একান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক। তার নিত্যদিনের আসা যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন "।
টানাপোড়েন (৪০)
কৃতজ্ঞতা
রেখা ট্রেন থেকে নেমেই হন্তদন্ত হয়ে অটোর খোঁজ করছে এক অটোওয়ালাকে দেখতে পেয়ে বলল 'অ্যাই অটো,অ্যাই অটো(হাত নেড়ে)।'
অটোওয়ালা বললো ' দিদি জায়গা নেই পরের অটোর জন্য ওয়েট করুন।'
রেখা বললো 'এই না, না, না। আমাকেএই অটোতেই যেতে হবে।'
অটোওয়ালা বলল 'আপনারা আমাদেরকে ঝামেলায় ফেলবেন।এখন ওভারলোড নিতে বারণ করছে ,দেখছেন না। রাস্তায় ধরছে পুলিশ ।
প্যাসেঞ্জারকে এ ব্যাপারে কিছু বোঝানোই যায় না।'
রেখা সে সব কথায় কর্ণপাত না করে হুটোপাটি করে অটোতে বসে পড়ে, থ্যাঙ্কস জানাল।'
অটোতে বসে রেখা ভাবতে লাগলো 'মনোজ কেন ফোনটা অফ করে রেখেছে কে জানে? বিপদ হয় নি তো?'
এরইমধ্যে ফোন বেজে উঠলো"জব কই বাত বিগার যায়ে ,যব কই মুশকিল পর যায়ে..।'
অটোতে যেতে যেতে ব্যাগ থেকে ফোন বের করা খুব মুশকিলের ব্যাপার।বারবার ব্যাগ হাতরে হাতরে
ফোনটা বের করে রিসিভ করে বলল 'হ্যালো।'
রিম্পাদি বলল 'আরে তুই তোর অ্যাটেনডেন্স শিটএর ব্যাগ ফেলে গেছিস। আমি নিয়ে নিলাম।'
রেখা বলল ' দেখেছো মনটা অস্থির হয়ে আছে তো ।কি রকম ভুলে গেলাম। ভাগ্যিস তুমি ছিলে?'
রিম্পাদি বলল 'ওই জন্য তোকে ফোনটা করলাম। চিন্তা করবি তাই ?বাড়ি পৌঁছে গেছিস?'
রেখা বললো 'না ,না ।বাগের মোড় আছি।'
রিম্পাদি বলল 'ঠিক আছে সাবধানে যা,। মনোজকে ফোনে পেলি?'
রেখা বলল 'না গো। সেজন্যই তো চিন্তায় আছি আর ওদিকে মিলিদের জন্য?'
রিম্পাদি বলল ' কোনো চিন্তা করিস না ।ঠিকঠাক টাইমে ফিরে আসবে ।ঠিক আছে ।আমি বাড়িতে পৌঁছে তোকে ফোন করব ।রাখি।'
রেখা বললো ,ঠিক আছে ।তুমিও সাবধানে যেও।:
এরইমধ্যে ব্যাগে ফোনটা সবেমাত্র রেখেছে , তার মধ্যেই ফোন বাজলো।
রেখা আবার ফোনটাকে বার করল হাতরে হাতরে । ও অধীর আগ্রহে ভাবছে বোধহয় মনোজ ফোন করেছে।
কিন্তু আশাহত হয়ে দেখল মনোজের নয় অন্য একটা আননোন নম্বর থেকে ফোন আসছে ।একটু বিরক্তিভরে ফোনটা রিসিভ করে বলল 'হ্যালো''।
অপরপ্রান্ত থেকে ভেসে আসলো 'কিরে রেখা?'
গলাটা খুব চেনা চেনা লাগছে রেখার।
রেখা বলল ' হ্যাঁ ।কে বলছেন?'
অপরপ্রান্ত থেকে বলল 'আমি তোর কাকিমা বলছি।'
রেখা খুব আশ্চর্য হয়ে বলল ' হ্যাঁ, কাকিমা বলো । কেমন আছো?'
কাকিমা বলল 'আর কেমন আছি মা ।তোমার কাকা তো খুব অসুস্থ ,।বাড়াবাড়ি হয়েছে ।একটু আসতে পারবে?'
রেখা বলল ' তুমি সোমুকে ফোন করেছিলে আর দাদা কে?'
