৩০ নভেম্বর ২০২১

মমতা রায়চৌধুরী'র ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন" ৫৬

কান্ত মনেই লিখে চলেছেন লেখক।  তার নিত্যদিনের  আসা  যাওয়া ঘটনার কিছু স্মৃতি কিছু কথা  নিয়ে  কল্পনার মোচড়ে লিখছেন ধারাবাহিক উপন্যাস "টানাপোড়েন  চলবে...





টানাপোড়েন (৫৬)
মানবিকতা

মীনাক্ষী কাকিমার রণরঙ্গিনী মূর্তি দেখে রেখা আশ্চর্য হয়ে গেছে। কাকিমার ভেতরে রেখা শুধুই অপার স্নেহ ভালোবাসা আর ক্ষমার এক মহা সমুদ্র দেখতে পেয়েছে ,সেখানে যে প্রতিবাদী, মারমুখী মূর্তি লুকিয়ে থাকতে পারে ?আজকের লালদার  হাত থেকে বুলু জেঠিমাকে বাঁচানোর এরকম সহৃদয়তার, মানবিকতা র প্রকাশ ।সত্যিই প্রশংসনীয়।
কি আশ্চর্যের ব্যাপার কাকিমা বুলু জেঠিমাকে যা বলছে তাই শুনছে। একটু খাবার নিয়ে কাকিমা বলু জেঠিমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে কাছে গিয়ে বললেন''আমার লক্ষী দিদি 'এই খাবারটুকু একটু খেয়ে নাও।'বুলু জেঠিমা কি করুন দৃষ্টিতে কাকিমার দিকে তাকালেন ।তারপর মাথা নেড়ে না করতে লাগলেন।কাকিমা বললেন' কেন তোমার খিদে পায় নি?'বুলু জেঠিমা মাথা নিচু করে থাকলেন।
কাকিমা আবার বললেন  'তোমার খিদে পেয়েছে একটু খাও।'বুলু জেঠিমার ভাব ভঙ্গিতে মনে হল খিদে পেয়েছে ।কিন্তু সাহস পাচ্ছেন না খেতে।একবার এদিক একবার ওদিক তাকাচ্ছেন।
রেখা ভাবল 'তবে কি বলু জেঠিমাকে এভাবে না খাইয়ে রাখা হয় এবং তাকে পাগল করে দেবার একটা প্রচেষ্টা চলছে।'
কাকিমাও নাছোড়বান্দা কাকিমা বললেন ' তুমি খাও কেউ কিচ্ছু বলবে না। আমরা আছি।'
ওদিকে লালদা আর লালদার বউ দু'জনার মুখটা দেখলে মনে হচ্ছে তারা খুবই বিরক্ত। তারা মোটেই সন্তুষ্টি লাভ করছে না।ওদেরকে কাকিমা থোরাই তোয়াক্কা করছে।কাকিমা নিজে হাতে করে বুলু জেঠিমাকে খাওয়াতে লাগলেন।খাওয়ার শেষে বুলু জেঠিমা কাকিমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।প্রতিবেশীরা গেটের বাইরে থেকে বলছে  'দেখলেন দিদি ,বা কেউ বলছেন দেখলেন বৌদি ।মানুষটা কতটা শান্ত। কিভাবে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়তে চাইছে। ,'এখন তো মনে হচ্ছে এসব কিছু এরা নিজেরাই বানিয়েছে। এজন্যেই এরা কাউকে বাড়ির ভেতরে ঢুকতে দেয় না। বাড়ির সমস্ত কিছু জানা হয়ে যাবে বলে।
কাকিমা বললেন  'এই বাড়ির সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আর আজকের প্রজন্মের এরা কি জানে? আমরা প্রত্যেকে এক হয়ে এর প্রতিবাদে সামিল হব। দেখি কি করে ছেলে আর ছেলের বউ?'
