বনফুল
৩৫ পর্ব
শান্তা কামালী
জুঁই য়ের শরীর টা ভালো যাচ্ছে না কয়েক দিন ধরে। দুদিন বাড়ি থেকে একদম বের হয়নি।পলাশ বাড়িতে এসে খবর নিয়েছে।
সেদিন সকালে হঠাৎ জুঁই য়ের ফোন পলাশ কে।তখন সকাল মাত্র ছয়টা বাজে।
এ সময় তো জুঁই ঘুম থেকে ওঠে না! পলাশের মনে কু ডাকে।
ফোন তুলে গুড মর্নিং বলতেই, ওপাশ থেকে কান্না ভেজা গলায় জুঁই বলে উঠলো, তুমি একবার শীঘ্রি এসো, উউহ কি ব্যথা.....
কি হয়েছে জুঁই? বলো....
পলাশ ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সুইট হার্ট,আমি পড়ে গেছি,হাতে খুব লেগেছে কাঁধের কাছে যন্ত্রণা হচ্ছে, আমি কি করবো জানি না....
একটু অপেক্ষা করো,আমি এক্ষুনি আসছি, এই বলেই পলাশ দ্রুত তৈরি হয়ে জুঁইদের বাড়িতে পৌঁছে যায়।
গিয়ে দেখে জুঁই য়ের বাবা মা ডাক্তার ডেকে এনেছেন। সবাই ঘরে উপস্থিত। জুঁই তখন ডাক্তারবাবু কে বলছে, ঘুম থেকে উঠে ওয়াস রুমে যাবো, এমন সময় মাথা টা একটু কেমন চক্কর দিলো, পড়ে যেতে গিয়ে কিছু ধরবো বলে হাত টা বাড়িয়েছি,অমনি পা টা হড়কে গিয়ে চিৎ হয়ে পড়লাম বিছানা ঘেঁষে একদম মাটিতে। খাটের সাইডে কাঁধ টা লাগলো খুব জোরে। আর ডান হাতটা মাটিতে।এখন দুটো কাঁধেই খুব ব্যথা করছে,আর ডান হাতের কনুই তেও খুবই....
ডাক্তার সব দেখে বললেন,সম্ভবত স্পন্ডালাইটিস থেকে এটা হয়েছে। আপাতত এক থেকে দেড় মাস বাইরে বেরবেন না।ঘরে সকালে বিকালে তিরিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ মিনিট করে ট্র্যাক্সানের ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর ঘাড়ের দুটো এক্স-রে করে দেখে নিয়ে বলা যাবে কলার বেল্ট পড়তে হবে কি-না। আর ওষুধ লিখে দিচ্ছি,ব্যথা টা কমে যাবে। ডাক্তার বাবু প্রেসক্রিপশন লিখে জুঁই য়ের বাবা-র হাতে দিয়ে বললেন, আমি একজন অর্থপেডিক টেকনিশিয়ান কে পাঠিয়ে দেবো দশটার মধ্যে সে এসে সব ব্যাবস্থা করে দিয়ে যাবে।এই বিছানা তেই কয়েকটা সিস্টেম লাগিয়ে দেবে। আর যদি আপনারা নিজেরা দেখে নিয়ে দু'বেলা ট্রাকশান খোলা পড়া করতে পারেন তবে আর ওকে দু'বেলা এসে করে দিতে হবে না। নাহলে ওর জন্য দু'বেলার ফিজ দিতে হবে। ও নিজেই সময় মতো এসে করে দেবে।
ডাক্তার উঠে দাঁড়িয়ে বেরতে যাবেন,এমন সময় তাঁর চোখ পড়লো পলাশের দিকে। জিজ্ঞেস করলেন, ইনি কে?
জুঁই য়ের আব্বু বললেন, পুত্রসম।
ডাক্তার কি বুঝলেন কে জানে,উনি বললেন ইনি যদি একবার দেখে নেন,তবে ইনি নিজেই বিষয় টা বুঝে নিয়ে করতে পারবেন। এ্যাটেন্ডেন্ট রাখতে হবে না।
ডাক্তার বাবু তার ফিজ নিয়ে চলে গেলেন।
মনোয়ারা বেগম পলাশ কে বললেন, বাবা, তুমি এখানেই একটু বসো,আমি নাস্তা তৈরী করে পাঠিয়ে দিচ্ছি,দু'জনে খেয়ে নেবে।এই বলে জুঁই য়ের আব্বু আর আম্মু নিচে চলে গেলেন।
পলাশ জুঁই য়ের পাশে গিয়ে বসলো।
চলবে....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much