '
রেখা বলল' হ্যাঁ দিদি, আজকের মত
কমপ্লিট ।আমাদের যে কটি মেয়েছিল ,তার মধ্যে 142 জন মেয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছে।'
বড়দি বললেন 'এর জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।'
রেখা বলল না দিদি এভাবে বলবেন না। এটা তো আমারও একটা দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে স্কুলে আছি যখন।'
বড়দি বললেন"এই কারণে আমি তোমার জন্য গর্ববোধ করি।'
ফোনটা রাখার পর রেখার আজ চোখের সামনে মিছিলের মতো একে একে হাসপাতালে ছবিগুলো যেন স্পষ্ট হয়ে উঠল মনের ক্যানভাসে। আর ভ্যাকসিনের রেশ, সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে রেখা অবশেষে তার আস্তানার দিকে পা বাড়ালো ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much