২১ জুলাই ২০২২

সিগমা আউয়াল এর গল্প " মেঘের কোলে পাহাড়" পর্ব ১





মেঘের কোলে পাহাড়  পর্ব (১


সিগমা আউয়াল 


        পাহাড়ের মুখে মেঘ জমে থাকে ।বেশ খানিকটা উপরে দিকে । যত উপরের দিকে ওঠা যায় ততো তুলোতুলো মেঘগুলো জমাট বেঁধে  ভাসতে থাকে ।অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকে মীলা ।মনে হচ্ছে মেঘের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে । আঁকাবাঁকা পাহাড়ী রাস্তা ধরে উপরে দিকে গাড়ি উঠছে । নীচের দিকে তাকালে সবুজের সমারোহ  । মেঘ গুলো মাঝে মধ্যে ভাসতে ভাসতে আটকে যাচ্ছে  গাছের সাথে । 
   এক পশলা বৃষ্টি হয় সেখানে, অথচ নীচে  কোন বৃষ্টি নেই । মেঘ - বৃষ্টির এই অদ্ভূত খেলা দেখে মীলা রোমাঞ্জিত হয়। পাশে  পাহাড়ের গায় বেয়ে কোথাও কোথাও ঝর্ণা নামছে । খাঁশিয়া বউ - মেয়েরা পানি নিচ্ছে দৈনন্দিন কাজে ।  পাথর ভাঙা সিড়ির মতো  জায়গায় কাপড় ধুচ্ছে । শোঁশো  শব্দ বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই  পাচ্ছিলো মীলারা । কাছে আসতে দেখে বেশ বড় ঝর্ণা । ভালোলাগার অনুভূতিটা  দ্বিগুন হলো ।  দু/ তিন মাইল পার হবার পর সামনে একটা বাজার পড়ে ।  ডাঁওকি  বাজার । 

     পুরুষ বিক্রেতা থেকে মহিলা  বিক্রেতা সংখ্যা  বেশির ।  নানা রকম পাথরের  গহনা ,মশলা , চাল ডাল সবই পাওয়া যাচ্ছে ,অনেকটা হাটের মতো । পাহাড়ি মোরগ  - মুরগী । সব চেয়ে যেটা মজার সেটা হচ্ছে কোন সমান্তরাল জায়গায় না । পাহাড়ের খাঁজে বা পাথরের  স্তরেস্তরে  হাট  । মীলা  বাচ্চাদের হাত ধরে ওঠে । বাজারে ওরা সবাই একটা  চায়ের দোকানে বসে । শিলংএর  খাস চায়ের পাতার চা খায় ।ভারি সুন্দর তার সুবাস । অল্প স্বল্প কিছু  সৌখিন জিনিস পত্র কিনে নিয়ে আবার ওরা গাড়িতে ওঠে । সন্ধ্যার নামার  আগেই  পৌঁছতে হবে । এরকম চড়াই- উতড়াই পথে রাত হওয়া ঠিক না । সেপ্টেম্বরের শেষ এখনো কি বর্ষাকাল ?  
      নানা ধরনে জীব জন্তুর গল্প শুরু করে দিলেন কবীর সাহেব (মীলার স্বামী )। বেশ খানিকটা মন:ক্ষুন হয়ে বললেন -- যাতায়াতের  আরো বেটার সুযোগ সুবিধা থাকতে তোমার হঠাৎ বাই রোড়ের আসার ইচ্ছে হলে কেন বুঝলাম না ।এরকম বিপদজনক রাস্তায় কেউ শখ করে আসে ? তাও বর্ষা এখনো শেষ হয়নি । 
--- বারে বর্ষা কিছুটা আছে বলেই না এখন এলাম । পাহাড়ি  ঝর্ণা , প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য তো এই সময় দেখতে হয় ।কি সুন্দর সবুজ চারিদিকে দেখো মন দিয়ে দেখো, তোমারও ভালো লাগবে । বাচ্চারা হৈচৈ করে যাচ্ছে । কবীর জার্নালে মুখ গুঁজে আছে ।মাঝে মধ্যে ড্রাইভারের  সঙ্গে  কথা বলছে । চোখ দিয়ে রাস্তা নিরিখ করছে । গম্ভীর থমেথমে মুখ । প্লেনে আসলে ভালো হতো বার বার একই কথা বলে এখন ক্লান্ত ।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

thank you so much