২১ ডিসেম্বর ২০২১

 শান্তা কামালী ৪ তম পর্ব





বনফুল
শান্তা কামালী
( ৪ তম পর্ব )




পলাশের আব্বু আম্মুদের নিয়ে  গাড়ি চলে গেল। তাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে গাড়ী জুঁই এর আব্বুর কাছে গিয়ে তার প্রাপ্য নিয়ে বিদায় হলো। 

  ততক্ষণে জুঁইরা বাসায় পৌঁছে গেছে। জুঁই রুমে ঢুকেই সোফায় বসতে যাওয়ার আগেই মাথা ঘুরে পরে গেল। জুঁইয়ের আব্বু আম্মু দুজনেই ধরাধরি করে জুঁইকে সোফায় তুলে বসালেন,ময়না দৌড়ে গিয়ে এক গ্লাস পানি নিয়ে এলো। মনোয়ারা বেগম বললেন জুঁই পানিটুকু খাও অনেকটা ভালো লাগবে , জুঁই আস্তে আস্তে পানিটা খেলো। জুঁইয়ের এই অবস্থা দেখে ওয়াজেদ সাহেব ও মনোয়ারা বেগম খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন! জুঁই বাবা-মার এই দুঃশ্চিন্তা দেখে বললো অনেক দিন বাসাবন্দী হয়ে আছিতো, অনেক জার্নি হয়ে গেছে তাই হয়তো মাথাটা ঘুরে গেল। বাবা-মাকে স্বাভাবিক করার জন্য ছোট বেলার গল্প জুড়ে দিলেন, জুঁই বললো আব্বু তোমার মনে আছে আমি যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন আমার জ্বর হয়েছিল। পরদিন দুপুর বেলা আমার জ্বর বেড়ে গেলে আম্মু তোমাকে ফোন  করলে তুমি পাগলের মতো এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না শুরু করেছিলে। বিকালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলে, ডাক্তার ভালো করে চেকআপ করে বলেছিলেন, কিচ্ছু হয়নি সামান্য জ্বর দুই দিন ঔষধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে।
 বাবা-মা মেয়ে হাহাহা হাহাহা হাহাহা হেসে উঠলো। ততক্ষণে ময়না চা নাস্তা এনে টি-টেবিলে রাখলো, তিনজনে মিলে চা খাচ্ছে। জুঁই কোনো নাস্তা নেয়নি দেখে জুঁইএর আম্মু বললো, জুঁই তুমি কিছু নিচ্ছো না যে!
জুঁই বললো আমি কিছুক্ষণ পরে ডিনার করে ঘুমানোর চেষ্টা করবো....। এই বলে টিভি অন করে ষ্টারপ্লাসে নাটক দেখতে লাগলো। ঐদিকে পলাশের বাসায় ও মনখারাপের মেলা বসেছে, তিথি তা বুঝতে পেরে সবার জন্য চা নাস্তা নিয়ে এলো। চায়ের পর্ব শেষ হতেই অহনা পলাশের আম্মুকে বললো খালাম্মা এতো চিন্তা করছেন কেন?  মাত্র তো দুই আড়াই বছর, দেখতে দেখতে চলে যাবে।আমরাও তো আছি।  সৈকতও অহননার সাথে গলা মিলিয়ে বললো খালাম্মা আমি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ঢাকায় শিফট্ করছি। সৈকত বললো খালাম্মা আমি অহনা কে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসি? শাহারা খাতুন বললেন যাও বাবা রাত অনেক হয়েছে... ওকে একা ছাড়া ঠিক হবে না,তুমি ওকে বাসায় ছেড়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি চলে এসো,সাবধানে যাও।

রাত দশটা বাজতেই ময়না টেবিলে খাবার পরিবেশন করছে, জুঁই তাড়াহুড়ো করে অল্প কিছু খেয়ে মাকে বললো 
আম্মু আমার খুব ক্লান্তি লাগছে, আমি রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করি, মনোয়ারা বেগম বললেন যাও মা।



চলবে....

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much