মাহতাবের মাথার মধ্যে শিপলুর কথাটা ঘুরতে লাগলো, " আপাকে দেখতে এসেছে, পছন্দ হলে আপার বিয়ে হবে। " সে অলস পায়ে দোতলায় উঠে এলো। শবনমের মামা মামী এসেছেন। শবনম সম্ভবত নিজের ঘরে। ওই ঘরে উঁকি দিয়ে একবার শবনমকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু উচিৎ হবেনা ভেবে ইচ্ছেটাকে দমন করল। সোজা হেঁটে চলে গেল রান্নাঘরের সামনে। ভিতরে শবনমের মা এবং মামী দুজনেই আছেন। কাজেম থালাবাটি পরিস্কার করে ধুয়ে খাবার ঘরের টেবিল সাজাচ্ছে। রান্না ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে মাহতাব ডাক দিল
- খালাম্মা স্যারর আমাকে পাঠালেন প্রস্তুতি কতটুকু হলো দেখতে
মাহতাবকে দেখে এগিয়ে এলেন শবনমের মা বললেন
বাবা মাহতাব তুমি বুঝি এতোক্ষনে এলে ?
-জ্বী খালাম্মা !
শবনমের মা কাজেম কে ডেকে বললেন
- কাজেম , মাহ্তাবকে শরবত আর মিস্টি দে,
বলেই আবার মাহতাবকে বললেন -
- তুমি এক কাজ কর, এগুলু খেয়ে তোমার স্যারকে জিজ্ঞেস করে এসো মেহমানদের খাওয়া আগে হবে নাকি মেয়ে দেখা আগে হবে!
ঘাড় হেলিয়ে কোনরকমে শরবতটা খেল সে, তারপর ছুটল নীচ তলায়। শবনমের বিয়ে হবে অন্য কোথায় কে জানে আর বিয়ের বিভিন্ন ঝামেলার কাজও হয়ত মাহতাবকেই করতে হবে হায়রে কপাল! বিধাতা না জানি তাকে কোন পরীক্ষায় ফেলেছেন । বসার ঘরে ঢোকার আগে লম্বা করে দম নিল সে। নিজেই নিজেকে শান্তনা দিল সে। আজকে যা ঘটছে এটাই তো স্বাভাবিক। শহরের বড় ঘরের একমাত্র মেয়ে শবনম তাঁদের সমপর্যায়ের আরেক ঘরে বিয়ে হবে। সে কোথাকার কোন অখ্যাত মাহতাব চাল নেই চুলো নেই, শবনমকে নিয়ে কোন স্বপ্ন দেখাটা দুঃসাহিকতা ছাড়া আর কি ? তা ছাড়া শবনমও তো কখনো তাঁকে বলেনি যে, তোমাকে ভালোবাসী।
বসার ঘরের সমবেত মেহমানদের হাসির শব্দে চমকে উঠল মাহতাব। ছিঃ ছিঃ সে এসব হাস্যকর চিন্তা কেন করছে! মন থেকে ভারি পাথরটাকে জোর করে সড়িয়ে দিয়ে বসার ঘরে প্রবেশ করল মাহতাব।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much