১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

গোলাম কিবরিয়া ( শরীফ)


দেহ


পড়ন্ত বিকেলে রৌদ্রের বুকে 

ঘুমিয়ে পড়িছে দেহ,

অনামিকা নড়ে, স্মৃতি মনে পড়ে-

বাঁচাবে আমারে কেহ? 


দৃশ্যপট 


বৃদ্ধ আসিলো জমির অফিসে -

সাথে আছে ওয়ারিশ, 

ভাগ বাটোয়ারা, হয়ে গেছে সব,

স্বাক্ষরে কুর্নিশ। 


সকলের মুখে প্রাপ্তির হাসি -

আশার মশাল জ্বলে, 

বৃদ্ধের মুখে বিদায়ের গান -

হৃদয়ে স্মৃতির থলে। 


জমি আপনার? নাম কি যে তবে? 

দিয়াছেন সজ্ঞানে? 

সাব রেজিস্ট্রার - পরখ করিতে, 

তাকায় তাহার পানে। 


আরে সাহেব -


জমিতো আমার , ভাবিতে ভাবিতে -

জীবন করেছি পার ;

জীবনের কূলে এসে দেখি আজ -

নেই সাথে কিছু আর। 


স্বাক্ষর হলো, টিপসই ও দিলো, 

লুকায় চোখের জ্বলে, 

"আজ থেকে আর, রইলো না তার  -

কিছুই নিজের বলে। "


যাক বাঁচা গেলো, মনে মনে ভাবে -

তুষ্টিতে থাক সবে, 

এখন তো আর বলবেনা কেউ -

"বাবা" যে মরবে কবে? 


বছর দুয়েক পর -


বাবার হইলো ভীষন অসুখ -

সারিবেনা কোনও ভাবে ;

ডাক্তার বলে, বিদেশ গমনে -

বোধ হয় কাজ হবে। 


এই বার সবে, চোখাচোখি করে, 

এই ক্ষনে কি যে করে ! 

"তাহার তো ঢের হয়েছে বয়স -

এমনিতে যাবে মরে। "


"বিদেশ যাইতে প্রচুর খরচ -

জমি বেচে দেব পুরো? 

কি লাভ আছে! যতদিন বাঁচে -

বাড়িতে থাকুক বুড়ো। "


অবশেষে বাবা বুঝিতে পারিলো -

চোখে  ক্লান্তির ছোঁয়া, 

তবু দুই হাত, তুলে সারা রাত ;

করিলো সবারে দোয়া। 


মুয়াজ্জিনের  মধুর ধ্বনিতে 

প্রতিদিন বাবা জাগে, 

আজ তো জাগেনি বাবার দেহটা, 

নিথর হয়েছে আাগে। 


গোধুলিতে এসে  হিসেব  মিলায় -

দুপুরের রোদে কত কষ্ট ;

এখানেই জিতে গেলো বসুধার রং, 

শেষমেষ আঁধার প্রকোষ্ঠ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much