ইউএন মিশনে হাইতিতে গমন
১৩তম পর্ব
মোঃ হাবিবুর রহমান
অতঃপর পদব্রজে অনেকখানি পথ চলার পর হয়রানির এক পর্যায়ে গিয়ে দূরে এক জায়গায় একজন আশি ঊর্ধ ফকির জাতীয় একজন বৃদ্ধাকে দেখে আমাদের পায়ে হাঁটা কাফেলার সবাই আশায় বুক বেঁধে অতি সন্দর্পনে তৎক্ষণাৎ তার নিকট হাজির হ'বার পর অনেকটা হতাশই হ'য়েছিলাম। আসলে বৃদ্ধাটি বোধ হয় একজন জাত ফকির ছিলেন না। শানশওকাতেই সুন্দর একটা কম্বল পেতে ব'সেছিলেন এই বটবৃক্ষসম শ্রদ্ধেয় বৃদ্ধা নানটি।
যতদূর মনে পড়ে তার কম্বলের উপর কিছু ডলার পড়ে থাকতে দেখে অতি সন্তুষ্টিচিত্তে প্রত্যেকে কম্বলের উপর আমরা কাফেলার প্রত্যেকেই এক ডলার ক'রে নিক্ষেপ ক'রেছিলাম। যতদূর এই মূহুর্তে মনে পড়ছে, এ সবের মুল পরিকল্পনাকারী ছিলো আমার বন্ধু মেজর সালেহ্।
আজ অত্যন্ত ভারক্রান্ত হৃদয়ে আপনাদেরকে জানাচ্ছি যে, আমার সেই অত্যন্ত ভাল মনের বন্ধুটি, মেজর সালেহ্ আজ আর আমাদের মাঝে বেঁচে নেই। তিনি বিডিআর বিদ্রোহে শহীদ হ'য়ে পরলোকগমন ক'রেছেন। এ মূহুর্তে তার রূহের মাগফেরাত কামনা ক'রছি। পরম করূণাময় তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান ক'রুন।
এদের খাওয়া-দাওয়া, কৃষ্টি, সভ্যতা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ধর্ম-কর্ম আচার-আচরণ ও রীতিনীতি সম্বন্ধে ব'লতে গেলে তা এত স্বল্প পরিসরে বলা মোটেই সম্ভব হবে না। কোনদিন সুযোগ পেলে খন্ডাকারে লিখবো ইনশাল্লাহ্। এদের শপিং মলগুলোর বর্ণনা কিছুটা না দিলে আজ আমাদের নিজ দেশের অবস্হান ঠিক কোন জায়গায় তা হয়তবা বুঝা যাবেনা।
আজ আমাদের দেশেও বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, আগোরা কিংবা অন্যান্য বড় বড় শপিং সেন্টারের উদ্ভব হ'য়েছে। কিন্তু সেদিন সিয়ারস্ এর মত সেই মেগা বা বড় শপিং সেন্টারগুলো নিজ চাক্ষুষ দর্শনের অব্যবহিত পরে যেন আমরা একেবারে বড্ড তাজ্জ্ববই বনে গিয়েছিলাম আর কি!
হয়তবা এই সময় গেলে তাজ্জ্বব বনার কিছুই থাকতো না, বরং এখন গেলে বলতাম, তোমরা এসো আমাদের বাংলাদেশে, তোমাদের একেবারে চোখে আঙ্গুল দিয়েই দেখিয়ে বলবো "আরে ভাই এখন এ জিনিস আমাদের দেশেও আছে; সুতরাং, এ নিয়ে তোমাদের মাতামাতির দরকার নেই, তোমরা আমাদের দেশের রাজধানীর সেই বঙ্গবাজারে গেলেই কিছু সস্তা দামে বস্তা বস্তা কাপড়-চোপড় কেনার কিন্তু নেশায় পড়ে যাবে"।
যাহোক, বিড়ম্বনার বিষয়টি ছিলো খাওয়ার ব্যাপারটি। পনেরটি দিনের কোনদিনই আমরা ভাতের মুখ দেখিনি। তবে ক্যান্টিনে মাঝে মাঝে অর্ডার দিয়ে নিজের প্রচুর ডলার খরচা ক'রে ভাতের চেহারাটা দেখা সম্ভব হ'তো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much