রোজনামচা
সাদা উর্দি পরা সুসজ্জিত গার্ড
মালদার স্টেশনের একবগ্গা রেলঘাটির উঁচু জানলা থেকে
মুখ বাড়িয়ে আছেন।
স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুহূর্তে সুনিশ্চয়তায় সবুজ নিশানায়
ট্রেনকে জানান উষ্ণ অভ্যর্থনা।
সারাদিন কত শত ট্রেন আসে এই নিরপরাধ স্টেশনে,
আর তত বারই তিনি কর্তব্য সামলে তাকিয়ে দেখে
জীবনের কতরকম সাজ পোশাক।
শিশুর দুরন্ত হাত ধরে সামলাচ্ছেন মা
মোবাইলে সশব্দে কথা বলছে এক বাঙালি,
জানলার পাশে বসে দাঁতে ঠোঁট কাটাচ্ছেন অন্যমনস্ক তরুণী।
একটা চৌদ্দ কি পনেরো বছর বয়সের লিকলিকে ছেলে
হাঁকিয়ে বেড়াচ্ছে জানালায় জানালায়,
আর তার নিশ্বাসে ভেসে চলা রক্ত এক ডালি বাদামের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে ঠোঙায় ঠোঙায় হচ্ছে
কারো কারো আঙুলের ডগায় ভালোবাসার শব্দ।
একটা বৃদ্ধ আর জবুথবু লোক এঁই ডিম,এঁই ডিম বলে
হেঁকে বেড়াচ্ছে।
তখন ডিম কেনার আর সময় নেই কারোরই
ট্রেন চলে ধীর থেকে দ্রুত গতিতে----
স্টেশনের পাশেই তাঁর দু'কামরায় কোয়ার্টারে,
কাজ সেরে বাড়ি ফেরেন তিনি,
উঠোনে টাঙানো ছেঁড়া-ফাটা জামা-কাপড়;
রান্নাঘরে এক মুঠো চাল নিয়ে রান্নায় ব্যস্ত তাঁর রোগা গৃহিনী।
রাতের খাবার খেয়ে ছেঁড়া কাপড়ের পুরনো কাঁথা বিছানো বিছানায় দুজনে শুয়ে কাটিয়ে দেন সারাটা রাত
সূর্য এসে ডেকে তোলে ভোরে,
এসে যায় অন্য এক রোজের সকাল।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much