প্রবন্ধ
নব্বইয়ের অনুভূতি
মো: আবদুল্লাহ আল মামুন রুনু
লোকে বলে প্রথম সবকিছুই স্পেশাল। আমার জীবনে অনেকগুলো প্রথম আছে নব্বই দশকে।
আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পরিচিত গণ্ডির বাইরেও যে কারো জন্য বুকের ভেতরটা জ্বালা করে সেই প্রথম উপলব্ধি করা।
নিঃশর্ত ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার অস্তিত্ব সম্পর্কেও প্রথম অবগত হওয়া।
জীবনে প্রথমবার রিল লাইফের কারো জন্য চরম কষ্টে চিৎকার করে কাঁদা (কোথাও কেউ নেই'তে বাকের ভাইয়ের ফাঁসি)।
জীবনে প্রথম রিল লাইফের কারো আনন্দে অভিভূত হয়ে খুশির কান্না (দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে'র শেষ দৃশ্য)।
প্রথম প্রেমপত্র লেখা!
আসলে তখনকার সবকিছুর মধ্যে আমি মিশে আছি। সত্যিকার আমি তাই ঘুরে ফিরে শুধু সেই সময়েই ফিরে যাই। কবি হলে বলতাম "আমি বারবার নিজেরে হারায়ে খুঁজি সেথায়""!
নব্বই দশকে ‘সেরাম’, ‘প্যারা’, ‘বিএফ’, ‘ব্রেক আপ’, ‘ক্রাশ খাওয়া’ এসব শব্দ ব্যবহৃত হতো না। তবু হৃদয়ের কথা সুন্দর করে বলা হতো।
সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না কিন্তু সম্পর্কগুলোতে অন্য ধরনের গভীরতা ছিল।
সেলফি তোলা হতো না অথচ ক্যামেরার ওই ৩৬টি ছবি হাতে পাওয়ার আনন্দ অপরিসীম মনে হতো।
পকেটে বা ব্যাগে আইফোন ছিল না তারপরেও মনে সুখ ছিল।
সেই সময়ের মানুষগুলোর মানসিকতা, আচার–আচরণ, জীবন–যাপন পদ্ধতি, হাসি–আনন্দ, দুঃখ–কষ্ট সবকিছুই বড় বেশি আপন। তখনকার নাটক–সিনেমা, নায়ক–নায়িকা, গল্প–কবিতা, গান–নাচ সবকিছু বড় বেশি সুন্দর, বড় বেশি প্রিয়। তখন গান শুনে গায়ে কাঁটা দিত। সিনেমা দেখে বই পড়ে অঝোরে চোখের পানি পড়ত।
এখন আর কোনো কিছুতেই সেই মুগ্ধতা কাজ করে না। সেই আবেগ আসে না। সবার মধ্যে অদ্ভুত এক অস্থিরতা। সবকিছু অতি দ্রুত পাল্টাচ্ছে। অনুভূতিগুলো যান্ত্রিক হয়ে গেছে।
সময়ের প্রলেপ মুছে দিয়েছে বহু কিছু। শুধু রয়ে গেছে সেই সময়ের অসাধারণ কিছু স্মৃতি। আজো প্রাণকে আলোড়িত করে তারা। করে হৃদয়কে আলোকিত। এক অসাধারণ মহিমায়, এক মায়াবী মাধুর্যে।
আহা নব্বই দশক, আহা ভালোবাসা!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much