কাকিমা বলল 'সোমুকে ফোন করেছি আর তোমার দাদাকেও করেছি ।তুমি আসবে কিনা ,তাই জানতে চাইছি?'
রেখা বলল 'আজকে কি করে যাবো কাকিমা,? কালকে চেষ্টা করবো যাবার। মনোজ ও তো বাড়ি নেই।'
কাকিমা বলল ' পারলে একবার এসে দেখে যেও কাকাকে ।সব সময় তোমার কথা বলছে ।শেষ সময় কিনা জানি না ।রাখি।'
রেখা চিন্তিত হয়ে বললো ' সত্যিই তো' বিপাশা কবে বলেছিল একবার কাকু কাকিমাকে গিয়ে দেখে আসতে।সময় করে উঠতে পারে নি ।কত রকম ঝড় ঝাপটা ,ঝামেলায় জড়িয়ে গেছে ।এ ভাবতে ভাবতেই অটোওয়ালা বলল 'দিদি নামুন।'
রেখা বলে ,'হ্যাঁ এই নিন ভাড়া ।ভাড়াটা মিটিয়ে এসে গেটটা খুলল।'
চৈতির মা গেট খোলার আওয়াজ পেয়ে বলল 'দিদি দেখুন তো অনেকক্ষণ থেকে কিন্তু আপনাদের মিলি আওয়াজ করছিল ।এখন মাত্র চুপ করেছে । দেখুন কি হলো?'
রেখা বলল 'ও তাই বুঝি ,?আচ্ছা দেখছি।'
তাড়াতাড়ি গেট খুলে ভেতরে গিয়ে ব্যাগটা কোনরকমে টেবিলে নামিয়ে রেখে সিঁড়ির কাছে গিয়ে দেখল যে বাচ্চাগুলো জলের মধ্যে আছে । ভাবছে এত জল কোথা থেকে আসলো ।একটু পরেই বুঝতে পারল যে সন্ধ্যের দিকে সিঁড়িগুলোকে ধুয়েছে জ্যেঠি শাশুড়ি ।সেই জল এসে বাচ্চাদের গায়ে পড়েছে এইজন্য বোধহয় মিলি চেঁচাচ্ছিল।'
রেখার চট করে মাথাটা এত গরম হয়ে গেল যে, আর থাকতে না পেরে তরতর করে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেল ।জ্যেঠি শাশুড়ি কে বলল 'জ্যেঠিমা আপনি সিঁড়িতে জল ঢেলেছেন।'
জ্যেঠি শাশুড়ি (স্বর্ণলতা) বললো 'এত নোংরা হয়েছিল, তাই জল দেয়া হয়েছে।'
রেখা বলল 'ঠিক আছে ।আপনাকে তো বলা হয়েছিল যে কিছুদিন অন্তত ওয়েট করুন বাচ্চাগুলোকে সরিয়ে নেয়া হবে।'
স্বর্ণলতা দেবী বললেন'এতদিন কি লোকে নোংরার মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করবে?'
রেখা বলল 'কোন জায়গাটা নোংরা দেখতে পেয়েছেন। ওরা যেখানে থাকে ,ওখানটা তো আমি রোজ সকালবেলা পরিষ্কার করে দি।'
স্বর্ণলতা দেবী বললেন ,'কেউ ওখানে পরিষ্কার করে না।'
রেখা বলল 'আপনি এবার থেকে রোজ সকালে এসে দেখবেন পরিষ্কার থাকে কিনা। আপনি তো উপর থেকে নোংরাগুলো ফেলেন।
আপনার একটু বিবেক হলো না যে কচি বাচ্চা । ওদের ঠান্ডা লেগে যাবে ।জলের মধ্যে আছে দেখুন গিয়ে।'(আঙ্গুল দিয়ে সিঁড়ির দিকে ইশারা করে)।
স্বর্ণলতা দেবী বললেন 'তোমার বিবেক আছে?'
রেখা বলল 'বিবেকের জন্যই তো আপনার কাছে এসেছি ,আপনি কেন এই কাজটি করলেন?
