২৫ নভেম্বর ২০২১

রাবেয়া পারভীন





স্মৃতির জানালায়  
( ৩য় পর্ব)  

 
সংসারে উদাসীনতার জন্য রেহানা  মাঝেমাঝে অভিযোগ করে  বলে 
- আপনিতো চিরকাল  নিজের কাজ নিয়ে থাকলেন  আমার দিকে তো আর তাকিয়ে দেখলেন না
মৃদু হেসে মাহ্তাব  সে সব কথার জবাব দিয়ে দেন। রেহানা বড় ভালো মেয়ে। সহজ সরল। এমন পতি পরায়না স্ত্রী  খুবই বিরল। কিন্তু তারপরও কি মাহ্তাব সুখি হয়েছেন ?  যখনি রেহানার কথা ভাবেন  তখনি বিদ্যুৎ  ঝলকের মত  তার চোখে ভেসে উঠে অনেক দিন আগে হারিয়ে যাওয়া এক নারীর মুখ। ব্যাথায় টন্ টন্ করে উঠে বুকের বাম পাশটা।  একটা দীর্ঘশ্বাস  পড়ল  সমস্ত  বুক কাঁপিয়ে। শবনম!  এক অসাধারণ নারীর নাম। উচ্চশিক্ষিতা  ব্যাক্তিত্বসমন্না অপরূপ সৌন্দর্য, কি ছিলোনা তার!  চমৎকার গানের গলা।  খুব ভালো কবিতা লিখতো  সে।  প্রতিটা কবিতা কাগজে ছাপতে দেয়ার আগে মাহতাবকে পড়ে শোনাত । মন্ত্রমুগ্ধের মত  তাঁর কাছে বসে কবিতা শুনত মাহতাব আর মুগ্ধ  হয়ে সেই কবিতা পাঠরতা অসাধারণ রমনীর  মুখাবয়বের দিকে চেয়ে থাকত। কবিতা পড়া শেষ হবার পরেও দৃষ্টি  ফিরতোনা। মিষ্টি  লাজুক  হাসি হেসে শবনম বলত
- এমন করে তাকিয়ে  আছো কেন ?  কবিতাটা কেমন হয়েছে বলবে না?
 কি বলবে মাহ্তাব,  বলার ভাষা যে হারিয়ে যেত। আহা শবনম !  সেই শবনম!   এতো বছর পরেও  যার স্মৃতি  এতটুকু ম্লান হয়নি।  পিতার খুশির দিকে চেয়ে তিনি ত্যাগ করেছিলেন  শবনমকে। পিতার পছন্দে  বিয়ে করেছিলেন  অল্পশিক্ষিতা  অতিসাধারণ এক গ্রাম্যবালা  রেহানাকে। পিতাকে কষ্ট দেওয়ার কথা তিনি ভাবতেই  পারেন নি। উফ্ কেন যে  ঘুরে ফিরে আজকে আবার এসব মনে পড়ে গেল?  অফিসে  এসে চেয়ারে বসে  পিছনে হেলান দিয়ে তিনি চোখ বুজে রইলেন। তাঁর মন হু হু করে ছুটে চলে গেছে  পঁয়ত্রিশ  বছর  পেছনে।
 চলবে......

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much