উপন্যাস
সেদিন গোধূলি সন্ধ্যা ছিল
(৫ম পর্ব)
মনি জামান
নিলয় আর মেবিন সারাদিন ঘুমিয়ে সন্ধ্যার একটু আগে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে তারপর চারুর সাথে বের হলো ওরা তিনজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে দুটো রিক্সা ডেকে রিক্সায় উঠে পড়লো চারুঃ নিউ মার্কেট মোড় যাবো,কিছুক্ষণ পর ওরা তিনজন রিক্সা থেকে নেমে শহরের একটি কফি হাউজে ঢুকলো,ঢুকেই চারু মেবিন ও নিলয় একটি টেবিলের পাশে চেয়ারে বসলো।
চারু তিনটে কফির অডার করলো বয় একটু পর কফি দিয়ে গেলো,ওরা কফি খেয়ে আবার বের হলো কফি হাউজ থেকে, তারপর শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরলো ঘুরতে ঘুরতে সময় কখন পার হয়ে গেল ওরা বুঝতেই পারিনি।
চারুঃ ঘড়ি দেখে বলল অনেক রাত হয়ে গেছে মেবিন,চল বাড়িতে যায় মা আবার অস্থির হয়ে পড়বে কালকে দিনের বেলায় এসে আমরা আবার ঘুরবো।
মেবিনঃ চল চারু বলেই ওরা বাড়িট দিকে রওনা হলো,কিছুক্ষণ পর রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করলো তখন রাত নয়টা বাজে।বাসায় এসে ওরা যার যার মত ফ্রেস হয়ে সোফায় এসে বসলো,চারুর মা ওদের খেতে ডাকলো ওরা খাবার টেবিলে এসে বসে পড়লো অনেক খিদে পেয়েছে মেবিনের।
চারুর মা খাবার টেবিলে খাবার পরিবেশন করলো,চারু ওর মায়ের সাথে নিলয় ও মেবিনের সম্পর্কের কথা নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিল,নিলয় লজ্জায় লাল হয়ে গেলো তারপরও পরিচিত হয়ে খুশিই লাগছে ওর।চারুর মা খুব অমায়িক এবং প্রাণ খোলা একজন মানুষ অনেক কথা জিজ্ঞেস করলো নিলয়কে,নিলয়ের মায়ের কথা বাবার কথা ওদের বাড়ির কথা,নিলয় সব বলল,চারুর মা সব শুনে খুব খুশি হল তারপর বলল,তোমরা খেয়ে তারপর তিজন বসে গল্প কর এবং মনে করবে এটা তোমাদের বাড়ি বলেই উনি চলে গেলেন।
ওরা তিনজন খাওয়া শেষ করে চারুর রূমে এসে বসলো,তারপর সমুদ্র সৈকত নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করলো কাল কখন যাবে সমুদ্র সৈকতে,সিদ্ধান্ত হল কাল বিকালে ওরা সমুদ্র সৈকত দেখতে যাবে।
চারুঃ তাহলে ড্রাইভার কে ফোন করে জানিয়ে দেই গাড়ি আনতে কাল বিকালে আমরা সমুদ্র সৈকতে যাব এটা,মেবিনঃ হ্যাঁ তাই বলে দে,চারুঃ ফোন করলো ড্রাইভারকে জানিয়ে দিল আগামীকাল বিকালে সমুদ্র সৈকতে যাবে সে কথা আপনি গাড়ি রেডী রাখবেন।
ড্রাইভারঃ ঠিক আছে আপা কালকে স্যারকে বলে গাড়ি নিয়ে আসবো।
চারু ফোনটা কেটে দিয়ে নিলয়ের রূমটা ঠিক করে দিয়ে তারপর মেবিনকে সাথে নিয়ে ওর রূমে ডুকলো,চারুঃ রাত অনেক হয়েছে মেবিন চল শুয়ে পড়ি,মেবিনঃ হ্যাঁ চল চারু আর মেবিন ওদের রূমে গিয়ে দুজন শুয়ে পড়লো,নিলয় তখন অন্য রূমে