আপনার যখন ধোবার ছিল তাহলে যখন বাড়ি ছিলাম আপনি বলতে পারতেন যে বাচ্চাগুলোকে একটু ধরো ।ওই জায়গায় জল ঢালবো। আমি অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতাম আপাতত সেই সময়টুকু।'
রেখা কথাগুলো বলে তরতর করে নীচে নেমে আসলো। বাচ্চাগুলোকে সরিয়ে ওই জায়গাটা ভালো করে ঝাড় দিয়ে জলগুলোকে সরানোর চেষ্টা করল ।তারপর একটা বস্তা পেতে দিয়ে বাচ্চাগুলোকে শুইয়ে দিল।
আর তার সঙ্গে মিলি এবার ওর খিদে পেয়েছে খাবার চাইছে ওর ভাষায়।
এবার রেখা মিলিদের খাবার দিল তারপর নিজে ফ্রেশ হলো। ফ্রেশ হয়ে সন্ধ্যে বাতি জ্বাললো।
এখনো মনোজ ফেরে নি সেই চিন্তায় এবার রেখা মশগুল হয়ে গেল আর ভাবতে লাগলো যে কাকু কাকিমাকে দেখতে যাওয়া উচিত ।এই ভেবে একবার ফোন লাগাল মনোজকে । ফোন বেজে গেলো, বেজেই গেলো ।এবার ফোনটা খুলেছে ।
এর মধ্যে রেখার ফোন বেজে উঠলো'পল পল দিল কে পাস তুম রেহতি হো''রেখা বুঝতেই পারলো এটা মনোজের ফোন তাই ফোন রিসিভ করে বলল 'তোমার সারা দিন হয় নট রিচেবল, নয় সুইচড অফ ।কেন গো? 'কোন বিপদ-আপদ হলে কেউ যোগাযোগ করতে পারবে না?'
মনোজ বলল 'কেন ,কার কি হয়েছে?'
রেখা বলল ,'কাকুর খুব বাড়াবাড়ি হয়েছে ।কাকিমা ফোন করেছিল।বার বার করে আমাদেরকে যেতে বলছে।'
মনোজ বলল ' টেনশন নিও না। ঠিক আছে পার্থকে বলে দিচ্ছি কালকে ভোর বেলায় বেরিয়ে কাকু কাকিমাকে দেখে আসব ঠিক আছে।'
রেখা বলল 'তুমি কখন আসবে?'
মনোজ বলল ' ঘড়ি দেখে আধঘণ্টা শুধু দেখো, তার মধ্যেই তোমার কাছে পৌঁছে যাব।'
রেখা এবার হেসে বলল' ঠিক আছে সাবধানে এসো।'
ফোনটা রেখে রেখা ভাবল 'এই যা ,রিম্পাদিকে তো ফোন করা হয় নি । সঙ্গে সঙ্গে রিম্পাদিকে ফোন করলো ' হ্যালো'।
তুমি পৌঁছেছ?'
রিম্পাদি বলল ' হ্যাঁ ।এই জাস্ট বাড়ি ঢুকছি।'
রিম্পাদি বলল 'ট্রেনে বসে বসে দেখলাম মেসেজ ঢুকছে ।কালকে মিড ডে মিল আছে ।স্কুলে আসবি তো?'
রেখা বলল 'আমি তো মেসেজটা খেয়াল করি নি ।তবে কালকে যেতে পারবো না রিম্পাদি ।আমার কাকু খুব অসুস্থ। দেখতে যাব।'
রিম্পা দি বলল ,,'ঠিক আছে ।যা দেখে আয় আর বড় দিকে একটা মেসেজ করে দে।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ ।আমি ফোনে ট্রাই করব ।যদি না পাই তাহলে মেসেজ করে দেব ।আর তুমিও স্কুলে গিয়ে একবার ব 'ল।'
রিম্পাদি বলল ' ওকে ।টেনশন নিস না।'
এরমধ্যেই চৈতির মা জানলা দিয়ে ডাকছে ' ও দিদি, ও দিদি । মিলি খুব চেঁচাচ্ছিল
ছিল কেন ?কি হয়েছে?'
রেখা জানালার পর্দাটা সরিয়ে গলা বাড়িয়ে বলল 'আর বলবেন না ।যা হয় আমাদের বাড়িতে। জানেন তো সেই ইতিহাস। সিঁড়ির কাছে বাচ্চাগুলো জলের মধ্যে আছে। এমন জল ঢেলেছে ..."
