১০ ডিসেম্বর ২০২১

সুচিতা সরকার এর কবিতাগুচ্ছ


সুচিতা সরকার এর কবিতাগুচ্ছ



কবিতা সংলাপ 



এক

ঘুমের পাতলা আস্তরণের নীচে,
একটা খরস্রোতা নদী অবিরাম বয়ে চলেছে।
পাহাড়, জঙ্গল, গ্রাম, গঞ্জ পেরিয়ে,
ছুটে চলেছে সে, নীল সাগরের পানে।
একটা মোহনার খোঁজে, 
প্রতি রাতে সে বার বার ফিরে আসে।
প্রতিটা জন্ম যন্ত্রণা তাকে আরও গভীর করে।
কখনও কালো কখনও সাদা চাঁদের আলোয়,
নীলাভ দিগন্ত তাকে হাতছানি দেয়। 

একটা সম্পূর্ণ জীবন যদি,
একটা রাতের সময় পেতো,
হয়তো খুব ভালো হতো। 




দুই



হয়তো কোনোদিন সে চাইবে ফিরে,
ছুঁতে চাইবে ফেরার পথ,
হয়তো সেদিন বৃষ্টি ভেজাবে,
রাঙামাটির মেঠো পথ।
অস্তামিত সূর্যের গায়ে, হয়তো লাগবে,
আগামী ভোরের আলো,
সব ব্যাথা কি মন ভুলে যাবে সেদিন?
না কি বলবে, ধূলাই ভালো। 




তিন



শীতের আস্তরণে ধীরে ধীরে ডুবছে শহর।
আমায় হাতছানি দেয়, 
তোর বুকের উষ্ণতার লহর।
চুপি চুপি ঠান্ডা জমছে মেঘের ঘরে।
ভোরের কাছে এখন শুধুই ওসের খবর।
বৃষ্টির উঠোনে আজ, শুকনো পাতার ঝড়।
ঘরের দোরে ঠায় বসে আমি
দেখছি শুধু  রাত-দিনের  অন্তর।
দূরে কোথাও ভিজে যায় আঁচল,
নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে হলুদ বালুচর।
আমাদের পায়ের চিহ্নগুলি এঁকে যায়, 
নীল জলের গভীর তোড়। 




চার



অখিলে আজ শরতের মেঘ, 
ঢাকের বুকে আবার পড়েছে কাঠি।
মনে পড়ে যায় সেই বাসস্টপ-
তোর সাথে দাঁড়িয়ে দেখা, শেষ রঙিন বাতি।
প্রতি বছর ফেরে পুজো, ধরে শরতের হাত,
আমার আকাশ আর মাখে না নীল রঙ, 
ফোটে না ওতে কাশ। 
একদল ধূসর মেঘ, জমাট বাধে উঠোন কোণে।
ধুয়ে দিয়ে যায় আমার পুজোর সাজ,
প্রতিবার আনমনে।
এবারেও একটা ধূপ জ্বালিয়েছি, মায়ের ঘরে।
গন্ধ পাবি নিশ্চয়ই! আমার মন বলে।

৪টি মন্তব্য:

thank you so much