একা একা শুয়ে ভাবছে মেবিনের কথা,ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেলো, ভোরে ফজরের আযান হচ্ছে নিলয়ের ঘুম ভেঙ্গে গেল ঘুম থেকে উঠে নিলয় অযু করে ফজরের নামাজ পড়ে আবার শুয়ে পড়লো এবং মনে মনে ভাছে মেবিন উঠেছে কি না, ভাবছে ট্রেন জার্ণির সেই রোমাঞ্চকর সময়ের কথা।
একটু পরে জানালার ফাক গলে ভোরের সূর্যের আলো নিলয়ের রূমে উকি দিল,নিলয় উঠে পড়লো এবং দরজা খুলে বাইরের রেলিং এ এসে দাঁড়িয়ে বাইরের অপূর্ব সকালের অপূর্ব দৃশ্য দেখে আবির্ভূত হয়ে গেলো,একদম নিরব শহর মনে হয় শহর ঘুমিয়ে আছে হয়তো একটু পরেই জেগে উঠবে আর কোলাহল নগরীতে পরিণত হবে।শহর প্রাণ ফিরে পাবে শহর হঠাৎ পিছন থেকে কে যেন টোকা দিয়ে চারুঃ এই যে মিষ্টার এখানে একা একা কি দেখছ,নিলয় পাশ ফিরে দেখলো চারু দাঁড়িয়ে আছে।
নিলয়ঃ মেবিন উঠেনি?চারুঃ উঠেছে তবে তোমাকে ডাকছে মিষ্টার,নিলয়ঃ চল তাহলে বলে মেবিনের রূমে প্রবেশ করে দেখলো মেবিন শুয়ে আছে,নিলয় মেবিনের পাশে বসলো।
নিলয়ঃ ওর গায়ে হাত দিয়ে ডাকলো এই কাক পাখি এখনো শুয়ে আছো কেন উঠো,মেবিন নিলয়কে কাছে টেনে নিয়ে মেবিনঃ খুব মিস করছি সোনা তোমাকে।নিলয় ছোট্ট করে মেবিনের কপালে একটা চুম্বন দিলো, হঠাৎ চারু চা নিয়ে ঘরে ঢুকলো,মেবিনঃ আর সময় পেলিনা চা নিয়ে আসার,চারুঃ সামনে অনেক সময় পাবি মেবিন তখন----!
নিলয়ঃ হো হো করে হেসে উঠলো,চারুঃ হয়েছে চা খেয়ে উঠে পড় মনে আছে সমুদ্র দেখতে যাব আজ।
মেবিনঃ তোর কেমন লাগে নিলয়কে বলবি একটু,চারুঃ নিলয় আসলেই সুন্দর মনের একটা ছেলে সেই প্রথমেই তো তোকে বলেছিলাম প্রেম করলে এমন ছেলের সাথে কর বলেই চারু হাসলো।
মেবিনঃ থাক হয়েছে আর গুনকির্তন করতে হবে না তোকে,চারুঃ ওমা সেকি কথা আমি কখন কির্তন গাইলাম।
মেবিনঃ হয়েছে তুই এক কাজ কর আমার জন্য পারলে এক কাপ গরম পানি নিয়ে আয় ঔষধ খাবো।
চারুঃ তোর এখনো ঔষধ খেতে হয়, মেবিনঃ জার্নি করলে একটু খেতে হয় ঠান্ডা লাগে আমার,চারু উষ্ণ গরম পানি আনতে রান্না ঘরের দিকে চলে গেলো,এই সুযোগে নিলয় মেবিনের কাছে এসে বসলো,তারপর মেবিনকে জড়িয়ে ধরলো,মেবিনঃএই ছাড়ো ছাড়ো চারু এখুনি এসে যাবে ও যা শয়তান দেখলে আস্ত রাখবে না।
নিলয়ঃ চারু জানে আমাদের সম্পর্ক ও কিছু বলবেনা,মেবিনঃ ওহ নিলয় ছাড়ো না প্লীজ,এমন সময় দরজার বাইরে থেকে চারু দরজায় নক করলো,মেবিন তাড়াতাড়ি উঠে বসলো নিলয় ও মেবিনকে ছেড়ে দিয়ে দরজার কাছে এসে দরজা খুলে দিল,চারু তখন মুচকি মুচকি হাসছে।
চলবে.....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much