ভাটফুল ভোরের সৌন্দর্য
সালাম তাসির
একদিন সন্ধ্যায় ভাটফুল সৌন্দর্যের কাছে
তোমাকে বড় অসহায় মনে হলো
অথচ প্রতি রাতে তুমি গোলাপ হয়ে ফোটো।
গোয়ালন্দ ঘাট, রাত গভীর হলে অপেক্ষা দীর্ঘ হয় ;
জলচৌকিতে ঘুমিয়ে থাকা মোহন কুলির স্বজন হারানোর বেদনা তোমাকে সঙ্গ দেয়।
গোয়ালন্দ হাট,ভ্যাজাইলার মিষ্টির দোকান খুব ডাকে
কবি আউয়াল আনোয়ারের সান্নিধ্য অমৃত হয়ে ওঠে।
হঠাৎ পদ্মার জলে ভেসে ওঠা শতবর্ষী ষ্টিমার, সার্স লাইটের আলোয় তিন নম্বর ঘাট দৃশ্যমান হলে
পাটুরিয়া থেকে উড়ে আসা একটা নীল প্রজাপতি তোমার আঙ্গুল ছুঁয়ে রাতের নীলিমায়
অদৃশ্য হয়ে যায়।
অপেক্ষা আরো দীর্ঘ হলে
দূরের মসজিদ থেকে ভেসে আসে ভোরের আযান, টিনপট্টির মন্দিরে বেজে ওঠে কাসর ঘন্টা
পূজারীর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়
ওঁম শান্তি, ওঁম শান্তির প্রার্থনা বাণী।
ট্রেন ছুটে চলে বিরতিহীন, হার্ডিঞ্জব্রীজ নিকটবর্তী হয় ; শব্দের ঘ্রাণে বড় হয় সজনে ফুল
তোমার অপলক দৃষ্টিতে সবুজ হয় ধানক্ষেত
পাখিরা ডানা মেলে রোদ পোড়া বাতাসে।
আজও ট্রেনের সেই হুইসেল বাজে
জেগে ওঠে শহর, ঘুমন্ত ষ্টেশন
বড় বাবুর ইশারায় সেই পুরনো বাঁশির সুর
কানের গলিপথে হাজার মানুষের স্বস্তির নিঃশ্বাস।
চায়ের কাপে টুং টাং শব্দ,হকারের হাকডাক;
আমার চেয়ে থাকা দূরের মাঠ,ঘাসফুল সৌন্দর্য; নীলাকাশ নক্ষত্রের দেশ খুব আপন মনে হয়।
অথচ তুমি হাত বাড়ালেই মাধবীলতা ; পা বাড়ালেই পূর্ণশশী ; চোখ মেললেই জোছনা প্রহর।
আমার ঘুমশয্যায় এখনো ভাটফুল ভোর
ফুলদানিতে সাজিয়ে রাখা ইচ্ছেগুলো
রোজ রাতে গোলাপ হয়ে ফোটে
যেভাবে ফুটে থাকো তুমি চিরচেনা সৌরভে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
thank you so much