১২ ডিসেম্বর ২০২১

শান্তা কামালী/৩৮ তম পর্ব 





বনফুল
( ৩৮ তম পর্ব ) 
শান্তা কামালী

ঠিক এভাবেই জুঁইয়ের ট্রিটমেন্ট চলছে.... কখনো সকালে কখনো বিকালে নিরবচ্ছিন্ন মমতা মাখানো পলাশের  হাতের ছোঁয়ায় রুগী দ্রুত আরোগ্যের পথে। 

এই আসা-যাওয়ায় জুঁই পলাশের সম্পর্ক আরো গভীরতায় পরিণত হয়েছে।
শুধু গভীরতা নয়,জুঁই য়ের মন যে চায় আরো নিবিড়তা;
পলাশ বলে, এখন নয়।তোলা থাক ওড়না ঢাকা রেশমি চুড়ির বাক্সে সেদিনের অপেক্ষায়। 
জুঁই য়ের ঠোঁট দুটো কাঁপে অভিমানে। পলাশ ওর হাতের আঙুলগুলো টেনে দেয়,কব্জিতে চুড়ি গুলো নাড়াচাড়া করে রিনঝিন শব্দ করে মন ভোলায়।
 এদিকে জুঁইয়ের বাবা-মা দুজনেই বুঝলেন এর চেয়ে ভালো ছেলে খুঁজে বের করা তাদের পক্ষে সম্ভব হতো না। 
মেয়ের পছন্দের উপর তাদের  নির্ভরতা  ক্রমশ বেড়ে গেলো।
 
প্রতিদিন সকালে এসে জুঁইয়ের নাস্তা,ঔষধ খাওয়ানো থেকে শুরু করে সবরকম দায়-দায়িত্ব পলাশই পালন করছে। 
একসপ্তাহ পরে একদিন সৈকতের ফোন। পলাশ ওকে সমস্ত ঘটনা জানায়।জুঁইয়ের অসুস্থতার খবর পায় অহনাও। কয়েক দিন পরে  অহনা পাগলের মতো ছুটে এলো,ঘড়িতে তখন এগারোটা 
বাজে।এসে নিচে ড্রয়িং রুমে আন্টি আঙ্কেলের সাথে দেখা, অহনা বললো জুঁইয়ে এই অবস্থা আমি আগে জানতে পারিনি। সৈকত আমাকে কয়েকদিন আগে জানাতেই মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেলো। মনোয়ারা বেগম বললেন, মা জুঁইয়ের এই অবস্থায় মাথায় আসেনি কাউকে খবর দেবার কথা।  আজ দশদিনের উপরে আমি রান্না ঘরে যাই না ময়না যা পারছে তাই রান্না করে টেবিলে দিচ্ছে....। 
পলাশ ছেলেটা এতো খাটাখাটুনি করছে ওর জন্য যে ভালো কিছু রান্না করে টেবিলে দেবো সেটা ও পারছি না। 
অহনা বললো স্যরি আন্টি, আঙ্কেল, আমি উপরে যাচ্ছি। জুঁই য়ের আব্বু বললেন, হুম যাও।
 দ্রুত উপরে উঠে এলো অহনা। জুঁই শুয়ে আছে, পলাশ চেয়ারে বসে আছে। অহনা জুঁইয়ের কাছে গিয়ে, জুঁইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো জুঁই তোর এই অবস্থা আমি একবার জানতেও পারিনি! তাও দুদিন আগে সৈকত ফোন করে বললো.... 
পলাশ অহনাকে দেখে বললো তুমি এসেছো ভাল হয়েছে, তুমি জুঁইয়ের কাছে থাকো। আমার কিছু কাজ আছে, ওগুলো সেরে বিকালে আসবো, তোমরা গল্প করো। আর দুপুরে খাওয়ার পরে ঔষধ আছে খাইয়ে দিও, এই বলে পলাশ বেড়িয়ে গেল।

 আরো দু'চারটে ভার্সিটিতে এ্যাপ্লাই করার বাকি ছিলো, আজ যখন অনেকটা সময় পেলাম কাজগুলো আজই করে নিই। 
পলাশের কাজ শেষ করে বাসায় ফিরতে চারটা বেজে গেল। দ্রুত শাওয়ার শেষ করে, তাড়াহুড়ো করে খেয়ে বেরোলো। 
দুই বান্ধবীর অনেক কথা জমা ছিলো একে অপরকে বলে হালকা হলো।
পলাশ পাঁচটায় জুঁইয়ের বাসায় পৌঁছোতেই অহনা নিজের বাড়ি চলে গেলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much