প্রতিবেশীদের মধ্যে মধু কাকা আর মালতি জেঠিমা বললেন  'একদম ঠিক এর একটা হেস্তনেস্ত হওয়া দরকার।
'কাকিমা বললেন' আপনারা সবাই আমার সঙ্গে আছেন তো?'সকল প্রতিবেশী হাত তুলে বললেন 'আমরা আছি ।আমরা এই গ্রামে এরকম অন্যায় কাজ হতে দেব না।'
কাকিমা বললেন 'আপনাদের কাছ থেকে আমার এটুকুই চাওয়ার ছিল।'এরপর কাকিমা বললেন  লাল দাদাকে উদ্দেশ্য করে 'লাল কোন ডাক্তারকে দিয়ে দিদির চিকিৎসা করাচ্ছো?'
লালদা যেন শুনেও না শোনার ভান করছে।
কাকিমা আবার চিৎকার করে জিজ্ঞেস করলেন ' লাল ,লাল ।আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি। তার উত্তর দাও।কোন ডাক্তারকে দেখাচ্ছ?'
লাল বললো 'ডাক্তার ঘোষ কে'।
কাকিমা বললেন 'ডাক্তার ঘোষ?কেন তোমরা তো বললে যে দিদির মাথায় সমস্যা হয়েছে ।তাহলে ডাক্তার ঘোষকে দেখাচ্ছ কেন?উনি কি কি ওষুধ দিয়েছেন সে সবগুলো আমাদের কাছে ফেলো।'
লাল বলল 'ইদানিং ওষুধ বন্ধ আছে কাকিমা?'
কাকিমা বললেন ' তাহলে আগের ওষুধগুলো কি খাইয়েছো ?তার তো প্রেসক্রিপশনে আছে নিশ্চয়ই ?সেগুলো কোথায়?'
লাল এর বউ বলল  'কাকিমা ওষুধের প্রেসক্রিপশন মা ছিঁড়ে ফেলেছে।'
কাকিমা সব বুঝতে পারলেন এর ভেতরে একটা যোগ সাজস আছে।কাকিমা বললেন ' ঠিক আছে ।তুমি এবার দিদিকে যে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে আমাকে সঙ্গে নেবে'।
লাল চুপ করে রইলো।
কাকিমা আবার বললেন 'শুনতে পাচ্ছ তো? এবার বলো দিদির কোন ঘরটা শোয়?'
লালের বৌ পরী বলল 'শেষের ঘরটায়।'
কাকিমা অবাক হয়ে বললেন ' সে কি কথা !বুলুদির ঘর তো ওটা নয়?'পরী বলল 'এখন মাকে ওখানেই রাখা হয়।'
কাকিমা  বললেন  'কেন ডাক্তার ওখানে রাখতে বলেছেন?'পরী চুপ করে থেকে আমতা আমতা করে বলল ' না মানে ,মায়ের এরকম অবস্থা...।
কাকিমা বললেন  'বৌমা তোমরা তো এবাড়িতে   ক'দিন হলো এসেছো ?আমাদের সাথে এই পরিবারের একটা নাড়ীর সম্পর্ক।'এতক্ষণ পর লাল বললো  'আমরা জানি কাকিমা।'
কাকিমা বললেন ' সবই যখন জান, তাহলে এভাবে আর বলূদির সঙ্গে ব্যাবহারটা করো না। আমাদের খুব খারাপ লাগে।'পরী বলল  'কাকিমা সব সময় আপনি আমাদের দোষারোপ করে যাচ্ছেন ।আমরা কি করেছি?'কাকিমা পরীর দিকে এমনভাবে তাকালেন তাতে মনে হলো যে তিনি চোখেতেই মারণ বানটা মারলেন।কাকিমা বললেন ''কথাগুলো ঠিক করে ব'লো বৌমা।'
রেখা কাকিমাকে যত দেখছে, তত অবাক হয়ে যাচ্ছে সহজ-সরল ,সাদাসিধে,আমার কাকিমারএইরূপ।'রেখা মনে মনে বলল 'কাকিমা ইউ আর গ্রেট।'পরী বলল'আসলে কাকিমা, মায়ের ওই দিকটায় সুবিধে ওই জন্যই?'.