চৈতির মা বললো 'সত্যি বিবেক বলে কি কিছু নেই?:
দুপুরবেলা দেখলাম সন্টুদা খেতে দিলো।'
ওদিকে রেখার আবার ফোন বেজে উঠল।
রেখা বলল 'দিদি ফোন বাজছে। ঠিক আছে ।পরে কথা বলব।'
চৈতির মা বলল ' ঠিক আছে ।আপনি ফোন ধরুন।'
ফোন ধরে রেখা বলল 'হ্যালো'।
অপরিচিত ব্যক্তি বললেন 'আমাকে চিনতে পারছো?'
রেখা বলল 'না তো ,আপনি কে?'
অপরিচিত ব্যক্তি আবার বললেন 'একদমই চিনতে পারছ না ।গলাটাও চেনা যাচ্ছে না? এত বছরে কি সব গলার আওয়াজটা ও ভুলে গেলে।'
রেখা মনে করার চেষ্টা করে বললো ' দেখুন ,আমার এমনি মন মেজাজ ভালো নেই ।আপনার এই ভনিতা মূলক কথা আমার একদম ভালো লাগছে না।কে হন আপনি ।আপনার পরিচয় দিন ,না হলে ফোনটা কেটে দিন।'
অপরিচিত ব্যক্তি বললেন 'সেদিন স্কুলে থেকে স্টেশনে গাড়িতে পৌঁছে দেয়া হলো।'
রেখা বলল 'ও ,এবার চিনতে পেরেছি। ফোন নম্বর কোথা থেকে জোগাড় করা হলো।'
অপরিচিত ব্যক্তি বলল 'ফোন নম্বর জোগাড় করা কি আর কঠিন কাজ?'
রেখা বলল ' কেমন আছো?'
সুব্রত বললো 'ভালো আছি। এখন আরো ভালো । মে
রেখা বলল 'কেন নতুন কিছু ঘটনা ঘটেছে?'
সুব্রত বলল 'এতদিন পর পুরনো বন্ধুকে দেখা ।একটা ভালো লাগার জায়গা তৈরি হয় বৈকি ।'
সুব্রত বলল 'একদিন আমার সাথে দেখা করো না ।অনেক কথা আছে।'
রেখা বলল 'আমার সঙ্গে আর কি কথা থাকবে ?দেখা করার ই বা কি আছে?'
সুব্রত বলল- 'তুমি আগের মতোই জেদি আছ।
আসলে আমি একতরফা তোমার দিকে বারবার এগিয়েছি।'
রেখা বলল 'আর এখন তো আরও দূরত্ব। সমুদ্র পার হয়ে কখনো আমার কাছে পৌঁছানো যাবে না।'
সুব্রত বলল 'যাবে না কিন্তু জল স্পর্শ করা যাবে?'
রেখা চুপ করে থাকলো।
সুব্রত বললো 'এত বছরেও আমি কিন্তু তোমাকে ভুলতে পারি নি। যদিও মনে হয় তুমি আমার কথা কিছুই মনে রাখো নি।'
,রেখা বলল ' কেন মনে রাখার মত কি কিছু ঘটনা ঘটেছিল?'
সুব্রত বলল 'না তোমার দিক থেকে হয়তো কিছু ঘটনা ঘটে নি কিন্তু কিছু কিছু বিশেষ মুহূর্ত মনে করতেই পারো.।'
রেখা বলল 'আমার অত সময় নেই।'
সুব্রত বলল জানি তুমি সুখের সংসার করছো আজকে শুধু তোমার সাথে কথা বলবো বলেই তোমাকে ফোন করি নি। একটা কাগজে তোমার লেখা পড়লাম ভীষণ ভালো লাগলো তোমাকে কনগ্রাচুলেশন্স জানাবো বলেই ফোনটা করেছি ।তোমার ভিতরে এই প্রতিভাটা ছিল ।কলেজ লাইফে দেখেছি এতদিন পরে তোমার সেই প্রতিভার স্ফুরণ ঘটছে বলে আরো বেশি খুশি হচ্ছে তুমি চালিয়ে যাও।
রেখা অবাক হয়ে বলল ' কি বেড়িয়েছে ?আমার
লেখা? এক নিঃশ্বাসে বলে গেল কোথায় ,কোন পত্রিকায়?'
