দেহ
পড়ন্ত বিকেলে রৌদ্রের বুকে
ঘুমিয়ে পড়িছে দেহ,
অনামিকা নড়ে, স্মৃতি মনে পড়ে-
বাঁচাবে আমারে কেহ?
দৃশ্যপট
বৃদ্ধ আসিলো জমির অফিসে -
সাথে আছে ওয়ারিশ,
ভাগ বাটোয়ারা, হয়ে গেছে সব,
স্বাক্ষরে কুর্নিশ।
সকলের মুখে প্রাপ্তির হাসি -
আশার মশাল জ্বলে,
বৃদ্ধের মুখে বিদায়ের গান -
হৃদয়ে স্মৃতির থলে।
জমি আপনার? নাম কি যে তবে?
দিয়াছেন সজ্ঞানে?
সাব রেজিস্ট্রার - পরখ করিতে,
তাকায় তাহার পানে।
আরে সাহেব -
জমিতো আমার , ভাবিতে ভাবিতে -
জীবন করেছি পার ;
জীবনের কূলে এসে দেখি আজ -
নেই সাথে কিছু আর।
স্বাক্ষর হলো, টিপসই ও দিলো,
লুকায় চোখের জ্বলে,
"আজ থেকে আর, রইলো না তার -
কিছুই নিজের বলে। "
যাক বাঁচা গেলো, মনে মনে ভাবে -
তুষ্টিতে থাক সবে,
এখন তো আর বলবেনা কেউ -
"বাবা" যে মরবে কবে?
বছর দুয়েক পর -
বাবার হইলো ভীষন অসুখ -
সারিবেনা কোনও ভাবে ;
ডাক্তার বলে, বিদেশ গমনে -
বোধ হয় কাজ হবে।
এই বার সবে, চোখাচোখি করে,
এই ক্ষনে কি যে করে !
"তাহার তো ঢের হয়েছে বয়স -
এমনিতে যাবে মরে। "
"বিদেশ যাইতে প্রচুর খরচ -
জমি বেচে দেব পুরো?
কি লাভ আছে! যতদিন বাঁচে -
বাড়িতে থাকুক বুড়ো। "
অবশেষে বাবা বুঝিতে পারিলো -
চোখে ক্লান্তির ছোঁয়া,
তবু দুই হাত, তুলে সারা রাত ;
করিলো সবারে দোয়া।
মুয়াজ্জিনের মধুর ধ্বনিতে
প্রতিদিন বাবা জাগে,
আজ তো জাগেনি বাবার দেহটা,
নিথর হয়েছে আাগে।
গোধুলিতে এসে হিসেব মিলায় -
দুপুরের রোদে কত কষ্ট ;
এখানেই জিতে গেলো বসুধার রং,
শেষমেষ আঁধার প্রকোষ্ঠ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much