কাকিমা বললেন' আর বুলুদির ঘরটায় বুঝি তোমরা আছো?'পরী, লাল মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।
কাকিমা বললেন 'আচ্ছা ,একটা কথা বল তো নীলকে তোমরা জানিয়েছ সব ।'
লাল বললো 'দাদাকে জানাবো সেরকম তো ঠিকানা আমাদের কাছে নেই ।'
কাকিমা বললেন 'সে  কী ?কোনো ঠিকানা তোমাদের দেয় নি?'আবারও লাল মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইলো।ষকাকিমা বললেন ঠিক আছে লাল এবার একটা কাজ করো তো তোমরা। আমার মনে হয় বুলুদিকে তার ঘর টাতে রাখাই ভালো ।যদি সত্যিই তার মাথার কোন সমস্যা হয়ে থাকে, নিজের ঘরটাতে অন্তত শান্তিতে কিছুদিন বাস করুক কেমন?'লাল ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালো।।কাকিমা বললেন তা বেশ । মধুরা তাহলে আমরা আজকে ওখানেই শুয়ে দি কেমন?পরী বলল  'আজকে শোয়াবেন কাকিমা? সব বিছানাপত্র মায়ের ওখানে আছে।(হাত দিয়ে দেখালো)
কাকিমা বললেন 'তো কি হয়েছে ।তোমাদের ঘরে বুঝি বিছানাপত্র নেই?পরী বললো না মানে..।
কাকিমা বললেন ' ও বুঝতে পেরেছি ,।ওই বিছানায় বুলুদিকে শোয়ানো যাবে না তাই তো?'পরী তখনও চুপ করে দাঁড়িয়ে ‌রইলো।কাকিমা বললেন  'চিন্তা নেই ।তোমাদের বিছানাটা নামিয়ে নাও ।আমরা বাকি কয়েকজন লোককে দিয়ে বুলুদির বিছানা'টাই  নিয়ে নিচ্ছি। তাহলে তো কোনো অসুবিধা নেই?পরী দেখল বেকায়দায় পড়ে গেছে তখন বলল ঠিক আছে কাকিমা যেটা ভালো বোঝেন।কাকিমা বললেন  'এই তো বাবা এই যে কথাগুলো বললে খুব ভালো লাগলো ।এভাবেই কথা বলবে বড়দের সাথে কেমন?''
রেখা ভাবল  'কাকিমা কি করছে ?একের পর এক রান করে যাচ্ছে অফ কাকিমা তুমিতো সেঞ্চুরি করে ফেলবে।এবার কাকিমা বাইরের মধু , পরান কাকা আর আমাদের ভোলা কাকাকে ডাকলেন।
মধু ,পরান ,ভোলা তোমরা . একটু এদিকে এসো তো বুলুদির স্টোর রুম থেকে যা বিছানাপত্র আছে একটু একটু এনে দাওনা?মধু পরান এবং ভোলা সঙ্গে সঙ্গে বলল " হ্যাঁ ,এই বৌদি যাচ্ছি আমরা নিয়ে আসছি।
মধু কাকা পরান কাকা আর ভোলা কাকা সবাই মিলে সেই বিছানাপত্র নিয়ে আসলো বুলু জেঠিমার ঘরে।
কাকিমা বললেন এই বিছানায় কি নোংরা হয়ে আছে বিছানায় শোয়া যাবেনা ভোলা এগুলো রোদ খাওয়াতে হবে। রাখো রাখো ওখানেই রাখো।"
কাকিমা এবার লাল পরীর দিকে তাকিয়ে বললেন "আর কোনো বিছানা নেই।"লাল পরীর দিকে তাকিয়ে ইশারায় কি যেন বলল।পরী বলল  'হ্যাঁ আছে আসলে ওই বিছানা তো লোকজন আসলে লাগবে?
কাকিমা বললেন হ্যাঁগো বৌমা কথা বলতে ঠোঁটে একটুও বাধে না বলো তোমার জীবন সবসময় সরস্বতী মা ভর করে আছেন তাইনা?
পরী বলল কেন কাকিমা আমি কি এমন বলেছি?
