২৭ মার্চ ২০২২

কবি শহিদ মিয়া বাহার এর কবিতা "কবির কারাদন্ড"




কবির কারাদন্ড
শহিদ মিয়া বাহার

আপনি কবি ?
কবিতা লিখেন ? 
তাহলে আপনি কিছুই করেন না
না উৎপাদন, না উন্নয়ন
 রাত্রি খনন করে কেবল কবিতার শৈল-তরঙ্গে ডুবিয়ে রাখেন শব্দকূপের জল , তীব্র বোধের প্রনালীতে
কোন উলম্ব ভুমিকা নেই আপনার জিডিপির ডাটা শিট জুড়ে;
স্বত:সিদ্ধ অথবা প্রামানিক
কোন শহর কিংবা রাষ্ট্রের !
এক শুন‍্য থেকে অন‍্য এক শুন‍্যের গোলকে 
আটকে আছে আপনার নিজস্ব জিডিপি !

স্ফিত লিষ্ট নিয়ে আপনি বাজারে যান
ওখানে আগুনের ভস্ম ওড়ে
ওড়ে পরিশ্রম, বাষ্পীভূত  ঘামের সাথে !
ফিরে আসেন অর্ধভরাট থলের নমিত হাহাকার নিয়ে  
বগলের পেশিতে গোঙ্গানো অবসাদ
আপনার যে যুবক সন্তান একদিন জড়োয়া দু:খগুলো ছুঁড়ে দেয়েছিল কর্ণফুলির ঘাটে  
তার খোঁচা খোঁচা দাড়ির ভাঁজে এখন পুড়ছে
শুকিয়ে যাওয়া দীর্ঘশ্বাসের মাঠ !
কারন আপনি কবি
আপনি কবিতা লেখেন!

কবি-আপনি খুনি
কলমের ট্রিগার টিপে টিপে  রাত ভর খুন করেন স্ত্রীর চন্দ্রতোয়া আফ্রোদিতি আকাশ
দিবালোকে পুরনো আলমিরার জমানো অলংকার,   
কাঁঠালিচাপার ঘ্রাণ
আর লাউডুগির মত বেড়ে ওঠা ফ্রেমবাধা তেল-নুনের পাললিক সংসার !
আপনার কারাদন্ড আপনিই লিখেন কবি
যাবতজ্জ্বীবন কবিতার শেলে শেলে নিমগ্ন কারাগার 
কারন আপনি কবি !

দেয়ালের পলেস্তরায় পারমানেন্ট উপহাস সিলিংফ‍্যানের মত ঝুলে আছে 
এবং ঝুলে আছে আপনার জামার আস্তিনে
তবু আপনি কবিতা লেখেন
কারন আপনি কবি  
কবিদের উপহাস মানতে নেই!

ধূলোর স্তর থেকে নেমে আসে শিশার প্রলেপ 
রাতের নিকোটিনে ঝলসে গ‍্যাছে ফুসফুস,
ধমণীতে রক্তের বাঁধ, হৃদপিন্ডের বিদ্রোহ, আড়শোলা খেয়ে নিচ্ছে থ‍্যালাসেমিয়া শরীর, ধ‍্যানিত মগজ!
কোন এয়ার এম্বুলেন্স নেই অবশিষ্ট  আপনার প্রতীক্ষায় 
সবগুলো রানওয়ে ভিআইপিদের দখলে
কোন হাসপাতাল নেই, ডাক্তার নেই, ব‍্যাস্ত বৈমানিক নেই,কারো দায়ভার নেই আপনাকে সারাবার
কারন আপনি কবি !

কষ্টের পাহাড়ে পাথর চেপে আপনি মরে যাচ্ছেন কবি !
মরে যান---
কবিদের এভাবেই মরে যেতে হয়--
কারন আপনি কবিতা লিখেন 
আর কিছুই করেন না
না উৎপাদন,না উন্নয়ন
 কিছুই না
কিচ্ছু না!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much