মেঘের কোলে পাহাড় পর্ব (১
সিগমা আউয়াল
পাহাড়ের মুখে মেঘ জমে থাকে ।বেশ খানিকটা উপরে দিকে । যত উপরের দিকে ওঠা যায় ততো তুলোতুলো মেঘগুলো জমাট বেঁধে ভাসতে থাকে ।অবাক বিস্ময়ে চেয়ে থাকে মীলা ।মনে হচ্ছে মেঘের মধ্যে ডুবে যাচ্ছে । আঁকাবাঁকা পাহাড়ী রাস্তা ধরে উপরে দিকে গাড়ি উঠছে । নীচের দিকে তাকালে সবুজের সমারোহ । মেঘ গুলো মাঝে মধ্যে ভাসতে ভাসতে আটকে যাচ্ছে গাছের সাথে ।
এক পশলা বৃষ্টি হয় সেখানে, অথচ নীচে কোন বৃষ্টি নেই । মেঘ - বৃষ্টির এই অদ্ভূত খেলা দেখে মীলা রোমাঞ্জিত হয়। পাশে পাহাড়ের গায় বেয়ে কোথাও কোথাও ঝর্ণা নামছে । খাঁশিয়া বউ - মেয়েরা পানি নিচ্ছে দৈনন্দিন কাজে । পাথর ভাঙা সিড়ির মতো জায়গায় কাপড় ধুচ্ছে । শোঁশো শব্দ বেশ কিছুক্ষণ আগে থেকেই পাচ্ছিলো মীলারা । কাছে আসতে দেখে বেশ বড় ঝর্ণা । ভালোলাগার অনুভূতিটা দ্বিগুন হলো । দু/ তিন মাইল পার হবার পর সামনে একটা বাজার পড়ে । ডাঁওকি বাজার ।
পুরুষ বিক্রেতা থেকে মহিলা বিক্রেতা সংখ্যা বেশির । নানা রকম পাথরের গহনা ,মশলা , চাল ডাল সবই পাওয়া যাচ্ছে ,অনেকটা হাটের মতো । পাহাড়ি মোরগ - মুরগী । সব চেয়ে যেটা মজার সেটা হচ্ছে কোন সমান্তরাল জায়গায় না । পাহাড়ের খাঁজে বা পাথরের স্তরেস্তরে হাট । মীলা বাচ্চাদের হাত ধরে ওঠে । বাজারে ওরা সবাই একটা চায়ের দোকানে বসে । শিলংএর খাস চায়ের পাতার চা খায় ।ভারি সুন্দর তার সুবাস । অল্প স্বল্প কিছু সৌখিন জিনিস পত্র কিনে নিয়ে আবার ওরা গাড়িতে ওঠে । সন্ধ্যার নামার আগেই পৌঁছতে হবে । এরকম চড়াই- উতড়াই পথে রাত হওয়া ঠিক না । সেপ্টেম্বরের শেষ এখনো কি বর্ষাকাল ?
নানা ধরনে জীব জন্তুর গল্প শুরু করে দিলেন কবীর সাহেব (মীলার স্বামী )। বেশ খানিকটা মন:ক্ষুন হয়ে বললেন -- যাতায়াতের আরো বেটার সুযোগ সুবিধা থাকতে তোমার হঠাৎ বাই রোড়ের আসার ইচ্ছে হলে কেন বুঝলাম না ।এরকম বিপদজনক রাস্তায় কেউ শখ করে আসে ? তাও বর্ষা এখনো শেষ হয়নি ।
--- বারে বর্ষা কিছুটা আছে বলেই না এখন এলাম । পাহাড়ি ঝর্ণা , প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য তো এই সময় দেখতে হয় ।কি সুন্দর সবুজ চারিদিকে দেখো মন দিয়ে দেখো, তোমারও ভালো লাগবে । বাচ্চারা হৈচৈ করে যাচ্ছে । কবীর জার্নালে মুখ গুঁজে আছে ।মাঝে মধ্যে ড্রাইভারের সঙ্গে কথা বলছে । চোখ দিয়ে রাস্তা নিরিখ করছে । গম্ভীর থমেথমে মুখ । প্লেনে আসলে ভালো হতো বার বার একই কথা বলে এখন ক্লান্ত ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much