সুচিতা সরকার এর চিঠি
প্রিয় নীল,
বুকের ভেতরে আলগোছে রাখা তোর নামের প্রেমটা মাঝে মাঝেই মাথা চাড়া দেয়। দিশেহারা হয়ে তখন বেরিয়ে পড়ি তোর খোঁজে। হলুদ খোয়াইয়ের পাড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে তোর নাম বলি, মাঝি ভাইয়ের কাছে চিরকুটে নামটা লিখে আসি। একছুটে ছাদে গিয়ে মেঘটাকে টেনে নামাই। ধূসরের বুক চিরে ঝরে পড়া বৃষ্টির কণাগুলি পাগলের মতো হাতড়াই।
গোলাপ আমার কোনোদিনই পছন্দের নয় তবু গোলাপ কাঁটায় হাত রাঙিয়ে, গোলাপের পাপড়িতে তোর নাম লিখে রাখি। পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা এলোমেলো মেঘগুলি আমার দিকে হাত বাড়ায়। নিয়ে যেতে চায় আমায় ওদের আলোকপুরীতে। আমি যাই না। কি হবে গিয়ে বল। তুই ছাড়া আমার সব আলোই তো ওই প্রদীপের নীচের অন্ধকারের মতো।
চাঁদের সাথে আড়ি করেছি বহুকাল হলো। রাতের কালোয় তাই জোনাকিদের হাত ধরি। জানিস্, তোর গল্প শুনতে ওরা খুব ভালোবাসে। বহুদূর পথ হেঁটে ক্লান্ত হয়ে যখন শেষরাতে বাড়ি ফিরি, উঠোনের জুঁইগুলি ফুটে ওঠে। গন্ধ ছড়ায় তোর নামের। ওরা যে খুব কাছ থেকে চেনে তোকে। ঘরের দোরে মাটির প্রদীপ জ্বালাতেই , জ্বলন্ত শিখাটা তোর দিকে আমায় ইশারা করে। চেয়ে দেখি তুই কি নিশ্চিন্তে আমার বুকের ঘরে ঘুমিয়ে আছিস। চোখ দুটো আমার ভিজে আসে। আমার সব খোঁজ শেষ হয় তোর কাছে এসেই। তোর ঘুমন্ত মুখটা দেখতে দেখতে কখন যে ভোরের আলো ফুটে ওঠে বুঝতেই পারিনা।
আরেকটা দিন শুরু হয়, আরেকটা আরম্ভ, আরেকটা হাতছানি নিয়ে। বলাই হয়না আর তোকে ঠিক কতটা ভালোবাসি।
ইতি-
কি আর হবে জেনে
মুগ্ধ হলাম পড়ে ❤️
উত্তরমুছুন