সেইতো কি আর এমন বলেছ কবে কবে লোক আসবে তার জন্য বিছানাপত্র তুমি যত্ন করে রেখেছো আর বাড়ির যে মানুষটি গৃহলক্ষী তার বিছানা নেই সেদিকে তোমার ধ্যান নেই।
পরী বলল না মানে ওই বিছানায় চালককে শুতে দেয়া যাবে?কাকিমা বললেন কেন গো এমন কি হয়েছে যে বুলু দিকে ছোঁয়া পর্যন্ত যাবে না তার বিছানাপত্র স্পর্শ করা যাবে না কি হয়েছে গো?পরী চুপ করে রইলো।কি মাল আলীর দিকে তাকিয়ে বলল লাল কোন ঘরে বিছানা আছে বল এদের দিয়ে আনিয়ে নিই।
লাল অপরের ঘরটাকে ইঙ্গিত করল।
পরী লাল এর দিকে কটমট করে তাকিয়ে তাকালো আর বললো কাকি মা ওই ঘরটা আমার বাবার বাড়ির লোকজন আসলে ওই বিছানাপত্র লাগে ওই বিছানাপত্র তো আমি দিতে পারবো না।
কাকিমা বললেন  'তা বেশ আর আর কোন ঘরে বিছানা আছে বলো এ বাড়িতে  তো রুম অনেকগুলো।
পড়ি তখন ও চুপ।লাল বলল কাকিমা তাহলে পাশের ঘরটা থেকে বিছানায় গুলো নিতে পারো।
কাকিমা বললেন ঠিক আছে ভোলা মধু পরান তোমরা যাও বিছানাটা একটু নিয়ে সরে বিছানাটা বাইরে একটা সাইট করে রাখো কালকে ভোলা এসে রোদে দেবে। ভোলা ,মধু, পরান বলল 'চল ,চল ,চল । যাই গিয়ে নিয়ে আসি।'কাকিমা লাল আর পরীর দিকে তাকিয়ে বললেন 'দেখো বৌমা ।কালকে ভোলাকে পাঠাবো। ওকে যেন আবার কোন বাঁধা দিও না ।(জনতার দিকে তাকিয়ে)এই যে এরা সবাই কিন্তু সাক্ষী রইল কেমন ।
বাইরের সব লোকজন বলল হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা সব শুনে নিলাম।
কাকা বলেন তা বেশ। এর মধ্যে মধু পরান ভোলা বিছানাপত্র নিয়ে আসলো। বলল
বৌদি কোথায় রাখবো।
মা বললেন রাখবে কি গো ভালো করে পেতে দাও।
মধু পরান ভোলা সকলেই বলে ঠিক আছে।
কাকিমা বললেন এবার মোদিকে নিয়ে গিয়ে শোয়াবো।ইতিমধ্যে বুলু জেঠিমার একটু ঘুম ঘুম এসেছে কি শান্ত স্নিগ্ধ লাগছে বুলু জেঠিমাকে কাকিমার কোলে যেন একটা আলাদা শান্তির আশ্রয় পেয়েছে ন।বুলু জেঠিমাকে ধরে শোয়ানো হলো বুলু জেঠিমা তখনো কাকিমার আঁচলটা ধরে। বুলু জেঠিমা কেমন অসহায় ভাবে একবার কাকিমার দিকে তাকালেন।কাকিমা বুলু জেঠিমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন কোন ভয় নেই দিদি আমরা সবাই তোমার পাশে আছি।অনেকদিন পর বুলু জেঠিমার ঘর দেখে কাকিমা চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো জেঠিমা এত সৌখিন ছিলেন তার ঘরে সমস্তকিছুই চেঞ্জ করে দেয়া হয়েছে।এর মধ্যেই ফোন বেজে উঠলো দুর্গে দুর্গে দুর্গতিনাশিনী মহিষাসুরমর্দিনী।
কাকিমা বললেন উনি তোর ফোন বাজছে মা ধর তো?
উনি বললেন হ্যাঁ এইতো ধরছি।রেখা ফোনটা বের করে রিসিভ করে বলল ' হ্যালো'।ওদিক থেকে কাকার স্বর ভেসে আসলো বললেন 'কি রে ননী?'
রেখা বলল হ্যাঁ কাকা কি হয়েছে?
কাকা বললেন না কিছু হয়নি সন্ধ্যে হয়ে গেলো তোরা কেউ এখনো ফিরলি না কতদূরে গেছিস?
