১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

কবি বর্নালী সেনগুপ্ত'র কবিতা





নারী জনমের পাওনা

বর্নালী সেনগুপ্ত


সভ্যতার সেই উষালগ্ন থেকে তোমার পরিচয় তুমি পুরুষ,
তোমার জন্য গোটা বসুমতী ভোগের খোলা বাজার। 
আর আমরা ?
নারী মানে ভোগ্যপন্য!
বাহ! কি সুন্দর বিভাজন,
নারীকে মাপো তাই কখনো সুডৌল দৃঢ় গোলাকৃতি মাংসপিন্ডে,
কখনো অক্ষত জননযন্ত্রের নিক্তিতে। 

পুরুষ, নারী তোমার চোখে  অবলা। 
তবে তোমাদের পৌরুষের লাঙলে কি করে করো নারীকে ফালাফালা ?
কি করে ছিন্নভিন্ন করে দাও একটা কচি শরীরকে ?
রেহাই দাও না বলিরেখা ঘেরা কুঁজো বার্ধক্য পীড়িত সত্তরের বুড়ি কে ?

শাস্ত্র মতে নারীকে রক্ষা করা পুরুষের নাকি ধর্ম !
অন্ধকার রাস্তায় একা পেয়ে দলবদ্ধ পশুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়ো  কোন অসহায়ার দেহে,
তখন কোথায় থাকে পুরুষ তোমার বিবেক?
কোথায় লুকিয়ে রাখো তোমার দৃঢ় পৌরুষের গাঁথাকে ?

অর্জুন ও তো  কামন্মতা উর্বশীকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো,
রাবন ও তো নলকুবেরের অভিশাপের ত্রাসে জানকি কে জোর করে ভোগ করেনি,
রাম তো শূর্পনখার দূর্বলতার সুযোগ নেয়নি,
ভীষ্ম ও তো অম্বাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো,
তবেভ?

মনুর বিধান এর নামে পুত্র ক্রিয়তে ভার্যা বলবে,
অথচ নারীকে রক্ষনের দায়িত্ব ধূলোয় গড়াগড়ি খাবে ?
চমৎকার তোমাদের ব্যবস্হা। 

আজ যখন এই মানব শরীর পেয়েছি,
চুরাশি লক্ষ জন্মের চক্র পেরিয়ে,
তাতে তোমার অবদান কি পুরুষ ?
 পশু হয়ে ছিলাম যখন  তখনো তোমার নিষ্ঠুর কামনার শিকার করেছো আমায়,
আবাঞ্ছিতত মাতৃত্বের চিহ্ন বয়ে বেড়াতে বাধ্য করেছো। 
একপেট ক্ষুধা নিয়ে এ দোর থেকে ও দোরে ঘুরে মরেছি,
লাথি মেরেছে কেউ , কেউ দিয়েছে বিষ। 
কেউ দিয়েছে চাকার নিচে পিষে,
কেউ খেয়েছে কেটে !
এই তো আমার মানুষ জন্মের আগের  ইতিহাস,
আজ বুঝি  নারী জীবন মানে শুধু কষ্ট আর অবহেলাভরা এক অনন্ত দীর্ঘশ্বাস।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much