সুব্রত বলল 'সিঁড়ি সাহিত্য' পত্রিকায় আর দিশা 'পত্রিকায়'।
রেখে আবার মনে মনে ভাবল একদিন তো রিম্পা দি লেখা গুলো নাড়াচাড়া করছিলাম বলছিল দাঁড়া দেখছি লেখাগুলো তো তুই পাঠাবি না ?আমি তার ব্যবস্থা করব।
এখন সত্যি সত্যি ছাপার অক্ষরে ,ভাবতেই যেন কেমন শিহরণ হচ্ছে ,আনন্দ হচ্ছে সঙ্গে।
রেখা বলল-কি লেখা বেরিয়েছে ?
'সুব্রত বলল 'প্রতীক্ষা 'আর 'বেলা শেষে ।'
সুব্রত বললো লেখাটা দারুণ লেগেছে। সে জন্য অনেক ফুলেল শুভেচ্ছা আর শুভকামনা থাকলো। আগামী দিন এভাবেই তোমার কলমে এগিয়ে চলুক।
রেখা বলল 'আমিও অনেক আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি ,আমার লেখা পড়ার জন্য। ভালো থেকো'
সুব্রত বললো হ্যাঁ, তুমিও ভালো থেকো আর তোমাকে যে প্রস্তাবটা দিলাম । একবার ভেবে দেখো ।যদি দেখা করতে পারো ,আমাকে জানিও।:'
রেখা একটু কেমন অন্যমনস্ক হয়ে গেল। সুব্রত মনেপ্রাণে রেখাকে চেয়েছিল কিন্তু রেখা সেই ডাকে সাড়া দিতে পারে নি ।তবে সুব্রতর জন্য একটা কৃতজ্ঞতাবোধ আছে ।
চাকরির প্রথম কল লেটার যেদিন আসে সেদিনই সুব্রত একটা চিঠি নিউ ইয়ার উপলক্ষে, সঙ্গে গ্রিটিংস কার্ড পাঠিয়েছিল। পিয়ন দিয়ে যাবার পর পরে দেখা গেছে আবার একটি চিঠি আসে এবং চিঠি খুলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছিল রেখা।
সেই দিনটি রেখা ভুলতে পারে না। তার কাছে স্মরণীয় দিন ।কিন্তু সুব্রতকে মনেপ্রাণে সে কখনই চায়নি।'
শেষে রেখা সুব্রতকে ' অসংখ্য ধন্যবাদ জানাল।
কলেজ লাইফে এই নিয়ে কম টানাপোড়েন হয় নি। অনার্সের ক্লাসগুলোর শেষে এজন্য অনেক হ্যারাসমেন্ট হতে হয়েছে সুব্রতর বন্ধুদের কাছ থেকে।
তবুও রেখা গররাজী । কিন্তু এতদিন পর সুব্রত তার যোগ্য মর্যাদায় আসীন হয়ে রেখাকে কি বার্তা দিতে চাইছে ?'
রেখা বলেছিল 'যোগ্য মর্যাদায় যেদিন আসতে পারবে সেদিন সুব্রত সঙ্গে কথা বলবে ।আজ কি সেই বার্তাই রেখাকে দিতে চাইছে? সুব্রত কি তাহলে রেখার প্রতি কৃতজ্ঞ ।রেখার জন্য সুব্রতর আজকে এই উন্নতি?'
এমন সময় আবার ফোন বেজে উঠল।
রেখা ফোন রিসিভ করে বলল 'হ্যালো'।
অপরপ্রান্ত থেকে বলল 'রেখা আমি রিম্পা দি বলছি।'
রেখা বলল 'হ্যাঁ বল রিম্পা দি।'
রিম্পাদি বললো ' কনগ্রাচুলেশন্স'।
রেখা বলল ' কি জন্য?'
রিম্পা দি বলল'তোর লেখা বেরিয়েছে পত্রিকায়। আমি ভীষন খুশী হয়েছি।'
রেখা বললো ' আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ ।তোমার জন্য এটা সম্ভব হল।'
রিম্পাদি বলল "আরে না ,না তোর লেখা সত্যি সুন্দর।'চলার পথেঅনেক শুভকামনা রইল।
ভালো থাকিস।'
ক্রমশ চলছে ...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much