রেখা এবার কাকিমার মুখের দিকে তাকাল আর ইশারায় বললো' কি বলবে?'কাকিমা ইশারায় বুঝিয়ে দিলো এক্ষুণি যাবে।রেখা বলল  'এই তো এক্ষুনি যাচ্ছি।'কাকা বলল  'ঠিক আছে।'কাকিমা লাল আর পরীর দিকে তাকিয়ে বললেন' দেখো কত শান্তভাবে শুয়ে আছে দিদি। তোমরা ওর দিকে একটু খেয়াল রেখো দেখবে এমনি সুস্থ হয়ে যাবে।এবার থেকে আমরা প্রতিদিন পালা করে কেউ না কেউ এসে দেখে যাবো ঠিক আছে ।তাতে তোমাদের কোন সমস্যা নেই তো?মধু কাকা বলে উঠলো সমস্যা থাকলে শুনবে কে?কাকিমা বললেন' তোমরা শুনে নিলে তো বৌমা ?তাহলে প্রত্যেকে একবার করে এবার খবর নিতে আসবে ঠিক আছে।কাকিমা বললেন চলো চলো এবার আমরা সবাই আসি।সবাই গেট দিয়ে বেরোনোর সময় কাকিমার নামে ধন্য ধন্য করতে লাগলেন।পরী  বলল নিজের ঘর সামলাতে পারেন না পরের ঘরে..।কথাটা তখনও জীবে আটকে আছে কাকিমা পেছনে ফিরে পরীর দিকে এমন ভাবে তাকালেন তাতে আর কথা বলার কোনো সাহস হলো না।এরপর ধীরে ধীরে বাড়ির দিকে এগিয়ে চলল রেখা এবং অন্যান্যরা।কাকিমা রেখাকে বললেন 'হ্যাঁ রে ননী কিছু মনে করিস না ।আজকে তোকে ঘোরানো গেল না।রেখা বলুন না কাকিমা গ্রাম তো আমি ঘুরতে পারবো অন্য দিন যখন আবার আসব কিন্তু বুলু জেঠিমার যেটুকু পাওয়ার দরকার ছিল আজকের দিনে সেই টুকুর ব্যবস্থা করে দিয়ে তুমি যে কি ভালো কাজ করলে ,কাকিমা কি বলে বোঝাবো।'কাকিমা বললেন ' হ্যাঁ রে মনের ভিতরে খুব কষ্ট হয় জানিস তো কাছের মানুষদের এরকম কষ্ট পেতে দেখলে মেনে নিতে পারলাম না ।হয়তো কিছু আপত্তিকর কথা বলেছি না?
রেখা বললো  'না কোনো আপত্তিকর কথা বল নি 'একদম যথার্থ কাজ করেছো।'
রেখা কাকিমাকে জড়িয়ে ধরে বলল' কাকিমা আমি গর্ববোধ করছি যে তুমি আমার কাকিমা ।তোমার ভেতরে এইযে মনুষ্যত্ববোধ ,মানবিকতা এখনো জেগে আছে ।এইরকম একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তুমি নিজেকে ধরে রেখেছো আজ তো আমরা জানি দাদা বা বোন তোমাদের সাথে কি ব্যবহারটা করেতারপরেও নিজেকে এভাবে ধরে রেখেছো অন্যের মুখাপেক্ষী করে না রেখে সব সময় নিজের প্রচেষ্টায় এখনো তোমাদের যে আত্মবিশ্বাস এর জন্য স্যালুট জানাই ।তবে কাকিমা একটা কথাই বলবো যদি কখনো কোনো কিছুর জন্য তোমাদের আমার প্রয়োজন হয় আমাকে অবশ্যই জানিও। আমি কিন্তু তোমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব।কাকিমা বললেন রেখাকে কাছে টেনে ' হ্যাঁ রে ননী ,আমি কি আর জানি না তোর মানসিকতা কেমন? তুই আমাকে বলে বোঝাবি মা?'কাকিমা আরো বললেন  'ননী, পারলে সারা জীবন অসহায় মানুষ ,শুধু অসহায় মানুষ নয়, জীবজন্তুর পাশেও এভাবেই পাশে থাকিস ।মনুষ্যত্বের অপমৃত্যু হতে দিস না রে মা ,ঈশ্বর তোর ভালো করুন।'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much